Monday, June 16, 2025

4. An-Nisa — আন — নিসা (নারী)

  1. হে মানব জাতি ! তোমরা তোমাদের রব সম্পর্কে সতর্ক হও, যিনি তোমাদেরকে একটি মাত্র নফস থেকে সৃষ্টি করেছেন। তার মধ্য থেকেই তার জোড়া সৃষ্টি করেছেন এবং সেই দুটি (নাফস্‌) থেকে অসংখ্য পুরুষ ও নারী ছড়িয়ে দিয়েছেন। তোমরা সেই আল্লাহর  তাকওয়া অর্জন করো, যে আল্লাহর দোহাই দিয়ে তোমরা একে অপরের কাছে (যার যার পাওনা/হক) চেয়ে থাক। রক্ত‑সম্পর্কের আত্মীয়ের ব্যাপারেও সাবধান থেকো। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের উপর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখেন।                                                                                                                       [(9:111, 16:71, 43:32, 59:9).(14:34) 10:19, 57:25] (6:99) 16:8, 20:50, 21:30, 24:45, 30:20, 31:28, 51:49]
  2. আর তোমরা ইয়াতীমদেরকে তাদের ধন-সম্পদ দিয়ে দাও (তোমাদের) খারাপ জিনিসকে (তাদের) ভাল জিনিস দ্বারা বদল করো না এবং তোমাদের সম্পদের সাথে মিশিয়ে তাদের সম্পদ ভোগ করো না; এটা অবশ্যই একটা গুরুতর অপরাধ‑মহাপাপ। [ 33:5; 4:127]
  3. আর যদি তোমরা আশঙ্কা কর যে, এতীমদের ব্যাপারে তোমরা ইনসাফ বা সুবিচার  করতে পারবে না, তাহলে তোমরা বিয়ে কর (এতিমদের বিধবা মা অথবা প্রাপ্তবয়স্ক এতিম) নারীদের মধ্যে যাকে তোমাদের ভাল লাগে; দু’টি, তিনটি অথবা চারটি। আর যদি ভয় কর যে, তোমরা সমান আচরণ-ইনসাফ করতে পারবে না (এতিম সন্তানসহ বিধবা মায়েদের প্রতি) তবে মাত্র একজন অথবা তোমাদের ডান হাত (শপথের মাধ্যমে) যার মালিক হয়েছে (তাদের মধ্য থেকে)।  এটা তোমাদের জুলুম‑অবিচার না করার নিকটতর । [একের অধিক বিয়ে অসম্ভব=৪:১২৯]  4:127–129]
  4. আর তোমরা নারীদেরকে সন্তুষ্টচিত্তে তাদের মোহর দিয়ে দাও,তবে তারা যদি খুশিমনে তোমাদেরকে তার কিছু অংশ ছেড়ে দেয় তাহলে তোমরা তা স্বাচ্ছন্দ্যে তৃপ্তির সঙ্গে ভোগ কর।
  5. আর তোমরা অবুঝ‑নির্বোধ‑অল্প‑বুদ্ধিসম্পন্ন (এতিম) দের হাতে ধনসম্পত্তি ছেড়ে দিও না, যা দিয়ে আল্লাহ্ তোমাদের দিন গুজরানের ব্যবস্থা করেছেন, তা থেকে তাদের অন্ন‑বস্ত্র‑খাওয়াপরা ও ভরণপোষণের ব্যবস্থা করো; তাদের সাথে ন্যায়সংগত কথা বলবে।
  6. আর তোমরা ইয়াতীমদেরকে পরীক্ষা কর যতক্ষণ না তারা বিবাহের বয়সে পৌঁছে অর্থাৎ বিবাহযোগ্য হয়। সুতরাং যদি তোমরা তাদের মধ্যে বিচার‑বুদ্ধি বিবেকের পরিপক্কতার জ্ঞান দেখতে পাও, তবে তাদের ধন-সম্পদ তাদেরকে ফিরিয়ে দাও। ইয়াতীমের ধন-সম্পদ অপব্যয়-অপচয় করনা, তারা বড় হয়ে যাবে বলে তাদের ধন-সম্পদ তাড়াতাড়ি খেয়ে শেষ করে ফেলো না। যে (অভিভাবক) ধনী সে যেন (এতিমের সম্পদ খরচ করা থেকে) বিরত থাকে। আর যে গরীব সে (তার শ্রমের জন্য) ন্যায়ভাবে (ন্যায্য পরিমাণ) খেতে পারে।  অতঃপর তোমরা যখন তাদেরকে তাদের সম্পদ ফিরিয়ে দেবে তখন সাক্ষী রেখো। আর (জেনে রেখো) হিসেব গ্রহণে আল্লাহই যথেষ্ট।                                            [বিবাহ ও পরিণত বয়স 12:22; 24:59; 28:14; 46:15; 2:282; 4:21]
  7. পিতা-মাতা এবং আত্মীয়-স্বজনের পরিত্যক্ত‑রেখে যাওয়া সম্পত্তিতে পুরুষের অংশ আছে এবং পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে নারীরও অংশ আছে, (রেখে যাওয়া সম্পত্তি)  তা অল্পই হোক আর বেশিই হোক না কেন, তাতে তাদের অংশ নির্দিষ্ট করা হয়েছে। [4:12]
  8. (সম্পত্তি) বন্টনকালে যদি নিকটাত্মীয়-স্বজন এবং ইয়াতীম ও অভাবগ্রস্ত‑গরীবরা উপস্থিত হয়, তাহলে তোমরা তাদেরকে তা থেকে কিছু দিয়ে দেবে এবং তাদের সাথে ন্যায়সঙ্গত উত্তম কথা বলবে।
  9. তারা নিজেরা পেছনে অসহায়  ছেলেমেয়ে রেখে (মারা) গেলে তাদের জন্য যেমন ভয় করত, (সম্পত্তি বন্টনকালে) তারা (বন্টনকারীরা) যেন অন্তরে তেমন ভয় রাখে। অতএব, তারা যেন আল্লাহ সম্পর্কে সতর্ক হয় এবং সঠিক ন্যায়সঙ্গত কথা বলে।  [33:70]
  10. নিশ্চয়ই যারা ইয়াতীমদের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে খায় তারা তো তাদের পেটে আগুনই খাচ্ছে; তারা শীঘ্রই জ্বলন্ত আগুনে-অগ্নি শিখায় জ্বলবে।
  11. আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের সন্তানদের (উত্তরাধিকারের) ব্যাপারে আদেশ দিচ্ছেন:  এক পুত্রের  অংশ দুই কন্যার অংশের সমান; কিন্তু শুধু কন্যা দুইয়ের বেশি থাকলে তাদের জন্য পরিত্যক্ত সম্পত্তির তিন ভাগের দু’ভাগ, আর মাত্র এক কন্যা থাকলে তার জন্য অর্ধেক। তার সন্তান থাকলে তার পিতা-মাতা প্রত্যেকের জন্য পরিত্যক্ত সম্পত্তির ছয় ভাগের এক ভাগ; সে নিঃসন্তান হলে এবং পিতা-মাতাই উত্তরাধিকারী হলে তার মাতার জন্য তিন ভাগের এক ভাগ; তার ভাই‑বোন থাকলে মাতার জন্য ছয় ভাগের এক ভাগ ; তার কোন অসিয়ত থাকলে তা পূরণ কিংবা কোন ঋণ থাকলে তা পরিশোধ করার পরে। তোমাদের পিতামাতা ও সন্তানদের মধ্যে উপকারের দিক থেকে কে তোমাদের নিকটতর তা তোমরা জান না। এসব অংশ আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত/ফরজ। নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়।
  12. তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের রেখে যাওয়া সম্পত্তির অর্ধেক পাবে, যদি তাদের কোন সন্তান না থাকে; আর তাদের সন্তান থাকলে তোমরা তাদের রেখে যাওয়া সম্পত্তির চার ভাগের একভাগ পাবে, তাদের কোন অসিয়ত থাকলে তা পূরণ কিংবা কোন ঋণ থাকলে তা পরিশোধ করার পরে। আর তোমাদের স্ত্রীরা তোমাদের রেখে যাওয়া সম্পত্তির চার ভাগের একভাগ পাবে যদি তোমাদের কোন সন্তান না থাকে; আর তোমাদের সন্তান থাকলে তারা তোমাদের রেখে যাওয়া সম্পত্তির আট ভাগের একভাগ পাবে, তোমাদের কোন অসিয়ত থাকলে তা পূরণ কিংবা কোন ঋণ থাকলে তা পরিশোধ করার পরে। আর যে লোকটির অথবা স্ত্রীলোকটির উত্তরাধিকার বন্টন করা হবে (অর্থাৎ মৃতব্যক্তি) সে যদি নিঃসন্তান ও পিতৃমাতৃহীন হয় এবং তার একজন (বৈপিত্রেয়) ভাই কিংবা একজন (বৈপিত্রেয়) বোন থাকে তাহলে তাদের প্রত্যেকে ছয় ভাগের একভাগ পাবে। আর যদি তাদের সংখ্যা এর চেয়ে অধিক হয় তাহলে তারা তিন ভাগের একভাগে (সবাই সমান) অংশীদার হবে, কোন অসিয়ত থাকলে তা পূরণ কিংবা কোন ঋণ থাকলে তা পরিশোধ করার পরে, যাতে কারো কোন ক্ষতি না হয়। এটাই আল্লাহর নির্দেশ। আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, সহনশীল।                     [ 2:219, 2:180, 2:240, 4:8]
  13. এগুলো আল্লাহর  নির্ধারিত সীমারেখা। যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের (কুরআনের) অনুগত হবে আল্লাহ তাদেরকে এমনসব জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যাতে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত হয়। তারা সেখানে চিরকাল থাকবে। আর এটাই বিরাট মহাসাফল্য।
  14. আর যে আল্লাহ ও তাঁর  বার্তাবাহক রাসূলের (কুরআনের) নাফরমানী করবে এবং (বর্ণিত আদেশ নিষেধের) সীমারেখা লঙ্ঘন করবে আল্লাহ তাকে (জাহান্নামের) আগুনে প্রবেশ করাবেন। সেখানে সে চিরস্থায়ী হবে। আর তার জন্যই রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব‑লাঞ্ছনাকর শাস্তি।
  15. তোমাদের নারীদের মধ্যে যারা ব্যভিচার করবে তোমরা তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের মধ্য থেকে চার জন সাক্ষী উপস্থিত করবে। তারা যদি সাক্ষ্য দেয় তাহলে ঐ নারীদেরকে ঘরে আবদ্ধ রাখবে যতক্ষণ না তাদের মৃত্যু হয় অথবা আল্লাহ তাদের জন্য (অন্য) কোন পথ নির্দেশ করেন।             [17:32, 4:24–25 ;12:26; 4:24, 5:32, 13:24, 17:32, 38:52, 69:21, 89:27]
  16. তোমাদের মধ্যে যে দুজন (নর‑নারী) ঐ কাজ (ব্যভিচার) করবে তাদেরকে তোমরা শাস্তি দেবে । তারপর তারা যদি তওবা করে এবং নিজেদেরকে সংশোধন করে নেয় তাহলে তাদেরকে তাদের মত থাকতে দিও। নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবা কবুলকারী,পরম দয়ালু।
  17. বস্তুত আল্লাহর কাছে তাদেরই তওবার সুযোগ রয়েছে যারা অজ্ঞতাবশত পাপ/মন্দ/নোংরা কাজ করে, তারপর শীঘ্রই তওবা করে ফিরে আসে। এরাই তারা, যাদের তাওবাহ্‌ আল্লাহ কবুল করেন । আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাবান।
  18. আর তাওবা নাই তাদের, যারা সারাজীবন অন্যায়-পাপ‑জুলুম করতেই থাকে, অবশেষে যখন তাদের কারো মৃত্যু এসে উপস্থিত হয়, তখন বলে, “আমি এখন তওবা করলাম;”  তাদেরও (তওবার সুযোগ) নেই যারা (আয়াত অস্বীকারকারী/উপেক্ষাকারী/গোপনকারী/বিক্রীকারী হয়ে) কাফের অবস্থায় মারা যায়। এসব লোকদের জন্য আমি যন্ত্রণাদায়ক আযাব‑বেদনাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। [9:80,85; 3:90,91; 4:48,116,137,168; 31:13]
  19. হে ঈমানদারগণ!তোমাদের জন্য এটা হালাল নয় যে, তোমরা জোর‑জবরদস্তি করে যে কোন স্ত্রীলোকদের উত্তরাধিকারী সেজে বসবে, কিংবা বল প্রয়োগ করে কোন মেয়েদেরকে আটক বা অবরুদ্ধ করে রাখবে, যাতে তোমরা ফিরিয়ে নিতে বা আত্মসাৎ করতে পারবে, যা কিছু তোমরা তাদেরকে (মোহরানা বা উপহারস্বরূপ) দিয়েছো। তবে তারা যদি প্রকাশ্যে অশ্লীলতায় অর্থাৎ ব্যাভিচারে লিপ্ত হয় (এবং ৪জন স্বাক্ষী উপস্থিত হয়) সে কথা ভিন্ন। তাদের সাথে দয়া ও সততার সঙ্গে জীবন যাপন কর, আর যদি তোমরা তাদেরকে অপছন্দ কর, তবে এমনও হতে পারে যে, তোমরা কোন কিছুকে অপছন্দ করছ আর আল্লাহ তাতে অনেক মঙ্গল-বহু কল্যাণ রেখেছেন। 
  20. আর তোমরা যদি এক স্ত্রীর জায়গায় অন্য স্ত্রী গ্রহণ করা স্থির কর এবং তাদের একজনকে (মোহরানা বা উপহারস্বরূপ) অনেক অর্থও দিয়ে থাক, তবুও তা থেকে কিছুই ফেরত নিও না। তোমরা কি মিথ্যা অপবাদ এবং সুষ্পষ্ট পাপ করে তা (ফেরত) নিতে চাচ্ছ?
  21. তোমরা তা কীভাবে (ফেরত) নিতে পার,অথচ তোমরা একে অপরের সাথে একান্তে মিলিত হয়েছ; আর তারাও তোমাদের কাছ থেকে নিয়েছিলো (ভালোবাসা ও মমতাভরা বিবাহ বন্ধনের) শক্ত অঙ্গীকার ।
  22. যে নারীদেরকে তোমাদের বাবারা (বাবা, দাদা, নানা) বিয়ে করেছে তোমরা তাদেরকে বিয়ে করবে না; তবে পূর্বে যা হয়ে গিয়েছে (তা ভিন্ন কথা)। অবশ্যই এটা ছিল একটা অশ্লীল, অত্যন্ত ঘৃণিত এবং নিকৃষ্ট‑জঘণ্য পন্থা।
  23. যাদেরকে বিয়ে করা তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ‑হারাম করা হয়েছে তারা হল: তোমাদের মা এবং মেয়ে, বোন, ফুফু, খালা, ভাইঝি, ভাগিনী, দুধ মা, দুধ বোন, শ্বাশুড়ী, তোমরা যেসব স্ত্রীর সাথে মিলিত হয়েছ সেসব স্ত্রীর পূর্বের স্বামী থেকে যেসব কন্যা তোমাদের কোলে রয়েছে তাদেরকে, কিন্তু যদি তাদের সাথে তোমরা মিলিত না হয়ে থাকো, তবে (তাদের বদলে তাদের কন্যাদের বিয়ে করলে) তোমাদের প্রতি গুনাহ নেই এবং (তোমাদের প্রতি হারাম করা হয়েছে) তোমাদের ঔরসজাত পুত্রের স্ত্রী এবং এক সঙ্গে দু’ বোনকে (বিবাহ বন্ধনে) রাখা, আগে যা হয়েছে, হয়েছে।  নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল,পরম দয়ালু।
  24. এবং নারীদের মধ্যে বিবাহিতগণ তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ‑হারাম করা হয়েছে; তবে তোমাদের ডান হাত ( শপথের মাধ্যমে) যাদের মালিক হয়েছে তারা ছাড়া। এটি তোমাদের উপর আল্লাহর ফরজ বিধান।  তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ নারীদের ছাড়া অন্যান্য সকল নারীদেরকে মোহরের অর্থের বিনিময়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করতে চাওয়া তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে, তবে অবৈধ যৌনাচারে লিপ্ত হওয়ার জন্য নয়। অতএব, এদের মধ্য থেকে যাদের সাথে তোমরা (বিয়ের পর) যৌন সম্ভোগ করবে তাদেরকে তাদের নির্ধারিত পাওনা (মোহরানা) দিয়ে দেবে। (মোহরানা) নির্ধারণের পর পারস্পরিক সম্মতিতে কোন হ্রাস‑বৃদ্ধি করলে তাতে তোমাদের কোন পাপ হবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়। [60:10;  17:32)]
  25.  আর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তির সচ্চরিত্রা-মুমিনা নারীদেরকে বিবাহ করার আর্থিক সামর্থ্য নেই,সে  তার শপথের মাধ্যমে অধিকারভুক্ত মুমিনা যুবতীকে বিয়ে করবে। আর আল্লাহ তোমাদের ঈমান সম্পর্কে বেশ ভালভাবেই জানেন। নিজেদের মধ্যে তোমরা তো একে‑অপরের অংশ (সমান)। তাই তাদের পরিবার পরিজনের অনুমতি নিয়ে তাদেরকে বিয়ে করবে এবং যথাযথভাবে তাদের পাওনা (মোহরানা) পরিশোধ করবে, যদি তারা সচ্চরিত্রা/সতী-সাধ্বী হয় এবং ব্যভিচারিণী কিংবা উপপতি/গোপন যৌনসঙ্গী — গ্রহণকারিণী না হয়। আর বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর তারা যদি ব্যভিচার করে তাহলে তাদের শাস্তি সচ্চরিত্রা-মুমিনা নারীদের শাস্তির অর্ধেক। এ ব্যবস্থা তার জন্য তোমাদের যে ব্যক্তি (অবিবাহিত থাকার কারণে) ব্যভিচারের ভয় করে। (তাড়াহুরা করে বিয়ে না করে) ধৈর্য ধারণ করা তোমাদের পক্ষে উত্তম-কল্যাণকর এবং আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। [17:70]
  26. আল্লাহ তোমাদের জন্য পরিষ্কার করে তোমাদের পূর্ববর্তীদের সুন্নত/নিয়ম‑নীতি  বিস্তারিত বর্ণনা করে হেদায়েতের পথ দেখিয়ে দিতে চান। তোমাদের তাওবা অর্থাৎ ফিরে-আসা কবুল করতে চান । আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়।
  27. আর আল্লাহ চান তোমাদের তাওবা/অনুশোচনা কবুল করতে। কিন্তু যারা কামনা-বাসনা/খেয়াল- খুশি/প্রবৃত্তির আনুগত্য করে তারা চায় যে, তোমরা যেন (পথভ্রষ্টতার দিকে) ভীষণভাবে ঝুঁকে পড়।
  28. আল্লাহ তোমাদের (ভারি) বোঝা হালকা করতে চান। মানুষকে তো দুর্বল করে সৃষ্টি করা হয়েছে।                        [7:17, 25:28–29]
  29. তোমরা যারা ঈমান এনেছো শোনো! তোমরা একে অপরের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে খেয়ো না, তবে পারস্পরিক সম্মতিতে ব্যবসা–বাণিজ্য হলে ভিন্ন কথা। আর নিজেরা খুনোখুনি করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু।      [2:275, 53:39; 2:188, 26:181]
  30. আর যে কেউ সীমালংঘন‑বাড়াবাড়ি করবে এবং জুলুম‑অত্যাচার করবে, তাকে আমি অতিসত্বর অগ্নিতে দগ্ধ করবো এবং আল্লাহর পক্ষে এটা খুবই সহজসাধ্য।
  31. তোমাদেরকে যা যা নিষেধ করা হয়েছে তার মধ্যে বড়গুলো থেকে যদি তোমরা দূরে থাক তাহলে আমি তোমাদের (ছোট ছোট) পাপগুলো মুছে দেব এবং তোমাদেরকে একটি মহৎ জায়গায় (জান্নাতে) স্থান দেব এবং তোমাদেরকে এক মহামর্যাদার স্থানে প্রবেশ করাব।
  32. যে সব জিনিস দ্বারা আল্লাহ তোমাদের একজনকে আরেকজনের ওপর সম্মান ও মর্যাদা দিয়েছেন তোমরা তার লোভ, লালসা করোনা। পুরুষ যা অর্জন করবে সে তার অংশ (ফল) পাবে এবং নারী যা অর্জন করবে সেও তার অংশ পাবে। তোমরা আল্লাহরই  কাছে সম্মান ও মর্যাদা প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ব বিষয়ে মহাজ্ঞানী। [4:34, 28:77] 
  33. পিতামাতা ও আত্মীয়দের রেখে যাওয়া সবকিছুর জন্য আমি উত্তরাধিকারী নির্ধারণ করেছি। আর যাদের সাথে তোমাদের অঙ্গীকার/চুক্তি রয়েছে, তাদেরকে তাদের অংশ দিয়ে দাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছুরই সাক্ষী থাকেন। [4:11–12-176] 
  34. পুরুষরা নারীদের তত্ত্বাবধানকারী ও ভরণপোষণকারী কারণ আল্লাহ তাদের একজনকে আরেকজনের ওপর মর্যাদা দিয়েছেন এবং তারা (পুরুষেরা) তাদের (কষ্টার্জিত) সম্পদ থেকে (নারীদের জন্য) ব্যয় করে থাকে।এজন্যই পুণ্যবতী নারীরা (স্বামীদের) অনুগত হয় এবং (তাদের) অনুপস্থিতিতেও আল্লাহ যা রক্ষা করতে বলেছেন তা (নিজেদের সতীত্ব, স্বামীদের সম্পত্তি ইত্যাদি) রক্ষা করে। আর যে নারীদের মধ্যে তোমরা বিদ্রোহ/বাজে আচরণ/দূর্ব্যবহারের শঙ্কা করো তাদেরকে নসিহাত/উপদেশ দাও, শয্যাতে দূরে থাকো এবং তাদেরকে ট্যুরে/ভ্রমণে/ঘুরতে নিয়ে যাও ।এতে যদি তারা তোমাদের অনুগত হয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে অন্য কোন পথ/বাহানা খুঁজো না।নিশ্চয়ই আল্লাহ সমুন্নত মহান। [2:259, 58:11 (4:128  (2:231, 3:66; (8:11, 43:5; (13:17, 16:74, 36:13, 43:58) (43:5 [দরাবা=ট্যুর/ভ্রমণ 3:156; 4:101; 5:106; 73:20; 2:273]  [নুশুয=বাজে আচরণ/দূর্ব্যবহার 4:128]
  35. আর যদি তোমরা তাদের উভয়ের মধ্যে বিচ্ছেদের আশঙ্কা কর তাহলে স্বামীর পরিবার থেকে একজন সালিস এবং স্ত্রীর পরিবার থেকে একজন সালিস নিযুক্ত করবে।তারা যদি দুজনের মধ্যে সংশোধন/আপোষ‑মীমাংসা করে দিতে চায়, তাহলে আল্লাহ তাদের মধ্যে নিষ্পত্তির ব্যবস্থা/ মিলসাধন/মিটমাট করার তাওফিক দান করবেন।, নিশ্চয়ই আল্লাহ সব কিছু জানেন, সকল কিছুর খবর রাখেন।  [2:228–234, 4:3, 4:19, 4:35, 4:128, 33:49, 58:1 65:1–4] 
  36. তোমরা আল্লাহর ‘ইবাদাত কর, তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করো না।মাতা-পিতা, আত্মীয়-স্বজন ইয়াতীম, অভাবগ্রস্ত/দরিদ্র, কাছের প্রতিবেশি, দূরের প্রতিবেশি,ঘনিষ্ঠ সহচর/সঙ্গী-সাথী,মুসাফির/পথিক, শপথের মাধ্যমে তোমাদের অধিকারভুক্তদের সাথে দারুন/সুন্দর/চমৎকার ব্যবহার করবে।নিশ্চয়ই আল্লাহ বেয়াদব/বেত্তমিজ  ও অহংকারীকে ভালবাসেন না। 
  37. যারা কৃপণতা করে  এবং মানুষকে কৃপণতার নির্দেশ দেয় এবং আল্লাহ নিজ শ্রেষ্ঠত্ব/মর্যাদা থেকে তাদেরকে যে (নিয়ামাত) দিয়েছেন তা গোপন করে  ঐসব গোপনকারী কাফেরদের জন্য আমি লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি ।
  38. (আর সেসব লোককেও আল্লাহ ভালোবাসেন না) যারা মানুষকে দেখানোর জন্য নিজেদের ধন-সম্পদ খরচ করে এবং আল্লাহ ও আখিরাত দিবসের উপর বিশ্বাস রাখে না। আর শয়তান যার সঙ্গী হয়, (তাকে সে পথভ্রষ্ট করবেই, কারণ)  সঙ্গী হিসেবে সে কতইনা নিকৃষ্ট/জঘন্য ?  [50:23]
  39. মানুষের এমন কী ক্ষতি হত যদি তারা আল্লাহ ও আখিরাত দিবসের প্রতি ঈমান আনত, আর আল্লাহ তাদেরকে যে রিযক দিয়েছেন তা থেকে ব্যয় করত? আল্লাহ তাদের সম্পর্কে খুব ভালোভাবেই জানেন।
  40. নিশ্চয়ই আল্লাহ অণু পরিমাণও যুলুম করেন না । আর যদি (কারো) কোন পুণ্য থাকে তাহলে তিনি তা  বহুগুন বাড়িয়ে দেবেন এবং নিজের পক্ষ থেকেও বিরাট/মহা পুরস্কার দান করবেন।
  41. সুতরাং তখন কী অবস্থা দাঁড়াবে, যখন আমি প্রত্যেক উম্মাতের মধ্য হতে এক একজনকে সাক্ষী উপস্থিত করব এবং তোমাকেও হাজির করব তাদের উপর সাক্ষ্য দানের জন্য।                        [10:46,47; 2:143]
  42. যারা কুফরি করেছে এবং রসূলের অবাধ্য হয়েছে তারা সেদিন কামনা করবে,হায়! তারা যদি আর্দের সাথে মিশে যেত। আর তারা আল্লাহর কাছে কোন হাদিসই লুকিয়ে রাখতে পারবে না। [ [হাদিস;-45:6; 39:23; 77:50; 68:44; 79:15]
  43. তোমরা যারা ঈমান এনেছো শোনো! মোহগ্রস্থ/যন্ত্রণাগ্রস্থ/নেশাগ্রস্থ হয়ে সংযোগের সান্নিধ্যে যেওনা/আত্মীয়-স্বজনের সান্নিধ্যে যেওনা; যতক্ষণ না তোমরা যা বল, তা বুঝতে পার।তবে কর্তব্য থেকে দূরে থেকোনা। তবে যে ব্যক্তি উপদেশ/শিক্ষা নেওয়ার পথে থাকবে তার কথা ভিন্ন। আর তোমরা যদি অসুস্থ কিংবা ভ্রমণে থাক, অথবা তোমাদের মধ্যে হতে কেউ টয়লেট করে আসে, অথবা তোমরা স্ত্রীদের স্পর্শ করো, তখন যদি পানি না পাও, তাহলে ভালো মাটি দ্বারা পরিষ্কার করে নিবে, এছাড়া নিজেদের মুখমন্ডল ও হাত দুটো মুছে নিবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ পাপ মোচনকারী, ক্ষমাশীল ।                                                                                                                              [কারিব=আত্মীয়-স্বজন/সান্নিধ্য/নৈকট্য/কাছাকাছি 2:180,215,237; 3:167; 4:7,11,33,135; 9:99; 3:45; 7:114]  জুনুব=  কর্তব্য/দূরে থাকো   4:36; 39:56;  28:11; 92:17; 14:35; 16:36  আবরা- শিক্ষা 3:13; 12:111; 16:66; 23:21; 24:44; 79:26    ছাখরা=যন্ত্রণা (50:10) মোহগ্রস্থ/নেশাগ্রস্থ‑22:2; 15:15,72; 16:67 ]                                                                        [তোমরা যারা ঈমান এনেছো শোনো! মোহগ্রস্থ/যন্ত্রণাগ্রস্থ/নেশাগ্রস্থ হয়ে সংযোগের সান্নিধ্যে যেওনা/আত্মীয়-স্বজনের সান্নিধ্যে যেওনা; যতক্ষণ না তোমরা যা বল, তা বুঝতে পার। শিক্ষা গ্রহনের পথে  থেকেও তোমরা দূরে থাকো/বিরত হও।যদি তোমরা রোগাক্রান্ত হও গোসল করো/ক্ষত থেকে রস বের হয়/চিকিৎসা করাও। স্ত্রীদের সাথে মিশে অনুসন্ধান করো। উর্ধে ওঠার সংকল্প করো। কিতাবের উপরে থাকো।[ কারিব=আত্মীয়-স্বজন/সান্নিধ্য/নৈকট্য/কাছাকাছি 2:180,215,237; 3:167; 4:7,11,33,135; 9:99; 3:45; 7:114]
  44. তুমি কি সেই লোকেদের প্রতি লক্ষ্য করনি, যাদেরকে কিতাবের অংশ দেয়া হয়েছিল? তারা নিজেরা পথভ্রষ্টতা ক্রয় করছে আর চাচ্ছে যে, তোমরাও পথভ্রষ্ট হয়ে যাও।
  45. আল্লাহ তোমাদের শত্রুদেরকে খুব ভাল করেই জানেন। আর অভিভাবক/অলি হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট এবং সাহায্যকারী হিসেবেও আল্লাহই যথেষ্ট।
  46. হেদায়েতের দাবিদার ইয়াহূদীদের মধ্যে কিছু লোক আছে যারা কালামসমূহকে তার স্থান থেকে পরিবর্তন করে ফেলে এবং বলে, ‘আমরা শুনলাম ও অমান্য করলাম’। এবং শোনে না শোনার মতো;আর নিজেদের জিহবা বাঁকা করে এবং দীনের প্রতি খোঁচা মেরে/উপহাস করে/ তাচ্ছিল্য করে বলে, “রা’ইনা (আমাদের রাখাল)”। কিন্তু তারা যদি বলত, ‘শুনলাম ও মান্য করলাম এবং শুনুন ও আমাদের প্রতি লক্ষ্য করুন’, তাহলে তা তাদের জন্য উত্তম/কল্যাণকর ও যথার্থ/সঠিক হত।কিন্তু তাদের কুফরী/অবাধ্যতার কারণে আল্লাহ তাদেরকে লা‘নত/অভিসম্পাত করেছেন। ফলে তাদের অল্প সংখ্যক ছাড়া ঈমান আনবে না।
  47. হে কিতাবধারীগণ! তোমাদের কাছে যা আছে তার সত্যায়নকারীরূপে আমি যা নাযিল করেছি তাতে তোমরা ঈমান আন, ঐ সময় আসার পূর্বে,যখন আমি অনেক মুখমন্ডল বিকৃত করে দিব।তারপর সেগুলোকে পিছনের দিকে উল্টিয়ে দিব অথবা (আরাম আয়েশী) আস্‌হাবুস্‌ সাব্‌তকে (শনিবারওয়ালাদেরকে/ (শনিবার সংক্রান্ত বিধিনিষেধ অমান্য করে শাস্তিপ্রাপ্তদেরকে)) যেরূপ লা’নত করেছিলাম  সেরূপ তাদেরকে লা’নত/অভিসম্পাত করার আগে। আর আল্লাহ্‌র আদেশ কার্যকরী হয়েই থাকে।
  48. নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সাথে শরীক করার পাপকে কিছুতেই ক্ষমা করবেন না। এটা ছাড়া অন্যান্য পাপ তিনি যাকে ইচ্ছা মাফ করে দেন। আর যে আল্লাহর ( আইন,কিতাব ও সত্বার) সাথে শরীক করে সে নিঃসন্দেহে এক মহাপাপ রচনা করে।
  49. তুমি কি তাদেরকে দেখনি, যারা নিজদেরকে পরিশুদ্ধ/নিষ্পাপ মনে করে? বরং আল্লাহ্ই যাকে ইচ্ছে পরিশুদ্ধ/নিষ্পাপ করেন। আর তাদের উপর বিন্দু পরিমাণও যুলুম করা হবে না।
  50. দেখ, তারা (গায়রে মাতলু ওহি নাম দিয়ে) কীভাবে আল্লাহর সম্পর্কে মিথ্যা রচনা করে! প্রকাশ্য পাপ হিসেবে এটাই যথেষ্ট।
  51. তুমি কি তাদের প্রতি তুমি কি লক্ষ্য করনি ? তারা জিবুত/দেবদূত/দেবতা/প্রতিমা/মূর্তি ও মোল্লা/ঠাকুর/পাদ্রী/তাগূতের প্রতি ঈমান আনে এবং কাফেরদের সম্বন্ধে বলে, ওরাই নাকি  ঈমানদারদের চেয়ে বেশি সঠিক পথপ্রাপ্ত ।                                                                                   [ মূর্তি কখনো তাগুত হতে পারেনা কারন তার আল্লাহ কিতাবের বিরোধিতা/অপব্যাখ্যা করার শক্তি/ক্ষমতা/ কৌশল থাকে না।যা আছে ফাদার,ক্লার্জি,বিশপ,প্রিস্ট,পাদ্রি,পোপ,সাধু,তপস্বী, ঋষি,ঠাকুর,রাবাই,উলামা,মওলানা,মুফতি,মোল্লা,শায়খ„মুহাদ্দিস,মুজতাহিদদের।]
  52. এরাই তারা যাদেরকে আল্লাহ লা‘নত/অভিশপ্ত করেছেন। আর আল্লাহ যাকে লা‘নত করেন তুমি কখনো তার কোন সাহায্যকারী পাবে না।
  53. তবে কি তাদের কাছে রাজত্বের কোন অংশ আছে? যদি তাই হতো তাহলে তখন তো তারা মানুষকে কণা পরিমাণ/তিল পরিমাণও কিছু দিতো না। [4:124, 35:13]
  54. কিংবা তারা কি লোকজনের সাথে হিংসা করছে , আল্লাহ তাদেরকে স্বীয় মর্যাদাপূর্ণ সম্পদ হতে কিছু দান করেছেন সে কারনে? আমি তো ইবরাহীমের বংশধরদেরকে কিতাব ও হিকমাত দান করেছিলাম, তাদেরকে সুবিশাল রাজ্যও প্রদান করেছিলাম। ও প্রজ্ঞা দান করেছিলাম এবং তাদেরকে সুবিশাল রাজ্যও দান করেছিলাম। 
  55. অতঃপর তাদের মধ্যে কেউ কেউ  তার ( কুরআনের) প্রতি ঈমান আনে আবার কেউ কেউ (ঈমান আনতে) বাঁধাও দেয় ।  (তাদেরকে পোড়ানোর) আগুন হিসেবে জাহান্নামই যথেষ্ট।
  56. নিশ্চয়ই যারা আমার আয়াতসমূহকে উপেক্ষা/অস্বীকার/প্রত্যাখ্যান/গোপন করে, খুব শীঘ্রি আমি তাদেরকে আগুনে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দগ্ধ করব,। যতবার তাদের চামড়া জ্বলে পুড়ে দগ্ধ হয়ে যাবে ততবার আমি নতুন চামড়া দিয়ে তা পালটে দেব যাতে তারা (শাস্তির পর) শাস্তির স্বাদ/মজা উপভোগ করতে পারে। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।  
  57. আর যারা ঈমান এনেছে ও সংশোধনের কাজ করেছে, তাদেরকে আমি শীঘ্রই জান্নাতে প্রবেশ করাব। যাতে প্রবাহিত হচ্ছে ঝর্ণাধারা।তারা সেখানে অনন্তকাল/চিরকাল থাকবে। সেখানে তাদের জন্য রয়েছে পবিত্র সঙ্গী-সাথী। আমি তাদেরকে চির স্নিগ্ধ নিবিড় ছায়ায় দাখিল করব। 
  58. নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদেরকে আদেশ দিচ্ছেন,যেন তোমরা আমানতসমূহ তার প্রাপকদেরকে ফিরিয়ে দাও আর যখন মানুষের মধ্যে বিচার‑ফয়সালা করবে তখন ন্যায়/ইনসাফ এর সাথে ফায়সালা করবে, নিশ্চয়ই  আল্লাহ তোমাদেরকে কতইনা সুন্দর ওয়াজ‑নসিহত করছেন।নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু শোনেন, সবকিছু দেখেন। [4:105; 5:48]
  59. তোমরা যারা ঈমান এনেছ শোনো! তোমরা আল্লাহর অনুগত হও ‚রাসুলের অনুগত হও এবং তোমাদের মধ্যকার কতৃত্বশীলদের অনুগত হও আর যদি (কখনো) কোন ব্যাপারে তোমাদের মধ্যে বিরোধ/মতানৈক্য লেগে যায়, তাহলে সেই বিষয়কে আল্লাহ এবং রাসূলের (কুরআনের)দিকে ফিরিয়ে দাও; যদি তোমরা আল্লাহ এবং আখিরাত দিবসের প্রতি ঈমান এনে থাক;এটাই কল্যাণকর ও শ্রেষ্ঠতর পরিসমাপ্তি।                                                                                                            [উলিল আমর এর কাজ‑4:83 (কুরআনের বাইরে গেলে মানা যাবেনা 4:64] [রাসুলের কাজ ও বিচার ফায়সালা পদ্ধতি =43:43; 7:3; 46:9;  2:119,120,272; 42:7; 3:161; 4:79,80,84,105,107; 5:48,67,92,99; 6:19,52,48,66,107; 10:15; 12:38; 16:123; 69:44–47; 50:45; 88:21,22] 
  60. তুমি কি সেই লোকেদের প্রতি লক্ষ্য করনি,যারা দাবী করে যে, যা নাযিল করা হয়েছে তোমার প্রতি এবং যা নাযিল করা হয়েছে তোমার পূর্বে; তাতে তারা ঈমান এনেছে। অথচ তারা শালিস/ফতোয়া/মাছয়ালা/মিমাংসা/হুকুম/ফায়সালার জন্য যায় তাগুতের কাছে। অথচ তাদের অমান্য/প্রত্যাখ্যান করার জন্যেই এই (কোরআন) দ্বারা নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আসলে শয়তান চায় তাদেরকে পথভ্রষ্ট করে বহুদূরে নিয়ে যেতে।
  61. যখন তাদেরকে বলা হয়- তোমরা আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার দিকে এবং রাসূলের দিকে আস,  তখন তুমি ঐ কপট‑মুনাফিকদেরকে দেখবে, তারা তোমার কাছ থেকে একেবারে মুখ ফিরিয়ে  নিচ্ছে।
  62. কিন্তু তাদের কৃতকর্মের ফলে যখন তাদের কোন বালা-মুসিবত/বিপদ-আপদ আসবে তখন কেমন হবে? তখন তারা আল্লাহর নামে শপথ করতে করতে তোমার কাছে এসে বলবে, “আমরা তো কল্যাণ আর সম্প্রীতি ছাড়া অন্য কিছু চাইনি।”
  63. ওরা তো সেসব লোক, যাদের অন্তরে কি আছে আল্লাহ তা জানেন।সুতরাং তুমি তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও এবং তাদেরকে সদুপদেশ দাও। তাদেরকে ওয়াজ নসিহাত করো। আর তাদেরকে এমন কথা বল যা তাদের অন্তর স্পর্শ করে/ হ্দয় ছুঁয়ে যায়।
  64. আমি তো প্রত্যেক রসূলকে এজন্যই পাঠিয়েছি, যেন আল্লাহর অনুমতিক্রমে তাদের আনুগত্য করা হয়।যখন তারা নিজেদের উপর যুলম করেছিল,তখন যদি তোমার নিকট চলে আসত আর আল্লাহর কাছে (নিজেদের অপরাধের জন্য) ক্ষমা চাইত,আর রসূলও তাদের জন্য ক্ষমা চাইত তাহলে অবশ্যই তারা আল্লাহকে তাওবা কবূলকারী ও পরম দয়ালুরূপে পেত।                                  [89:29; (9:102–105, 20:82, 5:10) (8:74–75, 9:100, 48:29, 58:4, 59:8–9) ক্ষমা প্রার্থনা- ৩:৩১,১৫৯; ৫:১৫; ৯:৭৯,৮০,১০৩,১০৪; ৪৭:১৯; ৬৩:৫,৬; ২:২১৯; মুশরিকদের ক্ষমা ৯:৮০,৮১,৯৬,১১৩,১১৪,১১৫; ১১:৪৬; ২:৯৯; ৫:৪৭ তাওবাকারী ৫:৯৩; ৮:৩৮; ৩৯:৫৩,৫৪]
  65. অতএব তোমার রবের কসম, যতক্ষণ না তারা নিজেদের সকল বিরোধে তোমাকে বিচারক নির্ধারণ করে,  তারপর তুমি যে ফয়সালা দেবে সে ব্যাপারে নিজদের অন্তরে কোন দ্বিধা অনুভব না করে এবং পূর্ণ সম্মতিতে আত্মসমর্পণ করে মেনে নেয়।                                                        [ইউছাল্লিমু তাসলিমা= নবীকে সালাম দেয়া বা দুরূদ পড়া নয় পূর্ণ সম্মতিতে আত্মসমর্পণ  করা্                                                                                [৩৩:৫৬; ৪:৬৫) [২৪:৫১; ৪৯:১৫; ৩৩:৩৬; ৩:৩১; ৪:৮০]   
  66. আর যদি আমি তাদের উপর লিখে দিতাম যে,তোমরা নিজেরা নিজেদেরকে হত্যা করো (নিরপরাধরা অপরাধীদের হত্যা করো) অথবা তোমাদের ঘরবাড়ি থেকে বেরিয়ে যাও, তাহলে অল্প কিছু লোক ছাড়া অন্যরা তা করত না।তবে (কুরআনের মাধ্যমে) যে ওয়াজ তাদেরকে করা হচ্ছে তা যদি তারা পালন করত,তবে তা তাদের পক্ষে কল্যাণকর/মঙ্গলজনক হত। এবং তাদের (ঈমান) শক্ত/মজবুত হতো ।
  67. আর তখন আমি অবশ্যই তাদেরকে আমার পক্ষ থেকে এক মহাপুরস্কার প্রদান করতাম।
  68. এবং অবশ্যই আমি তাদেরকে (জান্নাতে যাওয়ার) সরল-সঠিক (সিরাতুল মুস্তাকিমের) পথে পরিচালিত (হেদায়াত) করতাম।
  69. আর যে কেউ আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য করবে সে আল্লাহর নিয়ামাতপ্রাপ্ত নবী, সিদ্দীক (সত্যবাদী), সাক্ষীদাতা/শহীদ ও মুসলিহীন/সংশোধিত/সংস্কৃত ব্যক্তিদের সঙ্গী হবে। আর তারা কতই না  চমৎকার/দারুণ/উত্তম সঙ্গী ! [সিদ্দীক/সত্যবাদী কারা- ৪৯:১৫]
  70. এই সম্মান‑মর্যাদা আল্লাহর পক্ষ থেকে। সব কিছু জানার জন্য আল্লাহই তো যথেষ্ট।
  71. তোমরা যারা ঈমান এনেছো শোনো! তোমরা  সব সময় সতর্ক থাকো।অতঃপর  দলে দলে ভাগ হয়ে অথবা সবাই একত্রে (অভিযানে) বেরিয়ে পড়।
  72. আর নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ এমন আছে যে (জিহাদে যেতে) গড়িমসি করবেই।তারপর যদি তোমাদের কোন বিপদ-আপদ আসে তাহলে সে বলবে, “আল্লাহ আমার ওপর বড়ই মেহেরবানি করেছেন, কারণ আমি তাদের সাথে (সেখানে) উপস্থিত ছিলাম না।”
  73. আর যদি তোমরা আল্লাহর পক্ষ থেকে কোন অনুগ্রহ/সম্মান লাভ করো তাহলে নিশ্চয়ই সে বলবে, —যেন তোমাদের ও তার মধ্যে কোন বন্ধুত্ব/সম্পর্ক/সম্প্রীতি  ছিলনা— “হায়রে আফসোস, আমি যদি তাদের সঙ্গে থাকতাম তাহলে দারুণভাবে সফল হয়ে যেতাম !”
  74. সুতরাং যারা আখিরাতের জন্য দুনিয়ার জীবন বিক্রয় করে তারা যেন আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে।আর কেউ আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে নিহত কিংবা বিজয়ী হলে অচিরেই আমি তাকে মহাপুরস্কার প্রদান করব।
  75. তোমাদের কী হয়েছে যে, তোমরা আল্লাহর পথে এবং অসহায় নারী-পুরুষ আর শিশুদের (রক্ষার) জন্য যুদ্ধ করবে না, যারা দু‘আ করছে- ‘হে আমাদের রব! আমাদেরকে এ জনপদ থেকে বের (উদ্ধার) করুন যার অধিবাসীরা যালিম  এবং আমাদের জন্য আপনার পক্ষ থেকে একজন অভিভাবক নির্ধারণ করুন আর আপনার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য একজন সাহায্যকারী দিন।” [৪:৯৮,৯৯; ৯:৯৯-১০১]
  76. যারা ঈমানদার তারা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে। আর যারা কাফের তারা যুদ্ধ করে তাগূতের পথে।  কাজেই তোমরা শয়তানের বন্ধু/দোসর/আউলিয়া/অভিভাবকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর। শয়তানের কায়দা-কৌশল/চক্রান্ত‑ফন্দি অবশ্যই দুর্বল।
  77. তুমি কি তাদেরকে দেখনি, যাদেরকে বলা হয়েছিল, “তোমরা তোমাদের হাত সংযত করো,সংযোগ প্রতিষ্ঠা করো ও পরিশুদ্ধ হও।” তারপর যখন তাদের উপর যুদ্ধ লিখে দেয়া হল, অমনি তাদের মধ্যে একটি দল মানুষকে ভয় করতে লাগল, ঠিক আল্লাহকে ভয় করার মত বরং তার চেয়েও বেশি। তারা বলতে লাগল, “হে আমাদের রব! কেন তুমি আমাদের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দিলে? আমাদেরকে কিছু সময়ের জন্য অবকাশ দিলে না কেন?” বলে দাও, “এ দুনিয়ার ভোগ‑বিলাস‑আনন্দ তো অতি সামান্য। মোত্তাকীদের জন্য পরকালই উত্তম। আর তোমাদের প্রতি বিন্দু পরিমাণও জুলুম করা হবে না।”
  78. তোমরা যেখানেই থাক না কেন মৃত্যু তোমাদের নাগাল পাবেই, এমনকি যদি তোমরা সুরক্ষিত দুর্গেও থাকো। যদি তাদের কোন কল্যাণ ঘটে, তখন তারা বলে, এটা আল্লাহর তরফ হতে। পক্ষান্তরে যদি তাদের কোন অকল্যাণ ঘটে তখন বলে, ‘এটা তো তোমার তরফ হতে।’ বল, ‘সবকিছুই আল্লাহর তরফ থেকে। এ সম্প্রদায়ের কি হল যে,এরা একেবারেই কোন কথা বুঝতে চেষ্টা করেনা! 
  79. তোমার কোন কল্যাণ হলে তা হয় আল্লাহর তরফ থেকে এবং তোমার যে কোন অকল্যাণ হলে তা হয় তোমার নিজের কারণে । আমি তোমাকে মানুষের জন্য রসূলরূপে প্রেরণ করেছি, (এ কথার) সাক্ষী হিসেবে আল্লাহ্ই যথেষ্ট।
  80. যে রসূলের আনুগত্য করল, সে তো আল্লাহরই আনুগত্য করল, কেউ মুখ ফিরিয়ে নিলে (জোরপূর্বক তাকে সৎপথে আনার জন্য) আমি তোমাকে তাদের প্রতি পাহারাদার/তত্ত্বাবধায়ক/রক্ষক করে পাঠাইনি।
  81. তারা মুখেই আনুগত্য করে, কিন্তু যখন তোমার কাছ থেকে চলে যায়, তখন রাতে তাদের একদল তুমি যা বল সেই কথার বিরুদ্ধে শলা পরামর্শ করে।সুতরাং তুমি তাদেরকে এড়িয়ে চল/ উপেক্ষা করো এবং আল্লাহর ওপর ভরসা কর। উকিল হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট।
  82. তারা কি কুরআন নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা/গবেষণা করে না? এই কোরআন যদি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছ থেকে আসত তাহলে তারা এতে অনেক বৈপরীত্য/বহু অসঙ্গতি দেখতে পেত। [2:23, 10:38, 11:13–14, 17:88]
  83. আর যখন তাদের কাছে শান্তি/নিরাপত্তা  কিংবা ভয়-ভীতি/শংকাজনক কোন সংবাদ আসে, তখন তারা সেটা রটিয়ে দেয়। ( তা না করে ) যদি তারা সেটি রাসূলের কাছে এবং তাদের কর্তৃত্বের অধিকারী(উলিল আমরদের) কাছে পৌঁছে দিত, তাহলে সেটা তাদের থেকে (সরাসরি) এমন লোকেরা জানতে পারত যারা তার প্রকৃত সঠিক তথ্যসূত্র উদ্‌ঘাটন করতে পারত। তোমাদের উপর যদি আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমত না থাকত তবে অল্প কয়েকজন ছাড়া তোমরা (সবাই) শয়তানের অনুসরণ করতে। 
  84. অতএব তুমি আল্লাহর পথে যুদ্ধ কর,তুমি শুধু তোমার নিজের জন্য দায়ী।আর মুমিনদেরকে উদ্বুদ্ধ করো। আশা করা যায় আল্লাহ অচিরেই কাফিরদের শক্তি প্রতিহত করে দাপট থামিয়ে দেবেন। আল্লাহর শক্তি-দাপটই সবচেয়ে প্রবল এবং তাঁর শাস্তিই সবচেয়ে কঠোর।
  85. যে ব্যক্তি ভাল কাজের জন্য সুপারিশ করবে, তার জন্য তাতে (সাওয়াবের) একটি অংশ থাকবে, আর যে খারাপ কাজের সুপারিশ করবে তার জন্য তাতে (পাপের) একটি অংশ থাকবে।আর আল্লাহ সব কিছুর উপর নজর রাখেন।
  86. যখন তোমাদেরকে সসম্মানে অভিবাদন জানানো হয়, তখন তোমরা তার চেয়ে আরো ভাল জওয়াবী অভিবাদন জানাবে কিংবা (কমপক্ষে) অনুরূপভাবে দাও, নিশ্চয়ই আল্লাহ (ক্ষুদ্র‑বৃহৎ) সব বিষয়ে পূর্ণ হিসাব গ্রহণকারী।
  87. আল্লাহ, তিনি ছাড়া (সত্যিকারের) কোন ইলাহ/বিধাতা/বিধানদাতা/আইনদাতা নেই।অবশ্যই তিনি তোমাদেরকে কেয়ামতের দিনে একত্রিত করবেন, এতে কোন সন্দেহ নেই। হাদীস বর্ণনায় আল্লাহর চেয়ে অধিক সত্যবাদী কে হতে পারে?আল্লাহর চেয়ে অধিক সত্য হাদিস বলার মতো আর কেইবা থাকতে পারে?
  88. তোমাদের কী হল যে, মুনাফিকদের ব্যাপারে তোমরা দু’ দলে বিভক্ত হয়ে গেলে?  অথচ আল্লাহ তাদের এ কার্যকলাপের কারণে তাদেরকে উল্টা মুখে ফিরিয়ে দিয়েছেন (ইসলাম থেকে আবার কুফরের দিকে)। আল্লাহ যাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছেন তোমরা কি তাদেরকে হিদায়াতের পথে আনতে চাও? আসলে আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তার জন্য তুমি কক্ষনো কোন পথ খুঁজে পাবে না। [2:148, 2:193, 2:256, 4:88, 5:48, 6:104, 6:107–108, 7:177–178, 10:99, 12:108, 18:29, 22:39–40, 27:80–81, 39:41, 56:79, 73]
  89. তারা চায় যে, তারা নিজেরা যেমন কুফরী করেছে, তোমরাও তেমনি কুফরী কর,এবং এভাবে সবাই একই রকম/সমান হয়ে যাও। সুতরাং আল্লাহর রাস্তায় হিজরত না করা পর্যন্ত তাদের মধ্য থেকে কাউকে তোমরা বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না।অতএব তারা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে তাদেরকে পাকড়াও/গ্রেফতার কর এবং তাদেরকে যেখানেই পাও হত্যা কর।আর তাদের মধ্য থেকে কাউকে অভিভাবকরূপে বা সাহায্যকারীরূপে গ্রহণ করো না।
  90. তবে (তাদেরকে হত্যা করো না) যারা এমন কোন দলের সাথে মিলিত হয় যাদের সাথে তোমাদের কোন শান্তিচুক্তি/সন্ধিচুক্তি আছে। তেমনি (তাদেরকেও হত্যা করো না) যারা তোমার কাছে আসে আর তারা ঝগড়া-বিবাদে উৎসাহী নয়, তারা না তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে চায়, না নিজের কওম/সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে। আর আল্লাহ যদি ইচ্ছে করতেন, তবে তাদেরকে তোমাদের চেয়ে অধিক শক্তিশালী করতেন,সে অবস্থায় নিশ্চয়ই তারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করত। অতএব, তারা যদি তোমাদের থেকে সরে যায় এবং তোমাদের সাথে যুদ্ধ না করে সন্ধি/শান্তিচুক্তি করতে চায় তাহলে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাদের বিরুদ্ধে কিছু করার পথ রাখেননি (অর্থাৎ তাহলে তোমরা তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে না)।   [24:22]
  91. শিঘ্রী তোমরা আরো কিছু লোক পাবে যারা তোমাদের কাছে শান্তি/নিরাপত্তা চায় আবার তাদের নিজেদের কওমের লোকদের কাছেও শান্তি/নিরাপত্তা চায়। এদেরকে যখনই ফেতনার (মহা বিপর্যয়,দাঙ্গা, বিশৃংখলা,শিরক, কুফ্‌র ইত্যাদির) দিকে ফিরে আসতে প্রলুব্ধ করাহয় তখনই তারা আবার তাতে জড়িয়ে যায়। সুতরাং যদি তারা তোমাদের শত্রুতা হতে সরে না যায় অথবা তোমাদের সাথে সন্ধি/শান্তিচুক্তি না করে কিংবা নিজেদের হাতকে সংযত না রাখে, তবে তাদেরকে গ্রেফতার করবে আর যেখানেই পাবে হত্যা করবে, আমি তোমাদেরকে এদের বিরুদ্ধে (ব্যবস্থা গ্রহণের) সুস্পষ্ট কর্তৃত্ব/অধিকার দিয়ে দিলাম।
  92. একজন মুমিন আরেকজন মুমিনকে হত্যা করতে পারে না (কোন মুমিনকে হত্যা করলে হত্যাকারী আর মুমিন থাকে না), তবে ভুল/দূর্ঘটনাবশত (হত্যা করলে ভিন্ন কথা)। কেউ যদি কোন মুমিনকে ভুলক্রমে/দূর্ঘটনাবশত হত্যা করে তাহলে তাকে একজন মুমিন বন্দীকে মুক্ত করতে হবে এবং নিহতের পরিবারকে রক্তমূল্য পরিশোধ করতে হবে, তবে তারা যদি (রক্তমূল্যের টাকা) সাদাকা করে দেয় (তাহলে দিতে হবে না)। যদি নিহত ব্যক্তি তোমাদের কোন শত্রুপক্ষের লোক হয় এবং মুমিন হয় তাহলে একজন মুমিন বন্দী মুক্ত করতে হবে। আর যদি এমন কোন কওমের লোক হয় যাদের সাথে তোমাদের শান্তিচুক্তি/সন্ধিচুক্তি আছে তাহলে তার পরিবার‑পরিজনকে রক্তমূল্য পরিশোধ করতে হবে এবং একজন মুমিন দাস মুক্ত করতে হবে। আর যে সঙ্গতিহীন/অক্ষম সে একাদিক্রমে দুই মাস সিয়াম পালন করবে। এটাই হল আল্লাহর নিকট তাওবাহ করার ব্যবস্থা,আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়। [2:178; 5:45 ]  
  93. আর যে ব্যক্তি  ইচ্ছাকৃতভাবে কোন মুমিনকে হত্যা করবে,তার শাস্তি জাহান্নাম, সেখানে সে চিরকাল থাকবে। তার উপর আল্লাহর ক্রোধ ও অভিসম্পাত/লা‘নত। আল্লাহ তার জন্য ভীষণ/মহাশাস্তির ব্যবস্থা করে রেখেছেন। 
  94. তোমরা যারা ঈমান এনেছ শোনো! তোমরা যখন আল্লাহর পথে যাত্রা করবে তখন (কে বন্ধু আর কে শত্রু) যাচাই‑বাছাই করে নেবে। এবং কেউ তোমাদেরকে সালাম দিলে তাকে বলো না যে, ‘তুমি মুমিন নও’।তোমরা দুনিয়ার জীবনের সম্পদ পেতে চাও; অথচ আল্লাহর কাছে প্রচুর গণিমতের সম্পদ আছে। [6:54, 9:128, 90:17; 48:15;16] 
  95. মুমিনদের মধ্যে যারা অক্ষম নয় অথচ ঘরে বসে থাকে ও যারা আল্লাহর পথে স্বীয় (নফস) জান‑মাল/ধন-সম্পদ দিয়ে জিহাদ করে তারা সমান নয়। যারা নিজেদের জান‑মাল/ধন-সম্পদ দিয়ে  জিহাদ করে তাদেরকে আল্লাহ যারা ঘরে বসে থাকে তাদের চেয়ে মর্যাদায় শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। আল্লাহ সকলের জন্যই কল্যাণের ওয়াদা/প্রতিশ্রুতি দান করেছেন। যারা ঘরে বসে থাকে তাদের উপর যারা জিহাদ করে (মুজাহিদ) তাদেরকে আল্লাহ মাহপুরস্কারের ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। [সবচেয়ে বড় জিহাদ/ জিহাদান কাবিরা হচ্ছে কুরআন দিয়ে জিহাদ 25:52]
  96. তাঁর পক্ষ  থেকে অনেক মর্যাদা,মাগফিরাত/ক্ষমা ও রহমত রয়েছে। আর আল্লাহ হলেন ক্ষমাশীল,পরম দয়ালু/মেহেরবান।
  97. নিজেদের আত্মার উপর জুলুমকারী অবস্থায় ফেরেশতারা যাদের প্রাণ নেয়/জান কবজ করে তাদেরকে তারা প্রশ্ন করে, “তোমরা কি অবস্থায় ছিলে?” উত্তরে তারা বলে, “আমরা জমিনে দুর্বল ক্ষমতাহীন ছিলাম।ফেরেশতারা বলে,‘আল্লাহর যমীন কি এতটা প্রশস্ত ছিল না যে তোমরা হিজরত করতে পারতে ? সুতরাং তাদের আবাসস্থল হবে জাহান্নাম আর তা কতই না নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তন স্থান!
  98. কিন্তু যে সকল অসহায় পুরুষ, নারী ও শিশু যারা কোন উপায় বের করতে পারে না আর কোন রাস্তা/পথও খুঁজে পায় না (তাদের কথা ভিন্ন)।
  99. অতঃপর আশা করা যায় যে, আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করবেন। আর আল্লাহ মার্জনাকারী (গুনাহ মোচনকারী) বড়ই ক্ষমাশীল।
  100. আর যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে হিজরাত করবে,সে পৃথিবীতে অনেক আশ্রয়স্থল ও প্রাচুর্য/ লাভ করবে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের উদ্দেশ্যে হিজরত করে নিজের ঘর থেকে বের হয়, তারপর (হিজরতে থাকা অবস্থায়) মারা যায়, তাকে পুরস্কৃত করা আল্লাহর দায়িত্ব হয়ে যায়।আর আল্লাহ তো অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
  101. আর যখন তোমরা যমীনে সফরে বের হবে তখন যদি কাফেরদের উৎপাতের/ফিতনার/অশান্তির/উপদ্রবের/ আক্রমণের ভয় থাকে তখন তোমাদের সংযোগ কসর/সংক্ষিপ্ত/ত্রুটি/প্রাসাদে/দূর্গে করাতে কোন দোষ নেই।নিশ্চয়ই কাফেররা তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। [কসর:-ত্রুটি 7:202;  কসর=প্রসাদ 7:202 7:74; 22:45; 25;10; 77:32]
  102. আর (কাফেরদের আক্রমণের ভয় থাকা অবস্থায়) যখন তুমি তাদের মাঝে থাকবে এবং তাদের নিয়ে (কুরআনের মা্ধ্যমে) সংযোগ সাধন করবে তখন তাদের একদল তোমার সাথে দাঁড়াবে এবং তারা তাদের অস্ত্র সঙ্গে রাখবে; তারপর যখন তারা পরম আনুগত্য সম্পন্ন করবে তখন তোমাদের পেছনে অবস্থান নেবে এবং সংযোগ করেনি এমন আরেকটি দল এসে তোমার সাথে সংযোগ সাধন করবে; তারাও সতর্ক থাকবে এবং নিজেদের অস্ত্র সঙ্গে রাখবে। কাফেররা চায় তোমরা তোমাদের অস্ত্রশস্ত্র ও মালামাল সম্পর্কে অসতর্ক থাক, যাতে তারা একবারে তোমাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে। আর বৃষ্টির কারণে যদি তোমাদের কষ্ট হয় কিংবা তোমরা অসুস্থ থাক তাহলে অস্ত্র রেখে দিলে তোমাদের কোন পাপ হবে না; তবে তোমরা সতর্ক থাকবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ কাফেরদের জন্য লাঞ্ছনাকর শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন। 
  103. অতঃপর যখন তোমরা সংযোগ পরিপূর্ণ করবে/ সিদ্ধান্ত গ্রহন করবে তখন দাঁড়িয়ে, বসে এবং শুয়ে আল্লাহকে স্মরণ করবে। অতঃপর যখন প্রশান্ত/নিরাপদ হবে তখন সংযোগে সুপ্রতিষ্ঠিত/সুদৃঢ়/অবিচল/অটল থাকবে। নিশ্চয়ই সংযোগ মুমিনদের উপর নির্দিষ্ট সময়ে লিখে দেয়া হয়েছে। [আতমান= প্রশান্ত ৮:১০; ১৩:২৮; ২২:১১; ৮৯:২৭; কদইয়া=সিদ্ধান্ত/চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত/মিমাংসা ২:১১৭,২১০; ৩:৪৭; ৪:৬৫; ১):১৯,৪৭,৫৪,৭১,৯৩; ১১:১১০; ১২:৪১; ১৭:২৩; ৩৩:৩৬; পরিপূর্ণ  ৮:২৯; ৩৩:২৩] আকিমু=সুপ্রতিষ্ঠিত/সুদৃঢ়/অবিচল/অটল ৪:১৩৫; ৫:৮ ; ৭০:৩৩; ৩:১৮; ৪২:১৫; ৪৬:১৩; ৪১:৩০; ২:২৮২]
  104. তোমরা (শত্রু) পক্ষের/কওমের/সম্প্রদায়ের লোকদের পেছনে ছুটতে দুর্বল (সাহস হারিয়ো) না। (এতে) যদি তোমাদের কষ্ট হয় তাহলে (মনে রাখবে) তাদেরও তো তোমাদের মতই কষ্ট হচ্ছে; আর তোমরা আল্লাহর কাছ থেকে যে (পুরস্কার তথা জান্নাত) আশা করো তারা তো তা আশা করে না। আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়।
  105. নিশ্চয়ই আমি তোমার প্রতি সত্য/সঠিক/খাটি/বিশুদ্ধ/নির্ভুল/নিখুত/যথার্থ/ত্রুটিহীন কিতাব (যার মধ্যে আছে কুরআন, আয়াত, হিকমাত,সতর্কবাণী,হুদা) নাযিল করেছি, যাতে তুমি মানুষের মধ্যে বিচার‑ফায়সালা-রায়-নিষ্পত্তি-মিমাংসা করতে পারো সে অনুযায়ী যা আল্লাহ তোমাকে দেখিয়েছেন। আর তুমি (কিতাবের সাথে) বিশ্বাসঘাতক/ধোঁকাবাজ/গাদ্দার (মানব রচিত কিতাববাদী মোল্লা,ঠাকুর,পাদ্রী,ফাদার,রাবাই,মৌলোভী,মওলানা) দের পক্ষে তর্ক করো না (সাবধান) ।
  106. আর তুমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
  107. আর যারা নিজেদের (নফসের) সাথে গাদ্দারী/বিশ্বাসঘাতকতা করে তাদের পক্ষে তুমি তর্ক‑বিতর্ক করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ কোন বিশ্বাসঘাতক/গাদ্দার পাপীষ্ঠকে ভালবাসেন না।
  108. তারা মানুষের কাছ থেকে (আল্লাহর কিতাবের মর্মবাণী ) গোপন করতে চায় কিন্তু আল্লাহর কাছ থেকে গোপন করতে পারে না; কারণ তারা যখন রাতভর (ষড়যন্ত্র করে মানবরচিত তালমুদ,মিসনা,মিদ্রাস,জোহার,সিদ্দুর,নবীইম,কেতুবীম,গেমারা,রোমান মিছাল,লিতুরগি,ছুম্মা থিলোযিকা,কনফেশনস,ইমিটেশন জি ঈসা,কানুন ল, ফিলোকালিয়া,বুখারি,তিরমিজি,নাসাই,মাজাহ,কাসির,তাবারি,হেদায়া,বেদায়া,মাবসুত,উম,কাফি,ইস্তিবসার,বালাগা,মাকাসিব,উসকা,ইতিকাদা,কুম্মি,আয়াশি.উলিয়াত.রিসালাত আমালিয়াত, রিজাল,ফিকাহ,শানে নুজুলের দ্বারা ওয়াজ মাহফিলের মাধ্যমে কিতাব‑আল্লাহর আলো নিভিয়ে দেয়ার) যা আল্লাহ  পছন্দ করেন না তখন তিনি তাদের সাথেই থাকেন। আল্লাহ তাদের  সকল কার্যকলাপ পরিবেষ্টন করে আছেন।
  109. হ্যা, তোমরাই তো তারা, যারা দুনিয়ার জীবনে তাদের পক্ষে বিতর্ক করছো। কিন্তু কিয়ামতের দিন তাদের পক্ষে আল্লাহর সাথে কে বিতর্ক করবে? কিংবা কে হবে তাদের পক্ষে উকীল?
  110. আর যে কেউ মন্দ/খারাপ/বাজে কাজ করবে কিংবা নিজের (নফসের)  প্রতি যুলম করবে তারপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবে, সে আল্লাহকে ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু পাবে।                       [4:17, 11:114]
  111. আর যে (ব্যক্তি) পাপ কামাই করবে,  বস্তুতঃ  সে তা নিজের(নফসের) বিরুদ্ধেই কামাই করবে (তার ভয়ংকর পরিণাম তাকেই ভোগ করতে হবে)। আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়।
  112. আর যে ব্যক্তি কোন অন্যায়- অপরাধ কিংবা পাপ করে, তারপর কোন নির্দোষ‑নিরপরাধ ব্যক্তির উপর চাপিয়ে দেয়, তাহলে সে তো (নিজের মাথায়ই ভয়ংকর) মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্য গুনাহের (অতি ভারি) বোঝা চাপিয়ে নিলো।
  113. আল্লাহ প্রদত্ত মর্যাদা ও রহমত যদি তোমার উপর না থাকতো তবে তাদের একদল তো তোমাকে পথভ্রষ্ট করতেই চেয়েছিল; কিন্তু তারা নিজেদেরকে ছাড়া অন্য কাউকে পথভ্রষ্ট করে না আর তারা তোমার কোন ক্ষতি  করতে পারবে না, কারণ আল্লাহ তোমার প্রতি কিতাব ও হিকমাত নাযিল করেছেন এবং তুমি যা জানতে না তা তোমাকে শিক্ষা দিয়েছেন এবং তোমার উপর রয়েছে আল্লাহর অপরিসীম বিশাল মর্যাদা/মেহেরবানি। 
  114. তাদের অধিকাংশ গোপন পরামর্শে কোন কল্যাণ নেই, তবে কল্যাণ আছে যে নির্দেশ দেয় সাদকাহ, ন্যায়সঙ্গত/ইনসাফের ও মানুষের মধ্যে সংশোধনের/ শান্তি/সন্ধি স্থাপনের। আর যে এসব কাজ আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য করে, আমি তাকে শীঘ্রই মহাপুরস্কার দান করব।
  115.  আর কারো নিকট সঠিক হেদায়েতের পথ প্রকাশ হওয়ার পর সে যদি রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে এবং মুমিনদের পথ ছাড়া অন্য পথ অনুসরণ করে, তবে যেদিকে সে ফিরে যায় সে দিকেই তাকে আমি ফিরিয়ে দেব এবং তাকে জাহান্নামের আগুনে দগ্ধ করাব, আর তা কতই না নিকৃষ্টতর প্রত্যাবর্তন স্থল।
  116. নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর (সত্তা বা বিধানের) সঙ্গে শরীক করাকে ক্ষমা করেন না, এছাড়া আর সব (পাপ) তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দেন।আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে শরীক করে সে তো চরম পথভ্রষ্টতা/গোমরাহীতে পতিত হল।   [4:48 ; 114:2–3; 9:113 22:51,79:39]
  117. তারা আল্লাহকে ছেড়ে অন্য যাদের কাছে দোয়া করে /প্রার্থনা করে তারাতো  কেবল শুধু  নারী-দেবী (দুর্গা-লক্ষী-স্বরস্বতী-লাত‑মানাত- উজ্জা ইত্যাদি) কেই ডাকে।এবং তারা  কেবল আল্লাহদ্রোহী শয়তানকেই ডাকে (উপাসনা করে) 
  118. আল্লাহ তাকে লা‘নাত করেছেন কারণ সে বলেছিল,“আমি অবশ্যই তোমার বান্দাদের মধ্য থেকে একটি নির্দিষ্ট অংশকে আমার অনুসারী করে নেব। [45:23; 9:31, 9:34, 45:23]
  119. আর অবশ্যই আমি তাদেরকে পথভ্রষ্ট করব,  মিথ্যা আশা-আকাঙ্খা/লোভ দেবো অবশ্যই তাদেরকে  নির্দেশ দেব ফলে তারা গৃহপালিত পশুর মতো নির্দেশ পালন করবে। আর অবশ্যই আমি তাদেরকে নির্দেশ দেব, ফলে তারা আল্লাহর সৃষ্টি বিকৃত করবেই’। আর আল্লাহর পরিবর্তে যে কেউ শয়তানকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করবে  সেতো প্রকাশ্য ক্ষতিতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।                  [আজানা- নির্দেশ পালন করবে ৮৪:২,৫]  2:34–36, 4:51, 4:60, 7:11, 15:30–32, 17:62, 18:50, 20:116, 38:74] 
  120. সে তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দেয় এবং তাদের হৃদয়ে মিথ্যা আশা-আকাঙ্খা-বাসনার সৃষ্টি করে। আর শয়তান তাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দেয় তাতো ছলনামাত্র। 4:51, 4:60
  121. এরাই তারা যাদের আবাসস্থল হলো জাহান্নাম।সেখান থেকে তারা পালাবার কোন জায়গা পাবেনা।
  122. আর যারা ঈমান আনবে ও সংশোধনের কাজ করবে , খুব শীঘ্রই আমি তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাবো, যাতে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত হচ্ছে।সেখানে তারা অনন্তকাল ধরে বাস করবে।এটা আল্লাহর সত্য ওয়াদা। কথায় আল্লাহর চেয়ে অধিক সত্যবাদী আর কে আছে? 
  123. তোমাদের আশা অনুযায়ী কিংবা কিতাবধারী (ইহুদি, খ্রীষ্টান,সিয়া,সুন্নি,সালাফি) দের আশা অনুযায়ী কিছুই হবে না। যে খারাপ কাজ‑কুকর্ম করবে তাকে তার প্রতিফল দেয়া হবে। আর আল্লাহ ছাড়া সে নিজের জন্য কোন অভিভাবক কিংবা সাহায্যকারী পাবে না।
  124. আর যে মুমিন ব্যক্তি সংশোধনের কাজ করবে, সে পুরুষ হোক কিংবা নারী হোক, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তার প্রতি অনু পরিমান ও জুলুম করা হবে না।  [4:53, 35:13]
  125. তার চেয়ে সুন্দরতম শান্তির জীবনধারা/জীবন-আদর্শ/দ্বীন আর কারই‑বা হতে পারে? যে আল্লাহর কাছে পরিপূর্ণভাবে নিজেকে সমর্পণ করে দিয়েছে এবং একনিষ্ঠভাবে ইব্রাহীমের মিল্লাতের পথ অনুসরণ করেছে?আর আল্লাহ ইবরাহীমকে একান্ত‑অন্তরঙ্গ‑খাটি বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছেন। 
  126. আর আসমান ও যমীনে যা কিছু আছে সব আল্লাহরই ।আর আল্লাহ সবকিছুকেই ঘিরে রেখেছেন।
  127. তারা তোমার কাছে নারীদের ব্যাপারে বিধান জানতে চায়।আল্লাহ তাদের ব্যাপারে (মুফতি হিসেবে) ফতোয়া দিচ্ছেন।কিতাবের মধ্য থেকে (সেই আয়াতগুলো) পড়ে শুনানো হচ্ছে, এতীম নারীদের সম্পর্কে।যাদেরকে তোমরা ন্যায্য পাওনা/প্রাপ্য হক দিচ্ছ না, তাদের জন্য যা নির্ধারন করে লিখে দেওয়া হয়েছে অথচ তাদেরকে বিয়ে করতে চাও! আর অসহায় শিশুদের ব্যাপারে, আর এতীম অনাথদের ব্যাপারেও তোমরা ন্যায়-বিচার/ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করবে। তোমরা যেটুকু ভালো কাজ করবে নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তা বেশ ভালো করেই জানেন। 
  128. যদি কোনো স্ত্রীর মনে এমন ভয়-শংকা দেখা দেয় যে, তার (প্রভূ চরিত্রের) স্বামী বাজে ব্যবহার/খারাপ ব্যবহার কিংবা অবজ্ঞা-অবহেলা করতে পারে তাহলে তারা নিজেদের মধ্যে আপোষ মীমাংসা করলে কোন দোষ নেই। বস্তুতঃ আপোষে  মীমাংসা/মিটমাট করে ফেলাই তো ভালো/কল্যাণকর/মঙ্গলজনক/উপকারী । মানুষের (নফসে) তো (সর্বদা) স্বার্থচিন্তা/কৃপনতা/লোভজনিত সংকীর্ণতা থাকে । আর তোমরা যদি নেককার/সৎকর্মশীল হও এবং সাবধানতা/সতর্কতা অবলম্বন করো, তাহলে (জেনে রেখো) তোমরা যা কিছু করো  নিশ্চয়ই আল্লাহ তার সব খবর রাখেন।  [2:228–234, 4:3, 4:19, 4:34–35, 33:49, 58:1, 65:1–4] 
  129. আর (জেনে রাখো) তোমরা যতই তীব্র ইচ্ছা-আশা-আকাঙ্খা কর না কেন তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে কখনোই  সম আচরণ/ সমান ব্যবহার/ইনসাফ/সুবিচার করতে পারবে না। সুতরাং তোমরা কোন একজনের প্রতি সম্পূর্ণরূপে ঝুকে পড়োনা এবং অপরজনকে ঝুলন্ত অবস্থায় রেখোনা । যদি তোমরা নিজেদেরকে সংশোধন কর এবং সাবধানতা/সতর্কতা অবলম্বন কর, তবে (জেনে রেখো) নিশ্চয়ই আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।   [4:3]
  130. আর যদি তারা (স্বামী-স্ত্রী) পরস্পর বিচ্ছিন্ন/পৃথক/ হয়ে যায় তাহলে আল্লাহ তাঁর প্রাচুর্য (সম্পদ) দ্বারা প্রত্যেককে অভাবমুক্ত করবেন। আর আল্লাহ প্রাচুর্যময়, প্রজ্ঞাবান।
  131. আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে তা সবই আল্লাহর। আর তোমাদের পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তাদেরকে এবং তোমাদেরকে আমি ওছিয়াত করেছি যে,(খবরদার) তোমরা আল্লাহ সম্পর্কে সাবধান হও। আর যদি তোমরা (সাবধান না হয়ে)  কুফরী কর তাহলে (তার কিচ্ছু যায় আসেনা)  আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে তা সবই তো আল্লাহর।  আর আল্লাহ  অভাবমুক্ত/মহাসম্পদশালী, প্রশংসিত।
  132. আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে তা সবই আল্লাহর। আর উকিল হিসেবে তো আল্লাহই যথেষ্ট।
  133. শোন হে মানব জাতি! তিনি যদি ইচ্ছা করেন তাহলে তোমাদেরকে সরিয়ে (তোমাদের স্থলে) অন্যদেরকে নিয়ে আসতে পারেন। আল্লাহ তা সব কিছু করার ক্ষমতা রাখেন।
  134. যে দুনিয়ার পুরস্কার চায় (তার জানা উচিত), আল্লাহর কাছে দুনিয়া ও আখেরাত (উভয় জগতের) পুরস্কার রয়েছে। আল্লাহ তো সবকিছু শোনেন, সবকিছু দেখেন।
  135. তোমরা যারা ঈমান এনেছ শোনো! তোমরা সবাই ইনসাফ তথা ন্যায়বিচারের উপরেই সুপ্রতিষ্ঠিত থাকবে আল্লাহর জন্য সাক্ষ্যদাতা হিসেবে। যদিও তা তোমাদের নিজেদের কিংবা পিতা-মাতার অথবা নিকটাত্মীয়দের বিরুদ্ধে হয়।(সাক্ষ্য যার বিরুদ্ধে যাক না কেন) সে ধনী হোক বা গরীব হোক আল্লাহ তাদের দু‘জনের তোমাদের চেয়ে বেশী শুভাকাঙ্ক্ষী/ঘনিষ্ঠ আপনজন। সুতরাং ইনসাফ তথা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে তোমরা প্রবৃত্তির/খেয়াল খুশির অনুসরণ করো না। আর যদি তোমরা ঘুরিয়ে- পেঁচিয়ে কথা বল কিংবা এড়িয়ে বা পাশ কাটিয়ে যাও তবে (জেনে রাখবে) তোমরা যা কিছু করো আল্লাহ তোমাদের  সমস্ত কাজকর্মের পরিপূর্ণ খবর রাখেন।
  136. তোমরা যারা ঈমান এনেছ শোনো! তোমরা ঈমান আন আল্লাহর প্রতি,তাঁর রাসূলের প্রতি এবং সে কিতাবের প্রতি যা তিনি তাঁর রাসূলের উপর নাযিল করেছেন এবং সে কিতাবের প্রতি যা তিনি পূর্বে নাযিল করেছেন। আর যে আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতাগণ, তাঁর কিতাবসমূহ, তাঁর রাসূলগণ এবং আখিরাত দিবসকে অস্বীকার করবে, সেতো সীমাহীন ঘোর পথভ্রষ্টতায় নিমজ্জিত হবে। [2:8, 2:177, 49:15., 2:62 2:101   3:78  3:78, 5:48, 12:108 . 2:30]
  137. নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে তারপর কুফরী করেছে, আবার ঈমান এনেছে তারপর আবারো কুফরী করেছে, এরপর কুফরীর মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে, আল্লাহ তাদের কখনোই ক্ষমা করবেন না এবং হেদায়েতের  কোন পথও দেখাবেন না।  [ 2:256]
  138. মুনাফিকদেরকে সুসংবাদ শুনিয়ে দাও যে, তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে।
  139. যারা মুমিনদের পরিবর্তে কাফিরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, তারা কি তাদের কাছে ইজ্জত-সম্মান চায়? অথচ যাবতীয় মান‑ইজ্জত তো আল্লাহরই অধিকারে।
  140. আর তিনি তো কিতাবে তোমাদের প্রতি নাযিল করেছেন যে,যখন তোমরা শুনবে, আল্লাহর  আয়াতসমূহ অস্বীকার করা হচ্ছে এবং সেগুলো নিয়ে হাসি-তামাশা /ঠাট্টা- বিদ্রূপ করা হচ্ছে,তখন তোমরা তাদের সাথে (অস্বীকার ও ঠাট্টা-বিদ্রূপকারীদের সাথে) বসবে না, যতক্ষণ না তারা অন্য কথার আলোচনায় লিপ্ত হয়। তাহলে (তাদের সাথে বসলে) তোমরাও তাদের মত হয়ে যাবে।নিশ্চয়ই আল্লাহ মুনাফিক ও কাফিরদের সকলকেই জাহান্নামে একত্রিত করবেন।[4:63, 6:68]
  141. যারা তোমাদের ব্যাপারে (অমঙ্গলের) অপেক্ষায় থাকে,যদি তোমাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে কোন বিজয় আসে তাহলে তারা বলে, “আমরা কি তোমাদের সাথে ছিলাম না? ”আর যদি কাফেরদের কোন সাফল্য আসে তাহলে (তাদেরকে) বলে, আমরা কি তোমাদের হয়ে তাদের বিরুদ্ধে প্রবল ছিলাম না ? আমরা কি মুমিনদের হাত থেকে তোমাদের রক্ষা করিনি ? তাই আল্লাহই কিয়ামতের দিনে তোমাদের মাঝে ফায়সালা করে দিবেন। আল্লাহ কখনো কাফিরদের জন্যে মুমিনদের বিরুদ্ধে  (বিজয়ের) কোনো পথ রাখবেন না। 
  142. নিশ্চয়ই মুনাফিকরা  (ঈমানের ভান করে) আল্লাহর সাথে ধোঁকাবাজি করে; অথচ এই ধোকাবাজী তাদের নিজেদের বিরুদ্ধেই করে। আর যথন সংযোগে যুক্ত হয় তখন শৈথিল্যের সাথে লোক দেখানোর জন্য  যুক্ত হয়। তারা খুব কমই আল্লাহর স্মরণ/মূল থিম/মূল বক্তব্য/কেন্দ্রীয় বার্তা নেয়।
  143. তারা এই অবস্থার মধ্যে (ঈমান ও কুফরির মধ্যে) দোদুল্যমান; না এদের দিকে না ওদের দিকে।আর আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তুমি কখনো তার জন্য কোন পথ পাবে না। [4:88]
  144. তোমরা যারা ঈমান এনেছ শোনো! তোমরা মু’মিনদের পরিবর্তে কাফিরদেরকে আউলিয়া হিসেবে গ্রহণ করো না। তোমরা কি আল্লাহর জন্য নিজেদের বিরুদ্ধে একটি স্পষ্ট প্রমাণ যোগাড় করে দিতে চাও?
  145. নিশ্চয়ই মুনাফিকরা জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে থাকবে। আর তুমি কখনও তাদের জন্য কোন সাহায্যকারী পাবে না।
  146. তবে যারা তাওবা করবে-ফিরে আসবে নিজেদেরকে শুধরে নেবে/সংশোধিত হবে  আল্লাহকে শক্ত‑মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরবে এবং শুধু আল্লাহর (সন্তুষ্টির) জন্য নিজেদের দ্বীনকে একনিষ্ঠভাবে গ্রহণ করবে তারা মুমিনদের সাথে থাকবে। আর অতি শীঘ্রই আল্লাহ মুমিনদেরকে মহাপুরস্কার দান করবেন।
  147. আল্লাহ তোমাদেরকে শাস্তি দেবেন কেন? যদি তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর আর ঈমান আন  তবে আল্লাহ (ভালো মানুষদের) পুরস্কারদাতা, মহাজ্ঞানী।
  148. আল্লাহ মন্দ বা খারাপ কথার প্রচার‑প্রচারণা/প্রপাগান্ডা  (একেবারেই) পছন্দ করেন না; তবে কারো প্রতি জুলুম হয়ে থাকলে (তার কথা আলাদা) আল্লাহ সবকিছু শোনেন, সবকিছু জানেন।
  149. তোমরা যদি কোন ভাল কাজ প্রকাশ্যে কর কিংবা তা গোপনে কর অথবা (কারো) কোন দোষ ক্ষমা করে দাও, তাহলে (জানবে) আল্লাহও ক্ষমাশীল, ক্ষমতাবান।
  150. নিশ্চয়ই যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলদের অবিশ্বাস করে এবং আল্লাহ ও তাঁর (সকল) রাসূলদের মধ্যে পার্থক্য করতে চায় আর বলে (এসব রাসূলদের) কাউকে আমরা মানি আর কাউকে মানি না, আর তারা এর (কুফর ও ঈমানের) মাঝামাঝি একটা রাস্তা বের করতে চায় ।  [ 29:61–63]
  151. তারাই প্রকৃত/ কাফের; আর আমি (এই) কাফেরদের জন্য লাঞ্ছনাকর শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি।
  152. আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলদেরকে বিশ্বাস করে এবং তাদের কারো মধ্যে পার্থক্য করে না, তিনি খুব শীঘ্রই তাদেরকে তাদের পুরস্কার দান করবেন, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
  153. আহলে কিতাবীরা তোমার কাছে তাদের জন্য আসমান থেকে একটি কিতাব নাযিল করতে বলে; বস্তুতঃ (এটা নতুন কিছু নয়) তারা তো মূসার কাছে এর চেয়েও বড় দাবী করেছিল।“ তারা বলেছিল, (হে মূসা!) তুমি প্রকাশ্যে আমাদের আল্লাহকে দেখাও।” তখন তাদের এই অন্যায়ের জন্যই তাদের ওপর বজ্রপাত হয়েছিল। তারপর তাদের কাছে প্রকাশ্য দলিল প্রমাণাদি আসার পরেও তারা গরুর বাছুর পূজা করেছিল । কিন্তু ওটাও আমি ক্ষমা করেছিলাম, আর মূসাকে দিয়েছিলাম সুস্পষ্ট প্রমাণ। [2:55]
  154. আর তাদের কাছ থেকে প্রতিজ্ঞা নেওয়ার জন্য তূর পাহাড়কে তাদের ওপরে তুলে ধরেছিলাম এবং তাদেরকে বলেছিলাম, “পরম আনুগত্য স্বীকার করে দরজা দিয়ে প্রবেশ কর” । তাদেরকে আমি আরও বলেছিলাম, “শনিবারের ব্যাপারে সীমালঙ্ঘন/বাড়াবাড়ি করো না”। এভাবে তাদের কাছ থেকে কঠোর প্রতিজ্ঞা/প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলাম।   [2:63]
  155. কিন্তু তারা লা‘নতগ্রস্ত হয়েছিল তাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ আল্লাহর আয়াতসমূহ অমান্য/অস্বীকার/গোপন/কুফরী করা, অন্যায়ভাবে নবীদেরকে হত্যা করা এবং এ কথা বলার কারণে যে, ‘আমাদের অন্তরসমূহ আচ্ছাদিত’।  বরং তাদের কুফরির কারণেই আল্লাহ তা (তাদের অন্তরসমূহ) সীল করে দিয়েছেন; সুতরাং অল্পসংখ্যক ছাড়া তারা ঈমান আনবে না।
  156. আর তাদের কুফরীর কারণে  আর মারইয়ামের  বিরুদ্ধে মারাত্মক অপবাদ দেয়ার কারণে।
  157. এবং তাদের এ কথার কারণে যে,‘আমরা আল্লাহর রাসূল মাসীহ ঈসা ইবনু মারইয়ামকে হত্যা করেছি’। অথচ তারা তাকে হত্যা করেনি, শূলে ক্রুশবিদ্ধও করেনি;বরং তাদেরকে ধাঁধায় ফেলা হয়েছিল। আর যারা তাতে মতবিরোধ করেছিল,তারা আসলে তার ব্যাপারে সন্দেহের মধ্যে ছিল। শুধু অমূলক ধারণার/অনুমানের অনুসরণ ছাড়া এ ব্যাপারে তাদের কোন জ্ঞানই ছিল না। এটা নিশ্চিত সত্য যে, তারা তাকে হত্যা করেনি।
  158. বরং আল্লাহ তাঁর কাছে তাকে (ঈসাকে) মর্যাদায় উচু করেছেন। আল্লাহ মহা পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।                                                                                                                    [৫:১১৬; রফাআ;-সুউচ্চ মর্যাদা ৮৮:১৩; ৮০:১৪; ৫৬:৩৪; ৫২:৫; ৪০:১৫; ৯৪:৪; ৮৮:১৮; ৭৯:২৮; ৫৮:১১; ৫৫:৭; ৪৯:২; ৪৩:৩২; ২৪:৩৬; ১৯:৫৭; ১৩:২; ৭:১৭৬; ১২:৭৬; ২:২৫৩; রফাআ’-সুউচ্চ মর্যাদা,সমুন্নত  2:253; 6:83,165; 7:176; 12:76; 24:36; 19:56,57; 35:10; 43:32; 49:2; 52:5; 56:34;  58:11; 80:14; 88:13; 94:4; 40:15] 
  159.  কিতাবীদের মধ্যে এমন কেউ নেই, যে তার মৃত্যুর পূর্বে (ঈসাকে যে ক্রুশবিদ্ধ করা হয় নি,এবং ঈসা/যীশু তার পাপের বোঝা মাথায় নিয়ে তাকে পাপমুক্ত করেনি,তাকে আসমানে উঠিয়ে নেয়া হয়নি এই বিষয়ের) প্রতি ঈমান আনবে না* এবং কিয়ামতের দিনে সে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষী হবে। [৫;১১৬,১১৭ *মৃত্যুর ফেরেশতা যখন চলে আসবে তাকে কর্মফল অনুযায়ী জান্নাত জাহান্নামের সংবাদ দেবে-(১৬:২৮-৩২) তখন মৃত্যুর ঠিক পূর্ব মুহূর্তে কিতাবীরা বুঝতে পারবে ঈসাকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয় নি আর তিনি তাদের পাপের বোঝা নিয়ে চলেও যাননি। কিন্তু তখন তাদের এই বিশ্বাস/বোধোদয় কোনো কাজে আসবে না এবং কেয়ামতের দিন ঈসা নিজেই তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষী দেবেন। 5:116–17 তাছাড়া ৪‑১৫৪ তাড়া শনিবারের পবিত্রতা ভঙ্গ করে রবিবার পবিত্র দিন বানিয়ে গুরুতর পাপ করেছে; এবং শিয়া সুন্নি মতবাদ অনুযায়ী তাকে মৃত্যু না দিয়ে আসমানে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে,কেয়ামতের আগে ইমাম মেহেদীর পরে আবার আসমান থেকে নেমে আসবে)]
  160. আমি ইহূদীদের জন্য উত্তম খাবারগুলো যা তাদের জন্য হালাল ছিল, তা হারাম করে দিয়েছি তাদের বাড়াবাড়ি/অবাধ্য/জুলুমের কারণে আর বহু লোককে আল্লাহর পথে তাদের বাধা দেয়ার কারণে।  [4:161]
  161. নিষেধ করা সত্ত্বেও রিবা/সুদগ্রহণের কারণে এবং অন্যায়ভাবে মানুষের ধন-সম্পদ  ভক্ষণ (গ্রাস/হরণ) করার কারণে। আর তাদের মধ্যে যারা কাফের তাদের জন্য আমি এক যন্ত্রণা-দায়ক শাস্তি প্রস্তুত রেখেছি
  162. কিন্তু তাদের মধ্যে যারা জ্ঞানে পরিপক্ক তারা এবং মুমিনগণ‑তোমার কাছে যা নাযিল করা হয়েছে এবং তোমার পূর্বে যা নাযিল করা হয়েছিল তা বিশ্বাস করে;আর যারা সংযোগ প্রতিষ্ঠা করে ও পবিত্রতা/পরিশুদ্ধিতা অর্জন করে এবং আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে; তাদেরকে খুব শীঘ্রই আমি মহাপুরস্কার প্রদান করব।  [2:62, 3:19, 4:125] 
  163. নিশ্চয়ই আমি তোমার কাছে ওহী পাঠিয়েছি; যেমন ওহী পাঠিয়েছিলাম নূহের কাছে ও তার পরবর্তী নবীদের কাছে। আরো ওহী পাঠিয়েছিলাম ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকূব ও তার সন্তানদের কাছে এবং ঈসা, আইয়ূব, ইউনুস, হারূন ও সোলায়মানের কাছে। আর দাউদকে দিয়েছিলাম যবূর/অংশ/টুকরা/খাতা/ছোট ছোট পুস্তক।                                                                [যবূর=অংশ/টুকরা/খাতা/আমলনামা/ছোট পুস্তক /কিতাব ১৮:৯৬; ২৫:৫৩;৫৪:৫২;৩৫:২৫; ৫৪:৪৩]
  164. আর অনেক রাসূল, যাদের বর্ণনা তোমাকে আগে দিয়েছি এবং অনেক রাসূল, যাদের কথা তোমাকে বলিনি। আর আল্লাহ মূসার সাথে সুস্পষ্টভাবে কথা বলেছেন।
  165. রসূলদের পাঠিয়েছিলাম সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী হিসেবে; যাতে রসূল আসার পরে আল্লাহর উপর মানুষের কোন অযুহাতের সুযোগ না থাকে।  আর আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
  166. কিন্তু আল্লাহ নিজেই সাক্ষ্য দিচ্ছেন, যা আল্লাহ তোমার কাছে নাজিল করেছেন, তা নিজের জ্ঞানভান্ডার থেকেই তো নাজিল করেছেন। আর মালায়িকারাও সাক্ষ্য দিচ্ছে। আর সাক্ষী হিসেবে আল্লাই যথেষ্ট। 
  167. নিশ্চয়ই যারা (আল্লাহর আয়াত গোপন/অস্বীকার/অবজ্ঞা/অমান্য) কুফরী করে আর আল্লাহর (কুরআনের) পথ হতে (মানুষকে) ফিরিয়ে রাখে/বাধা দেয়; তারা তো চরম পথভ্রষ্টতায় পথভ্রষ্ট হয়ে বহুদূর চলে যায়।
  168. নিশ্চয়ই যারা (আল্লাহর আয়াত গোপন/অস্বীকার/অবজ্ঞা/অমান্য) কুফরী করে এবং জুলুম করে, আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করবেন না এবং তাদেরকে হেদায়েতের পথও দেখাবেন না।
  169. জাহান্নামের পথ ছাড়া।সেখানে তারা  চিরস্থায়ীভাবে অনন্তকাল বসবাস করবে। আর এটা আল্লাহর জন্য অতি সহজ।
  170. হে মানব জাতি শোনো! রাসূল তো তোমাদের কাছে তোমাদের রবের পক্ষ থেকে খাটি সত্য (কুরআন) নিয়ে এসেছে; সুতরাং তোমরা ঈমান আন, তা তোমাদের জন্য দারুন/সুন্দর/কল্যাণকর/মঙ্গলজনক  হবে।আর যদি (অবিশ্বাস/গোপন/অস্বীকার/অবজ্ঞা/অমান্য) কুফরি করো তাহলে (জেনে রেখো) আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে সবই আল্লাহর। আর সব কিছু জানেন/মহাজ্ঞানী,প্রজ্ঞাময়।
  171. হে কিতাবধারীরা! তোমরা তোমাদের দ্বীনের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করো না এবং আল্লাহ সম্পর্কে সত্য ছাড়া কিছুই বলবে না।  মারইয়ামের পুত্র মাসীহ ঈসা কেবলমাত্র আল্লাহর রাসূল ও তাঁর কালিমা,যা তিনি মারইয়ামের কাছে পাঠিয়েছিলেন এবং তাঁর পক্ষ থেকে রূহ। সুতরাং তোমরা সবাই আল্লাহ ও তাঁর রাসূলদের প্রতি ঈমান আন এবং (কক্ষনো) এমন কথা বলো না,ট্রিনিটি/ত্রিত্ববাদ/ ‘তিন’ (অর্থাৎ প্রভু ঈশ্বর/রব হচ্ছে তিনের সমষ্টি ( ঈসা/যীশু/জিসাস + আল্লাহ+ রূহ/জীব্রাইল)। (সাবধান, এমন কথা বলা থেকে) বিরত থাক; এতে তোমাদের মঙ্গল/কল্যান হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহই একমাত্র ইলাহ, তিনি পবিত্র মহান এ থেকে যে, তাঁর কোন সন্তান হবে। আসমানসূহে যা রয়েছে এবং যা রয়েছে যমীনে, তার সব কিছু (একমাত্র) আল্লাহরই।আর উকিল হিসেবে আল্লাহই তো যথেষ্ট। [17:111] 15:29, 32:7–9, 38:72 ‚2:255]
  172. মসীহ (ঈসা) আল্লাহর বান্দা হতে কখনো নিজেকে ছোট/হেয়/তুচ্ছ/নিম্নমানের মনে করে না; (আল্লাহর) খুব কাছের ফেরেশতারাও না। আর যারা তাঁর ইবাদাত করাকে ছোট/হেয়/তুচ্ছ/সামান্য/মূল্যহীন/হেয় মনে করে এবং অহঙ্কার করে (নিজেকে নবী রাসুল,পীর ওলি গাউছ,কুতুব মনে করে) তবে খুব শীঘ্রই আল্লাহ তাদের সবাইকে তাঁর কাছে একত্রিত করবেন।        [৩:৭৯; ৫:৭৫,১১৬;১৯:৩০]
  173. পক্ষান্তরে যারা ঈমান আনবে ও সংশোধনের কাজ করবে এবং সৎকাজ করেছে, তাদের পুরস্কার তিনি পরিপূর্ণভাবে দেবেন এবং নিজ সম্মান‑মর্যাদা-সম্পদ থেকে আরো বেশী বাড়িয়ে দেবেন। আর যারা (আল্লাহর ইবাদাত করা) ছোট/তুচ্ছ/সামান্য/মূল্যহীন/হেয় মনে করে এবং অহংকার করে, তাদেরকে তিনি যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দেবেন। আর আল্লাহ ছাড়া তাদের জন্য তারা না পাবে কোন অলি/আউলিয়া, না (পাবে) কোন সাহায্যকারী।
  174. হে মানব জাতি! তোমাদের কাছে তোমাদের রবের কাছ থেকে সুষ্পষ্ট‑পরিষ্কার দলিল‑প্রমাণ এসেছে এবং আমি তোমাদের কাছে সুস্পষ্ট নুর/অঅলো/জ্যোতি (কোরআন) নাযিল করেছি।
  175. সুতরাং যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছে,তাঁকে (তাঁর রজ্জু বা কুরআন বা দ্বীনকে) শক্তভাবে আকঁড়ে ধরে রেখেছে,খুব শীঘ্রই তিনি তাদেরকে তাঁর রহমত ও মর্যাদার মধ্যে দাখিল করবেন,এবং সিরাতুল মুস্তাকিমের হেদায়েতের পথে পরিচালিত করবেন।
  176. মানুষেরা তোমার কাছে ফাতাওয়া জিজ্ঞেস করছে; বল, আল্লাহ তোমাদেরকে পিতা-মাতাহীন নিঃসন্তান/কালালা ব্যক্তি সম্পর্কে ফতোয়া দিচ্ছেন,যদি কোন পুরুষ মারা যায় যার কোন সন্তান নেই কিন্তু একজন বোন আছে তাহলে এই বোন পাবে ভাইয়ের রেখে-যাওয়া সম্পদের অর্ধেক।” আবার বোনের কোন সন্তান না থাকলে (সে মারা যাওয়ার পর) ভাই তার উত্তরাধিকারী হবে।(মৃতের) যদি দুই (বোন) থাকে তাহলে তারা পাবে রেখে-যাওয়া সম্পদের দুই তৃতীয়াংশ। আর যদি ভাই ও বোন উভয়ই থাকে তাহলে (তাদের) একজন পুরুষ পাবে দুজন নারীর অংশের সমান। আল্লাহ তোমাদেরকে বয়ান করে দিচ্ছেন, যাতে তোমরা পথভ্রষ্ট না হও আর আল্লাহ প্রত্যেকটি জিনিসের ব্যাপারে মহাজ্ঞানী।         [2:80, 4:11]
  • (Quran Research intel­li­gence Team ড্রাফট অনুবাদ)
  • (Quran Research intel­li­gence Team ড্রাফট অনুবাদ)