আল — বাকারা : বাছুর
الٓمٓ
১. আলিফ, লাম, মীম।
ذَٰلِكَ ٱلْكِتَٰبُ لَا رَيْبَۛ فِيهِۛ هُدًى لِّلْمُتَّقِينَ
২. এটা সেই (মহান) কিতাব যাতে কোন সন্দেহ নেই, মুত্তাকীদের জন্য এটা হেদায়েত।
[মুত্তাকীর বৈশিষ্ট্য 2:177, 50–31+32+33, 3–15+16+17, 3–133-135, 2–3+4+5]
ٱلَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِٱلْغَيْبِ وَيُقِيمُونَ ٱلصَّلَوٰةَ وَمِمَّا رَزَقْنَٰهُمْ يُنفِقُونَ
৩. যারা অদৃশ্য বিষয়গুলিতে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং যথাযথভাবে (আল্লাহর সাথে) সংযোগ প্রতিষ্ঠা করে এবং আমি তাদেরকে যে রিজিক দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে।
وَٱلَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِمَآ أُنزِلَ إِلَيْكَ وَمَآ أُنزِلَ مِن قَبْلِكَ وَبِٱلْءَاخِرَةِ هُمْ يُوقِنُونَ
৪. যারা তোমার প্রতি যে (কিতাব) নাযিল করা হয়েছে এবং তোমার পূর্বে যেসব (কিতাব) নাযিল করা হয়েছিল তা বিশ্বাস করে; আর আখিরাতের প্রতি ও যারা সুনিশ্চিতভাবে দৃঢ় বিশ্বাসী।
أُو۟لَٰٓئِكَ عَلَىٰ هُدًى مِّن رَّبِّهِمْ وَأُو۟لَٰٓئِكَ هُمُ ٱلْمُفْلِحُونَ
৫. তারাই তাদের রব-এর নির্দেশিত (সত্যিকারের) হেদায়েতের উপর রয়েছে এবং তারাই সফলকাম।
[৬‑৭: কাফিরদের অবস্থা]
إِنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ سَوَآءٌ عَلَيْهِمْ ءَأَنذَرْتَهُمْ أَمْ لَمْ تُنذِرْهُمْ لَا يُؤْمِنُونَ
৬. নিশ্চয়ই যারা কুফরী করেছে, তুমি তাদেরকে সতর্ক কর কিংবা না কর, তাদের জন্য একই কথা, তারা বিশ্বাস করবে না।
خَتَمَ ٱللَّهُ عَلَىٰ قُلُوبِهِمْ وَعَلَىٰ سَمْعِهِمْ وَعَلَىٰٓ أَبْصَٰرِهِمْ غِشَٰوَةٌ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ
৭. আল্লাহ্ তাদের অন্তর ও কান সিলমোহরাঙ্কিত করে দিয়েছেন এবং তাদের চোখে রয়েছে (অদৃশ্য) পর্দা । আর তাদের জন্য রয়েছে ভয়ানক শাস্তি।
[খতম=সিলমোহর 6/46, 36/65, 42/24, 45/23, 33/40, 83/25, 83/26] [৮‑২০: মুনাফিকদের চরিত্র ও শাস্তি]
وَمِنَ ٱلنَّاسِ مَن يَقُولُ ءَامَنَّا بِٱللَّهِ وَبِٱلْيَوْمِ ٱلْءَاخِرِ وَمَا هُم بِمُؤْمِنِينَ
৮. মানুষের মধ্যে এমন কিছু লোক আছে যারা বলে, ‘‘‘আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহ ও আখেরাতের’ অথচ তারা মু’মিন নয়।
يُخَٰدِعُونَ ٱللَّهَ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَمَا يَخْدَعُونَ إِلَّآ أَنفُسَهُمْ وَمَا يَشْعُرُونَ
৯. তারা আল্লাহকে এবং যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে ধোঁকা দিচ্ছে। অথচ তারা নিজেদেরকেই ধোঁকা দিচ্ছে কিন্তু তারা তা উপলব্ধি করতে পারছে না।
فِى قُلُوبِهِم مَّرَضٌ فَزَادَهُمُ ٱللَّهُ مَرَضًا وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌۢ بِمَا كَانُوا۟ يَكْذِبُونَ
১০. তাদের অন্তরে আছে রোগ, সুতরাং আল্লাহ তাদের রোগ আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি, কারণ তারা মিথ্যাবাদী।
وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ لَا تُفْسِدُوا۟ فِى ٱلْأَرْضِ قَالُوٓا۟ إِنَّمَا نَحْنُ مُصْلِحُونَ
১১. এবং যখন তাদেরকে বলা হয়ঃ তোমরা পৃথিবীতে অশান্তি-বিপর্যয়-ফ্যাসাদ সৃষ্টি করোনা তখন তারা (কুটকৌশলে) বলেঃ আমরাতো শুধুই সংশোধনকারী-মুছলিহীন।
أَلَآ إِنَّهُمْ هُمُ ٱلْمُفْسِدُونَ وَلَٰكِن لَّا يَشْعُرُونَ
১২. সাবধান! (জেনে রাখো) নিশ্চয়ই তারাই অশান্তি সৃষ্টিকারী কিন্তু তারা তা বুঝতে পারে না।
وَإِذَاقِيلَلَهُمْءَامِنُوا۟كَمَآءَامَنَٱلنَّاسُقَالُوٓا۟أَنُؤْمِنُكَمَآءَامَنَٱلسُّفَهَآءُأَلَآإِنَّهُمْهُمُٱلسُّفَهَآءُوَلَٰكِنلَّايَعْلَمُونَ
১৩. আর যখন তাদেরকে বলা হয়, “অন্য লোকেরা যেমন ঈমান এনেছে তোমরাও তেমনি ঈমান আন,” তখন তারা বলে, “আমরা কি নির্বোধদের মত ঈমান আনবো?” জেনে রাখো, নিশ্চয়ই তারাই নির্বোধ; কিন্তু তারা তা জানে না।
وَإِذَا لَقُوا۟ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ قَالُوٓا۟ ءَامَنَّا وَإِذَا خَلَوْا۟ إِلَىٰ شَيَٰطِينِهِمْ قَالُوٓا۟ إِنَّا مَعَكُمْ إِنَّمَا نَحْنُ مُسْتَهْزِءُونَ
১৪. আর যখন তারা ঈমানদারদের সাথে মিলিত হয়, তখন বলে ‘আমরা ঈমান এনেছি’ এবং যখন তাদের শয়তানদের সাথে গোপনে মিলিত হয়, তখন বলে, ‘নিশ্চয়ই আমরা তোমাদের সাথে আছি। আমরা তো শুধু উপহাস করি।
[41/25+26, 8/48, 5/52+53]
ٱللَّهُ يَسْتَهْزِئُ بِهِمْ وَيَمُدُّهُمْ فِى طُغْيَٰنِهِمْ يَعْمَهُونَ
১৫. আল্লাহই তাদের সাথে উপহাস করছেন এবং তাদেরকে তাদের অবাধ্যতার মধ্যে বিভ্রান্ত হয়ে পথহারা হয়ে ঘোরার অবকাশ দেন।
أُو۟لَٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ ٱشْتَرَوُا۟ ٱلضَّلَٰلَةَ بِٱلْهُدَىٰ فَمَا رَبِحَت تِّجَٰرَتُهُمْ وَمَا كَانُوا۟ مُهْتَدِينَ
১৬. এরাই তারা, যারা হিদায়াতের বিনিময়ে পথভ্রষ্টতা কিনেছে। সুতরাং তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ও লাভজনক হয়নি এবং তারা হেদায়েতও পায়নি।
مَثَلُهُمْكَمَثَلِٱلَّذِىٱسْتَوْقَدَنَارًافَلَمَّآأَضَآءَتْمَاحَوْلَهُۥذَهَبَٱللَّهُبِنُورِهِمْوَتَرَكَهُمْفِىظُلُمَٰتٍلَّايُبْصِرُونَ
১৭. তাদের উপমা ঐ ব্যক্তির মত, যে আগুন জ্বালাল। এরপর আগুন যখন তার চারপাশ আলোকিত করল, তখন আল্লাহ তাদের (আলো) নুর কেড়ে নিলেন এবং তাদেরকে ছেড়ে দিলেন এমন ঘোর অন্ধকারে, যাতে তারা কিছুই দেখতে না পায়।
صُمٌّۢ بُكْمٌ عُمْىٌ فَهُمْ لَا يَرْجِعُونَ
১৮. তারা (যেন) বধির, বোবা ও অন্ধ, কাজেই তারা (কুরআনের হিদায়াতের দিকে) ফিরে আসবে না।
أَوْكَصَيِّبٍمِّنَٱلسَّمَآءِفِيهِظُلُمَٰتٌوَرَعْدٌوَبَرْقٌيَجْعَلُونَأَصَٰبِعَهُمْفِىٓءَاذَانِهِممِّنَٱلصَّوَٰعِقِحَذَرَٱلْمَوْتِوَٱللَّهُمُحِيطٌۢبِٱلْكَٰفِرِينَ
১৯. অথবা (তাদের উপমা) যেন আকাশ থেকে মুষলধারে বৃষ্টির মতো যাতে আছে ঘোর অন্ধকার, গর্জন ও বিদ্যুৎচমক। মৃত্যুর ভয়ে গর্জনের সময় তারা কানে আঙ্গুল দিয়ে রক্ষা পেতে চায়। আর আল্লাহ কাফেরদের ঘেরাও করে রেখেছেন।
يَكَادُٱلْبَرْقُيَخْطَفُأَبْصَٰرَهُمْكُلَّمَآأَضَآءَلَهُممَّشَوْا۟فِيهِوَإِذَآأَظْلَمَعَلَيْهِمْقَامُوا۟وَلَوْشَآءَٱللَّهُلَذَهَبَبِسَمْعِهِمْوَأَبْصَٰرِهِمْإِنَّٱللَّهَعَلَىٰكُلِّشَىْءٍقَدِيرٌ
২০. বিদ্যুতের ঝলকানি তাদের দৃষ্টি প্রায় ছিনিয়ে নিচ্ছিল। যতবারই তাদের জন্য ঝিলিক দেয়, তারা এর মধ্যে হেটে চলে, আর যখনি তাদের উপর অন্ধকার নেমে আসে, তারা দাঁড়িয়ে পড়ে। আল্লাহ চাইলে তাদের শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি (একেবারে) কেড়ে নিতে পারেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান।
[২১-২৯: আল্লাহর ইবাদত ও সৃষ্টির উদ্দেশ্য]
يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ ٱعْبُدُوا۟ رَبَّكُمُ ٱلَّذِى خَلَقَكُمْ وَٱلَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ
২১. হে মানব জাতি! ‘তোমরা তোমাদের সেই রবের ইবাদাত কর যিনি তোমাদেরকে ও তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা মুত্তাকী হতে পার’।
[রব‑7/172]