নবীর প্রতি দুরুদ কি কুরআন বিরোধী? না অপব্যাখ্যা?

আশেকে রাসুল নবীর প্রতি দুরুদ অপব্যাখ্যা হাদিস

(1) নবীর প্রতি দুরুদ কি কুরআন অপব্যাখ্যা? কুরআনের ৩৩/৫৬ ব্যাখ্যা — YouTube
https://www.youtube.com/watch?v=BOqODIXt_GY

Tran­script:
মুসলিমদের মুশরিক বানানোর জন্য ইবলিশের যতগুলো অস্ত্র আছে তার মধ্যে শ্রেষ্ঠ অস্ত্র হচ্ছে সূরা আহযাবের 56 নাম্বার আয়াত দেখিয়ে আপনাকে বলবে নবীর প্রতি আপনি সালাত পড়ুন- ইন্নাল্লাহা ওয়ামালাইকাতাহু ইউসাল্লুনা আলা নাবী- এই আয়াত আপনাকে শুনিয়ে বলবে আল্লাহ, তার ফেরেশতারা নবীর প্রতি সালাত করে সাল্লু করে আপনিও সালাত করুন তারপর আপনাকে শেখাবে আসসালাতু আসসালামু আলাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ হে রাসূল আপনার প্রতি আসসালাতু অর্থ্যাৎ সালাত । আসসালামু আলাইকা ইয়া নবী অর্থ্যাৎ হে নবী আপনার প্রতি সালাম।

আপনি যদি এভাবে সালাত ও সালাম দেন আসসালাতু আসসালামু
আলাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ বলেন আপনি সাথে সাথে মুশরিক হয়ে যাবেন । কারণ নবী নিজে যখন সালাত করেছেন তখনও তা শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য করেছেন।

প্রমাণ চান? সূরা আনআম আয়াত 162 পড়ুন। আল্লাহ বলছেন কুল অর্থ্যাৎ বলো– ইন্নাস সালাতি অর্থ্যাৎ নিশ্চয়ই আমার সালাত- অনুসুকি অর্থ্যাৎ আমার যাবতীয় ইবাদত- ওমাহিয়া অর্থ্যাৎ আমার জীবন, ওমামতি অর্থ্যাৎ আমার মরণ- লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন মানে কার জন্য ?আল্লাহরই জন্য । অর্থ্যাৎ বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহরই জন্য। আল্লাহ নবীকে শিখিয়ে দিচ্ছেন নবী কিভাবে তার যাবতীয় ইবাদত করবে তার জীবন তার মরণ সবকিছু শুধুমাত্র বিশ্বজাহানের প্রতিপালক লিল্লাহি রাব্বিল আলামীনের জন্য।

সেইখানে নবী নিজে যখন তার সালাত তার জীবন-মরণ আল্লাহর কাছে সোপর্দ করেছেন, সেখানে যদি আপনি নবীর উপর সালাত করেন সাথে সাথে আপনি মুশরিক হয়ে যাবেন।

আপনাকে তারা আরো বলবে আপনি যদি নবীর প্রতি সালাত করেন আপনার গুনাহ খাতা মাফ হয়ে যাবে ।আপনার 10 গুণ মর্তবা বৃদ্ধি পাবে। না করলে আপনার কোন ইবাদত , কোন আমল, কোন কিছুই কবুল হবে না। হাশরের মাঠে নবী আপনাকে চিনবে না ।

যদি আপনি তার প্রতি সালাত করেন তাহলে নবী আপনাকে চিনবে, আপনাকে সুপারিশ করে, শাফায়াত করে জান্নাতে নিয়ে যাবে। এটা হচ্ছে ইবলিশের এজেন্টদের সেকেন্ড বিগেস্ট ট্রাপ। কারণ হাশরের মাঠে কেউ কারো জন্য কোন সুপারিশ, কোন শাফায়াত করতে পারবে না সূরা বাকারা 48 123 256 আয়াত।

নবী যে কোন সুপারিশ, কোন শাফায়াত করতে পারবে না তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ সূরা আনআম আয়াত 51 52 । আল্লাহ বলছেন- “এই কুরআন দ্বারা তুমি সেইসব লোকদেরকে সতর্ক কর যাদের মনে এই ভয় আছে যে তাদেরকে তাদের রবের কাছে এমন অবস্থায় একত্রিত করা হবে , যেখানে তিনি ছাড়া তাদের না কোন সাহায্যকারী থাকবে আর না থাকবে কোন সুপারিশকারী ।

না কোন সাহায্যকারী থাকবে আর না থাকবে কোন সুপারিশকারী পরিষ্কার আয়াত।সুরা আনআমের আয়াত 52 “আর যেসব লোক সকাল সন্ধ্যায় তাদের রবের ইবাদত করে এবং এর মাধ্যমে তার সন্তুষ্টি কামনা করে তাদেরকে তুমি দূরে সরিয়ে দেবে না। তাদের হিসাব নিকাশের কোন কিছুর দায়িত্ব ‑জবাবদিহিতা- দায়ভার তোমার উপর নয় এবং তোমার হিসাব নিকাশের কোন কিছুর দায়িত্ব তাদের উপর নয়। তোমার হিসাব নিকাশের- তোমার জবাবদিহিতার দায়িত্ব তাদের উপর নয় ।

রাসূলের হিসাব নিকাশ জবাবদিহিতা আপনাকে আল্লাহ জিজ্ঞেস করবে না আপনার হিসাব নিকাশ জবাবদিহিতা কোন কিছু রাসূলকেও আল্লাহ জিজ্ঞেস করবে না যার যার আমল নিয়ে তাকে হাশরের মাঠে- আল্লাহর সামনে উপস্থিত করা হবে। কোন সাহায্যকারী থাকবে না কোন সুপারিশকারী থাকবে না।

সূরা আনআম আয়াত 51 52 তে পরিষ্কারভাবে আল্লাহর রাসূল নিজ মুখ দিয়ে বলেছেন। এটা আল্লাহর বিশুদ্ধ,খাটি, সহি ওহী সম্বলিত কুরআনের কালাম

এরপরও যদি এই আয়াত দুটোকে ভায়োলেট করে, অস্বীকার করে, কুফরি করে, আপনি শয়তানের প্ররোচনায় তার এজেন্টদের মাধ্যমে- হাশরের মাঠে শাফায়াত পাবেন, সুপারিশ পাবেন, এই আশায় শিরক করতে থাকেন আপনার মত বোকা আপনার মত গর্ধভ পৃথিবীতে কেউ হতে পারে না।

তারা আপনাকে আরো বলবে আপনি যখন নামাজ পড়বেন নামাজের মধ্যেও আপনাকে নবীর প্রতি সালাত করতে হবে অর্থ্যাৎ দুরুদ করতে হবে। নামাজের পরেও অনেকে করে সালাত করে দরুদ করে, সালাম দেয়, কথা বলে, মানে নামাজ শেষ হওয়ার সাথে সাথেই নবী পূজা শুরু করে দেয়। যেহেতু আপনারা বেশিরভাগ মানুষই আরবি বোঝেন না। কি বলেন আপনার নামাজে তা জানেন না এ কারণেই শয়তানের এই
প্ল্যানটা খুব সহজে বাস্তবায়িত হয়েছে। আর এ কারণেই সূরা নিসার 43 নাম্বার আয়াতে আল্লাহ বলেছেন যতক্ষণ বুঝতে না পারো কি বলো ততক্ষণ নামাজের ধারে কাছেও যেও না।

সূরা নিসা আয়াত 43 আপনি যা বলবেন তা বোঝাটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ আপনি একটু কমন সেন্সটা ব্যবহার করেন বিবেকটা ব্যাবহার করেন, ভাবেন,চিন্তা করেন।

আপনি আপনার মহাজনের কাছে, আপনার বসের কাছে, আপনার নেতার কাছে প্রতিদিন তিনবার, চারবার, পাঁচবার অনুরোধ করছেন, প্রার্থনা করছেন, কোন কিছু চাচ্ছেন, কিন্তু আপনি কিছুই বুঝতেছেন না, কি বলছেন তাকে আপনি নিজেই জানেন না। সাথে সাথে আপনার বস, আপনার মহাজন, আপনার নেতা কষে আপনাকে চড় দেবে, থাপ্পড় দেবে। বলবে যে “এই বোকা? কি বলছো তুমি আমাকে? তুমি নিজে জানো? তুমি কি বলছো?

সূরা নিসা আয়াত 43 খুব মনোযোগ দিয়ে, ভালো করে পড়ুন, কেন আল্লাহ বলছেন নামাজে যা বলছো তা না বোঝা পর্যন্ত নামাজের ধারে কাছে যেও না। কেন না বোঝা পর্যন্ত আপনাকে নিষেধ করেছেন?

এই কথাটা সূরা বানি ইসরাইলের 36 নাম্বার আয়াতে আল্লাহ আরো পরিষ্কারভাবে বলেছেন “ না বুঝে, না জেনে, যে বিষয়ে আপনার কোন জ্ঞান নেই, সেই কাজ করলে দুনিয়াতে হয়তো আপনাকে ছেড়ে দেবে কিন্তু হাশরের মাঠে প্রত্যেকটা জিনিসের কৈফিয়ত তলব করা হবে। সূরা বনী ইসরাইল আয়াত 36 আল্লাহ বলছেন “যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই, সেই বিষয়ে অনুমান দ্বারা পরিচালিত হয়ো না।নিশ্চয়ই কান, চোখ, অন্তর
প্রত্যেকটির নিকট কৈফিয়ত তলব করা হবে, প্রত্যেককে জিজ্ঞেস করা হবে।”

আল্লাহ আপনাকে কান দিয়েছেন, চোখ দিয়েছেন, হৃদয় দিয়েছেন, প্রত্যেকটাকে আপনি মিস ইউজ করছেন, না ইউজ করছেন? ব্যবহার করছেন না অপব্যবহার করছেন? এগুলো সঠিকভবে ব্যবহার করেছেন কিনা ? আকল খাটিয়েছেন কিনা? জ্ঞান বুদ্ধি প্রয়োগ করেছেন কিনা?হাশরের মাঠে আপনাকে জিজ্ঞেস করা হবে।

এজন্য না জেনে না বুঝে না শুনে নামাজে কি বলছেন? কি করছেন?এসব করলে আপনি যখন তখন শিরকের সাগরে হাবুডুবু খেতে পারেন। কারণ আল্লাহ আপনাকে চোখ, কান, অন্তর, জ্ঞান, বুদ্ধি ‑বিবেক সবকিছু কেন দিয়েছেন? সেসবের কৈফিয়ত হাশরের মাঠে আপনাকে সূরা বানি ইসরাইলের 36 নাম্বার আয়াত অনুযায়ী দিতেই হবে।

মূল আলোচনায় যাই। তারা আপনাকে এই শিরকি কাজ করার জন্য যেই আয়াতের অপব্যাখ্যা দেবে সেটা হচ্ছে সূরা আহজাব আয়াত 56 । “ইন্নাল্লহা ওয়ামালাইকাতাহু ইউসাল্লুনা আলান নাবী।ইয়া আইয়ুহাল্লাজিনা আমানু সাল্লু আলাইহি ওয়াসাল্লিমু তাসলিমা।

ভাবেন তো সত্যি সত্যি এই আয়াত দিয়ে আল্লাহ আপনাকে বলছেন- নবীর প্রতি সালাত করতে?যত ইবাদত করবেন, প্রার্থনা করবেন, আল্লাহর কাছে, সেখানে নবীর প্রতি আপনাকে সালাত করতেই হবে? যখন নবীর নাম শুনবেন তখন তার প্রতি সালাত করতে হবে? আসলেই কি আল্লাহ আপনাকে এই আয়াতে তাই বলেছেন? নাকি আল্লাহ আপনাকে যেই জ্ঞান বুদ্ধি বিবেক চোখ কান অন্তর দিয়েছেন আপনি তা সঠিকভাবে ব্যবহার করছেন না ? আপনার আকল বুদ্ধি খাটাচ্ছেন না? আল্লাহর কুরআন আপনি পড়ছেন না? বোঝার চেষ্টা করছেন না? সূরা মোহাম্মদে আল্লাহ যে বলেছেন “তারা কি কুরআন নিয়ে গভীর চিন্তা ভাবনা করে না? নাকি তাদের অন্তর তালাবদ্ধ ।“

আপনার অন্তর কি তালাবদ্ধ হয়ে গেছে? জ্ঞান বুদ্ধি বিবেক কিছুই খাটাবেন না আপনি?

তিন নাম্বার সূরা আল ইমরানের 79 নাম্বার আয়াতে আল্লাহ কি বলেছেন? এই আয়াত শুধু একজন নবী বা দুজন নবীর জন্য না আল্লাহ এই পৃথিবীতে যত নবী রাসূলকে মনোনীত করেছেন প্রত্যেক নবী রাসূলের জন্য এই আয়াত প্রযোজ্য । কি বলেছেন আল্লাহ? “কোন মানব সন্তানের জন্য এটা সম্ভব নয় যে আল্লাহ তাকে কিতাব, জ্ঞান, উইজডম‑প্রজ্ঞা-হিকমত ও নবুয়ত দান করেন তারপর সে মানুষদের বলবে তোমরা আল্লাহকে ছেড়ে আমার বান্দা হয়ে যাও বরং সে বলবে তোমরা আল্লাহ ওয়ালা হয়ে যাও।”

কারণ কি? যেহেতু তোমরা কিতাব শিক্ষা দান করো এবং নিজেরাও পাঠ করো।”

তাহলে কোনো নবী কি একথা বলতে পারেন সূরা আনামের ১৬২ নাম্বার আয়াত ব্রেক করে, ভায়োলেট করে? লংঘন করে? “তোমরা আমার প্রতি সালাত করো? আল্লাহর প্রতি সালাত না করে? যেখানে আল্লাহর নবী বলেছেন “আমার সালাত, আমার জীবন,আমার মরণ,আমার ইবাদত সবকিছুই আল্লাহর জন্য। সেখানে তিনি তার লোকদেরকে,তার সাহাবিদেরকে, শেখাবেন যে –“তোমরা আল্লাহর জন্য সালাত না করে আমার জন্য সালাত করবে? ইজ ইট পসিবল?এটা সম্ভব?

কোন নবী এই ৩/৭৯ আয়াত অনুযায়ী তার কাছে কোন মানুষ গেলে তিনি বলতে পারেন না যে- “তোমরা আসো, আমার পাশে বসো, আমার কথা শোনো এবং আমার উপর সালাত করো।” এটা পুরোপুরি অসম্ভব কারণ আয়াতের শেষেই আছে যেহেতু তোমরা কিতাব শিক্ষা দাও এবং নিজেরাও পাঠ করো।

এজন্য কোন পীর, অলি, আউলিয়া, গাউস ‚কুতুব, যে কেউ- যা কিছু আপনাকে বলুক- ইউ হ্যাভ টু ভেরিফাই ইট- এটা আপনাকে যাচাই করতে হবে। কারণ আল্লাহ আপনাকে জ্ঞান, বুদ্ধি, বিবেক, আকল, চোখ, কান সব কিছু দিয়েছেন এবং এগুলোর সবকিছুর জবাবদিহিতা হাশরের মাঠে কিন্তু আল্লাহর সামনে আপনাকে করতে হবে।

চলুন আমরা আয়াতে ফিরে যাই সূরা আহযাব আয়াত 56 এই আয়াতে আল্লাহ বলেননি
নবীর নাম শুনলেই তার প্রতি আপনাকে সাল্লু করতে হবে অর্থ্যাৎ সালাত করতে হবে । ইভেন এই আয়াতে নবীর নামও নেই । সুতরাং যারা বলে এই আয়াত অনুযায়ী নবীর নামে আপনাকে সালাত করতে হবে। যদি করেন তাহলে আপনাকে হাশরের মাঠে নবী সুপারিশ করবে। পুরো কোরআনে একটা আয়াতও আপনি তন্ন তন্ন করে খুঁজলেও পাবেন না যেখানে আল্লাহ নবীর মাধ্যমে বলেছেন তোমরা আমার উপর সালাত করো সাল্লু করো হাশরের মাঠে আমি তোমাদের জন্য সুপারিশ করব। আপনি যদি এই পীর অলি আউলিয়া গাউস কুতুব উনাদেরকে জিজ্ঞেস করেন এই যে- নবীর নামে সালাত করছি, সাল্লু করছি এর মানে কি ? আসসালাতু আসসালামু আলাইকা
ইয়া রাসূলাল্লাহ অথবা আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মদ এর মানে কি? তারা বলবে এটা আমরা আল্লাহকে বলছি । আল্লাহ যেন নবীকে আশীর্বাদ করেন, নবীর প্রতি রহমত করেন, অনুগ্রহ করেন।

আমরা বলছি আল্লাহকে? নবীর প্রতি যেন আশীর্বাদ করে? তার প্রতি দয়া করে? তার প্রতি অনুগ্রহ করে ? আমরা? আমাদের মত পাপীষ্ঠ- ফাসিক- জালিম কাফির জানোয়ার পশুরা? আমরা বলছি আল্লাহকে ? বলছি নবীর প্রতি দয়া করার জন্য? অনুগ্রহ করার জন্য? আশীর্বাদ করার জন্য? আমাদের বলার পরে তারপর আল্লাহ নবীকে দয়া করবে ? আশীর্বাদ করবে ?অনুগ্রহ করবে?

না বললে করবে না? যেসব অলি আউলিয়া পীর গাউস কুতুব মোল্লা হুজুর আপনাকে এভাবে বুঝাচ্ছে তাদের মাথা ঠিক আছে? না আপনার মাথা ঠিক আছে?

আপনার মত পাপিষ্ঠ- জালিম ‑ফাসিক বললে- তারপর নবীর প্রতি আল্লাহ দয়া করবেন? আশীর্বাদ করবেন? অনুগ্রহ করবেন?

আপনার মত বোকা আপনার মত গর্ধভ এই পৃথিবীতে আর হতেই পারে না।

এটা আমার কথা না । এটা আল্লাহরই কথা। কিভাবে? ২৫ নাম্বার সূরা ফুরকান এর ৪৪ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ বলছেন — “ তুমি কি মনে করো যে তাদের অধিকাংশ শোনে ও বোঝে? তারা তো পশুর মতো- জানোয়ারের মত বরং তারা আরো অধম। আরো বেশি পথভ্রষ্ট, তারা সঠিক পথ থেকে আরো বেশি ভ্রষ্ট? আল্লাহ বলছে পশুর মত। পশুর মত আপনার কমন সেন্স ।আপনার বুদ্ধি বিবেক, আকল, জ্ঞান । আপনি কিছুই খাটাচ্ছেন না । আপনাকে শয়তানের
এজেন্টরা মুশরিক বানানোর জন্য ধোকা দিচ্ছে। কারণ শয়তান তো ভালো করেই জানে — আল্লাহ সব পাপ ক্ষমা করবে কিন্তু মুশরিক হলে সেই পাপ আর আল্লাহ ক্ষমা করবেন না।

দিস ইজ দা ফাস্ট এন্ড বিগেস্ট ট্রাপ অফ ইবলিশ। সবচেয়ে বড় ফাঁদ । আপনাকে মুশরিক বানানো । নবীর প্রতি সালাত করা, সল্লু করা, এটা হচ্ছে বেস্ট ওয়ে টু মেক ইউ মুশরিক (আপনাকে মুশরিব বানানোর সেরা পদ্ধতি। এ কারণে আল্লাহ আপনাকে বলেছেন সূরা ফুরকান আয়াত 44 এ । “তুমি কি মনে করো যে তাদের অধিকাংশ শুনে ও বোঝে? আসলেই আমরা শুনিও না বুঝিও না। আমরা হচ্ছি আনআম- পশুর মতো। যখন আমরা শুনবো না বুঝবো না পশুর মতো এরকম আচরণ করব জ্ঞান বুদ্ধি বিবেক আকল কিছুই খাটাবো না তখন কি হবে? আয়াতের লাস্টেই
আছে সঠিক পথ থেকে পথভ্রষ্ট হয়ে যাব । সুতরাং আপনাকে যে আমি বোকা বললাম গর্ধভ বললাম এর চেয়ে কঠিন কথা আল্লাহ আপনাকে বলেছেন । কারণ আপনি আপনার বিবেক বুদ্ধি খাটান না। আপনি পশু জানোয়ার আমি এর চেয়ে নরম কথা ব্যবহার করেছি যে আপনি বোকা আপনি গর্ধভ।

তাহলে এই আয়াতে আল্লাহ কি বলেছেন এটা বোঝা আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ।এই আয়াতের প্রায় সিমিলার- কপি টাইপের আয়াত হচ্ছে 43 নাম্বার আয়াত। সেদিকে যাই চলুন।

আমাদের বুঝতে হবে যে- এই আয়াত যখন নাযিল হয়। এই আয়াত কিন্তু আমাদের জন্য না। তখনকার সময় যারা বেঁচে ছিল, জীবিত ছিল, তাদের জন্য। নবীও তখন জীবিত ছিলেন।

আমাদের জন্য তিনি তো মরে গেছেন । অনেক আগে মৃত্যুবরণ করেছেন। সাহাবীরা সবাই মৃত্যুবরণ করেছে। অনেক আয়াত আছে কোরআনে শুধু সাহাবীদের জন্য নাযিল হয়েছে । তোমরা নবীর কন্ঠস্বরের চেয়ে উঁচু আওয়াজে কথা বলবে না।নবীর বাড়ি গেলে, সে না ডাকলে ‚দাওয়াত না দিলে তার বাড়ির কাছে যাবে না। খাবারের জন্য ডাকলে? যখন ডাকবে শুধু তখন যাবে । আগে আগে যাবে না ।খাওয়া শেষ হলে তাড়াতাড়ি চলে যাবে। নবী মৃত্যুবরণ করলে তোমরা তার স্ত্রীদের বিবাহ করবে না।(সুরা আহজাব,আয়াত‑৫৩)।

এরকম অজস্র আয়াত কোরআনে আছে শুধুমাত্র তখনকার সাহাবীদের জন্য প্রযোজ্য ছিল। ওই আয়াত এখন আপনি কোনদিনও বাস্তবায়ন করতে পারবেন না। এপ্লাই করতে পারবেন । আপনি ইচ্ছা করলে এখন নবীর স্ত্রীদের বিবাহ করতে পারবেন? তার বাড়ি যেতে পারবেন ? খাওয়ার জন্য ?কখনো সম্ভব ? আপনার পক্ষে কখনো নবীর কন্ঠস্বরের চেয়ে উঁচু আওয়াজে নবীর সাথে কথা বলা সম্ভব? এসব আয়াত এখন নবীর উপর,সাহাবীদের উপর, তার স্ত্রীদের উপর ব্যবহার করতে পারবেন? পারবেন না ।

তাহলে আমাদের জন্য তিনি কি হিসেবে এসেছেন? এটার উত্তর আছে সূরা আরাফের 158 নাম্বার আয়াতে বলো- “হে মানব মন্ডলী আমি তোমাদের সকলের জন্য সেই আল্লাহর রাসূল রূপে প্রেরিত হয়েছি ।” আমাদের সবার জন্য তিনি রাসূল ।আল্লাহর যে রিসালাত দিয়েছেন, যে বার্তা দিয়েছেন, যে বাণী দিয়েছেন ‚যে কুরআন দিয়েছেন, এটা প্রচার করার জন্য এই বার্তা আমাদের পৌঁছিয়ে দেয়ার জন্য তিনি এসেছিলেন। আর তখনকার সময় যারা জীবিত ছিল তাদের জন্য কি ?

আয়াতের শেষেই আছে “হে মানব মন্ডলী আমি তোমাদের সকলের জন্য সেই আল্লাহর রাসূল রূপে প্রেরিত হয়েছি যিনি আকাশ ও ভূমণ্ডলের সার্বভৌম একচ্ছত্র মালিক। তিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। তিনি জীবিত করেন ও মৃত্যু ঘটান। সুতরাং আল্লাহর প্রতি এবং তার সেই বার্তাবাহক উম্মি নবীর প্রতি ঈমান আনো । এখানে হচ্ছে নবী। দিস ইজ দা ডিফারেন্স বিটুইন নবী এন্ড রাসূল। আমাদের জন্য তিনি হচ্ছেন রাসূল।

আমরা আয়াতে ফিরে যাই । ওখানে কি রাসূল আছে না নবী আছে? নবী আছে । তার মানে তখনকার জীবিত নবীর ক্ষেত্রে ওই আয়াত প্রয়োগ হয়েছে। কেন হয়েছে? কেন নবীর
প্রতি সাল্লু করতে বলছেন আল্লাহ? এবং তার ফেরেশতা সাল্লু করছে?

তার ঠিক ১৩ টা আয়াত আগে ৪৩ নাম্বার আয়াতেও একই ধরনের কথা আল্লাহ বলেছেন- “হুওয়াল্লাযী ইউসাললী আলাইকুম”  তিনি তোমাদের প্রতি ইউসাল্লি করেন। আর কে করেন? কাতুহু- ফেরেশতারা। এবং তিনি মানে আল্লাহও তোমাদের প্রতি কি করেন ? ইউসাল্লি করেন। ফেরেশতারাও ইউসাল্লি করে। ঠিক যেভাবে ৫৬ আয়াতে ইন্নাল্লাহা ওমালাইকাতাহু ইউসাল্লুনা আলান নাবী। আল্লাহও করেন ফেরেশতারাও করেন। ইউসাল্লুনা আলা নবী। নবীর প্রতি সাল্লু করেন । 43 নম্বর আয়াতে কি বলছেন? তোমাদের প্রতি করেন। শুধু আল্লাহ করেন? না আল্লাহও করেন ফেরেশতারাও করেন?

কি করেন? ইউসাল্লি করেন। কেন করেন? দ্যাটস ইম্পর্টেন্ট- সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাহলে আমরা বুঝবো যে এই সল্লু জিনিসটা কি ? এই সালাত দিয়ে আসলে কি বোঝানো হয়েছে ?সালাত করার কারণ হচ্ছে মিনাজ জুলুমাতি ইলান নূর। যাতে করে তোমাদের জাহেলিয়াতের অন্ধকার থেকে ইলান নূর অর্থ্যাৎ আলোর দিকে নিয়ে আসতে পারেন। ওয়া কা-না বিলমু’মিনীনা রাহীমা-আল্লাহ হচ্ছেন মুমিনদের প্রতি রহিমা ‑অর্থ্যাৎ- অনুগ্রহশীল,দয়াশীল, রহম করেন ।

তাহলে মুমিনদেরকে আল্লাহ এবং ফেরেশতারা ইউসাল্লি করে ৫৬ নাম্বার আয়াতে। রাসূলের প্রতি ইউসাল্লি করেন। রাসূল আবার সূরা তওবার 103 নাম্বার আয়াতে মুমিনদের প্রতি ইউসাল্লি
করে। তাহলে ইউসাল্লি আমরা তিন ক্যাটাগরি পেলাম।

(১)আল্লাহ এবং তার ফেরেশতারা করছেন মুমিনদের প্রতি সুরা আহজাবের ৪৩ নাম্বার আয়াতে। (২)আল্লাহ এবং তার ফেরেশতারা করছেন নবীর প্রতি সূরা আহযাবের 56 নাম্বার আয়াতে । (৩) সূরা তওবার ১০৩ নাম্বার আয়াতে নবী করছেন মুমিনদের প্রতি ইউসাল্লি।

ওসল্লি আলাইহিম ইন্না সালাতা- তুমি তাদের জন্য সল্লি করো।

তাহলে রাসূল মুমিনদের জন্য সাল্লু করছেন। আল্লাহ এবং ফেরেশতারা মুমিনদের জন্য সাল্লু করছে । আল্লাহ আবার ফেরেশতাদের সাথে নবীর জন্য সাল্লু করছেন। এরপর বলছেন- মুমিন যারা আছো, তোমরা নবীর প্রতি সাল্লু করো। নবী তোমাদের প্রতি সূরা তওবার ১০৩ আয়াতে যেমন সাল্লু করছে তোমরা তেমনি সূরা আহযাবের ৫৬ নাম্বার আয়াতে সাল্লু করো।

এবার সাল্লুর অর্থটা বুঝি । ৭৫ নাম্বার সূরা কিয়ামাহ ৩১ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ বলছেন- “ফালাসাদ্দাকা ওয়ালাসাল্লা- ওয়ালাকিন কাজ্জাবা-ওয়াতাওয়াল্লা- চারটা শব্দ খুব খেয়াল করতে হবে ফালা সাদ্দাকা। সদ্দাকা মানে কি? সত্য বলা বা সত্য মানা । এর বিপরীত শব্দ কি? সত্যের বিপরীত হচ্ছে মিথ্যা। ৩২ নাম্বার আয়াতে সেই সাদ্দাকার হুবহু নিচেই আছে কাজ্জাবা সাদ্দাকার বিপরীত হচ্ছে কাজ্জাবা। কাজ্জাবার বিপরীত হচ্ছে সাদ্দাকা। সত্যের বিপরীত হচ্ছে মিথ্যা। মিথ্যার বিপরীত হচ্ছে সত্য।

৩১ নাম্বার আয়াতের ঠিক পরেই 32 নাম্বার আয়াতে আছে তার বিপরীত শব্দ । আছে ওতায়াল্লা । ওতাওয়াল্লা মানে কি ? মুখ ফিরিয়ে নেয়া। এই ওয়াতাওয়াল্লা শব্দ আমরা সেই বিখ্যাত সূরা আবাসাতে পাই । যেখানে আল্লাহর নবী এক বৃদ্ধ গরীবকে দেখে, অন্ধকে দেখে, তিনি এই ওয়াতাওয়াল্লা করেছেন, মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। মুখ ফিরিয়ে নেয়ার বিপরীত শব্দ কি? সূরা কিয়ামাহর 31 এবং 32 নম্বর আয়াত আপনি খুব মনোযোগ দিয়ে পড়লে আপনি উত্তর পেয়ে যাবেন।

সেটা হচ্ছে মুখ ফিরিয়ে নেয়ার বিপরীত শব্দ হচ্ছে এই সাল্লা । সূরা আবাসার এক নাম্বার আয়াতটা আমরা একটু পড়ে দেখি। “আবাসা- অর্থ্যাৎ সে ভ্রূকুঞ্চিত করল এবং মুখ ফিরিয়ে নিল। কেন? যেহেতু তার নিকট এক অন্ধ আগমন করেছিল। তুমি কেমন করে জানবে সে হয়তো
পরিশুদ্ধ হতো অথবা উপদেশ গ্রহণ করতো? ফলে উপদেশ তার উপকারে আসতো? পক্ষান্তরে যে বেপরোয়া– যে পরোয়া করে না তুমি তার প্রতি মনোযোগ দিচ্ছ? ছয় নাম্বার আয়াতে আল্লাহ বলছেন তুমি তার প্রতি মনোযোগ দিচ্ছ? যে বেপরোয়া- যে পরোয়া করে না-অবাধ্য? আর মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছ তার কাছ থেকে যে পরিশুদ্ধ হওয়ার জন্য এসেছিল? উপদেশ গ্রহণের জন্য এসেছিল ? তাহলে আল্লাহর নবী এখানে দুটো কাজ করেছেন । (১) এক মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন। অতাওয়াল্লা করেছিলেন । আরেকটা হচ্ছে (২) মনোযোগ দিয়েছিলেন। যারা ধনী, যারা সম্ভ্রান্ত তাদের দিকে তিনি মনোযোগ দিয়েছিলেন । আর অন্ধ গরীব বৃদ্ধ ওই লোকটার প্রতি তিনি
অতাওয়াল্লা করেছেন, মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। তাহলে মুখ ফিরিয়ে নেয়ার বিপরীত হচ্ছে ফুল কনসেন্ট্রেশন, ফুল মনোযোগ দেয়া।

সূরা কিয়ামাতে আমরা আবার চলে যাই সেখানে ছিল দুটো আয়াত। একটাতে ছিল সাদ্দাকা আরেকটাতে কাজ্জাবা । একটাতে সত্য আরেকটাতে মিথ্যা । ওতাওয়াল্লা-অর্থ মুখ ফিরিয়ে নেয়া। তাহলে সাল্লা মানে হবে মুখ ফিরিয়ে নেয়ার বিপরীত অর্থ। সাল্লা অর্থ পুরোপুরি মনোযোগ দেয়া। পুরোপুরি কনসেন্ট্রেশন করা ।পুরোপুরি তার সাথে কমিউনিকেশন বিল্ড আপ করা।

ধরুন আপনি কোনো দল করেন। ওয়ার্ড লেভেলের একজন নেতা। জেলা পাড়ি দিয়ে, উপজেলা পাড়ি দিয়ে, ইউনিয়ন পাড়ি দিয়ে, এমপি সাহেব এসেছেন আপনার এলাকায়।
বিশাল অডিটোরিয়াম বা খোলা ময়দান। শত শত ‚হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ মানুষ সেখানে। সেই এমপি আপনার দিকে ওতাওয়াল্লা না করে আপনার দিকে ওসাল্লা করেছেন। তখন আপনার খুশিতে বুকটা ভরে উঠবে না?

এমপি সাহেব আমার দিকে তাকিয়েছেন? আমার খোঁজখবর নিচ্ছেন? জিজ্ঞেস করছেন “এই আক্কাছ আলী? তুমি কেমন আছো? পরিবারের সবাই কেমন আছে? এই যে আপনার প্রতি তিনি কনসেন্ট্রেশন করছেন, মনোযোগ দিয়েছেন? দ্যাটস ইম্পর্টেন্ট । আর যদি তিনি মুখ ফিরিয়ে নিতেন? ধরুন আপনি তার বাড়ি গেলেন আপনার দিকে দেখেও দেখলো না? আপনার কাছে খুব খারাপ লাগবে না? অনেক ছেলেমেয়ে ছোটবেলায় ইমোশনাল লাইফে ঘুরঘুর করে স্কুলের সামনে বা কলেজের সামনে। যাকে পছন্দ করে হঠাৎ সেই পছন্দের মানুষ তার দিকে যদি একবার তাকায়? একবার যদি মনোযোগ দেয় ? কি আনন্দ হয় তার? আর যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় ওতাওয়াল্লা করে? খুব খারাপ লাগে না ? খুব কষ্ট লাগে না? যেকোনো মানুষ হোক ? আপনি যাকে পছন্দ করেন? যাকে ভালোবাসেন? যাকে কেয়ার করেন ? যার প্রতি সবসময় আপনার মনোযোগ থাকে কিন্তু সে আপনার প্রতি যদি অতাওয়াল্লা করে কতটা কষ্ট হবে আপনার ?

ঠিক তেমনিভাবে আল্লাহ কি করেন? ফেরেশতারা কি করেন? মুমিনদের উপরে ওতাওয়াল্লার বিপরীত কাজটা করেন। ওসাল্লা করেন। তাদের প্রতি কনসেন্ট্রেশন দেন, ফোকাস করেন মনোযোগ দেন।কারন কি? যেহেতু আপনি মুমিন হয়েছেন। এখন আল্লাহ এবং তার ফেরেশতারা আপনার প্রতি কনসেন্ট্রেশন করবে ।আপনার প্রতি মনোযোগ দেবে। আপনার সাথে কমিউনিকেট করবে। কিভাবে কমিউনিকেট করবে ? কিভাবে সংযোগ করবে? কি ভাবে যোগাযোগ করবে? সেটা একটু পরে আসছি কিন্তু এতটুকু আমরা বুঝতে পারছি যে ওতাওয়াল্লার বিপরীত হচ্ছে আপনার প্রতি মনোযোগ দেবে। কনসেন্ট্রেশন করবে। সংযোগ স্থাপন করবে। যোগাযোগ করবে। কমিউনিকেট করবে।

সামনের বিষয়গুলো আরেকটু সুন্দর করে বুঝতে হলে যদি আরবে আপনার কোন আত্মীয়‑স্বজন থাকে তার সাথে যোগাযোগ করতে হবে। তাকে জিজ্ঞেস করবেন যে, আরবের যেকোনো দেশে- আরব অঞ্চলের সকর জাতির মানুষদের এখন ২২ টা স্বাধীন দেশ আছে ।সেখানকার যেকোন আরবী ভাষী দেশে টেলিকমিউনিকেশন, মোবাইল, ইন্টারনেট, কম্পিউটার যে যোগাযোগ মাধ্যমগুলো আছে।সেসব মাধ্যমগুলো তারা এই যোগাযোগ বলতে আরবিতে কি শব্দ ইউজ করে? ব্যবহার করে? আপনি অনলাইনে সার্চ দিলেও পাবেন যে শব্দটা হচ্ছে ইত্তি সালাত। তারা সালাত শব্দটা ইউজ করে। সালাত মানে হচ্ছে যোগাযোগ, সংযোগ,লিংক.কানেকশন,মিলন।

একজনের স্বামী যদি বিদেশে থাকে তাহলে সে কি করবে? সেই স্ত্রী যদি তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় স্বামীর খুব খারাপ লাগবে। আর যদি সেই স্বামী-স্ত্রীর দুজন দুজনের দিকে যোগাযোগ ভালো থাকে, সালাত ভালো থাকে, সংযোগ ভালো থাকে, মনোনিবেশ ভালো থাকে, মনোযোগ ভালো থাকে, কনসেন্ট্রেশন ভালো থাকে, তাহলে রিলেশনশিপটা-সম্পর্কটা আরো মধুর হবে।

সবাই চায় যে আমার প্রতি সমাজের সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতা, এমপি বা বড় কেউ যেমন ইউএনও, ডিসি,ওসি, এসপি এরা আমার প্রতি একটু মনোযোগ দিক। আমি তাদের কাছে গেলে আমার প্রতি তারা কনসেন্ট্রেশন করুক মনোযোগ দিক আমার কাছ থেকে তারা মুখ ফিরিয়ে না নিক। সবাই চায় একটু এটেনশন পেতে। একটু কনসেন্ট্রেশন পেতে। একটু মনোযোগ পেতে। দ্যাটস ভেরি ইম্পর্টেন্ট ইন আওয়ার ওয়ার্ল্ডলি লাইফ। আধ্যাত্মিকভাবেও সেটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আর আশ্চর্যজনকভাবে এই জিনিসটা আমরা চাওয়ার আগেই আমাদের কি সৌভাগ্য আল্লাহ নিজেই ঘোষণা দিয়ে দিচ্ছেন সূরা আহযাবের 43 নাম্বার আয়াতে। যে আল্লাহ এবং তার ফেরেশতারা তোমাদের প্রতি এই সাল্লু করেন। তোমাদের প্রতি এই কনসেন্ট্রেশন, এই
মনোযোগ দেয় কেন? কেন তোমাদের সাথে এই সুন্দর সম্পর্কটা রিলেশনটা আল্লাহ এবং তার ফেরেশতারা করছেন? যাতে করে তোমাদেরকে মিনাজ জুলুমাতি ইলান নূর- অর্থ্যাৎ জাহেলিয়াতের অন্ধকার থেকে মুক্ত করে হেদায়েতের আলোতে উদ্ভাসিত করতে পারেন । দ্যাটস এ গ্রেট অচিভমেন্ট অফ আওয়ার লাইফ । তাহলে কি হবে? আমাদের জীবনের সবচেয়ে পরম পাওয়া হবে। আমরা যদি জাহেলিয়াতের অন্ধকার থেকে বের হয়ে আল্লাহর যে হেদায়েত- যেটা আমরা সূরা ফাতিহাতে বলি সূরা বাকারাতে বলি ইয়াকা নাবুদু ইয়াকা নাস্তাইন, ইহদিনাস সিরাতাল মুস্তাকিম। আল্লাহ আমরা তোমার ইবাদত করি এবং তোমার কাছে সাহায্য চাই ।
আমাদেরকে ইহদিনাস সিরাতাল মুস্তাকিম- সেই সহজ সরল হেদায়েতের পথে পরিচালিত করো। সেই হেদায়েত । যেই হেদায়েতের জন্য এতো কিতাব । এত নবী এতো রাসূল । সবকিছুর মূলই তো হচ্ছে এই হেদায়েত। সেই জাহেলিয়াতের অন্ধকার থেকে দূর করে আপনাকে আল্লাহ এবং তার ফেরেশতারা এই হেদায়েতের নূরে উদ্ভাষিত করবেন। এ পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হেদায়েতের বিষয়টাই এখানে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেছেন। দ্যাটস দা মেইন পয়েন্ট অফ সূরা আহযাব আয়াত 43্ । সূরা আহযাবের 56 আয়াতে সেই একই কাজ আল্লাহ এবং তার ফেরেশতারা করেন। নবীর প্রতি কনসেন্ট্রেশন করেন, কমিউনিকেশন করেন। কেন করেন? এবার সেই দিকটা নিয়ে আমরা আলোচনা করব।

সূরা নিসা আয়াত 166 আল্লাহ বলছেন “কিন্তু আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, যা তিনি নাযিল করেছেন তা তার জ্ঞানের ভিত্তিতেই নাযিল করেছেন। ফেরেশতারাও সে সাক্ষ্য দিচ্ছে । আর সাক্ষী হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট।” আল্লাহ সাক্ষী দিচ্ছেন যা তিনি নাযিল করেছেন। কি নাযিল করেছেন? কুরআন । কিভাবে? তার জ্ঞানের ভিত্তিতে । আর কারা সাক্ষী দিচ্ছে? ফেরেশতারাও সে সাক্ষ্য দিচ্ছে। তাহলে আল্লাহ তার রাসূলের প্রতি? তোমার প্রতি ? আল্লাহ যে কথাটা বললেন। কি নাযিল করেছেন? কুরআন। সরাসরি না ফেরেশতাদের মাধ্যমে ? এজন্য ফেরেশতারা সাক্ষী হয়ে গেল।সূরা বাকারা আয়াত 97 “তুমি বলো যে ব্যক্তি জিব্রাইলের সাথে
শত্রুতা রাখে এজন্য যে সে আল্লাহর হুকুমে এই কোরআনকে তোমার হৃদয়ে- তোমার অন্তরে নাযিল করেছেন। তোমার অন্তর পর্যন্ত পৌঁছিয়েছেন।” এই আয়াতে পরিষ্কার আল্লাহ সরাসরি রাসূলকে কোরআন দেননি কার মাধ্যমে দিচ্ছেন? জিব্রাইলের মাধ্যমে । কাকে দিচ্ছেন? আল্লাহর রাসূলকে কোথায় দিচ্ছেন? আল্লাহর রাসূলের অন্তরে। সূরা শুয়ারা ১৯২ থেকে ১৯৪ আয়াত । “নিশ্চয়ই এই কুরআন বিশ্বজগতের রবের পক্ষ থেকে নাজিলকৃত। বিশ্বস্ত আত্মা- রুহুল কুদ্দুস- জিব্রাইল একে নিয়ে অবতরণ করেছে। কোথায়? 194 নাম্বার আয়াতে আল্লাহ বলছেন- তোমার হৃদয়ে যাতে তুমি সতর্ককারী হতে পারো।
তাহলে সূরা বাকারার 97 নাম্বার আয়াত আর সূরা শুয়ার ১৯২- ১৯৪ নাম্বার আয়াত একই ভাবার্থের আয়াত। মানে মর্মার্থ একই । আল্লাহ সরাসরি আল্লাহর রাসূলের অন্তরে এই কোরআন নাযিল করেননি। জিব্রাইল বা ফেরেশতার মাধ্যমে করেছেন এজন্যই ওই আয়াতটাতে এই ফেরেশতাদের সাক্ষী করা হয়েছে আরেকটা এভিডেন্স বা প্রমাণ আল্লাহ দিচ্ছেন সূরা নাহলের 102 নাম্বার আয়াতে। “তুমি বলো তোমার রবের নিকট হতে রুহুল কুদ্দুস জিব্রাইল সত্যসহ কুরআন অবতীর্ণ করেছেন যারা মুমিন, তাদেরকে সুদৃঢ় করার জন্য এবং মুসলিমদের জন্য পথনির্দেশ ও সুসংবাদ স্বরূপ তোমার রবের পক্ষ থেকে সত্যসহ এই কুরআন নিয়ে এসেছেন।” তাহলে এই
কোরআন নিয়ে এসেছে রুহুল কুদ্দুস ফেরেশতা জিব্রাইল। কার কাছ থেকে রবের কাছ থেকে ।কেন? মুসলিমদের হেদায়েতের পথ নির্দেশ করতে। আর সুসংবাদ স্বরূপ। তাহলে এই তিনটা সূরাতে পরিষ্কার যে আল্লাহ যে কোরআন নাযিল করছেন এখানে ভায়া-মিডিয়া-মাধ্যম হিসেবে ফেরেশতাদের একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তাহলে এবার আমরা সূরা নিসার 166 নাম্বার আয়াতে আবার ফিরে যাই। কি বলেছেন আল্লাহ? আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে- যা তিনি নাযিল করেছেন তা তার জ্ঞানের ভিত্তিতেই নাযিল করেছেন । ফেরেশতারাও সে সাক্ষ্য দিচ্ছে আর সাক্ষ্য হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট । তাহলে আল্লাহ নাযিল করেছেন কুরআন। আল্লাহর
রাসূলের কাছে। তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ করেছেন। আর সাক্ষ্য দিচ্ছে কে? ফেরেশতারা সাক্ষ্য দিচ্ছে। তাহলে আল্লাহ নাযিল করেছেন আল্লাহর রাসূলের কাছে কুরআন। কাদের মাধ্যমে ?ফেরেশতাদের মাধ্যমে। সেই প্রমাণ আল্লাহ দিচ্ছেন সূরা বাকারার 97 নাম্বার আয়াতে, সূরা শোয়ারার 192 93 94 নাম্বার আয়াতে, সূরা নাহলের 102 নাম্বার আয়াতে। তিনটা আয়াতে পরিষ্কার আল্লাহ এবং তার ফেরেশতারা রাসূলের কাছে কোরআন নাযিল করেছেন। আল্লাহ নাযিল করেছেন ফেরেশতাদের মাধ্যমে দ্যাটস দ্যা এসেন্স অফ সূরা আহযাব 56 । সূরা আহযাবের 56 নাম্বার আয়াতে এই চারটা আয়াতের সারমর্মটা সংক্ষেপে বলা হয়েছে।
ইন্নাল্লাহা ওয়ামালাইকাতাহু ইউসাল্লুনা আলান নাবী । ফেরেশতারা এবং আল্লাহ , নবীর প্রতি তাহলে কিভাবে সাল্লু করলেন? আমরা বুঝে গেলাম তার সাথে কিভাবে যোগাযোগ করলেন, সংযোগ করলেন, মনোনিবেশ করলেন। এই কুরআন নাযিলের মাধ্যমে । আল্লাহ কেন শুধু নিজের সাক্ষ্য না দিয়ে ফেরেশতাদেরও সাক্ষ্য হিসেবে এখানে দাঁড় করাচ্ছেন? কারণ ফেরেশতারা ভায়া মিডিয়া হিসেবে কাজ করেছে। সূরা নিসার 166 নাম্বার আয়াতে পরিষ্কার। একইভাবে 43 নাম্বার আয়াতেও।এইভাবে আল্লাহ এবং তার ফেরেশতারা (দু এন্টিটি) অর্থ্যাৎ মুমিনদের সাথেও এইভাবেই সাল্লু করেন। তাহলে এই দুটো আয়াতের মূল টার্নিং পয়েন্ট কি? এই সাল্লু
করার মূল জিনিসটা কি দাঁড়ালো? সেটা হচ্ছে এই কোরআন যেটা জিব্রাইল ফেরেশতা এই রাসূলের নিকট নিয়ে এসেছেন রাসূলের অন্তরে রাসূলের হৃদয়ে। এই কোরআনের মাধ্যমে কি করা হবে? মুমিনদেরকে জাহেলিয়াতের অন্ধকার থেকে হেদায়েতের নুরে আলোকিত করা হবে, উদ্ভাষিত করা হবে এবং এই চার পাঁচটা আয়াতের সারমর্মটা সারাংশটা আরো চমৎকার করে আল্লাহ বলেছেন সূরা হাদিদের নয় নাম্বার আয়াতে- “আল্লাহই তো নিজ বান্দার প্রতি সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ নাযিল করেন, তোমাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোতে বের করে নিয়ে আসার জন্য। নিশ্চয়ই তিনি তোমাদের প্রতি করুণাময়, পরম দয়ালু।” তাহলে তোমাদের
প্রতি সেই মিনাজ্জুলুমা-তি ইলান নূর- অর্থ্যাৎ অন্ধকার থেকে আলোতে নিয়ে আসার জন্য কি করেছেন? আয়াতের প্রথমেই আল্লাহ বলে দিচ্ছেন- আল্লাহ তার এক বান্দা, তার এক দাসের প্রতি এই সুস্পষ্ট আয়াতসমৃদ্ধ এই কোরআন নাযিল করেছেন। এর মাধ্যমে তোমাদেরকে অন্ধকার থেকে হেদায়েতের নূরের দিকে, আলোর দিকে নিয়ে যাবেন।

তাহলে এবার আমাদের কাছে পরিষ্কার- সূরা আহযাবের 43 নাম্বার আয়াত। আল্লাহ এবং তার ফেরেশতারা কিভাবে মুমিনদেরকে মিনা জুলুমাতি থেকে ইলান নূরের দিকে নিয়ে যায়?আয়াতের শুরুটা কি আমরা বুঝলাম? আল্লাহ এবং তার ফেরেশতারা নবীর সাথে কমিউনিকেট করে, সংযোগ করে, যোগাযোগ করে, কিভাবে? তার উত্তর আমরা এতগুলো আয়াত দিয়ে পেলাম। সরাসরি আল্লাহ যেহেতু ফেরেশতাদের পরিচালনা করেন সেহেতু এই ফেরেশতাদের মাধ্যমেই আল্লাহ তার নবীর সাথে কমিউনিকেট করে,যোগযোগ করে, সাল্লু করে।

এখন আয়াতের পরের অংশটাতে কি বলা হয়েছে? ইয়া আইয়ুহাল্লাজিনা আমানু ইউসাল্লু আলাইহি- তোমরা নবীর সাথে এই সংযোগ, এই যোগাযোগ, এই কমিউনিকেশন করো । তখনকার সময়ে যারা জীবিত ছিল তাদেরকে বলা হচ্ছে। এ কারণেই ওখানে নবী শব্দটা ব্যবহার করা হয়েছে। কারা কারা ছিল ? তার উত্তর দেয়া আছে সূরা তওবার 117 নাম্বার আয়াতে । আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন নবীর প্রতি এবং মুহাজির ও আনসারদের প্রতি।
তাহলে আমরা দুটো গ্রুপ পেলাম। জীবিত মুহাজির ও আনসারদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন এবং নবীর প্রতি অনুগ্রহ করেছেন । মুহাজির ও আনসারদের প্রতি যারা সংকটকালে তাকে অনুসরণ করেছিল এমনকি তাদের মধ্যে কিছু লোকের অন্তর বেঁকে যাওয়ার উপক্রম হওয়ার পরেও আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন, তিনি তাদের প্রতি বড়ই স্নেহশীল বড়ই দয়ালু। এখানেও আমরা নবী দেখলাম। মানে জীবিত অবস্থায় আছে। আর আমাদের জন্য যখন বলা হবে তখন আর আল্লাহ নবী শব্দটা ব্যবহার করেন না । তখন ব্যবহার করেন রাসূল শব্দটা। দিস ইজ ডিফারেন্স ‑এটাই পার্থক্য- নবী এবং রাসূল এর মধ্যে। তাহলে যারা জীবিত তাদেরকে আল্লাহ বলছেন ইয়াআ্ইয়ুহাল্লাজিনা আমানু সাল্লু
আলান নবী- তোমরা নবীর সাথে এবার কমিউনিকেট করো। আল্লাহ কিভাবে কমিউনিকেট করে? ফেরেশতাদের মাধ্যমে।তা আমরা এতক্ষণ শিখলাম।

এবার এই আইয়ুহাল্লাজিনা আমানু যারা তারা নবীর সাথে কিভাবে কমিউনিকেট করবে? বিগ কোয়েশ্চেন? এই প্রশ্নের উত্তর আমাদের দেবে আল্লাহ। এটা আল্লাহকে জিজ্ঞেস করতে হবে। পীর অলি আউলিয়া গাউস কুতুব মোল্লা মৌলভী এদের কাছে জিজ্ঞেস করলে আপনি মুশরিক হয়ে যাবেন। কারণ তারা মিথ্যাবাদী ‑লায়ার্স ‑কাজ্জাব। তারা আপনাকে পথভ্রষ্ট করে ফেলবে । আপনি আল্লাহর বাণীর কাছে জিজ্ঞেস করবেন ‚আল্লাহ আপনাকে এর জবাব দিয়ে দেবেন। ইয়া আইয়ুহাল্লাজিনা আমানুরা নবীর সাথে কিভাবে
সংযোগ স্থাপন করবে? কমিউনিকেট করবে? আমাদের কথা আল্লাহ বলছেন না- কারণ আমাদের জন্য হি ইজ ডেড ‑তিনি মৃত । যারা জীবিত তারা কিভাবে কমিউনিকেট করবে? সেই আমানু কারা ? সূরা তওবার 117 নাম্বার আয়াতে তাদের পরিচয় আমরা পেয়েছি ইতিমধ্যে। তাহলে মুমিনরা- ইয়া আইয়ুহাল্লাজিনা আমানুরা- কিভাবে নবীর সাথে যোগাযোগ করবে? এর উত্তর তিনটা আয়াত দিয়ে আমরা বুঝলাম। 43 নাম্বার আয়াত সূরা আহজাবের, সূরা হাদিদের নয়, এবং সুরা ইব্রাহীমের ১। সূরা আহজাবের 43 নাম্বার আয়াতের শুরুতে আল্লাহ কি বলছেন? মুমিনদের উপরে আল্লাহ এবং তার ফেরেশতারা দুরুদ করে? আশীর্বাদ করে? 56 নাম্বার আয়াতেও?

মোল্লারা আপনাকে এই ভূগোল বুঝ দেবে। এই সাল্লি মানে হচ্ছে দুরুদ,আশীর্বাদ, ব্লেসিং। আল্লাহ এবং তার ফেরেশতারা নবীর প্রতি ব্লেসিং দেয়, দুরুদ করে, সালাত করে। তারপর আবার তারা বলে এবার ইয়া আইয়ুহাল্লাজিনা আমানু- অর্থ হে মুমিনরা তোমরা নবীর প্রতি সাল্লু করো? মানে কি ভাবেন একবার। এই মোল্লাদের কি মাথা ঠিক আছে ? এই আয়াতের শুরুতেই যেখানে আল্লাহ বলেছেন আল্লাহ এবং তার ফেরেশতারা নবীর প্রতি সাল্লু করে সেখানে আল্লাহ ঈমানদারদের জন্য অপেক্ষা করছে ? যে ঈমানদাররা কখন আমার কাছে দোয়া করবে? বলবে যে আল্লাহ
আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মদ। হে আল্লাহ তুমি মোহাম্মদের উপর সাল্লু করো? তারপর আল্লাহ এবং তার ফেরেশতারা নবীর প্রতি সাল্লু করবে ? আপনার আমার মত পাপিষ্ঠ মুশরিকের জন্য আল্লাহ অপেক্ষা করছে? আমরা কখন সাল্লু করবো নবীর প্রতি ?- তারপরে আল্লাহ নবীর প্রতি সাল্লু করবে? ভাবুন একবার কত বড় বোকা হলে, গাধা হলে, মূর্খ হলে- মানুষ এই ধরনের চিন্তা ভাবনা করতে পারে?

আল্লাহ নবীকে কিভাবে সাল্লু করেছেন? তারা বলছে এখানে সাল্লু মানে হচ্ছে আশীর্বাদ। আপনার আমার মত পাপিষ্ঠ মুশরিকদের জন্য আল্লাহর আশীর্বাদ করা বন্ধ আছে? আমরা প্রার্থনা করলে- দোয়া করলে ‑দুরুদ পড়লে-তারপরে আশীর্বাদ করবে?

আল্লাহ সাধারণ একজন মানুষের মধ্য থেকে তাকে নবী হিসেবে সিলেক্ট করেছেন মনোনীত করেছেন এর চেয়ে বড় আশীর্বাদ এর চেয়ে বড় অনুগ্রহ আর কি হতে পারে পৃথিবীতে? পৃথিবীর সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ, সবচেয়ে বহুল পঠিত, সবচেয়ে মর্যাদাবান কিতাব তার উপর নাযিল করেছেন, এর চেয়ে বড় আশীর্বাদ কি দেবে আল্লাহ? আপনার আমার মত মুশরিক ফাসিক জালিমের জন্য বসে আছেন আল্লাহ? আমাদের প্রার্থনা, সাল্লু, আশীর্বাদ করার পরে আল্লাহ আশীর্বাদ করবেন?

কত বড় মিথ্যাবাদী মোল্লারা? সাল্লুর মানে বানিয়েছে আশীর্বাদ ? সাল্লুর মানে কখনোই আশীর্বাদ নয়। যাই হোক আমরা সামনে আগাই।

ঈমানদাররা কিভাবে নবীর প্রতি এই সাল্লুটা করবে? যোগাযোগ করবে? কমিউনিকেশন করবে?করলে কি হবে? মিনাজ জুলুমাতি ইলান নূর হবে। তাদেরকে জাহেলিয়াতের অন্ধকার থেকে হেদায়েতের নূরে উদ্ভাষিত করা হবে। সুরা ইব্রাহিম আয়াত এক- আল্লাহ বলছেন -“আলিফ লাম র। কিতাবুন আনজালনাহু ইলাইকা– এই কিতাব তা আমি তোমার প্রতি অবতীর্ণ করেছি যেন তুমি মানুষদের বের করতে পারো মিনাজ জুলুমাতি ইলান নূর। মানুষকে সেই মিনাজ জুলুমাতি ইলান নূর । জাহিলিয়াতের অন্ধকার থেকে হেদায়েতের আলোর দিকে। রাব্বিহিম ইলা সিরাতিল আজিজিল হাকিম- মহাপরাক্রমশালী সর্বময় প্রশংসার মালিক মহান আল্লাহর পথে আল্লাহর অনুমতিক্রমে যাতে তুমি মিনাজ জুলুমাতি ইলান নূর বের করে নিয়ে আসতে পারো জাহিলিয়াতের অন্ধকার থেকে। এইজন্য আল্লাহ কি করেছেন? এই আয়াতের প্রথমেই আল্লাহ বলে দিয়েছেন তোমার প্রতি এই কিতাব নাযিল করেছি । তাহলে সূরা ইব্রাহিমের ১ নাম্বার আয়াত এর পাশে যদি আমরা সূরা হাদিদের ৯ নাম্বার আয়াত রাখি। আমরা কি পাই? আল্লাহ নাযিল করেছেন তার বান্দার প্রতি আ‑য়া-তিম বাইয়িনা-তিল সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ। কেন? যাতে করে এই মুমিনদেরকে, মানুষদেরকে জাহিলিয়াতের অন্ধকার থেকে নূরের দিকে নিয়ে আসতে পারেন।


তাহলে সূরা ইব্রাহিমের এক নাম্বার আয়াতে, সূরা হাদিদের ৯ নাম্বার আয়াতে সূরা আহযাবের 43 নাম্বার আয়াতে মিনাজজুলুমাতি ইলান নূর ‑একই শব্দ। সেটা কি? মানুষকে জাহেলিয়াতের অন্ধকার থেকে হেদায়েতের আলোতে নিয়ে আসার জন্য। আল্লাহ কি নাযিল করেছেন? সূরা ইব্রাহিমের এক নাম্বার আয়াতে আল্লাহ বলে দিয়েছেন যে তোমার প্রতি এই কোরআন- এই কিতাব নাযিল করেছি। এর মাধ্যমে মানুষকে তুমি জাহিলিয়াতের অন্ধকার থেকে বের করবে। সূরা হাদিদের নয় নাম্বার আয়াতে একই কথা বলেছেন। আল্লাহ তার এক বান্দার প্রতি এই কিতাব এই আয়াতসমূহ সুস্পষ্টভাবে নাযিল করেছেন। কেন? তিনি যেন মানুষকে এই জাহেলিয়াতের অন্ধকার থেকে হেদায়েতের নূরের দিকে নিয়ে আসতে পারেন এবং এই মুমিনরা ভালো করেই জানতো যে আল্লাহ এই কুরআন, এই আয়াতসমূহ নাযিল করলেই আমরা জাহিলিয়াতের অন্ধকার থেকে বের হতে পারবো।

সূরা মোহাম্মদের ২০ নাম্বার আয়াতে আমরা দেখি যে মুমিনরাই প্রশ্ন করে। কি প্রশ্ন করে? মুমিনরা বলে একটা সূরা অবতীর্ণ হয় না কেন? এই আয়াতে তো আরো পরিষ্কার- মুমিনরা জানতো- খুব ভালো করেই জানে যে একটা আয়াত একটা সূরা অবতীর্ণ হলেই তা মিনাজ জুলুমাতি ইলান নূর আমাদের এই জাহেলিয়াত থেকে নূরের দিকে নিয়ে যেতে পারবে। এভাবেই এই কোরআনের মাধ্যমেই্ । সূরা হাদিদের নয় সূরা ইব্রাহিমের এক সূরা আহযাবের 43 এই তিনটা আয়াত সূরা মোহাম্মদের ২০ চারটা আয়াতে পরিষ্কার যে তারা এই নবীর সাথে সংযোগ স্থাপন করবে। কিসের মাধ্যমে? কেন করবে? যাতে তার প্রতি যেই কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে যে আয়াত নাযিল হয়েছে এটা যেন তাদেরকে পড়ে শোনানো হয়, পাঠ করা হয় তাহলেই তারা এর মাধ্যমে এ কোরআনের মাধ্যমে এ আয়াতগুলোর মাধ্যমে ইলান নূরের দিকে যেতে পারবে।

এবার আমরা আয়াতের শেষাংশ নিয়ে আলোচনা করি সেটা হচ্ছে ওয়সাল্লিমু তাসলিমা। ওসাল্লিমু তাসলিমা মানে? এই মোল্লা মৌলভীরা আপনাকে বলবে মানে হচ্ছে তাকে সালাম দাও। সূরা নিসা আয়াত 65 এখানে হুবহু তাসলিমা শব্দটা আছে। কিন্তু এখানে অর্থ করা হয়েছে পূর্ণ আত্মসমর্পণ। আর ওখানে মনগড়া একটা অনুবাদ করা হয়েছে।হায় আফসোস। দিস ইজ দা ট্রিক্স অফ ইবলিশ সূরা আহযাবের 22 নাম্বার আয়াতেও এই তাসলিমা শব্দ আছে। এখানে যে তাসলিমা আছে এখানে অর্থ কি? পূর্ণ আত্মসমর্পণ ‑তাসলিমা সন্তুষ্ট চিত্তে তারা পরিপূর্ণ আত্মসমর্পণ করবে, স্যারেন্ডার করবে। মুসলিম মানে কি? আত্মসমর্পণ করা । আল্লাহর ইচ্ছার কাছে আপনি আত্মসমর্পণ করবেন, নিজেকে সঁপে দেবেন। আল্লাহ যা বলবেন তাই করবেন।

পুলিশের কাছে আসামি যখন আত্মসমর্পণ করে- হাত উপরে উঠায়-তারা মাস্তানি,বাহাদুরি শেষ। পুলিশ যা বলবে সে তাই করবে। পুলিশ যেখানে রাখবে সেখানে থাকবে। যা খেতে দিবে তাই খাবে। জেলখানায় ‑কয়েদখানায়-থানায় যেখানে যে অবস্থায় রাখুক সে কোন প্রতিবাদ করতে পারবে না। ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম কেও তো আল্লাহ একই কথা বলেছিলেন। তুমি কি এবার আসলাম হলে? হ্যাঁ আমি আসলাম হলাম। সেই সাবার রানী সে কি বলেছিল? আসলামতু আমি আত্মসমর্পণ করলাম। ইব্রাহিম নবী আসলাম বা আত্মসমর্পণ করেছিল। দ্বীন ইসলাম এর মূল ভিত্তি হচ্ছে আসলামতু্ । আল্লাহর কাছে সমর্পণ করা। সেখানে এটাকে বানানো হয়েছে নবীর প্রতি সালাম পাঠ করো?

কি পরিমাণ জাহেল মূর্খ হলে কি ভয়ংকর ইবলিশের চক্করে পড়লে এভাবে মানুষকে ধোঁকা দিতে পারে মোল্লারা ? আল্লাহ এবং তার ফেরেশতারা নবীর প্রতি সাল্লু করছে। তোমরা সাল্লু করো সালাম দাও্। আল্লাহ এবং তার ফেরেশতারা অলরেডি করেছেন। আপনি আবার বলছেন যে আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মদ। তুমি মোহাম্মদের উপর সাল্লু করো? যে কাজ আল্লাহ প্রথমেই করেছেন ফেরেশতারা করছেন সেই কাজ আবার আপনি আল্লাহকে করতে বলছেন ? কত বড় বেয়াদব আপনি? কত বড় মূর্খ আপনি? ভাবুন ঠান্ডা মাথায়।

এখানে কি বলা হলো? সূরা নিসার 65 নাম্বার আয়াতে? অতএব তোমার রবের শপথ তারা কখনোই ঈমানদার হবে না যতক্ষণ না তারা নিজেদের সকল বিরোধে তোমাকে বিচারক করে তারপর তুমি যে বিচার করো তাতে তাদের মন সব রকম সংকীর্ণতা মুক্ত থাকে এবং সন্তুষ্ট চিত্তে আত্মসমর্পণ করে নিজেকে পরিপূর্ণরূপে সমর্পণ করে। এটাই হচ্ছে তাসলিমা সাল্লিমু। তাসলিমা হচ্ছে পরিপূর্ণ সন্তুষ্ট চিত্তে আল্লাহর কাছে আত্ম সমর্পণ করা। সূরা আহযাবের 56 আয়াতের শেষাংশে এ কথাটাই বলা হয়েছে। সাল্লিমু তাসলিমা এত চমৎকার একটা আয়াতকে নবীর প্রতি সালাম দাও বলে কিভাবে মানুষকে পথভ্রষ্টতার দিকে মুশরি কতার দিকে নিয়ে যাওয়া
হচ্ছে?

তাহলে এই আয়াতে যে বলা হলো তারা নিজেদের সকল বিরোধে তোমাকে বিচারক করে তারপর তুমি যে বিচার করো তাতে তাদের মন সব রকমের সংকীর্ণতা মুক্ত থাকে আর তারা তার সামনে নিজেদেরকে পরিপূর্ণরূপে আত্মসমর্পণ করে এখানে যে আল্লাহর রাসূলকে বলা হলো যে তারা নিজেদের সকল বিরোধ বিরোধে তোমাকে বিচারক মনে করবে এবং তুমি যেই বিচার করো সেই বিচার সন্তুষ্ট চিত্তে মেনে নেবে। তো আল্লাহর রাসূল কি রকম বিচার করবেন? কিভাবে বিচার করবেন? ইচ্ছেমত? মনগড়া? এই আয়াত দিয়েও মানুষকে মুশরিক বানানো হয়। আল্লাহ তার উত্তর দিয়ে দিচ্ছেন সূরা নিসার 105 নাম্বার আয়াতে-
“আমি তোমার কাছে সত্য সহকারে কিতাব অবতীর্ণ করেছি। কেন? যাতে তুমি আল্লাহর শেখানো জ্ঞান দ্বারা লোকদের মাঝে বিচার মীমাংসা করতে পারো তাই তুমি বিশ্বাসঘাতকদের পক্ষে বিতর্ককারী হয়ো না। তাহলে আল্লাহর রাসূল বিচার মীমাংসা করতে পারবেন- এই বিচার মীমাংসা করতে যেন পারেন- সেজন্য আল্লাহ কি নাযিল করেছেন? আয়াতের শুরুতেই বলা আছে। তোমার কাছে সত্য সহকারে কিতাব অবতীর্ণ করেছি। তাহলে আল্লাহর রাসূল বিচার মীমাংসা করবেন কি দিয়ে? কোরআন দিয়ে। কেন? কারণ আল্লাহ কোরআন নাযিলই করেছেন যাতে তিনি এই আল্লাহর শেখানো কোরআনের জ্ঞান দ্বারা মানুষের মধ্যে বিচার মীমাংসা করতে পারেন তাহলে এই বিচার মীমাংসা করতে হবে আল্লাহর কোরআন দ্বারা। এই কোরআন দিয়ে যে বিচার মীমাংসা ফায়সালা করতে হবে- আল্লাহর রাসূল মনগড়া করতে পারবেন না তার আরো পরিষ্কার ধারণা আল্লাহ দিচ্ছেন সূরা মায়েদার 49 নাম্বার আয়াত “আর তুমি আল্লাহ যা নাযিল করেছেন সেই অনুসারে তাদের মধ্যে বিচার মীমাংসা করবে তাদের ইচ্ছাকে প্রশ্রয় দেবে না এবং তাদের থেকে সাবধান থাকবে যাতে তারা তোমাকে আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান থেকে ফিতনায় ফেলতে না পারে যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে জেনে রেখো আল্লাহ তাদের কোন কোন পাপের কারণে তাদেরকে শাস্তি দিতে চান- মানুষদের অধিকাংশই প্রকৃত পক্ষে অবাধ্য নাফরমান হয়ে থাকে।” তাহলে আল্লাহ সূরা নিসার 65 নাম্বার আয়াতে মুমিনদেরকে বলেছেন যে আল্লাহর রাসূল যেই মীমাংসা করবেন সেটাকে সন্তুষ্ট চিত্তে মেনে নিয়ে তার প্রতি একেবারে তাসলিমা হতে হবে আত্মসমর্ণপণকারী হতে হবে। আবার আল্লাহ বলে দিচ্ছেন তার রাসুলকে যে তুমি ইচ্ছেমত বিচার মীমাংসা করতে পারবে না। তোমাকে বিচার মীমাংসা করতে হবে সূরা নিসার 105 এবং সূরা মায়েদার 49 নাম্বার আয়াতে আমরা দেখলাম এই কোরআন অনুযায়ী । এবং যদি করা না হয় তাহলে কি হবে? এবং যারা করবে না তাদের কি হবে? সুরা মায়েদারই 44 45 46 নাম্বার আয়াতে আল্লাহ বলে দিয়েছেন আল্লাহ যা নাযিল করে করেছেন সেই অনুযায়ী যারা বিচার ফায়সালা করে না তারা হচ্ছে কাফের তারা জালিম তারা ফাসিক। সূরা তাওবার 103 নাম্বার আয়াতেও আল্লাহর রাসূলকে আল্লাহ বলছেন যে তিনি যেন এই মুমিনদের জন্য এই সাল্লু করে আল্লাহ বলছেন না যে তুমি তাদের জন্য এভাবে দুরুদ শরীফ পড়ো বলো- “আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুমিন আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা আমানু”- এরকম বলছেন না। এখানেও সেই সংযোগ, মনোযোগ, কনসেন্ট্রেশন, কমিউনিকেশন, তাদেরকে করতে হবে। সূরা আহজাবের 56 নাম্বার আয়াতে মুমিনরা কিভাবে আল্লাহর রাসূলের প্রতি সাল্লু করবে? নবীর প্রতি সাল্লু করবে? তার উত্তর আমরা পেলাম। তাহলে এই যে সাল্লি আলা চারটা আয়াতে আমরা পেলাম। চারটা আয়াতে কোরআনে আছে। সূরা আহযাবের 56, সূরা আহযাবের 43, সূরা তওবার 103, 88 । এখানে আল্লাহ এবং তার ফেরেশতারা মুমিনদের উপর সাল্লু করে। 43 নাম্বার আয়াতে আল্লাহ এবং তার ফেরেশতারা নবীর প্রতি সাল্লু করে 56 নাম্বার আয়াতে আবার
মুমিনদেরকে বলা হচ্ছে নবীর প্রতি সাল্লু করো। আবার নবীকে বলা হচ্ছে তুমি এই মুমিনদের উপরে সল্লু করো 103 নাম্বার আয়াত সূরা তাওবায়। “হে নবী তুমি তাদের ধন সম্পদ হতে সাদকা গ্রহণ করো। তারপর কি হবে? এবং তাদের পবিত্র করো আর তাদের প্রতি সাল্লিওয়ালা- তাদের সাথে তুমি কমিউনিকেট করো কনসেন্ট্রেশন করো মনোযোগ দাও। ওই যে আবাসা সুরার মত ওয়াতাওল্লা করো না। তাদের প্রতি ফোকাস দাও, মনোযোগ দাও, কনসেন্ট্রেশন দাও, কমিউনিকেট করো, যোগাযোগ করো, তাতে কি হবে? তুমি যখন তাদের সাথে কমিউনিকেট করবে, যোগাযোগ করবে, ফোকাস করবে, সেই আবাসার মত মুখ ফিরিয়ে না নেবে, তখন তারা হৃদয়ে
শান্তি পাবে।এটা খুব স্বাভাবিক। কেন? আপনি যখন জানবেন যে এলাকার সবচেয়ে প্রভাবশালী, সবচেয়ে ধনী অথবা এলাকার এমপি মন্ত্রী মিনিস্টার ইউএনও ডিসি এসপি প্রধানমন্ত্রী কেউ আপনার প্রতি ফোকাস করছে, আপনার প্রতি কনসেন্ট্রেশন করছে, মনোযোগ করছে, কমিউনিকেশন করছে, যোগাযোগ করছে, আপনি আপনার হৃদয়ে অবশ্যই খুব শান্তি পাবেন। আর এই মুমিনরা আরো বেশি শান্তি পাবে। কারণ? এই শান্তি হচ্ছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শান্তি। কেননা আল্লাহ তার রাসূলের সাথে যোগাযোগ করছেন, নবীর সাথে যোগাযোগ করছেন, ফেরেশতাদের মাধ্যমে এই কোরআন দিয়ে, কোরআনের আয়াত দিয়ে, এই জ্ঞান, এই হিকমত ‚এই আয়াত রাসূলের কাছে আছে। রাসূল আবার এই মানুষের সাথে কমিউনিকেট করবে। কিভাবে? এই কোরআন পড়ে শোনাবে। কোরআন দিয়ে, কোরআনের আয়াত দিয়ে, আর এই মুমিনরাও মিনাজ জুলুমাতি ইলান নূর হবে। কিভাবে? এই কোরআনের মাধ্যমে তাদেরকে জাহিলিয়াতের অন্ধকার থেকে হেদায়েতের নূরের দিকে নিয়ে আসবে। যখন মুমিনরা জানবে যে এই পৃথিবীর সবচেয়ে মোস্ট পাওয়ারফুল মোস্ট ব্লেসড ম্যান এই পৃথিবীতে বর্তমানে জীবিত। যেহেতু জীবিত সময়কার আয়াত এগুলো। তার কাছ থেকে সরাসরি আমরা কোরআন শিখতে পারছি। তার কাছ থেকে
সরাসরি আল্লাহর আয়াতগুলো আমরা পাচ্ছি। এর চেয়ে বড় শান্তি আর কি হতে পারে? তিনি আমাদেরকে এগুলো দিচ্ছেন স্ট্রেট ডাইরেক্ট সরাসরি। কতটা সৌভাগ্যবান হলে সরাসরি নবীর কাছ থেকে আল্লাহর নাযিল করা হেদায়েত নূর তারা পেতে পারে? এজন্য এই আয়াতে নবীকে আল্লাহ বলছেন যে সাল্লি আলা আপনি এবার সাল্লি আলা করেন। তাদের প্রতি কমিউনিকেট করেন কনসেন্ট্রেশন দেন ফোকাস করেন।

এর সাথে আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা এই দোয়া দুরুদ মোনাজাত এগুলোর কোন রিলেশন নাই কোন সম্ন্দ্ধ নাই। কোন সম্পর্কই নাই ।

এগুলো হচ্ছে আপনাকে মুশরিক বানানোর জন্য এই ইবলিশের এজেন্টদের আবিষ্কার এবং কোরআন থেকে যেন আপনি দূরে থাকতে পারেন তার কৌশল। কারণ এতগুলো আয়াতে আমরা মূল যে জিনিসটা বুঝতে পেরেছি সেটা কি ? আমাদেরকে যদি জাহেলিয়াতের অন্ধকার থেকে বের হয়ে নূরে উদ্ভাষিত হতে হয় তাহলে সূরা ইব্রাহিমের এক নাম্বার আয়াতে আল্লাহ বলে দিয়েছেন সূরা হাদিদের নয় নাম্বার আয়াতে আল্লাহ বলে দিয়েছেন সেটা হচ্ছে কোরআন । এটা দিয়েই বিচার মীমাংসা ফায়সালা সবকিছু করতে হবে। তা না হলে ফাসিক জালিম কাফির হয়ে যাবেন। এটা বাদ দিয়ে যদি কেউ মানবরচিত লাহুয়াল হাদিস দিয়ে বুখারী তিরমিজি বেদ ত্রিপিটক তালমুদ মিদ্রাজ বা অন্য কোন কিছু দিয়ে বিচার মীমাংসা মাছলা মাছায়েল দেয় সে ফাসিক সে জালিম সে কাফের।

অথচ আমরা দেখি এই কোরআন বাদ দিয়ে লাহুয়াল হাদিস দিয়ে
বুখারী মুসলিম তিরমিজি এগুলো দিয়ে ফতোয়া দেয়া হচ্ছে মানুষের বিচার করা হচ্ছে। হ্যাঁ তোমার এই শাস্তি হবে ওই শাস্তি হবে অমুক হাদিসের বইয়ের অমুক বুখারী শরীফের এত নাম্বার হাদিস অনুযায়ী তোমার এই শাস্তি এভাবে ফতোয়া দেয়া হচ্ছে। অথচ কোরআন ছাড়া অন্য কিছু দিয়ে যদি কেউ এরকম ফতোয়া দেয় এরকম বিচার করে সে ফাসিক সে জালিম সে কাফের । আর কোরআনে কোথাও একটা আয়াতও নাই যেখানে আল্লাহ বলেছেন যে নবীর প্রতি এভাবে তোমাদের আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মদ পড়তে হবে।

চারবার কোরআনে এই মোহাম্মদ শব্দ আছে কোথাও এ কথা বলা নেই যদি এগুলোর সাথে সংযোজন‑বিয়োজন করেন ?কোন কিছু বাইরে থেকে এনে আল্লাহ বলেছেন বলেন? এই কোরআনের সামনে থেকে পিছন থেকে কোন মিথ্যা প্রবেশ করবে না (সুরা ফুসসিলাত‑৪২)। সুতরাং যদি কেউ আল্লাহর নবীর নামে কোন কিছু প্রবেশ করান যেহেতু আল্লাহ চারবার নবীর নাম মোহাম্মদ শব্দটা কোরআনে নিয়েছেন একবারও তার নামের আগে বা পরে আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মদ ব্যবহার করেননি এখন আপনি যদি কোরআনের বাইরে কোন কিছু থেকে এর মধ্যে প্রবেশ করান কুফরি করলেন আপনি আল্লাহর সাথে আল্লাহগিরি করলেন খোদার সাথে খোদাগিরি করলেন।

সুতরাং যারা এ কোরআনে আল্লাহ যে নাম ব্যবহার করেছেন সেই নামের আগে পরে আল্লাহর নবীর নামের সাথে কোন কিছু
যোগ করবে সংযোগ করবে সে নিজেকে প্রকারান্তরে আল্লাহ দাবি করলো। আর যে আপনাকে এই পরামর্শ দেবে যে আল্লাহর নবীর সাথে সামনে বা পরে তুমি নামগুলো যোগ করবে এই দুরুদ গুলো যোগ করবে সে আপনাকে মুশরিক হওয়ার দিকে ধাবিত করল। সুতরাং আফালা তাকিলুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *