হাদীসের নামাজ পদ্বতি ও মিরাজে পাওয়া ৫০ ওয়াক্তের রহস্যভেদ (সালাত সিরিজ পর্ব ২.৫/৫)

"কুরআন না বোঝার ৫ টি কারণ" নবীর প্রতি দুরুদ অপব্যাখ্যা নামাজ নামাজের ওয়াক্ত কি মানুষের বানানো? সালাত হাদিস

(67) হাদীসের নামাজ পদ্বতি ও মিরাজে পাওয়া ৫০ ওয়াক্তের রহস্যভেদ ( সালাত সিরিজ পর্ব ২.৫/৫) — YouTube

Tran­script:

অনেকেই আপনাকে প্রশ্ন করবে যদি শুধু কোরআন মানেন তাহলে কোরআন দিয়ে নামাজ পড়বেন কিভাবে? তাকে যদি আপনি পাল্টা প্রশ্ন করেন যে হাদিস দিয়ে আপনি নামাজ পড়বেন কিভাবে? তাহলে কিন্তু একটা দারুণ খেলা জমে যাবে। কারণ কি জানেন? হাদিস দিয়ে নামাজ পড়বো “সেই পার্টিতে যারা আছেন” তারা মূলত দুই ক্যাটাগরির।

 এক) হাদিস সম্পর্কে তেমন কিছুই জানে না। জীবনে কোনদিন বুখারী শরীফও শুরু থেকে শেষ অব্দি পড়ে দেখেনি। বাপ দাদার কাছে শুনে শুনে বলা “যে হাদিস দিয়ে নামাজ পড়তে হয়। সুতরাং এই টাইপের মানুষ যদি আপনার সামনে পড়ে তাহলে সে গায়ের জোরে জিততে চাইবে।

২) কিন্তু যদি হাদিস সম্পর্কে কোন পন্ডিত আপনার সামনে পড়ে মানে যাকে শাইখুল হাদিস বলা হয় হাদিস সম্পর্কে যার মোটামুটি পান্ডিত্য আছে সে কিন্তু বিরাট ভয়াবহ এক ঝামেলায় পড়ে যাবে। কারণ কি? কারণ সে খুব ভালো করেই জানে সুন্নিদের যে ৪০, ৫০ টা হাদিসের কিতাব আছে সমস্ত হাদিসের কিতাব একসাথে করলেও তারপর ১ হাজার বছর গবেষণা করলেও বর্তমানে যেই পদ্ধতিতে নামাজ পড়া হয় সেই পদ্ধতির কাঠামো সে কখনোই দাঁড় করাতে পারবে না। তাকে আপনি আরেকটু ভয় পাইয়ে দিতে পারেন। কিভাবে?

যদি আপনি তাকে বলেন যে হাদিসের কিতাবগুলো থেকে বর্তমানে প্রচলিত নামাজের কাঠামো ও পদ্ধতি আছে যদি আপনি বের করে দিতে পারেন- মুসা নবী যেমন তার বিয়েতে দেনমোহরের টাকার বিনিময়ে 10 বছর শ্বশুরবাড়ি কামলা খেটেছিল আমিও আপনার বাড়ি 10 বছর কামলা খাটবো।”

 এরকম চ্যালেঞ্জ যদি আপনি তাকে দেন সে কিন্তু মহাবিপদে পড়ে যাবে।

 খুব বিখ্যাত একটা হাদিস আছে  عَنْ مَالِكِ بْنِ الْحُوَيْرِثِ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: صَلُّوا كَمَا رَأَيْتُمُونِي أُصَلِّي

উচ্চারণ:
“Sal­lu kama ra’aytumuni usal­li”

অর্থ:
“তোমরা এমনভাবে সালাত আদায় করো, যেমনিভাবে আমাকে সালাত আদায় করতে দেখেছ।”

উৎস:
সহীহ বুখারী, হাদীস নম্বর: ৬৩১ (আরবি: صحيح البخاري 631)

 তোমরা আমাকে যেভাবে নামাজ পড়তে দেখছো তোমরাও সেইভাবে নামাজ পড়ো? কিন্তু কোনভাবে যে নামাজ পড়তে দেখেছে সেই ভাবেটা আর কোন হাদিসের কিতাবে নাই। শুধু ডায়লগটাই আছে। গল্পটাই আছে। গল্প আর ডায়লগের ভেতরে কোন স্ট্রাকচারও নাই কোন কাঠামোও নাই কোন পদ্ধতিও নাই। মজার বিষয় হচ্ছে এই হাদিসটাই পথে ঘাটে হাটে মাঠে ওয়াজ মাহফিলের ময়দানে হুজুররা শুধু ছুড়েই মারে আর বলে যে আল্লাহর রাসূল বলেছে তোমরা আমাকে যেভাবে নামাজ পড়তে দেখেছো নিজেরাও সেইভাবে নামাজ পড়ো। তো নামাজ পড়তে কিভাবে দেখেছি? কি করেছেন তিনি প্রতি নামাজে? তিনি কি ফজরের সময় হাত পেটে বাঁধতেন? যোহরের সময় নাভির নিচে বাঁধতেন ? আসরের সময় হাত বুকে বাঁধতেন? মাগরিবের সময় মালেকী মাযহাবের মত হাত ছেড়ে দিতেন? এশারের সময় আমিন জোরে বলতেন আর ফজরে আমিন আস্তে বলতেন?

 আপনি কি কল্পনা করতে পারছেন এই 1000 বছর ধরে আমাদের সাথে কি করা হচ্ছে? নামাজের যতগুলো স্ট্রাকচার আছে, যতগুলো পদ্ধতি আছে, যতগুলো ধাপ আছে , অর্থ্যাৎ প্রথমে কি করবেন? তারপরে কি করবেন, মাঝে কি করবেন, সবশেষে কি করবেন? সমস্ত ধাপ বাদ দিলাম শুধু প্রথম ধাপে যদি আপনি আসেন যে শুধু হাতটা কোথায় বাঁধবেন? সেটা নাভির নিচে না পেটের উপরে? নাভির উপরে? না বুকের উপরে? নাকি হাত ছেড়ে দেবেন মালেকী মাযহাবের মতো? এই একটা প্রশ্নের সিম্পল উত্তর এই ১০০০ বছর ধরে ৪০ লক্ষ হাদিস ঘেটেও আমাদের হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ আলেম ওলামা মিলেও একমত হয়ে নির্ধারণ করতে পারেন নি। বাদবাকি ধাপের পদ্ধতি গুলো না হয় বাদই দিলাম।

 হাদিসের কিতাবে কি আছে জানেন? আপনি নামাজ জোড়াতালি দিয়ে পাবেন। উদাহরণ পেতে চান? দিচ্ছি তাহলে শুনুন। ওমুক আজগুবি শরীফের 294 নাম্বার হাদিসে পাবেন আল্লাহর রাসূল নাভির নিচে হাত বেঁধেছিল।আরেক টুকারি শরীফে পাবেন নামাজের সময় আমি দেখেছিলাম অমুক সাহাবী থেকে বর্ণিত রাসুল রাফুল ইয়াদাইন করেছিলেন। কিরকিজি শরীফের 1245 নাম্বার হাদিসে গিয়ে পাবেন আমি আল্লাহর রাসূলের সাথে যোহরের নামাজ পড়েছিলাম তখন আমি দেখেছি তিনি হাত পেটের উপরে বেঁধেছিলেন।  আবার লাসাই শরীফের  2634 নাম্বার হাদিসে গিয়ে পাবেন সাহাবী হুজাইফা থেকে বর্ণিত আমি আল্লাহর রাসূল এর সাথে আসরের নামাজ পড়েছিলাম তখন দেখেছিলাম তিনি হাত ছেড়ে

দিয়ে নামাজ পড়েছিলেন। আবার উজবেকিস্তান শরীফের 5835 নাম্বার হাদিসে গিয়ে পাবেন সাহাবী আবু সাঈদ খুদরী থেকে বর্ণিত তিনি বলেন আমি আল্লাহর রাসূলের সাথে এশার নামাজ পড়েছিলাম তখন আমি দেখেছিলাম তিনি বুকের উপরে হাত বাঁধিয়াছিলেন।

 এইভাবে আপনি ছিন্ন ভিন্ন টুকরা টুকরা করে এই ৪০ লক্ষ হাদিস ঘেটেঘুটে আপনি নামাজের স্ট্রাকচার পাবেন পদ্ধতি পাবেন। যার কোন আগাও নাই মাথাও নাই এবং সবগুলো মিলিয়ে ঝিলিয়ে যদি আপনি একটা স্ট্রাকচার বা কাঠামো দাঁড় করাতে চান আপনার কমপক্ষে ১০০০ বছর লাগবে। এবং ১ হাজার শতাংশ গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি সেই স্ট্রাকচারের উপরে দুনিয়ার  সকল আলেম কখনোই একমত হবে না।

এই হচ্ছে হাদিস দিয়ে নামাজ পড়া বাহিনীর ৪০ লক্ষ হাদিস সম্বলিত কিতাবের জোর।

আপনি কি বুঝেছেন হাদিসের বইয়ের শক্তি সামর্থ্য কত বেশি? কত আকাশচুম্বি জোড়াতালি? শুধু হাত বাঁধার হাজার হাজার পরস্পর বিরোধী হাদিস দিয়েই আপনি বুঝে নেন যে ৪০ লক্ষ হাদিস ঘেটেঘুটে দেখলে শুধুমাত্র আপনি হাত কোথায় বাঁধবেন এটা নিয়েই মোল্লারা বা হুজুররা কেয়ামত পযর্ন্ত ঐক্যমত্বে পৌঁছাতে পারবেন না।

 এবার আসেন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের বিষয়ে আলোচনা করি। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের হাদিসগুলো যদি পড়েন তাহলে আপনি মর্মে মর্মে উপলব্ধি করবেন যে যারা ইহুদি থেকে মুসলিম হয়েছিল তাদের কি ভয়ঙ্কর প্রভাব এই ইসলাম ধর্মের প্রতি রন্ধ্রে রন্ধ্রে জড়িয়ে আছে । প্রতিটা অনুতে পরমাণুতে তাদের মেধা তাদের প্রজ্ঞা তাদের কূটনীতি তাদের কুটুকৌশল তাদের ষড়যন্ত্র তাদের চক্রান্ত সবকিছু মিলেমিশে একাকার হয়ে আছে ইসলাম ধর্মের প্রত্যেকটা ঘাটে ঘাটে প্রত্যেকটা বাঁকে বাঁকে।  

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জন্ম ইতিহাসে যখন আপনি যাবেন তখন অনিচ্ছা সত্ত্বেও মর্মান্তিকভাবে বুঝে ফেলবেন যে আপনি যাকে সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ নবী বলেন তার জ্ঞান বুদ্ধি চিন্তা ভাবনা ও দূরদর্শিতা মুসা নবীর ১০০ ভাগের এক ভাগ সমপরিমাণও ছিল না। মুসা নবী তার চেয়ে কমপক্ষে ১০০ গুণ বিচক্ষণ ১০০ গুণ বুদ্ধিমান ‘১০০ গুণ ইন্টেলিজেন্ট ১০০ গুণ দূরদৃষ্টি সম্পন্ন ছিলেন ।

জাতির পিতা ইব্রাহীম নবী থাকেন সপ্তম আসমানে আর মুসা নবী থাকেন ষষ্ঠ আসমানে। আপনার সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল যদি মৃত্যুবরণ করেন তাহলে তিনি যে থাকবেন এমন কোন আসমানই খালি নাই।  এক আসমানে আদম নবী এক আসমানে ইদ্রিস নবী এক আসমানে ইব্রাহিম নবী এক আসমানে ঈসা নবী এক আসমানে মুসা নবী মানে সব নবীদের দিয়ে পুরো আসমান ব্লক করে ফেলা হয়েছে । আপনার নবী মৃত্যুবরণ করলে যেহেতু আপনি বলছেন যে সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ নবী আপনি তো আর তাকে নিচে রাখতে পারবেন না? সেই উপরের আসমানেই রাখতে হবে তাই না? কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো সেখানে কিন্তু মুসা নবী মানে ইহুদিদের নবী অলরেডি সেখানে সেটেল।

 নিরুপায় হয়ে বাধ্যতামূলকভাবে তার সাথে নবীকে রুম শেয়ার করতে হবে। এছাড়া ভিন্ন কোন অপশন নাই। তাহলে মুসা নবীর মর্যাদা কত হাই ক্লাস? কত উপরে? কত উঁচুতে? আর তার জ্ঞান প্রজ্ঞা বিচক্ষণতা বুদ্ধিমত্তা দূরদর্শিতা যে আপনার নবীর চেয়ে কমপক্ষে 100

গুণ তাও প্রমাণ করা হয়েছে মানব রচিত হুজিুর শরীফ থেকে।  এবার দেখুন আল্লাহ কোরআনে কি বলছেন। সূরা বাকারার 286 নাম্বার আয়াতে আল্লাহ বলছেন “কোন মানুষকেই আল্লাহ তার সাধ্যের বেশি বোঝা চাপিয়ে দেন না।”

 আল্লাহ কোন মানুষকে সে যতটুকু বোঝা বইতে পারবে তার বেশি বোঝা চাপিয়ে দেন না। এই ঘোষণা আল্লাহ দিচ্ছেন সূরা বাকারার 286 নাম্বার আয়াতে। লাইউকাল্লিফুল্লাহু নাফসান ইল্লা উসআহা। আল্লাহ কোরআনে আরো বলেছেন  সূরা ইউনুস (সুরা ১০), আয়াত ৪৪:

إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَظْلِمُ ٱلنَّاسَ شَيْـًۭٔا وَلَـٰكِنَّ ٱلنَّاسَ أَنفُسَهُمْ يَظْلِمُونَ

উচ্চারণ:
“Inna Allāha lā yaẓlimu an-nāsa shay’an walākin­na an-nāsa anfusahum yaẓlimūn.”

বাংলা অনুবাদ:
“নিশ্চয়ই আল্লাহ মানুষদের প্রতি কোনো রকম জুলুম করেন না, কিন্তু মানুষই নিজেরাই নিজেদের প্রতি জুলুম করে।”


এছাড়াও আরও অনেক আয়াতে অনুরূপ বক্তব্য এসেছে, যেমন:

◾ সূরা আন‑নিসা (৪:৪০):

“নিশ্চয়ই আল্লাহ অণু পরিমাণও জুলুম করেন না…”

◾ সূরা আল‑কাহফ (১৮:৪৯):

“…তোমার প্রতিপালক কারও প্রতি জুলুম করেন না।”

 আল্লাহ পরিষ্কার করে বলছেন তিনি কখনো তার বান্দার প্রতি জুলুম করেন না। আল্লাহ হচ্ছেন ইনসাফকারী। যেই আল্লাহ কখনো তার বান্দার প্রতি জুলুম করেন না যে আল্লাহ সবচেয়ে দয়ালু সবচেয়ে মেহেরবান যেই আল্লাহ কখনো মানুষের উপরে তার সাধ্যের বেশি বোঝা চাপিয়ে দেন না সেই আল্লাহ মানুষকে 50 ওয়াক্ত নামাজ দিয়েছেন? এটা বিশ্বাস করা কোন মুসলমানের পক্ষে সম্ভব?

 ভাবুন একবার যেই যুগে ঘড়ি আবিষ্কৃত হয়নি যাদের বয়স 30 40 তারা হয়তো একটু পেছনের স্মৃতি হাতরালে দেখবেন যে আজ থেকে 10–15 বছর আগেও যোহরের নামাজ আসরের নামাজ সূর্য দেখে আমাদের মুয়াজ্জিন সাহেবরা ঠিক করতো। সূর্য কতটুকু হেলে পড়েছে জোহরের নামাজের ওয়াক্ত হলো কিনা? আসরের ওয়াক্ত হলো কি হলো না? মাত্র 10–15 বছর আগেও তারা ঘড়ি ছাড়া শুধু সূযের উপর নির্ভরশীল ছিলেন। আর সেই 1400 বছর আগে যে যুগে ঘড়িই আবিষ্কৃত হয়নি সেই যুগে 50 ওয়াক্ত নামাজ কখনো সম্ভব? ধরুন যদি 48 ওয়াক্ত হতো তাহলে প্রতি এক ঘন্টায় দুই ওয়াক্ত করে

24 দুগুনে 48 ওয়াক্ত পরিপূর্ণ হতো। কিন্তু আল্লাহ নাকি দিয়েছেন ৫০ ওয়াক্ত? অর্থ্যাৎ ৪৮ ওয়াক্তের চেয়েও  (২) দুই ওয়াক্ত বেশি ? সব মিরিয়ে তাহলে কি দাঁড়ালো? প্রতি 28 মিনিট পর পর এক ওয়াক্ত নামাজ ? তাহলে এর প্রতিক্রিয়া কি হবে?  মুয়াজ্জিন আজান দেবে, আপনি মসজিদে যাবেন, নামাজ পড়বেন, ডানে বামে সালাম ফিরাবেন,তারপরই দেখবেন পরের ওয়াক্তর নামাজ শুরু হয়ে গেছে।

সুতরাং নামাজ শেষ করে আবার চটজলদি পরবর্তী ওয়াক্তের নামাজ শুরু করবেন, সেটা  শেষ করতে না করতেই অর্থ্যাৎ ডানে বামে সালাম ফেরাতে না ফেরাতেই যেইনা একটু বাড়ির উদ্দেশ্যে বের হতে চাইবেন দেখবেন না না না বাড়িতে যাওয়া যাবেনা, পরবর্তী ওয়াক্তের জন্য আবার মুয়াজ্জিন আজান দিচ্ছে পরের ওয়াক্ত শুরু হতে যাচ্ছে । কি ভয়ংকর মুছিবত আপনার জীবনে নেমে আসলো? নাওয়া নেই খাওয়া নেই ঘর বাড়ি ব্যবসা বাণিজ্য চাকরি বাকরি কাজকর্ম কিছুই করার সুযোগ নেই।

প্রতি 28 মিনিট পর পর নাকি আল্লাহ নামাজ দিয়েছেন? অথচ আল্লাহ সূরা বাকারার 286 আয়াতে বলছেন যে আল্লাহ কখনো মানুষকে তার সাধ্যের বেশি বোঝা চাপিয়ে দেন না। ইউনুসের ৪৪ ও নিসার ৪০ আয়াতে আল্লাহ বলেছেন আল্লাহ কখনো মানুষের উপর জুলুম করেন না। এই আয়াতগুলো কি তখন আপনার কাচে পরিহাস আর উপহাস মনে হতো না?

 মহান আল্লাহ কোরআনে নিজের যে চরিত্র বর্ণনা করেছেন তার সাথে কি এই 50 ওয়াক্ত নামাজের হুজুর শরীফের হাদীস মেলে? মহান আল্লাহর চরিত্রের সাথে এই 50 ওয়াক্তর নামাজ চাপিয়ে দেয়া কি সামন্জস্যমূলক হয়? 

 তারপরও  আমরা তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম যে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তার রচিত কোরআনে তার যে চরিত্র বর্ণনা করেছেন সেটা ভায়োলেট করে লংঘণ করে এই 50 ওয়াক্ত নামাজ চাপিয়ে দিয়েছেন যাতে করে মানুষের নাওয়া খাওয়া কাজকর্ম টয়লেট বাথরুম সব কিছু বন্ধ হয়ে যায়? মানুষকে যেন 24 ঘন্টাই মসজিদে পড়ে থাকতে হয়? পুরো পৃথিবী যেন অচল হয়ে থেমে যায়? সে অসৎ উদ্দেশ্যেই আল্লাহ ৫০ ওয়াক্ত নামাজ চাপিয়ে দিয়েছেন? চাপিয়ে দেয়ার পর আল্লাহর রাসূল কি করেছেন? তার মাথায় এতটুকু বুদ্ধি ধরলো না যে আমার উম্মতেরা কিভাবে প্রতি ২৮ মিনিট পরপর নামাজ পড়বে? এটা কিভাবে সম্ভব? তার কোন জ্ঞান বুদ্ধিই ছিল না? হাদিস কিন্তু তাই প্রমাণ করছে? এতটুকু কমন সেন্সও তার ছিল না? জ্ঞান বুদ্ধি প্রজ্ঞা তো অনেক দূরের কথা!

এই জ্ঞান বুদ্ধি প্রজ্ঞা কার ছিল?

 ছিল মুসা নবীর! ইহুদিদের সবচেয়ে প্রিয় সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ  মুসা নবীর?  আল্লাহর রাসূল আসলেন তার কাছে।অনেক খুশি হয়ে বললেন আল্লাহ আমাকে এমন জিনিস উপহার দিয়েছেন যে পৃথিবীর কোন নবীদের কোন রাসুলদের দেননি। এতটাই আনন্দিত ছিলেন তিনি। অন্যদিকে হুজুর শরীফের হাদীস অনুয়ায়ী বুদ্ধিমান প্রজ্ঞাবান মুসা নবী বললেন নবী মুহাম্মদ এত আনন্দিত হওয়ার কিচ্ছু নাই। ভেবেছেন জান্নাতের চাবি পেয়ে গেছেন? এই নামাজ পড়লে জান্নাতে চাবি তৈরি হয়ে যাবে? সেই চাবি দিয়ে জান্নাতের দরজা খুলে ফেলবেন? এত সহজ? 

 আরে ভাইরে- প্রতি আধা ঘন্টা পর পর নামাজ নিয়ে যদি আপনি তৌহিদী জনতার কাছে যান আপনার সাহাবীরা আপনাকে দাবড়ানি দেবে।  সময় নষ্ট না করে তাড়াতাড়ি উপরে যান ভাইজান। গিয়ে এটা কমিয়ে নিয়ে আসেন। বুদ্ধিমান প্রজ্ঞাবান মুসা নবীর বুদ্ধিদীপ্ত পরামর্শ শুনে তিনি সম্বিৎ ফিরে পেলেন। আরে তাইতো! ঠিকইতো! এভাবে তো ভাবিনি!  আধা ঘন্টা পর পর নামাজের ঘোষনা দিলে সাহাবীরা এটা কিভাবে পড়বে? বাদবাকি উম্মতেরাই বা কিভাবে পড়বে? এই বোরাক! এই রফ রফ কোথায় রে তুই? এই জলদি জলদি স্টার্ট দে! সময় নষ্ট করার মতো সময় নাই। অতি দ্রুত আবার আল্লাহর কাছে যেতে হবে। মে আই কাম ইন আল্লাহ? হ্যাঁ আসো আসো। কি ব্যাপার? এই একটু আগে না তুমি বিদায় টিদায় নিয়ে চলে গেছো? আবার কি? ইয়ে মানে! আল্লাহ একটা কথা ছিলো। খুবই জরুরি। আচ্ছা বলো বলো। এত ভণিতা করতে হবে না। বলছিলাম কি এই আধা ঘন্টা পর পর নামাজ এটা তো সাহাবী তাবেই উম্মতের পক্ষে অসম্ভব। তারা কিভাবে পড়বে? চাকরি বাকরি ব্যবসা বানিজ্য কাজকর্ম নাওয়া খাওয়া কিভাবে করবে? টয়লেট বাথরুম পন্ত বন্ধ হয়ে যাবে। প্লিজ একটু কমিয়ে দিন। আচ্ছা আচ্ছা!  ঠিক আছে ঠিক আছে! এত প্লিজ টিলিজ বলতে হবে না।  ঠিক আছে যাও 10 ওয়াক্ত কমিয়ে দিলাম। এখন যাও 40 ওয়াক্ত নিয়ে যাও। ওকে ওকে আল্লাহ। থ্যাংক ইউ ভেরি মাচ। বিরাট দুশ্চিন্তা থেকে বাঁচালেন। আপনার অনেক মেহেরবাণী। আপনি 10 ওয়াক্ত কমিয়ে দিয়েছেন। গেলাম তাহলে। বিদায়।

অত্যন্ত হ্রষ্টচিত্তে হাসিখুশি মন নিয়ে ফিরে এসেছেন ৬ষ্ঠ আসমানে থাকা মুসা নবীর কাছে। বিস্তারিত জানানোর পর প্রজ্ঞাবান বুদ্ধিমান মুসা নবী রেগে ফায়ার। আরে বলে কি?  মাত্র 10 ওয়াক্ত কমিয়ে নিয়ে আসছো? আরে আগে খাইতা ৫০টা দাবড়ানি  এখন তো ৪০ টা খাবে।  কিন্তু সাহাবিদের দাবড়ানি তো মিস নাই। ৫০ ওয়াক্ত নিয়ে গেলে হয়তো ৫০ টা করে দৌড়ানি মারতো একেকজনে এখন হয়তো ১০ টা কমিয়ে মারবে। আগে ছিলো প্রতি ২৮ মিনিট পরপর নামাজ এখন তো ৩৬ মিনিট পরপর নামাজ। সাহাবি তাবেই উম্মতেরা পারবে মনে হচ্ছে? পারবে তো না-ই উলটো জীবন যৌবন তামা তামা হয়ে যাবে। দাবড়ানি এখনো সুনিশ্চিত । জলদি যাও! সময় নষ্ট না করে আল্লাহর কাছে আবার যাও। গিয়ে বলো আল্লাহ। নামাজের ওয়াক্ত আরো কমিয়ে দিন। তা না হলে ১৫০৫ সালে যে জার্মানির হেনলাইন ঘড়ি আবিষ্কার করবে তারে এখনই রেডিমেড দুনিয়াতে পাঠিয়ে দেন কারণ এখন যদি তারে পৃথিবীতে না পাঠান তাহলে সে বড় হতে হতে ঘড়ি আবিষ্কার করতে করতে তো আমি মরেই যাব। উম্মতেরা ১৫০৫ সালের আগে ওয়াক্ত ঠিক করবে কি দিয়ে? সূযের আলো, তার ছায়া উপছায়া লাঠি দিয়ে হিসাব নিকাশ করে তো দুই চার ওয়াক্ত ঠিক করা সম্ভব। ৪০ ওয়াক্ত সময় ঘড়ি ছাড়া ঠিক করা তো পুরোপুরি অসম্ভব। তাহলে তুমি গিয়ে আল্লাহকে বলো যে পিটার হেনলাইনকে ঘড়ি আবিষ্কারের জন্য এখনই একেবারে তাৎক্ষণিক ঘড়ি আবিষ্কার করা অবস্থায় রেডিমেড পাঠাতে হবে আর নাহলে নামাজ কমিয়ে দিতে হবে।

 এই দুইটা শর্ত তুমি যদি আল্লাহকে দাও আল্লাহর ওয়াক্ত কমানো ছাড়া গতান্ত্যর থাকবে না। সাপ ও মরবে লাঠিও ভাঙবে না। এখন জলদি জলদি যাও।

 ব্যস যেই কথা সেই কাজ। তিনি রফরফ হাকিয়ে দ্রুতবেগে আল্লাহর কাছে গেলেন। গিয়ে ঝটপট দুইটা শর্ত দিলেন হয় আপনি পিটারে হেনলেনকে এখনই তাৎক্ষণিক তার মায়ের গর্ভে পাঠিয়ে দিন ঘড়ি আবিষ্কারসহ।  আর তা সম্ভব না হলে নামাজ কমিয়ে দিন। যেহেতু ঘড়ি আবিষ্কার হয় নি সেহেতু প্রতিদিন ৪০ ওয়াক্ত নামাজ পড়া সম্ভব নয়। ওয়াক্ত নির্ধারণ করবে কিভাবে মানুষ? তাছাড়া তারা চাকরি বাকরি কাজকর্ম কিছুই করতে পারবেনা। তাদের টয়লেট বাথরুমই করতে পারবে না রুটিরুজি কাজকর্ম তো অনেক দূরের কথা। যতদিন বাঁচবে কোনদিন ঘুমুতে পারবে বলেও মনে হচ্ছেনা।  যতদিন বেঁচে আছে ঘুম শব্দটাই ভুলে যেতে হবে তাদের। কিভাবে ঘুমাবে তারা? আপনি ৩৬ মিনিট পর পর নামাজ দিয়েছেন। ঘুমুতে গেলেই তো আযান দিয়ে দেবে মুয়াজ্জিন। লাফ দিয়ে বিছানা ছেড়ে উঠে পড়তে হবে নইলে ৮০ হোব্বা দোজখ — ২ কোটি ৮৮ লক্ষ বছর নাকি জাহান্নামের আগুনে দাউদাউ করে জ্বলতে হবে। মনে হচ্ছে প্রজ্ঞাবান মুসা নবীর শেখানো কৌশলে আল্লাহ একটা বিপদেই পড়ে গেলেন।   পিটার হেনলেন কে পাঠানো সম্ভব না। তাকে তো পাঠাবো আমি ১৫০৫ সালে ঘড়ি আবিষ্কার করার জন্য। এত আগে কিভাবে পাঠাই? তার মা বাবা দাদা দাদি সব তো আগে থেকেই ফিক্সড করা।আগের গুলোকে না পাঠিয়ে পরেরটাকে আগে পাঠানো যায় নাকি? তাকদীর ওতো চেন্জ করতে হবে তাহলে। ধ্যাততেরি। আচ্ছা ঠিক আছে যা! আরো ১০ ওয়াক্ত কমিয়ে দিলাম। এখন আর ২৮ মিনিট পরপর ও নামাজ পড়তে হবে না। ৩৬ মিনিট পরপর ও নামাজ পড়তে হবে না। ৪৮ মিনিট পরপর ১ ওয়াক্ত করে পড়বি। ঠিক আছে? খুশি? আবদার পূরণ হইছে? যা এখন ভাগ। আর বিরক্ত করবি না। সুরা ইউনুসের ৬২ আর ফাতিরের ৪৩ আয়াত ভুলে গেছিস? জানিস না আমার কথার রদবদল হয়না, পরিবর্তন হয়না? তোর যন্ত্রণায় দুইবার পরিবর্তন করলাম। এর বেশি পরিবর্তন করলে এর বেশি রদবদল করলে আয়াত দুটো আবার উঠিয়ে দিতে হবে কুরআন থেকে? নইলে নাস্তিকরা আবার হাসাহাসি করবে! 

কিন্তু বিধি বাম। বুদ্ধিদীপ্ত মুসা নবীর একের পর এক প্রজ্ঞাপূর্ণ কৌশলে আল্লাহকে বাধ্য হয়ে নিরুপায় হয়ে আরো ৩ বার তার কথার রদবদল করে পরিবর্তন করে ৫০ ওয়াক্ত থেকে ৫ ওয়াক্তে নামিয়ে আনতে হয়। মুসা নবীর প্রজ্ঞা ও ক্ষিপ্রবুদ্ধির দারুণ শলে বারবার মুগ্ধ হন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ নবী মুহাম্মদূর রাসুলুল্লাহ । তিনি যতই ভাবেন ততই অবাক হন বাকরুদ্ধ হন। এতটা দুর্দান্ত মেধা? প্রজ্ঞা ও ক্ষুরধার তীক্ষ্ণ বুদ্ধি ও হিকমা মুসা নবীর কিভাবে হলো? হঠাৎ করেই তার মনে হলো মুসা নবীকে সর্বশ্রেষ্ঠ নবী না বানানোর কোন লজিক বা যুক্তিই তিনি খুঁজে পাচ্ছেন না। 

 যাই হোক এই ঘটনার প্রতিটি পার্ট ভেঙে ভেঙে আরো বললে মাথা বিগড়ে যাওয়ার মত অবস্থা হতে পারে আপনার। মুসা নবী পরের কৌশলটা শিখিয়েছেন মান্না সালওয়া কৌশল। 

 ভাবুন তো একবার, মানুষের তো একটা ন্যূনতম কমন সেন্স থাকে। একটা হুজুর শরীফের হাদিস বর্ণনা করা হচ্ছে কতটা হাস্যকরভাবে? এই হাদিসগুলোর মাধ্যমে আল্লাহকে কতটা জালিম কতটা জুলুমবাজ এবং আল্লাহর রাসূলকে (যাকে বলা হয়েছে  তার মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ তাকে আল্লাহ এতটা ভালোবেসেছেন সেই নবী মোহাম্মদূর রাসুলুল্লাহকে) ননসেন্স জ্ঞান বুদ্ধি দূরদর্শীহীন কপর্দক কুষ্মান্ড রুপে প্রেজেন্ট করা হয়েছে উপস্থাপন করা হয়েছে। অন্যদিকে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনকে জুলুমবাজ জালিম হিসেবে প্রেজেন্ট করা হয়েছে।  একটা বান্দা সে প্রতিদিন আধা ঘন্টা পর পর নামাজ পড়বে এরকম একটা বোঝা তার উপর চাপিয়ে দিতে পারেন তিনি? যেখানে সুরা বালাদের ৪ আয়াতে তিনি বলেছেন মানুষকে পরিশ্রমের মধ্যে সৃষ্টি করা হয়েছে। সুরা নাবা ১১ সুরা বাণী ইসরাইল ১২ সুরা মুজাম্মিলের ৭ আয়াতে মানুষকে জীবিকা সংগ্রহের কথা বলেছেন রুটিরুজির জন্য। অথচ জালিমের মতো মানুষের দিন দুনিয়ায় সকল কাজকর্ম ব্লক করে দিয়েছেন? তাকে চাকরি বাকরি কাজকর্ম করার সুযোগ দেবেন না? ঘুম বা বিশ্রামেরও কোন সুযোগ দেবেন না? খাওয়া-পড়ার কোন ব্যবস্থা সে কিভাবে করবে? আসমান থেকে মান্না সালওয়া খাবার আসবে?

   সম্ভবত 20 ওয়াক্তের পরে  মুসা নবী আরেকটা কৌশল শিখিয়ে দিয়েছিলেন যে এবার গিয়ে বলবে “আপনি মান্না সালাওয়া খাবার যেরকম পাঠিয়েছিলেন মুসা নবীর উম্মতের জন্য আমার উম্মতের জন্যও এখন মান্না সালাওয়া পাঠাতে হবে তা না হলে নামাজের ওয়াক্ত আরো কমিয়ে দিতে হবে। এত এত ওয়াক্ত নামাজ পড়া সম্ভব নয় কোন মানুষের পক্ষে। খাওয়া-দাওয়া, চাষাবাদ‑কৃষিকাজ, রান্নাবান্না কখন করবে মানুষ? বাজার‑ঘাট কখন করবে? জেলেরা মাছ ধরবে কখন? কৃষকেরা মাঠে কাজ করবে কখন? সারাদিনই তো তাকে মসজিদে পড়ে থাকতে হবে। হয় নামাজ কমিয়ে দাও নইলে মান্না সালওয়া খাবার নাজিলের ওয়াদা দাও!

  ভাবুন তো একবার! বুদ্ধিদীপ্ত প্রজ্ঞাবান মুসা নবী নামাজের ওয়াক্ত কমানোর জন্য এরপর কোন কৌশল শিখিয়েছেন? হতে পারে  তিনি শিখিয়েছেন এখন তো দুনিয়ার সব মুসলমানকে ২৪ ঘন্টাই মসজিদে থাকতে হবে। ৭২ মিনিট পরপর ১ ওয়াক্ত করে প্রতিদিন ২০ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে হবে।  আপনাকে প্রত্যেকটা মুসলমান এলাকায় ফাইভ স্টার হোটেলের সুবিধাসম্পন্ন করে একটা করে মসজিদ বানিয়ে দিতে হবে। সবাই এখানে থাকবে খাবে দাবে ঘুমাবে।  আর খাবার দাবারের বিল ক্যাশ বা চেকে পাঠাতে হবে তা না হলে নামাজ আরো কমিয়ে দিতে হবে। তারপর আর কি? যা হবার তাই হলো। আল্লাহ তো আবারও মুসা নবীর কৌশলের কাছে পরাস্ত হলেন। এভাবে শেষমেশ  পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ দিতে বাধ্য করেছেন তিনি। মানে কি হাস্যকর কি কুযুক্তিপূর্ণ হুজুর শরীফ এগুলো? এর মাধ্যমে মুসা নবীকে কতটা ইন্টেলিজেন্ট কতটা বুদ্ধিমান কতটা দূরদৃষ্টি সম্পন্ন বানানো হয়েছে? জ্ঞানবানরা শতভাগ সুনিশ্চিত এই হাদিস ইহুদিরা বানিয়েছে তাদের নবী মুসাকে মুসলমানদের নবী মোহাম্মদের চেয়ে জ্ঞানী প্রজ্ঞাবান দূরদৃষ্টি সম্পন্ন প্রমাণ করার জন্য।

 মহান আল্লাহ যেখানে বলেছেন ইয়াসিন আল কুরআনিল হাকিম। এ কোরআন হচ্ছে হাকিম বা প্রজ্ঞাময়। আল্লাহ যেখানে বলেছেন তিলকা আয়াতুল কিতাবিল হাকিম সূরা লোকমানের দুই নাম্বার আয়াত এই কিতাব হচ্ছে হিকমতে পরিপূর্ণ। সেখানে আপনারা বলছেন যে না এই কোরআন হিকমতে পরিপূর্ণ নয় কোরআনে হিকমত নাই।  হিকমত আছে কোথায়? সেই বুখারী শরীফে সেই তিরমিজি শরীফে সেই নাসাই শরীফে। কি কি হিকমত আছে সেখানে? আল্লাহর রাসূল এক রাত্রে 11 জন স্ত্রীর কাছে যেতেন। ৩০ জন পুরুষের যৌনশক্তি ছিলো তার শরীরে। যেখানে মহান আল্লাহ সূরা মুজাম্মিলের ৭ আয়াতে বলেছেন যে দিনের বেলায় তো তুমি অনেক কর্মব্যস্ত থাকো।”

 তো দিনে তুমি তোমার কাজ করো তুমি আল্লাহর রিজিকের অন্বেষণ করো আর রাত্রে বেলা যখন দিনের কর্মব্যস্ততা  বন্ধ হয় তখন ওঠো, উঠে একটু দাঁড়াও, দাঁড়িয়ে এই যে কিতাব এই যে কোরআন তোমার উপর আমি নাযিল করছি এটা পড়ো। পারলে তোমার সাহাবী যারা আছে তাদের সাথে নিয়ে পড়ো। তারাও জানতে পারলো তারাও শুনতে পারলো।

 পুরো রাত না তুমি যতটুকু পারো রাতের অর্ধেক হোক রাতের তিন ভাগের এক ভাগ হোক রাতের দুই ভাগের এক ভাগ হোক তুমি পড়ো তবে অবশ্যই সুন্দর করে পড়বে স্পষ্টভাবে পড়বে ধীরে ধীরে তারতীল ছন্দময়তা দিয়ে কুরআন পড়বে। তোমাকে পাঠানোর 1400 বছর পরে  বাংলাদেশে পাকিস্তানে ভারতে যে ফুল স্পিডে টাইটানিক স্পিডে রকেট ট্রেনের গতিতে ওরা যে তারাবি পড়বে ওরকম করে ভুলেও পড়োনা।

 আমি তোমাকে যে নির্দেশ দিচ্ছি তুমি শুধু সেটাকে অনুসরণ করো। তুমি ধীরে ধীরে স্পষ্টভাবে এই কোরআনটা তেলাওয়াত করবে এবং তোমার সাহাবীদেরকেও যদি পারো সাথে নিয়ে নিও আর যতটুকু তোমার পক্ষে সহজ সাধ্য হয় সেটা রাতের অর্ধেক হোক চার ভাগের এক ভাগ হোক তিন ভাগের এক ভাগ হোক যতটুকু সহজ সাধ্য হবে ততটুকুই পাঠ করবে। আমি কিন্তু বান্দার উপর জুলুম করি না আর আমি কখনো সাধ্যের বাইরে বোঝা চাপিয়ে দেই না।

 কত চমৎকার করে সূরা মুজাম্মিলে আল্লাহ এই কথাগুলো বলেছেন কিন্তু আমরা এই কোরআনে কোন হিকমত খুঁজে পাই না প্রজ্ঞাও খুঁজে পাইন। আমরা হিকমত খুঁজে পাই কোথায়? বুখারী শরীফে তিরমিজি শরীফে সুনানে আবু দাউদ শরীফে। কি হিকমত? আল্লাহর রাসূল এক রাতে 11 জন স্ত্রীর কাছে যেতেন? ডজন ডজন স্ত্রী থাকা সত্তেও তাদের ফাকি দিয়ে দাসীদের কাছে যেতেন, মারিয়া কিবতিয়ার কাছে গিয়ে কাকী স্ত্রীদের কছে হাতেনাতে ধরাও পড়েছেন? কি হিকমত আজোয়া খেজুর খেলে কোন বিষ তোমার কিচ্ছু করতে পারবেনা।  কি হিকমত? কালি জিরা সর্ব রোগের ঔষধ।  তোমার কোন রোগ হয়েছে? সাধারন হোক আর দূরারোগ্য হোক অ্যালোপ্যাথি হোমিওপ্যাথি কোন ডাক্তার বা হাসপাতাল বা কোন  রোগের ওষুধই তোমার দরকার নেই। যেই রোগই হোক না কেন নো চিন্তা ডু ফূর্তি। ক্যান্সার হোক আর লিভার সিরোসিস হোক তুমি কালিজিরা খাবে সর্ব রোগের ওষুধ আছে কালিজিরার মধ্যে? কি হিকমত ভাবুন একবার? কালেজিরা খাবে কোন ডাক্তার কবিরাজ খনকার ফকির ওঝা কিচ্ছু লাগবে না। 

 আর কি হিকমত? পানির মধ্যে মাছির এক ডানা পড়লে আরেক ডানা চুবিয়ে দেবে। পানি বিশুদ্ধ হয়ে যাবে।100% (শতভাগ) মিনারেল ওয়াটার হয়ে যাবে। এই ধরনের হিকমত নাকি আল্লাহর রাসূল সেই বুখারী শরীফে মুসলিম শরীফে শিখিয়েছেন।

 ভাবুন একবার ফাজলামীর তো একটা সীমা থাকা দরকার? আল্লাহর রাসূলের নামে এরা কি আজব আজব জিনিস বানিয়েছে? তাকে নিয়ে টিটকারি করার মত অস্ত্র তুলে দিয়েছে ইসলাম বিদ্বেষীদের হাতে। ইসলাম বিদ্বেষীরা যেন তাকে নিয়ে হাস্যরস করতে পারে সেই হাতিয়ার তারা তুলে দিয়েছে। সুতরাং দ্যার্থহীনভাবে এ কথা বলা যায় যে এ সমস্ত হাদিস বিনির্মাণে ইহুদিদের বড় ধরনের হাত আছে। যেটা এই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জন্ম ইতিহাসটা পড়লেই আপনি বুঝতে পারবেন যে মুসা নবীকে কিভাবে টপ ক্লাস নবী বানানো হয়েছে এবং আল্লাহর সবচেয়ে নিকটে তিনি থাকেন ৬ষ্ঠ আসমানে থাকেন এবং আল্লাহকে কি পরিমাণ জালিম বানানো হয়েছে আল্লাহ যে কোরআনে বলেছেন তিনি তার বান্দার প্রতি জুলুমকারী নন এবং তিনি কখনো তার বান্দাকে সাধ্যের বেশি বোঝা চাপিয়ে দেন না সেই আয়াতগুলোর বিপক্ষে শক্তিশালী গল্প দাঁড় করানো হয়েছে।

 আবার কত ইন্টারেস্টিং ব্যাপার সেই মিরাজের কাহীনির শেষে কি বলা হচ্ছে? আল্লাহ নাকি আবার  বলেছেন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ দিয়ে “হ্যাঁ ৫০ ওয়াক্ত নামাজ কমাতে কমাতে এই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ দিলাম  তবে মনে রেখো আমার সুন্নতের আমার বাণীর কিন্ত কোন পরিবর্তন নাই আমার কথার কোন রদবদল হয়না। এই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়লে 50 ওয়াক্তের সওয়াব হবে। আমার কথার রদবদল নাই পরিবর্তন নাই মানে? আপনি প্রথমে দিলেন 50 ওয়াক্ত তারপরে দিলেন 40 ওয়াক্ত তারপরে দিলেন 30 ওয়াক্ত তারপরে 20 তারপরে 10 তারপরে পাঁচ। আর  এতবার মুসা নবীর কৌশলের কাছে পরাস্ত হয়ে একবার কথার রদবদল করে পরিবর্তন করে এখন বলছেন আমার কথার কোন পরিবর্তন নাই মানে কি?

 মানে হাদিস দিয়ে আল্লাহকে এমন ভাবে প্রেজেন্ট করা হয়েছে এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যে আল্লাহর প্রতি জ্ঞান বুদ্ধি সম্পন্ন কোন মানুষের ভক্তি শ্রদ্ধা কিছুই যেন আর না থাকে। আর আল্লাহর রাসূলকে কি বানানো হয়েছে? নির্বোধ জ্ঞান বুদ্ধিহীন দূরদৃষ্টিহীন। আর কিছুক্ষণ পর পরই কি করতেন?

মুসা নবীর সাথে দেখা করতেন আর বলতেন এখন কি করবো বড় ভাই? এত এত নামাজ ? প্রতি ২৮ মিনিট, ৩৬ মিটি, ৪৮ মিনিট পরপর নামাজ? তারপর মুসা নবী কৌশল শিখিয়ে দিলেই সাথে সাথে রফরফ গাড়ি স্টার্ট করতেন। কেন? তাকে আবার আল্লাহর কাছে যেতে হবে? সাথে সাথে বোরাকের বড় ভাই রফরফ টিট টিট করে স্টার্ট নিতো। তারপর আল্লাহর কাছে যেতেন আর বলতেন “মে আই কাম ইন আল্লাহ?”  হ্যাঁ আসো। কি হইছে? একটু আগে না বিদায় নিয়ে বের হয়ে গেলে? কি চাই এখন? ইয়ে মানে আল্লাহ  একটু সমস্যা হইছে।  এই যে ৫০ ওয়াক্ত নামাজ দিছেন এতো ওয়াক্ত পড়া তো সম্ভব না। ওয়াক্তের টাইম টেবিল কিভাবে ঠিক করবে তৌহিদী জনতা?  ঘড়ি আবিষ্কারক পিটার হেনলাইনকে এক্ষুনি মায়ের গর্ভে পাঠাতে হবে নইলে ১০ ওয়াক্ত কমিয়ে দিতে হবে। তারপর বলেছেন মান্না সালাওয়া লাগবে এখন। আপনি বলেন মান্না সালওয়া দেবেন নাকি নামাজের ওয়াক্ত কমাবেন? আল্লাহ তো মহাবিপদে পড়ে গেছেন? আচ্ছা আচ্ছা। ঠিক আছে। এত চাপ নেয়ার কিছু নাই। যাও আরো ১০ ওয়াক্ত কমিয়ে দিলাম। হাহাহা।

 মানে এসব হুজুর শরীফের হাদিস নিয়ে চিন্তা করলে হাসবো না কাঁদবো দোটানায় পরে যাই। এই হাদিসটা নিয়ে যখনই চিন্তা করি হাসিও আসে কান্নাও আসে। যে তারা আল্লাহর রাসূলের নামে আল্লাহর নামে কি জঘণ্য মিথ্যাচার কি নোংরা জাহেলিয়াত কি ভয়ংকর ধৃষ্টতা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে ।

মহান আল্লাহ আমাদের সকলকে সহিহ বুঝ দান করুক এবং তার নবী মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহকে যে মর্যাদা দিয়েছেন তাকে যেই জ্ঞান দিয়েছেন প্রজ্ঞা দিয়েছেন বিচার বুদ্ধি দিয়েছেন এবং তার আদর্শকে কত সুমহান করেছেন তা উপলব্ধি করতে পারি। তার চরিত্রের মধ্যে যে উছওয়াতুন হাছানা দিয়েছেন উত্তম আদর্শ দিয়েছেন সেই উত্তম আদর্শের মাধ্যমে যেন আমরা অনুপ্রাণিত হতে পারি সেই তৌফিক দান করুক এবং আল্লাহপাক যে তার বান্দার জন্য কত বেশি ইনসাফকারী এবং বান্দার প্রতি যে তিনি কতটা দয়াময় কতটা মায়া করেন কতটা মহব্বত করেন এবং সবসময় তিনি তার বান্দাদের রহমত দিয়ে ঘিরে থাকেন

সেই মহান আল্লাহর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ভালোবাসা যেন আরো উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পায় আরো বেশি বেশি যেন আমরা কোরআন পড়তে পারি আহসানাল হাদিস পড়তে পারি সেই তৌফিক দান করুন। যত বেশি কোরআন পড়বো ততই আমরা আল্লাহর গুণগুলো সুন্দরভাবে বুঝতে পারবো এবং আল্লাহর প্রতি আমাদের ভালোবাসা আরো বেশি বৃদ্ধি পাবে।

  আমাদের ভালোবাসা আল্লাহর প্রতি যেন আরো বাড়ে আল্লাহর ইনসাফ আল্লাহর দয়া মায়া রহমত বরকতে যেন আমরা আরো আলোকিত হতে পারি আল্লাহপাক আমাদের সেই তৌফিক দান করুন।

আলহামদুলিল্লাহি রাব্বুল আলামীন।

রিজওয়ান মাহমুদ খান , পরিচালক (তাজকিয়া নফস)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *