নুহ নবী:
- নিশ্চয়ই আমি নূহকে পাঠিয়েছিলাম তার কওমের কাছে (এই নির্দেশ দিয়ে), ‘তোমার কওমকে সতর্ক কর, তাদের নিকট যন্ত্রণাদায়ক‑মর্মান্তিক আযাব আসার পূর্বে’।
- সে বলেছিল, ‘‘হে আমার কওম! নিশ্চয়ই আমি তোমাদের জন্য এক সুস্পষ্ট‑পরিষ্কার সতর্ককারী।”
- এ বিষয়ে যে, তোমরা আল্লাহর ‘ইবাদাত কর, তাঁর তাকওয়া অবলম্বন কর (মুত্তাকী হও), আর আমার কথা মান্য কর। [ইবাদতের উদ্দেশ্য মুত্তাকী হওয়া ২:২১]
- তাহলে তিনি তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন এবং একটা নির্দিষ্ট মেয়াদকাল পর্যন্ত তোমাদেরকে অবকাশের‑সুযোগ দেবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহর নির্ধারিত (নির্দিষ্ট) সময় যখন এসে পড়বে, তখন আর বিলম্ব করা হবে না। তোমরা যদি তা বুঝতে !
- সে বলেছিল, ‘হে আমার রব ! আমি আমার জাতিকে রাত‑দিন দাওয়াত দিয়েছি/ ডেকেছি। [দোয়া-ডাকা]
- কিন্তু আমার ডাক (হেদায়েতের পথে আনার পরিবর্তে) কেবল তাদের পলায়নই বাড়িয়ে দিয়েছে’।
- “আমি যখনই তাদেরকে (আপনার পথে) দাওয়াত দিয়েছি/ডেকেছি, যাতে আপনি তাদেরকে ক্ষমা করে দেন, তখনই তারা (শুনতে না চেয়ে) কানে আঙ্গুল ঢুকিয়ে দিয়েছে , কাপড় দিয়ে নিজেদের ঢেকে ফেলেছে, (পাপাচার‑অন্যায়ের ওপর) জিদ ধরে থেকেছে এবং প্রচন্ড দম্ভ‑ঔদ্ধত্য- অহঙ্কার প্রকাশ করেছে।” [11:5, 71:10]
- অতঃপর আমি তাদেরকে উচ্চঃস্বরে-জোর কন্ঠে-প্রকাশ্যে দাওয়াত দিয়েছি/ডেকেছি।
- এর পর আমি এলান করে (জনসম্মুখে সোচ্চার হয়ে) প্রকাশ্যভাবে দাওয়াত দিয়েছি আর নির্জনে- গোপনেও তাদেরকে (আপনার পথে) দাওয়াত দিয়েছি।
- আর বলেছি, ‘তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও; নিশ্চয়ই তিনি পরম ক্ষমাশীল’।
- তাহলে তিনি অজস্র ধারায় তোমাদের উপর দীপ্তিময়তা-চমক‑দ্যুতি বর্ষণ করবেন। [দারার‑উজ্বলতা,দীপ্তিময়তা-চমক‑দ্যুতি-ঝলক‑প্রভা-বৃষ্টি ২৪:৩৫; ৬:৬]
- ‘আর তোমাদেরকে ধন-সম্পদ ও সন্তান- সন্ততি দিয়ে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের জন্য জান্নাতও ঝর্ণাধারা বানিয়ে দেবেন।”
- তোমাদের কী হল যে, তোমরা আল্লাহর মহামহিম‑মর্যাদাবান আল্লাহর ওপর আগ্রহশীল নও/ বাসনা-ভরসা করছো না? [21:10] [রজাও‑আশা ভরসা ১১:৬২]
- অথচ তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন পর্যায়ক্রমে-ধাপে ধাপে।
- ‘তোমরা কি লক্ষ্য কর না যে, কীভাবে আল্লাহ স্তরে স্তরে সাত আসমান সৃষ্টি করেছেন’?
- আর তাদের মাঝে চাঁদকে বানিয়েছেন আলো এবং সূর্যকে করেছেন প্রদীপ।
- ‘আর আল্লাহ তোমাদেরকে উৎপাদন করেছেন জমিন থেকে’। [22:5]
- তারপর তিনি তোমাদেরকে পুনরায় তার ভেতরই ফিরিয়ে নেবেন এবং (সেখান থেকে পুনরায়) তোমাদেরকে পুরোপুরি বের করে আনবেন।
- আল্লাহ তোমাদের জন্য যমীনকে করেছেন সম্প্রসারিত।
- যাতে তোমরা তার উন্মুক্ত পথ‑ঘাট দিয়ে চলাফেরা করতে পার।
- নূহ বলল, হে আমার রব! আমার (কওম) তো আমার অবাধ্যতা করছে এবং তারা অনুসরণ করেছে এমন লোকের যার ধন-সম্পদ ও সন্তান‑সন্ততি তার ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই বৃদ্ধি করেনি।
- আর তারা এক সাংঘাতিক ভয়ানক ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে।”
- আর তারা বলে, তোমরা কখনো পরিত্যাগ করো না, তোমাদের আলিহা (বিভিন্নরকম বিধানদাতাদেরকে)। এবং বর্জন করো না ওয়াদুদ তথা প্রেম- ভালোবাসা-বন্ধুত্বকে, সুওয়া তথা সময় (উপভোগ)কে। আর বর্জন করো না ইয়াগূছ (দয়াল বাবা/মাজার/দেবতাদের কাছে সাহায্য চাওয়া), ইয়াউক এবং নাসরকে । [ওয়াদ্দান- প্রেম, ভালোবাসা, কামনা,বাসনা বন্ধুত্ব ৫:৮২; ৪২:২৩; ১১:৯০; ৮৫:১৫; ৩৩:২০; ৪:৪২ সুওয়া- কাল, সময়, মূহুর্ত ৭:৩৪; ৯:১১৭; ১০:৪৫,৪৯; ১৬:৬১]
- এভাবে তারা অনেককেই পথভ্রষ্ট করেছে, সুতরাং (হে আমার রব) আপনি জালিমদের পথভ্রষ্টতা ছাড়া আর কিছুই বাড়াবেন না’।
- তাদের অপরাধের কারণেই তাদেরকে ডুবিয়ে দেয়া হয়েছিল তারপর তাদেরকে আগুনে প্রবেশ করানো হবে; তারা সাহায্যকারী হিসেবে আল্লাহ ছাড়া আর কাউকেই পাবেনা।
- আর নূহ আরজ করেছিলো, হে আমার রব! এই দুনিয়ার বুকে বাস করার জন্য একজন কাফিরকেও আপনি ছেড়ে দেবেন না।
- আপনি যদি তাদেরকে ছেড়ে দেন, তাহলে তারা আপনার বান্দাদেরকে পথভ্রষ্ট করবে, আর ওদের যেসব সন্তান জন্মাবে সেগুলো পাপিষ্ঠ কট্টর কাফের ছাড়া আর কিছুই হবে না।
- হে আমার রব! আপনি আমাকে, আমার মা‑বাবাকে, যে মুমিন হয়ে আমার ঘরে প্রবেশ করে তাকে এবং মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে মাফ করে দিন। আর জালিমদের ধ্বংস‑ক্ষয়ক্ষতি ও বিপর্যয় ছাড়া আর কিছুই বাড়িয়ে দেবেন না। Quran Research intelligence Team ড্রাফট অনুবাদ)
(Quran Research intelligence Team ড্রাফট অনুবাদ)