ইহুদীদের সাথে মোল্লাদের গোপন প্রেম। কুরআনকে বদলে দেয়ার বর্বর ইতিহাস।

কবর আজাব "কুরআন না বোঝার ৫ টি কারণ" মুসলিমের পরিচয় সংকট হাদিস

ইহুদীদের সাথে মোল্লাদের গোপন প্রেম।একই আয়াত, দুই আইন: কুরআনকে বদলে দেয়ার বর্বর ইতিহাস।

সমগ্র দুনিয়ার ৯৯ ভাগ মুসলিম  জানেই না যে হুজুরদের শরীয়াহ আইনের মাধ্যমে চালু হওয়া ব্যভিচারের শাস্তি হিসেবে ‘পাথর ছুড়ে হত্যা’ ( বা রজম) মহান আল্লাহর কুরআনে নির্দেশিত আইন নয়, মানবরচিত হুজুর শরীফের বানানো আইন যা ইহুদীদের হাদীসের কিতাব থেকে হুবহু নকল করে বানানো।

মুসলিমরা জানবেই বা কীভাবে? তারা তো কুরআনের ইসলাম অনুসরণ করে না, তারা মেনে চলে উমাইয়াদের বেতনভুক্ত দরবারি আলেমদের রচিত  ‘হুজুর‑শরীফের ইসলাম’। হুজুররা যা বলে, সেটাই চূড়ান্ত শিরোধার্য শেষ কথা ধরে নেয়, যাচাই করে কখনো দেখেনা কুরআন সত্যিই তা সমর্থন করে নাকি করেনা।

ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থ — তাওরাত (Torah) বা খ্রিস্টানদের কাছে যা Old Tes­ta­ment নামে পরিচিত, তার Leviti­cus এবং Deuteron­o­my গ্রন্থে ব্যভিচার (adul­tery) সংক্রান্ত শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড নির্ধারিত।

✅ ১. Leviticus 20:10

 “যদি কোনো ব্যক্তি তার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে ব্যভিচার করে, তবে ব্যভিচারী এবং ব্যভিচারিণী — উভয়কে অবশ্যই মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে।”

📖 এটি ব্যভিচারের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের স্পষ্ট বিধান।


✅ ২. Deuteronomy 22:22–24

22:22

 “যদি কোনো পুরুষ আরেকজনের স্ত্রীর সাথে শোয় এবং  সে অবস্থায় ধরা পড়ে, তাহলে সেই পুরুষ এবং সেই নারী — উভয়েরই মৃত্যুদন্ড দিতে হবে। তোমাদের মধ্য থেকে এই পাপ দূর করতে হবে।”


22:23–24

 “যদি কোনো পুরুষ কোনো কুমারীকে ধর্ষণ করে যে বাগদানপ্রাপ্ত, এবং ঘটনা নগরে ঘটে — তাহলে উভয়কেই শহরের ফটকে এনে পাথর মেরে হত্যা করো…”

🔹 এখানে পাথর ছুঁড়ে হত্যা (ston­ing) শাস্তি স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে, যা পরবর্তীতে নবীর মৃত্যুর পর উমাইয়াদের বেতনভুক্ত দরবারী আলেমরা ও ইহুদী পরিবারে জন্ম নেয়া ও পরবর্তীতে ধর্মান্তরিত মুসলিম হওয়া আবু হুরায়রা, কাব আল আহবার, মুনাব্বেরা হুবহু নকল  ও কপি করে শরীয়াহ আইনের নামে  ইসলামে ঢুকিয়েছে।

যেহেতু ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থ তাওরাতে —ব্যভিচারের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। এবং পরবর্তীতে ইহুদি আলেমরা ইজমা কিয়াস করে এই শাস্তিকে আরও ভয়ংকর করে  —   রচনা করে “পাথর ছুড়ে হত্যা” বা রজমের নিয়ম।

নতুন নিয়ম বা New Tes­ta­ment- বা ইনজিলে  যিশু খ্রিষ্ট বা ঈসা নবীর একটি বিখ্যাত ঘটনা হলো:
একজন নারী ব্যভিচারে ধরা পরলে ইহুদীরা সেই নারীকে পাথর ছুঁড়ে হত্যার জন্য নিয়ে আসলে , ঈসা নবী বলেছিলেন:

“তোমাদের মধ্যে যে পাপহীন, সে-ই আগে পাথর ছুড়ে রজম করে হত্যা করুক।”
📖 — John 8:7

এই কথায় সকলে লজ্জিত হয়ে সরে যায়। এরপর ঈসা নবী সেই নারীকে ক্ষমা করে দেন এবং বলেন, 

যাও, আর পাপ করো না।” (John 8:11)

🔹 এখান থেকে বোঝা যায়, ঈসা নবী ইহুদী হুজুরদের ইজমা কিয়াসের মাধ্যমে বানানো মানব রচিত বর্বর কঠোর আইনের বদলে ক্ষমা ও তাওবাকে গুরুত্ব দেন।


ইহুদিরা এতটাই একগুঁয়ে উগ্র ও মৌলবাদী ছিল যে তারা তাদের বর্বর, মধ্যযুগীয় এই শাস্তি থেকে পিছু হটেনি। এমনকি আজও ইহুদি হুজুররা এই আইন বাতিল করতে চায় না নবীর হাদীস ও পূর্বকার ওলামায়ে কেরামদের ইজতেহাদের দোহাই দিয়ে।

মদীনায় যখন ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন নবী মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ ইহুদিদের মাঝে তাদের নিজস্ব ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী শাস্তি কার্যকর করেছিলেন — তারা নিজেরাই তাদের হুজুরদের রচিত শরীয়াহ আইন মানতে রাজি ছিল। সহীহ বুখারী (হাদিস ৬৮১৯)-এ বর্ণিত আছে, এক ইহুদি নারী ও পুরুষকে ব্যভিচারের অপরাধে রজম করা হয়েছিল — কিন্তু তা ইসলামী শরিয়াতের নয়, বরং ইহুদিদের রচিত শরিয়াতের বিধান অনুযায়ী।

এখন প্রশ্ন হলো —মহান আল্লাহ কি বলেন?  আল‑কুরআন কী বলে?

ব্যভিচারের শাস্তি সম্পর্কে আল্লাহ বিধানর হচ্ছে — সূরা নূর: ২ ও ৪ আয়াত:- , ব্যভিচারকারী নারী ও পুরুষ উভয়কেই ১০০টি বেত্রাঘাত করতে হবে, যদি ৪ জন স্বাক্ষী উপস্থিত হয়।

এখানে কোথাও বলা হয়নি যে যদি বিবাহিত হয়, তাহলে পাথর ছুড়ে হত্যা করতে হবে। এটা আল্লাহ কুরআনের কোথাও বলেন নি।

কিন্তু তবুও, এক শ্রেণির আলেম নামের ইহুদী জালেম দাবি করে, ১০০ বেত্রাঘাত অবিবাহিতদের জন্য, আর বিবাহিতদের জন্য ইহুদীদের মতো পাথর ছুড়ে হত্যা অর্থ্যাৎ রজম! তারা কোথা থেকে এই পার্থক্য আনল? কুরআন তো কোনো পার্থক্য করেনি। তাহলে তারা কি কুরআনের ওপরে নিজেদের কথা বসিয়ে দিচ্ছে না?

ইতিহাস জানায়, বহু নবী ও রাসূলকে যাজক পাদ্রী ঠাকুর মোল্লা শ্রেণি ও ধর্মীয় গুরু ও গ্রান্ড মুফতিরাই  সবচেয়ে বেশি বাধা দিয়েছে সবচেয়ে বেশী অত্যাচার করেছে। নবী মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহর- পর আর কোনো নবী আসবে না — যদি কেউ আসতেন, এই যাজক পাদ্রী ঠাকুর মোল্লা মুফতি শ্রেণিই তাঁর বিরোধিতা করত। যেমন তারা অতীতে করেছে।

এখন অনেকে বলেন, “দাস‑দাসী প্রথা তো কুরআনেই আছে, রজমও থাকতে পারে।” প্রথম কথা দাস দাসী প্রথা কুরআনে নেই, আছে “মা মালাকাত আইমানুকুম” যা কখনোই দাসী নয়। এটা মোল্লাদের কুরআন বিকৃতি। যা “দাসীর সাথে সে** কেন কুরআন অপব্যাখ্যা” ভিডিওতে  বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

তবুও, তর্কের খাতিরে ধরে নিচ্ছি — রজমই শাস্তি।

তাহলে বলুন তো, সূরা নিসা:২৫ আয়াত অনুযায়ী এই শাস্তি কীভাবে প্রয়োগ করবেন?

আয়াতে বলা হয়েছে:

> “যখন কোনো মা মালাকাত আইমানুকুম (মোল্লাদের ভাষায় দাসী)  বিবাহিত হওয়ার পর ব্যভিচারে লিপ্ত হয়, তখন তার শাস্তি হবে সম্ভ্রান্ত নারীর অর্ধেক।”

এখন প্রশ্ন হলো:

১। আপনি কি পাথর ছুড়ে তাকে আধামরা করে রাখবেন?

২। ‘রজম’ বা পাথর ছুড়ে হত্যার — অর্ধেক শাস্তি কীভাবে প্রয়োগ করা সম্ভব?

৩। যদি সত্যি সত্যিই রজমই শাস্তি হতো, তাহলে এ আয়াত কি বিভ্রান্তিকর ও সাংঘর্ষিক নয়?

যারা ইহুদীদের মতো মনে করে হাদিস দিয়ে কুরআনের আয়াত ‘রহিত’ করে দেয়া হয়েছে, তাদের কাছে যুক্তি কোনো কাজে আসে না। তারা শুধু মেনে চলে, কারণ ‘শুনেছি হুজুর বলেছে’ “বড় বড় উলামায়ে কেরাম বলেছে” । কিন্তু আল্লাহ তো বলেছেন, কুরআনই হচ্ছে চূড়ান্ত মাপকাঠি, ফুরকান।

এখানে আরও একটি বড় প্রশ্ন জেগে ওঠে — একই আয়াতের (৪:২৫) এক অংশ (যেমন: দাসীকে বিয়ে করা) আজো প্রযোজ্য ধরে নেয়া হয়, কিন্তু সেই একই আয়াতের অপর অংশ (যেমন: অর্ধেক শাস্তি) হাদিস দিয়ে রহিত করে দেয়া হয় — এটা কেমন স্ববিরোধিতা এটা কেমন দ্বিচারিতা?

আমরা শরিয়াহ আইন পড়েছি। সেখানে বলা হয়েছে — আলেমদের “সম্মিলিত মত” (ইজমা) অনুযায়ী ব্যভিচারের শাস্তি রজম। কিন্তু মহান আল্লাহ কুরআনে যেখানে এক স্পষ্ট বিধান দিয়েছেন, সেখানে হুজুরদের ইজমা দিয়ে উল্টো শাস্তি তৈরি করা কি আল্লাহর আয়াতকে ঢেকে ফেলা, গোপন করা, পাশ কাটানো নয়?

 একটাই আয়াত, আইন দুটো? একটা আল্লাহর আরেকটা মোল্লার? একটা মানবিক একটা বর্বর? একটা মুসলিমের একটা ইহুদীদের? কোনটা মানবেন? সুরা বাণী ইসরাইলের ৯ আয়াত কি বলে? সুরা মোহাম্মদের ২৪? সুরা নিসার ৮২? রিজওয়ান মাহমুদ পরিচালক (তাজকিয়া নফস)

3 thoughts on “ইহুদীদের সাথে মোল্লাদের গোপন প্রেম। কুরআনকে বদলে দেয়ার বর্বর ইতিহাস।

  1. আমি সোহেল রানা নিউইয়র্ক থেকে দেখি এবং পড়ি এবং শুনি ।
    অসাধারন আপনাদের আলোচনা।
    আমি সব সময় অপেক্ষায় থাকি আপনাদের লাইভ শুনার।
    কুরআন এর পথে আসার পর আমি এখন আর কোটি টাকায় তৈরি উপাসনালয়ের ভিতর জায়গা খুঁজি না ,
    জায়গা খুঁজি কয়েক জন নিঃস্ব এতীম ‑দুস্থ ‑অসহায় অভাবগ্রস্থ মানুষের হৃদয়ে।
    মানুষ হিসাবে যদি একজন মানুষের দুঃখ না দেখি ।
    তবে আমি মনে করি আমি সৃষ্টি কর্তা দেখি নি ‚সৃষ্ট কর্তা আমাকে দেখেন নি।

    আপনাদের সুস্থতা আর দীর্ঘায়ু কামনা করি ।

  2. আপনার এই প্রচেষ্টা প্রশংসার যোগ্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *