জুমআর নামাজ ও শুক্রবারের মর্মান্তিক ইতিহাস

নামাজ সালাত

জুমআর নামাজ ও শুক্রবারের মর্মান্তিক ইতিহাস রাব্বি আউজুবিকা মিন হামাজাতিস শায়াতিন, অআউজুবিকা রাব্বি আইয়াহ দুরুন। বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। জুমআর নামাজ বলতে কুরআনে কোন কিছু নেই তবে জুমআ নামে একটা সূরা আছে এবং সূরা জুমআর ৯ থেকে ১২ নাম্বার আয়াতে যা আছে তার উপর ভিত্তি করে জুমার নামাজ চালু করা হয়েছে বলে মোল্লারা দাবি করে থাকেন। ইন্টেরেস্টিং ও মজার ব্যাপার হলো জুমআ শব্দটা কুরআনে একবার দুবার নয় অজস্রবার এসেছে। কখনো জুম্আ নামে কখনো জামিয়া কখনো জামিয়ান কখনো জামিও হিসেবে ১২৩ বার জুমআ শব্দ টা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কুরআনে প্রয়োগ করেছেন। কিন্তু জুম্আর নামাজ অর্থে একবারও প্রয়োগ করেন নি। জমা করা, একত্রিত করা, জড়ো করা,সমস্ত, সবটুকু, সন্নিবেশ বা সমাবেশ ঘটানো এসব অর্থেই কুরআনে জুম্আ শব্দটা ব্যবহার করা হয়েছে। এমনকি সূরা জুমআয় যে জুমআর কথা আছে সেখানে জুমআর দিন শব্দটাই নেই। দিনের আরবি আমরা সবাই জানি, রাতের আরবিও জানি। অবশ্য রাত নামে কোরআনে একটা পূর্ণাঙ্গ সূরাযই আছে সূরা লাইল নামে। লাইল শব্দের অর্থ হচ্ছে রাত। প্রশ্ন উঠছে দিন এর আরবি তাহলে কি? সূরা শামসের ৩ নাম্বার আয়াত পড়লে আমরা বুঝবো দিনের সঠিক আরবি কি? আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলছেন অন্নাহারি ইজা জাল্লাহা- শপথ দিনের যখন তা সূর্যকে উদ্ভাসিত করে। তাহলে আমরা যে বলি ইয়াম মানে দিন? এটা ভুল বলি। ইয়াম কখনোই দিন নয়। সুরা আল‑আ’রাফ (৭:৫৪), ইউনুস (১০:৩), হুদ (১১:৭), আল‑ফুরকান (২৫:৫৯), ক্বাফ (৫০:৩৮), হাদীদ (৫৭:৪) আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেছেন তিনি ৬ দিনে সমগ্র বিশ্ব জাহান সৃষ্টি করেছেন। আমরা সূরা ফাতিহায় পড়ি মালিকি ইয়াওমিদ দিন। এই আয়াতে যে ইয়াওম আছে তার অর্থ কি দিন? হাশরের মাঠে কি দিন থাকবে? সূর্য উঠবে? না সবকিছু ধ্বংস হয়ে নতুন এক বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি হবে? দিন তো হয় সূর্যের ভিত্তিতে এবং তা কখনোই ১২, ১৩,‘ সর্বোচ্চ ২৪ ঘন্টার বেশি নয়। কিন্তু ২৪ ঘন্টার মধ্যে কি কোন বিচার আচার সম্ভব? কখনোই সম্ভব নয়। মালিকি ইয়াওমিদ দিন আয়াতে দিনের আরবি যে আমরা ইয়াওম পাই যার অর্থ দিন করা হয়েছে তা কখনোই সে ২৪ঘন্টা বা ১২ ঘণ্টার দিন নয়। এমনকি ইয়াওম শব্দের অর্থটাই দিন নয়। যদি তাই হয় তাহলে ৬ দিনে যে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আসমান জমিন সব সৃষ্টি করেছেন এই অর্থ টা পুরোপুরি অবৈজ্ঞানিক, নন সাইন্টিফিক এবং যুক্তি বিরোধী হয়ে যায়। কারন কি? কারণ হচ্ছে- আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের হিসেব অনুযায়ী আর আমাদের হিসেব অনুযায়ী যা দিন তা কখনোই একরকম নয়। কিভাবে? ধরুন, সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ড হাজার লক্ষ গ্রহ নক্ষত্র এগুলো যখন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বানিয়েছেন তখন কি এই সূর্যের দিন রাত্রির হিসেবে বানিয়েছেন?এই সূর্যকে কেন্দ্র করে সূর্যকে ভিত্তি ধরে সেই ২৪ ঘন্টার দিনরাত্রের হিসেবে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কখনোই তা বানান নি।কারন সূর্য সৃষ্টি নিশ্চয়ই প্রথমে করেন নি। সূর্যর চেয়ে হাজার লক্ষ কোটি গুণ বড় গ্যালাক্সি ছায়াপথ মাল্টিভার্স বানিয়েছেন যাতে সূর্যর চেয়ে বড় ও লক্ষ গুণ বেশি নক্ষত্র রয়েছে। কুরআনে যত জায়গায় আপনি ইয়াওম শব্দটা পাবেন সব জায়গায় এর অর্থ হচ্ছে পর্যায়, ধাপ বা পালাক্রম। রাব্বুল আলামিন ৬ ধাপে বা ৬ পর্যায়ে এই সমগ্র মহাবিশ্ব বা বিশ্বজগৎ সৃষ্টি করেছেন। এই দিন বা জুম্আ নিয়ে আর একটা মজার বিষয় আমাদের জানা দরকার। আমরা জানি- ইসলাম, ক্রিশ্চিয়ান, জিউস অর্থ্যাৎ ইহুদি খ্রিস্টান এবং মুসলিমরা সবাই আবরাহামিক ধর্মের বা সেমেটিক। এরা সবাই নবী ইব্রাহিমের সেই এক ঈশ্বরবাদকে মেনে চলে। আদম,শয়তান,ইউসুফ, দাউদ, সোলায়মান, ইসহাক, ইয়াকুব কে এডাম,স্যাটান,জোসেফ,ডেভিড,সালমান,আইজ্যাক,জ্যাকব নামে ডেকে থাকে। যদিও পরবর্তীতে অনেকেই বিকৃত বা বিভ্রান্ত হয়েছে কিন্তু এগুলোকে মোটাদাগে সকল ধর্মতাত্বিকরা আব্রাহামিক ধর্ম বা আব্রাহামিক রিলিজন হিসেবে অভিহিত করে থাকেন। সেই সূত্র ধরে ইহুদিরা সপ্তাহের সপ্তম দিন শনিবারকে সাব্বাত নামে অভিহিত করে। এবং সেটাকেই তারা আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের বিশ্রামের দিন হিসেবে পালন করে। এবং সেদিন তারা পবিত্র দিন হিসেবে ধরে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের ইবাদত বন্দেগি করে থাকে। তাদের সাথে হিংসা বিদ্বেষ বসত খ্রিস্টানরা এই শনিবার দিনটাকে বা সপ্তাহের সপ্তম দিনটাকে পরিবর্তন করে রবিবার বা সানডেকে তাদের পবিত্র দিন বানিয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত “শনিবার দিন “ ভিডিওতে আলোচনা করা হয়েছে তাই বিস্তারিত বর্ণনায় গেলাম না। মুসলিমরা কি করেছে? মুসলিমরা যা করেছে এবং খ্রিস্টানরা যা করেছে তার জবাব ও রহস্য আমরা সূরা আল ইমরানের ১৯ নাম্বার আয়াতে দেখতে পাই। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন “নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট একমাত্র দ্বীন বা জীবন ব্যবস্থা হল শান্তি বা ইসলাম। বস্তুত যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছিল তারা জ্ঞান লাভের পর একে অন্যের উপর প্রাধান্য লাভের জন্য মতভেদ সৃষ্টি করেছে|-” মতানৈক¨ করেছে কেন? পরস্পর বিদ্বেষ বশতঃ আর যে ব্যক্তি আল্লাহর নিদর্শনসমূহকে অস্বীকার করবে সে জেনে নিক নিশ্চয়ই আল্লাহ হিসাব গ্রহণে দ্রুত।” এই আয়াতে পরিষ্কার যে- যাদের কিতাব দেয়া হয়েছিল তাদের নিকট জ্ঞান আসার পরই তারা মতভেদ করেছে। কেন? পরস্পর বিদ্বেষ বসতঃ এই বিদ্বেষ বশতঃই পবিত্র শনিবার দিনকে পরিবর্তন করে রবিবার দিন করেছে একদল অর্থ্যাৎ খিষ্টানরা। আরেকদল শনিবার দিনকে পরিবর্তন করে পবিত্র দিন করেছে শুক্রবার দিনকে। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে আরবি যদি জানেন বা আরবি সম্পর্কে আপনার একটু পড়াশোনা থেকে থাকে তাহলে আপনি বুঝবেন যে এই শুক্রবার দিনটাকে এই জুম্মার দিন বানানো টা কতটা হাস্যকর একটা ব্যাপার। কিভাবে? ইহুদিরা যেভাবে হিসেব করে সপ্তাহের প্রথম দিন, দ্বিতীয় দিন, তৃতীয় দিন, চতুর্থ দিন, পঞ্চম দিন এবং সপ্তম দিন যাকে হিব্রু ভাষায় সাব্বাত ইংরেজিতে সেভেনথ ডে বলা হয় আশ্চযজনকভাবে আরবিতেও সপ্তম দিনকে সাব্বাত বলা হয়। তাহলে প্রথম দিনটাকে মানে ফাস্ট ডে বা প্রথম দিন থেকে সপ্তম দিন হিব্রু ও আরবিতে অদ্ভুতভাবে মিলে যায়। আরবিতেও সংখ্যার ভিত্তিতে সপ্তাহের সাত দিন গণনা করা হয়। এবং এর মধ্যে একমাত্র ব্যতিক্রমই হচ্ছে একমাত্র ফ্রাইডে বা শুক্রবার বা জুমআর দিন? আরেকটু গভীরে যাই- আমরা সবাই জানি যে এককে ইংরেজিতে ওয়ান বাংলায় প্রথম এবং আরবিতে আহাদ বলা হয়ে থাকে। আপনি খোঁজ নিলে জানবেন বা আরবি যারা জানে তাদের কাছ থেকে জিজ্ঞেস করলেও আপনি জানবেন যে এই রবিবার কে আরবিতে বলা হয় ইয়াওমাল আহাদ। আহাদ মানে হচ্ছে এক।তার মানে-সপ্তাহের প্রথম দিন সংখ্যার ভিত্তিতে করা হলো। এটা আমরা পরিষ্কারভাবে বুঝলাম। দুইকে আরবিতে বলা হয় ইসনাইন এবং আপনি সঠিক ধারণা করেছেন যে আরবিতেও এই সোমবার কে ইয়াওমাল ইসনাইন বলা হয়। তিনকে আরবিতে বলা হয় সালাসা। আমরা যারা ছোটবেলায় অনেকে মাদ্রাসায় পড়েছি বা হুজুররা আমাদের ৩ রাকাত ৪ রাকাত দু রাকাত নামাজের নিয়ত শিখিয়েছে হয়তো আমাদের অনেকেরই মুখস্ত। আমরা বলেছিলাম “নাওয়াই তুয়ান উছাল্লিয়া লিল্লাহি তাআলা সালাসা রাকাতাই সালাতিল।” এই যে- সালাসা রাকাতাই সালাতিল‑এইযে সালাসা– এই সালাসা শব্দের অর্থই হচ্ছে তিন। আর চার রাকাত হলে আমরা বলতাম আরবা। আরবা রাকাতাই সালাতিল বলতাম। তিনের আরবি হচ্ছে সালাসা। আর চারের আরবি হচ্ছে আরবা। ইয়াওমাল সালাছা বলা হয় সপ্তাহের তৃতীয় দিনকে। অর্থ্যাৎ টুয়েস্ডে বা মঙ্গলবার কে। আর চার নাম্বার দিন আরবিতে যাকে বলা হয় আরবা ইংরেজিতে ফোর এটা কে আরবিতে বলা হয় ইয়াওমাল আরবা বা বুধবার বা ওয়েনেসডে। পাঁচের আরবিও আমরা জানি- খামসা। সপ্তাহের পাঁচ নাম্বার দিন। এটাকে বলা হয় ইয়াওমাল খামিস বা খামসা। (৭) সাতের আরবিও আমরা জানি- যেটা প্রথমে আলোচনা করেছি হিব্রুভাষায়ও সাব্বাত আরবিতেও সাব্বাত। সপ্তম দিনকে বলা হয় ইয়াওমাল সাব্বাত। তাহলে (৬) ছয় নাম্বার দিনটা কি হওয়ার কথা ছিল? ‑আমরা অনেকেই সিয়াহ সিত্তাহ নামটা শুনেছি। প্রসিদ্ধ ছয়টা হাদিসের কিতাব। তাহলে সপ্তাহের ছয় নাম্বার দিন ছিত্তাহ হওয়ার কথা, তাই নয় কি? কিন্তু মজার ব্যাপার হলো আশ্চর্যজনকভাবে আরবির সাতদিনের প্রত্যেকটা দিন সংখ্যার ভিত্তিতে হলেও অর্থ্যাৎ প্রথম দিন আহাদ, দ্বিতীয় দিন ইসনাইন, তৃতীয় দিন সালাছা, চতুর্থ দিন আরবা, পঞ্চম দিন খামসা, সপ্তম দিন সাব্বাত নির্ধারণ করা হয়েছে। তাহলে যৌক্তিকভাবে ষষ্ঠ দিন হওয়ার কথা ছিল সিত্তাহ কিন্তু সিত্তাহ শব্দটি নির্ধারণ হয়নি । নিরধারণ করা হয়েছে জুমআ যার অর্থ একত্রিত করা. জড়ো করা, সমাবেশ করা সন্নিবেশ করা এবং এই অর্থেই কুরআনের প্রায় সবখানেই আল্লাহ রাব্বুল আলামিন জুমআ শব্দটি ব্যবহার করেছেন। শুধু তাই নয় ৬২ নাম্বার সূরা জুমআর ৯ নাম্বার আয়াতে যে জুম্আ শব্দটা আল্লাহ ব্যবহার করেছেন সেখানে আরও একটা ইন্টারেস্টিং বিষয় আছে। যেখানে বলা হয়েছে যখন তোমাদের এই সমাবেশের সময় সালাতের জন্য ডাকা হয় বা আহ্বান করা হয় তোমরা আল্লাহর জিকিরের দিকে ধাবিত হও আর বেচাকেনা বর্জন করো।” প্রশ্ন উঠছে যদি এই দিনটাকে মুসলিমরা পবিত্র দিন হিসেবে ধরে থাকে ইহুদীরা যেমন শনিবারকে পবিত্র দিন হিসেবে ধরে হলিডে বা পবিত্র দিন হিসেবে উদযাপন করে, খ্রিস্টানরা রবিবার বা সানডেকে পবিত্র দিন বা হলিডে হিসেবে উদযাপন করে বা ঈশ্বরের বিশ্রামের দিন হিসেবে মনে করে থাকে, শুক্রবার দিনকে তো সেভাবেই বিশ্রামের দিন বা হলিডে বা পবিত্র দিনকে তো সেভাবেই উদযাপন করা হয় মুসলিম বিশ্বগুলোতে? এই দিন অফিস আদালত বন্ধ থাকে, ব্যবসা বাণিজ্য কেস্দ্রগুলোতে দোকানদাররা বলতে গেলে খোলেইনা। কারন জুম্মার দিনটাকে তারা পবিত্র দিন হিসেবে মনে করে। সবাই সকাল নয়টা দশটার দিকেই বাড়িতে গিয়ে জুম্মার জন্য প্রস্তুতি নেয়। প্রশ্ন উঠছে তাহলে কেন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এই আয়াতে বেচাকেনা বন্ধ করার কথা বলছেন? তারমানে কি এই আয়াত যখন নাজিল হয়েছিলো তখন নিশ্চয়ই এই সময়টাতে বেচাকেনা করা হতো? ক্রয় বিক্রয় করা হতো? আরও ইন্টারেস্টিং মজার বিষয় হচ্ছে ১০ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলছেন যখনই সালাত সমাপ্ত হবে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ো আর আল্লাহর অনুগ্রহ অনুসন্ধান করো। কিন্তু এটা কি কেউ করে? নাকি জুম্মার দিন সবাই বিশ্রাম দিবস, রেস্ট ডে বা পবিত্র দিন বা বন্ধের দিন হিসেবে মুসলিম বিশ্ব উদযাপন করে? তারা নামাজ শেষ করে বাড়ি ফিরে আসে খাওয়া দাওয়া করে বিকেল বেলা ঘুরতে যায়। কিন্তু আল্লাহ তো এখানে বলেছেন যে সালাত শেষ করে পৃথিবীতে ছড়িয়ে পরো। আল্লাহর অনুগ্রহ অনুসন্ধান করো। জীবিকা অর্থই যদি আমরা ধরে নেই তাহলে বলতে পারি যে- আল্লাহ বলছেন যে তোমরা ক্রয় বিক্রয় করো বা চাকরি করো বা ব্যবসা বাণিজ্য করো যাই করো না কেন সেই দিকেই নামাজ শেষ করে ছড়িয়ে পরো। তাহলে আয়াতের এই ধাপ গুলো কেন মানা হচ্ছে না? ১০ নাম্বার আয়াতটা কেন পুরোপুরিভাবে মুসলিম বিশ্ব অনুসরণ করে না? নামাজ শেষে কেন তারা চাকরি বাকরি বা ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য যায় না, জমিনে ছড়িয়ে পরেনা? আরো আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে ১১ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলছেন “আর তারা যখন ব্যবসায় অথবা ক্রীড়া কৌতুক দেখে তখন তারা তার দিকে ছুটে যায়। আর তোমাকে দাঁড়ানো অবস্থায় রেখে যায়।বল আল্লাহর কাছে যা আছে তা ক্রীড়া কৌতুক ও ব্যবসায় অপেক্ষা উত্তম।” মাথা পুরোপুরি ঘুরিয়ে যাওয়ার মতো একটি আয়াত। কারণ মোল্লারা আমাদের বলে- আল্লাহ রাসূলের যারা সাহাবী ছিলেন তারা ছিলেন সবচেয়ে অনুগত, সবচেয়ে বাধ্যগত। ঈমানী শক্তিতে সবচেয়ে মজবুত, সবচেয়ে বলীয়ান এবং উচু মাপের মুমিন মুত্তাকী মুসলিম ছিলেন তারা। তাহলে তারা কি করে আল্লাহর রাসূলকে একা ফেলে রেখে ব্যবসা বাণিজের দিকে চলে যেতে পারে? আমাদের বলা হয় জুমআর নামাজ মাত্র ২ রাকাত। ২ রাকাত নামাজ পড়তে দুই চার পাঁচ মিনিটের বেশি লাগার কথা নয়। তাহলে মাত্র ৫ মিনিটের সময়টুকু সাহাবীরা না দিয়ে কেন আল্লাহর রাসূলকে একা রেখে চলে যাচ্ছে? ইহুদী, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ, হিন্দু,পৌত্তলিকরা নিশ্চয়ই রাসুলের সাথে নামাজ পড়বে না?সবাই সাহাবিই ছিলেন। তাই নয় কি? আবার আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সাহাবীদের এই চলে যাওয়া দেখে তাদেরকে ইন্সপায়ার করছেন, উৎসাহিত করছেন, কিভাবে? আয়াতেই বলা হচ্ছে- “বলো আল্লাহর কাছে যা আছে তা তোমাদের এই ক্রীড়া কৌতুক, ব্যবসা-বাণিজ্যের চেয়ে অনেক উত্তম, অনেক উৎকৃষ্ট। এবং নিশ্চয়ই এই আয়াত ইহুদী খ্রিস্টানদের জন্য প্রযোজ্য নয়, কাফেরদের জন্য প্রযোজ্য নয়। তারা এমনিতেই তো আল্লাহ রাসূলের সাথে নামাজ পড়তে আসবে না। তাহলে তাকে ফেলে রেখে চলে যাওয়ার তো প্রশ্নই ওঠে না? নিশ্চয়ই এই আয়াত মুসলিমদের জন্যই সেই মুমিন মুসলিম সাহাবী বা যাদেরকে বলা হয় যে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ উম্মাহ তারা ছিলেন। সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ ছিলেন,তারা। সেই সর্বশ্রেষ্ঠ সাহাবীরাই আল্লাহর রাসূলকে একা ফেলে রেখে চলে যাচ্ছে? বিষয়টা কি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক এবং অত্যন্ত মর্মান্তিক নয়? আপনারা ভাবতে থাকুন আমরা আরেকটা বিষয় আলোচনা করি- দিনের বেলায় কি কোন সালাতের কথা অর্থ্যাৎ জোহর, জুমআ, আসর নামাজগুলোর কথা কুরআনে আছে? আমরা মাগরিব শব্দটি কুরআনে পাই কিন্তু মাশরিক অল মাগরিব হিসেবে কুরআনে পাই অর্থ্যাৎ পূর্ব আর পশ্চিম হিসেবে পাই। যেমন সূরা বাকারাই ১৭৭ নাম্বার আয়াতে আমরা দেখতে পাই যে মাগরিব শব্দটা আল্লাহ ব্যবহার করেছেন। বলেছেন “পূর্ব আর পশ্চিমে মুখ ফিরানোতে কোন কল্যাণ নেই, কোন পূন্য নেই। কাবা ঘরের পশ্চিমে যারা থাকে লাহুয়াল হাদিস অনুযায়ী তারা পূর্ব দিকে ফিরে নামাজ পড়বে আর কাবা ঘরের পূর্ব দিকে যারা থাকে যেমন বাংলাদেশ ভারত পাকিস্তান আমরা পশ্চিম দিকে ফিরে নামাজ পড়বো- এই অর্থই আমাদের বোঝানো হয়। তাহলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এখানে কেন বলছেন পূর্ব আর পশ্চিম দিকে মুখ ফেরানোতে কোনো কল্যাণ নেই? কল্যাণ আছে কিসে? মুত্তাকি ও যাকাতের ভিডিওতে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে এজন্য সেদিকে গভীরভাবে যাব না। তবে এতটুকু আমাদের জন্য পরিষ্কার যে মাগরিবের নামাজ অর্থে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কখনোই কুরআনে মাগরিব শব্দটি ব্যাবহার করেন নি। সূরা কাহাফের ৮৬ আয়াতেও আমরা মাগরিব শব্দটি পাই সেই বিখ্যাত জুলকারনাইনের ক্ষেত্রে। তিনি মাগরিবে গিয়েছিলেন। মানে ওখানেও এই পশ্চিম অর্থেই ব্যবহৃত হয়েছে মাগরিব শব্দটি। সুরা বাকারার ১১৫,১৪২,১৭৭, ২৫৮ আয়াতে, সুরা আরাফের ১৩৭ আয়াতে, সুরা শুয়ারার ২৮ আয়াতে , সুরা সুরা মুজাম্মিলের ৯ আয়াতেও আল্লাহ পশ্চিম অর্থ বোঝাতে মাগরিব শব্দটি ব্যবহার করেছেন। তাহলে এই যে মাগরিবের নামাজ আমাদের বলা হয়? এটা কোন অর্থে বলা হয়? পশ্চিমের নামাজ হিসেবে? মাগরিবের নামাজ পড়তে আসো ‑মানে কি পশ্চিমের নামাজ পড়তে আসো? এ বিষয়টা আমরা একটি ভাবতে থাকি। চলুন অন্য আরেকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করি। সেটা হচ্ছে- আসরের নামাজ। আসর নামে প্রজ্ঞাময় কুরআনে একটা আস্ত সূরাই আছে এবং অত্যন্ত বিখ্যাত অত্যন্ত শক্তিশালী একটা সূরা। এবং এই পৃথিবীতে আপনি যা করছেন আপনি হাশরের মাঠে কতটুকু লাভবান হবেন আর কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এই সূরা হচ্ছে তার মাপকাঠি। এই সূরা যদি আপনার লাইফে আপনি এপ্লাই করেন এ সূরাকে যদি আপনি মাপকাঠি বা মানদন্ড হিসেবে ধরেন তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনি আসলে আল্লাহর পথে আছেন‑জান্নাতের পথে আছেন নাকি জাহান্নামের পথে আছেন? এই সুরার নাম হচ্ছে সুরা আসর। আপনি যে কোন অনুবাদ খুঁজে দেখুন‑আসরের অর্থ করা হয়েছে সময় বা টাইম। আল্লাহ সূরার প্রথমে শপথ করছেন লছেন “অয়াল আসরি-অর্থ্যাৎ সময়ের কসম।” এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমাদেরকে যে বলা হয় আসরের ওয়াক্ত? ওয়াক্ত শব্দটা আমাদের পরিচিত। আমরা জানি যে হিন্দি ভাষাতেও ওয়াক্ত শব্দটি ব্যবহৃত হয়, উর্দুতে ভাষাতেও ব্যবহৃত হয় । তাহলে আসরের ওয়াক্ত মানে কি দাঁড়ায়? সময়ের- সময়? আসর মানে যদি সময় হয়- ওয়াক্ত মানেও তো সময়, তাই নয় কি? সময়ের সময়- নামাজে আসো? বিষয়টা কেমন অদ্ভুত হয়ে যায় না? তাহলে আমাদের কাছে এখন পরিষ্কার যে কুরআনে আসর শব্দটি কখনোই আসরের নামাজ অর্থে আল্লাহ ব্যবহার করেননি। তাহলে এই সূরার অনুবাদে সবাই লিখতো যে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সূরা আসরের প্রথম আয়াতে আসরের নামাজের কসম খেয়েছেন। তা কি কেউ বলে বা কোন অনুবাদে কি সেরকম টা আমরা দেখতে পাই? পাইনা। কারন কি? ভাবুন। গভীরভাবে ঠান্ডা মাথায় ভাবুন। আর একটা নামাজ আমরা দেখি সেটা হচ্ছে জোহরের নামাজ। এর উৎপত্তি কোথা থেকে? মোল্লাদের তাফসীরের কিতাব অনুযায়ী সূরা রুমের ১৮ নাম্বার আয়াত থেকে। কিন্তু আপনি যদি সূরা রুমের ১৭ নাম্বার আয়াত থেকে পড়েন তাহলে দেখবেন যে এই দুই আয়াতে- মানে ১৭+১৮ নাম্বার আয়াতে নামাজের ইঙ্গিত আল্লাহ রাব্বুল আলামিন দেননি।এখানে নামাজ শব্দটাই আল্লাহ ব্যবহার করেন নি। তাহলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কি বলেছেন? ১৭ নাম্বার আয়াত পড়ে দেখুন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেছেন “তোমরা আল্লাহর তাসবিহ করো আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করো।” কখন? ‑সকালে ও সন্ধ্যায়। সালাত বা নামাজ কোন শব্দই ১৭ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন উল্লেখ করেননি। ১৮ নাম্বার আয়াতে বলছেন “আর জহিরুনের সময়।” এই জহিরুনের অর্থ অনুবাদ করা করেছেন জোহর। অথচ সুরা জ্বীনের ২৬, সুরা তাহরীমের ৩, সুরা আনআমের ১২০,১৫১সুরা আরাফের ৩৩, সুরা নুরের ৩১ ইত্যাদি আয়াতে জাহের,জাহির,জহুর,এজহার এর অর্থ করা হয়েছে প্রকাশ্য বা দৃশ্যমান। অথচ সুরা রুমের ১৮ আয়াতের আগে পরে বা ভেতরে সালাত শব্দটিই নেই নামাজ শব্দটিই নেই। এই শব্দটা কুরআনে বহুল ব্যবহৃত একটা শব্দ। জাহির বা জহির বা জাহার বা এজহার এর অর্থ প্রকাশ করা, প্রকাশ্য বা দৃশ্যমান। অনেকে বলে না- যে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সমস্ত বাতিনি জিনিস জানে, জাহিরি জিনিস ও জানে। মানুষের ভিতরে দুইটা জিনিস থাকে জাহিরি আর বাতিনি। অমুক ওলি, আউলিয়া, পীর, দরবেশ অনেক বেশি জ্ঞানী। কেন? কারণ তার কাছে জাহিরি এলেমও আছে বাতিনি এলেমও আছে। বাতিনি হচ্ছে যেটা গোপনীয় আর জাহিরি হচ্ছে যেটা প্রকাশ্য। তাহলে জাহিরি বা জাহির অর্থ যে প্রকাশ্য বা প্রকাশ্যমান বা যেটা দেখতে পাওয়া যায় সেটাকেই বোঝানো হয়। তাহলে আমাদের কাছে এখন পরিষ্কার যে জাহির বা জাহিরুন কখনোই জোহরের নামাজ বোঝানো হয় না । অন্তত পক্ষে কুরআনে কোথাও এই শব্দ দিয়ে জোহরের নামাজ বোঝানো হয়নি। আল্লাহ বোঝান নি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সুরা রুমের ১৭ ও ১৮ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সালাত বা নামাজ শব্দটাই প্রয়োগ করেননি । তাহলে এই জোহর আসর মাগরিব এই তিনটা ওয়াক্ত যে বানানো হয়েছে কুরআনে তার সংশ্লিষ্টতা আপনি খুঁজে পাবেন না এটা সুনিশ্চিত। এখনো যদি আপনার মনে একটু খটমট থেকে থাকে এর চেয়ে অনেক শক্তিশালী আয়াত আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কুরআনে দিয়েছেন যে আয়াত গুলো পড়লে আপনার মনের সকল কনফিউশন, বিভ্রান্তি, দ্বিধা দ্বন্ধ দূর হয়ে যাবে। রাসূলের যুগে বা নবীর যুগে সালাত কেমন ছিল? সেই ভিডিওতে এসব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। নামাজের ওয়াক্ত ভিডিওতেও আলোচনা করা হয়েছে। শুধুমাত্র বোঝার সুবিধার্থে আমি খুবই সংক্ষেপে সেই তিনটা আয়াত এখন আপনাদের সামনে উপস্থাপন করব। প্রথম আয়াত ১৭ নাম্বার সূরা বানী ইসরাইলের ১২ নাম্বার আয়াত। এ আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলছেন “আমি রাত ও দিনকে করেছি দুটো নিদর্শন। রাতকে করেছি নিরআলোক, অন্ধকার আর দিনের নিদর্শনটিকে করেছি আলোক উজ্জ্বল যাতে তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের অনুগ্রহ অনুসন্ধান করতে পারো।” তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে দিন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কেন দিয়েছেন? এখানে মহান রব বলেই দিয়েছেন যাতে তোমরা তোমাদের রবের অনুগ্রহ অনুসন্ধান করতে পারো। এই রবের অনুগ্রহ অনুসন্ধান বলতে আমরা সবাই বুঝি আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এখানে রিজিকের কথা বলেছেন, জীবিকা অনুসন্ধানের কথা বলেছেন তাহলে দিনকে আল্লাহ করেছেন আল্লাহর অনুগ্রহ অনুসন্ধানের সময়, যাতে এই সময়টাতে অর্থ্যাৎ দিনের আলোতে আমরা আল্লাহর অনুগ্রহের বা আল্লাহর রিজিকের খোঁজ করতে পারি, অনুসন্ধান করতে পারি ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি-বাকরি, কৃষি-কাজ, মাছ ধরা এ সমস্ত কাজ আমরা করতে পারি। এজন্যই দিনকে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আলোকময় করেছেন যেটা সূরা বানী ইসরাইলের ১২ নাম্বার আয়াতে পরিষ্কার। এবার চলুন আমরা দ্বিতীয় আয়াত দেখি। যেটা ৭৮ নাম্বার সূরার নাবার ১১ নাম্বার আয়াত। “অযাআলনা নাহারা মাসাআন।” আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এই আয়াতেও নাহার শব্দটা প্রয়োগ করেছেন যার অর্থ হচ্ছে দিন। শুরুতেই আল্লাহ বলছেন “অযাআলনা” অর্থ্যাৎ আমি বানিয়েছি। তারপর বলেছেন “নাহার” অর্থ্যাৎ দিনকে। শেষে বলেছেন “মাসাআন” মানে জীবিকা অর্জনের সময় বা জীবিকা আহরণের সময়বা জীবিকা সংগ্রহের সময়। বয়ান ফাউন্ডেশন তাদের বাংলা অনুবাদে বলেছে- “জীবিকা অর্জনের সময়” তাইসিরুল কুরআন তাদের বাংলা অনুবাদে বলেছে- “জীবিকা সংগ্রহের সময়” মুজিবুর রহমান তার অনুবাদে বলেছেন- “জীবিকা আহরণের জন্য” তাহলে এই আয়াতে আমরা কি দেখলাম? দিনকে আল্লাহ কেন সৃষ্টি করেছেন? কেন বানিয়েছেন? আল্লাহ পরিষ্কার করে বলে দিয়েছেন যে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন দিনকে বানিয়েছেন আমাদের জীবিকা অর্জনের জন্য, চাকরি বাকরি ‚ব্যবসা বাণিজ্য, কৃষি কাজ, খেত খামারে কর্ম করার জন্য। এবার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় আমরা গভীরভাবে দেখি। বলুন তো-সূরা বানী ইসরাইলের ১২ এবং সূরা নাবার ১১ নাম্বার আয়াত আল্লাহর রাসূল কী অনুসরণ করেছেন? অবশ্যই করেছেন। সুনিশ্চিতভাবে করেছেন। কারণ এই কুরআনকে সবচেয়ে বেশি অনুসরণ করার জন্যই তিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং মনোনীত হয়েছেন। যার প্রমাণ সূরা মুজাম্মিল। সূরা মুজাম্মিলে রাতের বেলা আল্লাহ তার রাসূলকে দাঁড়াতে বলছেন। বলছেন ইয়া আইউহাল মুজাম্মিল। হে বস্ত্র আবৃত। হে চাদর আবৃত। ওঠো-রাতে সালাতে দাঁড়াও । রাতের অর্ধেক কিংবা তার চেয়ে কিছুটা কম অথবা তার চেয়ে একটু বাঁড়াও আর স্পষ্টভাবে ধীরে ধীরে কুরআন আবৃত্তি করো। (আয়াত ১‑৪) তাহলে আল্লাহ তার নবীকে রাতে দাঁড়াতে বলছেন কেন? স্পষ্টভাবে এবং ধীরে ধীরে কুরআন আবৃত্তি করার জন্য। নিশ্চয়ই আমি তোমার প্রতি এক অতি ভারী বানী নাযিল করেছি, এক গুরু ভার কালাম নাজিল করেছি। নিশ্চয়ই রাত জাগরণ আত্ম সংযমের জন্য অধিকতর প্রবল এবং স্পষ্ট কুরআন উচ্চারণের জন্য অনুকূল বা অধিকতর উপযোগী।(আয়াত ৫‑৬) এরপর আমরা পাবো সেই কাঙ্খিত ৭ নাম্বার আয়াত। ১ থেকে ৬ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর রাসূলকে রাতে বিছানা থেকে উঠতে বলেছেন।তারপর দাঁড়াতে বলেছেন এবং ধীরে ধীরে স্পষ্টভাবে কুরআন পড়তে বলেছেন এবং বলেও দিচ্ছেন যে রাত জাগরণ করে কুরআন স্পষ্টভাবে ধীরে ধীরে পাঠ করা হচ্ছে আত্মসংযমের জন্য, গভীর মনোনিবেশ, হৃদয়ঙ্গম এবং প্রবৃত্তি দমনের জন্য অনুকূল, সহায়ক ও অধিকতর উপযোগী। কেন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন রাতের বেলা তাকে ধীরে ধীরে স্পষ্ট ভাবে কুরআন পড়তে বলেছেন? রাতটা অনুকূল বলেছেন? এই প্রাকটিস বা অনুশীলন সেটা নবীর যুগের সালাত কেমন ছিল সেই ভিডিওতে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। তবে আমরা আমাদের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় ও গুরূত্বপূর্ণ প্রাসঙ্গিক সেই ৭ নাম্বার আয়াতটা পেয়ে গেছি । ৭ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলছেন কেন রাতের অর্ধেক বা একটু কম সময় বা বেশি সময় তাকে ধীরে ধীরে স্পষ্টভাবে কুরআন পাঠ করতে হবে। আল্লাহ বলছেন “ইন্না লাকা ফিন নাহারি সাবহান তইলা।” অর্থ্যাৎ “নিশ্চয়ই তোমার জন্য দিনের বেলায় রয়েছে দীর্ঘ কর্ম ব্যস্ততা।” ঠান্ডা মাথায় ভাবুন দিনের বেলা আল্লাহর রাসূলের জন্য রয়েছে দীর্ঘ কর্ম ব্যস্ততা। সূরা বানী ইসরাইলের ১২ নাম্বার আয়াতেও আমরা দেখেছি আল্লাহ বলেছেন “দিনকে সৃষ্টি করেছেন যেন মানুষ জীবিকা অর্জন করতে পারে আল্লাহর অনুগ্রহ অনুসন্ধান করতে পারে।” আমরা সূরা নাবার ১১ নাম্বার আয়াতেও দেখেছি আল্লাহ বলছেন যে “আল্লাহ রাব্বুল আলামিন দিনকে সৃষ্টি করেছেন মানুষের জীবিকা অর্জনের জন্য এবং সূরা মুজাম্মিলের সাত নাম্বার আয়াতে আল্লাহ তার রাসূলকে বলছেন “তোমার জন্য দিনের বেলা রয়েছে দীর্ঘ কর্ম ব্যস্ততা।” এই তিনটি আয়াত আমাদের চেখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে যে কুরআন অনুযায়ী শুধু নবী রাসূলরা নন প্রত্যেকটা মানুষই এই দিনের বেলা কর্মব্যস্ত থাকবে। আমরা জানি যে — কোন নবী রাসূল ওয়াজ মাহফিল করিয়ে, নামাজ পড়িয়ে, মিলাদ শরীফ পড়িয়ে, জানাজা পড়িয়ে,বিয়ে পড়িয়ে,ফতোয়া দিয়ে বা ঝাড়ফুঁক বা তাবিজ দিয়ে বা জ্বীন তাড়িয়ে বা জাকাত বা খুমুছ আদায় করে বা মানুষের কাছ থেকে দান বা ভিক্ষা নিয়ে বা নাজরানা তোহফা নিয়ে তাদের সংসার চালান নি। তারা সবাই ছিলেন কঠোর পরিশ্রমী। পরিশ্রম করেই তারা তাদের সংসারের খরচ নির্বাহ করেছেন এবং প্রত্যেক নবী রাসূলই আল্লাহর পথে মানুষকে ডেকেছেন, আল্লাহর বাণী প্রচার করেছেন কিন্তু তার বিনিময়ে কখনোই চার আনা পয়সাও কারো কাছ থেকে নেন নি। যা “ধর্মকর্মে অর্থ উপার্জন” ভিডিওতে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আল্লাহর রাসূলকে আল্লাহ বলছেন দিনের বেলা রয়েছে তোমার দীর্ঘ কর্ম ব্যস্ততা। দিনে তারা নিজেদের জীবিকা অর্জনের জন্যই ব্যয় করতেন। তাহলে আমরা দেখলাম দিনের বেলা কোন নামাজ নেই । না জোহর, না আসর, না মাগরিব, না জুমআ। তাহলে প্রশ্ন ওঠে জুম্মার বিষয়টা আসলে কি? সুরা জুম্মার ৯, ১০, ১১ আয়াতে আমরা দেখেছিলাম আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলছেন- “তারা তোমাকে মানে সেই সাহাবীরা আল্লাহর রাসূলকে একা ফেলে রেখে চলে যেত। কেন চলে যেত? এই বিষয়টা যদি আমরা একটু ঠান্ডা মাথায় ভাবি তাহলে আমরা সবকিছুর উত্তর খুব সহজে পেয়ে যাব। আমাদের বুঝতে হবে যে এ কুরআন সূরা বাকারার ১৮৫ নাম্বার আয়াত অনুযায়ী রমজান মাসে নাযিল হয়েছে এবং সূরা বাকারার ৯৭ নাম্বার আয়াত অনুযায়ী জিব্রাইল আল্লাহর রাসূলের অন্তরে বা কলবে এ কোরআন নিয়ে আসতেন। আমাদের হুজুররা যেভাবে আজগুবি শরীফ থেকে বলে যে জিব্রাইল এসে এসে তাকে এগুলো দিয়ে যেতেন । তা পুরোপুরি কুরআন বিরোধী। জিব্রাইল নাজিলই হতেন তার অন্তরে তার কলবে সূরা শুয়ারার মধ্যেও তার প্রমাণ আমরা দেখতে পাই। ১৯৩ এবং ১৯৪ নাম্বার আয়াতেও আল্লাহ বলছেন যে রুহুল আমীন বা বিশ্বস্ত আত্মা জিব্রাইল এটা নিয়ে অবতরণ করেছে তোমার হৃদয়ে-তোমার অন্তরে যাতে তুমি সতর্ককারীদের অন্তর্ভুক্ত হও। এখন প্রশ্ন উঠছে এইযে ৬২৩৬ আয়াত এগুলো তো একসাথে নাযিল হয়নি। আজগুবি শরীফের হাদিস থেকে মোল্লারা যেভাবে আমাদেরকে বলে তাদের টাই যদি আমরা ধরে নেই তাহলে গল্পটা কেমন হবে? আজ হয়তো ৫ আয়াত নাযিল হয়েছে। ১ মাস পরে হয়তো ১০ আয়াত নাযিল হয়েছে। তাহলে ৫ আয়াত ১০ আয়াত বা ২০ আয়াত ১ সপ্তাহ পর বা একমাস পর বা ৬ মাস পর যদি এভাবে নাজিল হয় আল্লাহ রাসূলের পক্ষে কি সম্ভব সমগ্র আরবের প্রত্যেকটা ঘরে ঘরে গিয়ে প্রত্যেকটা নারী পুরুষকে কোরআনের বাণী পৌঁছে দেয়া ? কখনোই সম্ভব না। তাহলে ৬০, ৭০ বছর নয় বরং ছয় সাতশো বছর হায়াত পেলেও রাসুলের পক্ষে রিসালাতের দায়িত্ব পালনের কাজ করা কখনোই সম্ভব হতো না। তাছাড়া তখনকার যুগে যোগাযোগ ব্যবস্থা, বাস, ট্রাক, ট্রেন হেলিকপটার বা মোটরগাড়িও এত সহজলভ্য ছিল না। তাহলে প্রশ্ন ওঠে এই কুরআনের বাণীগুলো তিনি কিভাবে প্রচার করতেন? সেটা নবীর যুগের সালাত ভিডিওতে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। সেটা দেখার পর এই লেখাটার বাকি অংশগুলো পড়ার অনুরোধ করছি। পুনরায় স্বাগত জানাচ্ছি বাকী লেখাগুলো পড়ার জন্য। নবীর যুগে এমন অনেক ইমার্জেন্সি বিষয়ে চলে আসতো, এমন অনেক ইমার্জেন্সি ঘটনা চলে আসতো কোরআনের আয়াত নাযিল হতো যেটা মুমিন মুসলিমদের খুব দ্রুত পৌঁছে দেয়ার প্রয়োজন হতো। সেটা হতে পারে কোনো যুদ্ধের বিষয়, হতে পারে মুসলিমরা কোন ফতোয়া চাচ্ছে এমন বিষয়। আমরা কুরআনে অজস্রবার দেখেছি যে আল্লাহ বলছেন‑তারা তোমাকে প্রশ্ন করে কিয়ামত কবে হবে? তারা তোমাকে প্রশ্ন করে রূহ কি? তারা তোমাকে নতুন চাঁদ সম্পর্কে প্রশ্ন করে? তারা বিয়ে সম্পর্কে বা এতিমের হক সম্পর্কে প্রশ্ন করে? আসহাবে কাহাফ সম্পর্কে প্রশ্ন করে? জুলকারনাইন সম্পর্কে প্রশ্ন করে? এরকম বিভিন্ন প্রশ্ন তারা করত। এসব প্রশ্নের উত্তর হয়তো কখনো কখনো ইমিডিয়েটলি বা তাৎক্ষণিকভাবে নাজিল হয়ে যেত, কখনো দেরীতে, আবার যুদ্ধের সময় তাৎক্ষণিক আয়াত নাজিল হতো বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন ইমারজেন্সিতে বা রাসুলের স্ত্রীদের জন্য প্রযোজ্য কিছু আয়াত বা সাহাবীদের জন্য প্রযোজ্য আয়াত নাজিল হতো। তাহলে প্রশ্ন ওঠে তখনকার সেই তাৎক্ষণিক নাজিল হওয়া আয়াত তিনি কিভাবে সবার কাছে পৌঁছে দেবেন? সুরা মায়েদার ৬৭ আয়াত অনুযায়ী কুরআনের সকল আয়াত যে কোন মূল্যে তাকে পৌঁছে দেয়ার বাধ্যবাধকতা ছিলো। আবার এমন এমন বিষয় আছে যার মাধ্যমে মুসলিমদেরকে আলাদাভাবে মেসেজ দেয়া দরকার ছিল, তাদেরকে একত্রিত রাখা দরকার ছিল, সেটা সপ্তাহের যে কোন দিনই হতে পারে। এখান থেকেই উৎপত্তি হয়েছে জুম্মাআ বা সমাবেশ বা মিলন বা একত্রিত হওয়ার বিষয়টি। কারন হঠাৎ হঠাৎ ডাক পড়তো। কিন্তু দিনের বেলা যেহেতু কুরআন অনুযায়ী মানুষের জীবিকা অর্জনের সময় চাকরি বাকরির সময় বা ব্যবসা বাণিজ্যের সময় সেজন্য অনেককেই দেখা যেত তারা তাদের দোকানপাট ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান ফেলে রেখে চলে এসেছে। কারন হঠাৎ ডাক পড়েছে বা আহবান এসেছে । তাই আল্লাহর রাসূল যখন বাণী গুলো বলতেন ওই অবস্থায় একা রেখেও অনেকে চলে যেত। তারা কেন যেত? ভাবতো যে আমার দোকানের কি হবে? আমার ব্যবসার কি হবে? মাল সামানা কেউ নিয়ে যায় কিনা? কেউ চুরি করে কিনা? কি হয় না হয়? তারা যেন উৎসাহিত হয় সে কারণে সূরা জুমআর শেষের দিকে আল্লাহ বলেছন যে এই রাসুলের কাছে যে কুরআনের বাণী আছে তোমরা যা রেখে এসেছ তার চেয়ে তা অনেক অনেক উত্তম। এ কারণেই দেখবেন যে হুজুর শরীফ থেকে আমাদের বলা হয় হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ হাদিস এসেছে।কিভাবে এসব হাদিস আজগুবি শরীফে এসেছে? রাবীরা কিভাবে বর্ণনা করে নবীর নামে চালিয়ে দিয়েছে? আমি একদিন বাজারে যাচ্ছিলাম, দেখেছি আল্লাহ রাসূল অমুক মুখ সাহাবীকে বলছে ৩৩বার সুবহানাল্লাহ পড়লে ১০ বছরের গুনাহ মাফ হয়ে যায়। ১০০ বার আল্লাহু আকবার বললে জান্নাতে তার নামে ১০০টা গাছ লাগানো হয়। ২০০ বার দুরুদ শরীফ পড়লে হাশরের মাঠে নবীর সুপারিশ করা ওয়াজিব হয়ে যায়। আরেক সাহাবী বলছে আমি একদিন বাড়ি যাচ্ছিলাম দেখলাম পথে দেখলাম আল্লাহর রাসূল অমুক সাহাবীকে বলছে সকালবেলা ফজরের পরে “আল্লাহুম্মা আজিরনি মিনাল নার” বললে জাহান্নামের সাতটা দরজা বন্ধ হয়ে যায়, সেই দিন মৃত্যুবরণ করলে জান্নাত তার জন্য ওয়াজিব হয়ে যায়। অমুক সাহাবী বলেছে আমি তমুকের কাছ থেকে শুনেছি তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছেন তিনি বলেছেন শুক্রবার দিন অমুক দোয়া পড়লে ৮০ বছরের গুনাহ মাফ হয়ে যায়। রবিবার দিন সকালবেলা অমুক দোয়া পড়লে সাগরের ফেনা সমান গুনাহ মাফ হয়ে যায়, অমুক অমুক দোয়া পড়লে জান্নাতের আটটা দরজা খুলে যায়। এরকম বিভিন্ন হাদিস আপনারা প্রচুর শুনেছেন। একজন, দুজন, তিনজন রাবি হয়তো তার মামা চাচা খালু তালই দাদা নানার মুখ থেকে শুনেছে বা বলে যে চাচী খালা ফুফুর কাছ থেকে শুনেছি তিনি অমুক তাবেই বা তাবে-তাবেইন বা সাহাবীকে বলতে শুনেছেন “ব্যভিচার করলে তাকে পাথর মেরে হত্যা করতে হবে।”রোগ হলে উটের মুত. কালি জিরা, লাউ বা আজোয়া খেজুর খেতে হবে। সুতরাং হাসপাতালে যাওয়া বিদাত ও শিরক। কিন্তু আপনারা কি কখনো ভেবে দেখেছেন আল্লাহর রাসূল শুক্রবারে যে জুম্মার নামাজ বলে দাবি করা হয় যেখানে তিনি নাকি খুতবা দিতেন তখন নাকি তার নাক মুখ লাল হয়ে যেত, তার হাতে লাঠি থাকতো তাহলে প্রশ্ন ওঠে আল্লাহর রাসূল ২৩ বছরে কতগুলো শুক্রবার পেয়েছিলেন? প্রতি বছরের শুক্রবার হয় কমপক্ষে ৫২টি। ১০ বছরে ৫২০টি। ২০ বছরে ১৪০টি। তাহলে নবুয়তের ২৩ বছরে প্রায় বারোশো খুতবা শুক্রবারে জুমআর দিনে তার দেয়ার কথা।জুমআর দিনে মসজিদে তো একজন দুজন সাহাবী থাকেনা ১০, ২০, ৫০, ১০০, ২০০ জন থাকে। আর মদিনায় যখন গিয়েছিলেন তখন তো হাজার হাজার সাহাবি থাকার কথা। যখন মক্কা জয় করেছিলেন তখন তো লক্ষ লক্ষ সাহাবীরা নিশ্চয়ই সে জুম্মার দিনে মসজিদে আসতো। তাহলে জুম্মার নামাজে রাসুলের খুতবার হাদিস তো হাজার হাজার থাকার কথা, তাই নয় কি? হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ তাবেই, তাবে- তাবেইন- রাবীদের রেওয়াত ও বর্ণনাকৃত হাদীস থাকার কথা। হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ সাহাবীরা একই বর্ণনা দেবে। একই খুতবা রাসুলের রেওয়াতে বলবে। কিন্তু আশ্চযজনকভাবে আমরা জুম্মাআর নামাজের একটা খুতবাও রাসুলের রেওয়াতে খুঁজে পাইনা। পৃথিবীর সকল হাদীসের কিতাব তন্ন তন্ন করে খুঁজলেও পাইনা। যত খুতবা এই জুম্মার সময় হুজুররা আমাদের শোনায় তার সবই আজগুবি শরীফ থেকে বানানো। তাদের আগের হুজুররা ১২ চান্দের আমল, ১৩ চান্দের কমল ইত্যাদি বইতে লিখে গিয়েছেন। ৩, ৪,৫,৬,৭ টি হাদিস জোড়া তালি দিয়ে তারা এক একটা খুতবা বানিয়েছে। সেগুলোই মিম্বরে দাঁড়িয়ে মোল্লারা আমাদের মুখস্ত পড়ে শোনায়। ঠান্ডা মাথায় একবার ভাবুন তো এরকম কি হওয়ার কথা ছিলো? এরকম হওয়ার কথা কখনোই ছিল না। বরং হওয়ার কথা ছিলো আল্লাহ রাসুল যেই খুতবাগুলো দিয়েছেন সেগুলো শত শত সাহাবীরা বর্ণনা করবে, শত শত সাহাবীরা লিখে রাখবে কারণ এগুলো হাজার হাজার লক্ষ কোটি মুসলিমরা ভবিষ্যতে শুনবে । কতটা শক্তিশালী, কতটা মাধুর্যমন্ডিত হওয়ার কথা সেই খুতবাগুলো? কতটা শতভাগ বিশুদ্ধ সহিহ হাদিস হতে পারতো সে খুতবাগুলো? কিন্তু একটা পূর্ণাঙ্গ খুতবাও, একটা দিনের জুম্মার নামাজের খুতবাও কোন হাদিসের কিতাবে আপনি খুঁজে পাবেন না। এই একটামাত্র বিষয়ই প্রমাণ করে যে জুম্মার দিনের এই যে খুতবাগুলো বা যা যা করা হয়, বা রাসুলের নামে যা যা বলা হয় তার সব কিছুই মিথ্যা, বানোয়াট, মনগড়া ও ভিত্তিহীন এবং আল্লাহ ও তার রাসূলের নামে অপবাদ ছাড়া অন্য কিছু নয়। জুম্মার নামাজের খুতবায় কি কি পাবেন? আসলে রাসুলের একটাও পূর্ণাঙ্গ খুতবা তো পাবেনই না বরং পাবেন রাসূল বলেছেন যে জুম্মার দিনে মসজিদে যে শেষে আসবে সে একটা মুরগি সাদকা করার সওয়াব পাবে, যে দ্বিতীয়তে আসবে সে ভেড়া বা বকরি যে প্রথমে আসবে সে গরু বা উট সাদকা করার সওয়াব পাবে। এ রকম টুকরো টুকরো হাদিস পাবেন কিন্তু পূর্ণাঙ্গ খুতবা একটাও কোথাও খুঁজে পাবেন না। এই বিষয়টাই প্রমাণ করে এই জুম্মার নামাজের খুতবা পুরোপুরি ভাওতাবাজি, বানোওয়াট, মনগড়া ও কুরআন বিরোধী। জুম্মাআ অর্থ কখনোই শুক্রবার নয়। জুম্মা অর্থ কখনোই ফ্রাইডে নয়, জুম্মা কখনোই পবিত্র দিন নয়।আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সকল দিনই পবিত্র এবং জুম্মা বা সমাবেশ বা ইমারজেন্সি যে কোন সময়ই ঘটতে পারে। আল্লাহর রাসূল তাৎক্ষণিকভাবে যেকোনো সময় যখনই ইমারজেন্সি বা অতি জরুরি কোন আয়াত বা বাণী নাজিল হতো বা যে কোন অতি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সাহাবীদের দেয়ার প্রয়োজন হতো তাদেরকে এভাবেই ইমারজেন্সি বা তাৎক্ষণিকভাবে ডাকতেন, একত্রিত করতেন, সমাবেশ ঘটাতেন। সাথে সাথে ব্যবসা বাণিজ্য ফেলে তারা সবাই ছুটে চলে আসতো। তবে তাদের মধ্যেও অনেকেরই ঈমান হয়তো দুর্বল ছিল, আমলে ঘাটতি ছিল। সেজন্যই তারা আল্লাহর রাসূলকে একা ফেলে চলে যেত। এবার আমরা ইহুদিদের সেই সাব্বাত বা সপ্তম দিন আরবিতেও যাকে বলা হয় সাব্বাত হিব্রু বা ইহুদীদের ভাষায় বলা হয় সাব্বাত সেই বিষয়টা নিয়েও একটা ভিডিও করেছি আপনারা বিষয়গুলো একটু কুরআন দিয়ে মিলিয়ে দেখবেন সেই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। ইহুদীদের সেই সাব্বাত বা শনিবার বা পবিত্র দিন এর আয়াত গুলো আপনাদের বলতে চাই। দুই নাম্বার সূরা বাকারার ৬৫ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ বলছেন “আর তোমাদের মধ্যে যারা সপ্তাহের সপ্তম দিন শনিবারের ব্যাপারে সীমা লঙ্ঘন করেছিল তাদেরকে অবশ্যই তোমরা জানো। অতঃপর আমি তাদেরকে বললাম তোমরা নিকৃষ্ট বানর হয়ে যাও।” সুরা নাহলের ১২৪ আয়াতে আল্লাহ বলেন- “শনিবার পালনতো শুধু তাদের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল যারা এ সম্বন্ধে মতভেদ করত। যে বিষয়ে তারা মতভেদ করত তোমার রাব্ব অবশ্যই কিয়ামাত দিবসে সেই বিষয়ে তাদের মীমাংসা করে দিবেন।” সুরা আরাফের ১৬৩ আয়াতে আল্লাহ বলেন- আর তাদেরকে সেই জনপদের অবস্থাও জিজ্ঞেস কর যা সমুদ্রের তীরে অবস্থিত ছিল। যখন তারা শনিবারের আদেশ লংঘন করেছিল। শনিবার উদযাপনের দিন মাছ পানিতে ভেসে তাদের নিকট আসত, কিন্তু যেদিন তারা শনিবার উদযাপন করতনা, সেদিন ওগুলি তাদের কাছে আসতনা, এভাবে আমি তাদের নাফরমানীর কারণে তাদেরকে পরীক্ষা করেছিলাম “ ৪ নাম্বার সূরা নিসার ৪৭ নাম্বার আয়াত আল্লাহ বলছেন “হে কিতাব প্রাপ্তগণ তোমরা ঈমান আনো তার প্রতি যা আমি নাযিল করেছি তোমাদের সাথে যা আছে তার সত্যায়নকারিরুপে আমি চেহারা সমূহকে বিকৃত করে ঘুরিয়ে দেওয়ার আগে কিংবা তাদেরকে আছহাবুস সাব্‌তের (শনিবার সংক্রান্ত বিধিনিষেধ অমান্য করে শাস্তিপ্রাপ্ত ইহুদিদের) ন্যায় অভিশপ্ত করার আগেই।” শনিবার ওয়ালাদেরকে? তাহলে এই শনিবার ওয়ালা কারা? শনিবারকে পবিত্র দিন মনে না করায় তাদেরকে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সুরা নিসার ৪৭ নাম্বার আয়াতে লানত করেছেন।অভিসম্পাত করেছেন। একই সূরার ১৫৪ আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলছেন “এবং আমি তাদের অঙ্গীকার গ্রহণের জন্য তাদের উপর তুর পর্বত তুলে ধরেছিলাম এবং তাদেরকে বলেছিলাম দরজা দিয়ে প্রবেশ করো অবনত হয়ে। তাদেরকে আমি আরো বলেছিলাম শনিবার দিনের সীমা লঙ্ঘন করোনা এবং আমি তাদের কাছ থেকে দৃঢ় অঙ্গীকার নিয়েছিলাম।” তাহলে এখানেও আমরা দেখলাম সেই শনিবার বা সপ্তম দিনের কথা বলা হচ্ছে। আমরা জানি যে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সুন্নতের কোন পরিবর্তন হয়না। আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের আইন কানুন বিধিবিধান একই থাকে। ঈমান আনো,কর্মকে সংশোধন করো,নেক আমল করো জান্নাতে যাও। ঈমান আনবে না নেক আমল করবে অথবা ঈমান আনবে নেক আমল করবেনা জাহান্নামে যেতে হবে। এইযে সুন্নাত এই নিয়ম বা এই বিধানগুলো কখনোই পরিবর্তন হয়না। সকল নবী রাসূলরাই এই তাওহিদের ডাক দিয়েছেন মানুষকে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহর দিকে ডেকেছেন এবং কর্মকে সংশোধন করতে, নেক আমল করতে উৎসাহিত করেছেন। ঈমান আনার পরেই কর্মকে সংশোধন করতে হবে, আমলে সলেহা করতে হবে। কারণ ঈমান আনার পরে কর্মকে সংশোধন করে নেক আমল না করলে সূরা আরাফের ৮, ৯ এবং সুরা মুমিনুনের ১০২,১০৩ নাম্বার আয়াত অনুযায়ী আমরা জানি যে হাশরের মাঠে মিজানের পাল্লায় যদি তার পাপের পাল্লা ভারি হয়ে যায় প্রত্যেকটা নামধারী মুসলিমই ধরা খেয়ে যাবে। এজন্য ঈমান আনার পরেই কর্মকে সংশোধন করে নেক আমল করতে হবে। যে যত বেশি নেক আমল করবে তার জান্নাতে যাওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি বেড়ে যাবে। এই সুন্নতের কখনো পরিবর্তন হয় না। যদি এই শনিবার বা সপ্তম দিন পবিত্র দিন হয়ে থাকে বা ঘোষিত হয়ে থাকে হঠাৎ করে সেটা পরিবর্তন করে রবিবার বা শুক্রবার দেয়ার প্রশ্নই ওঠে না। আর যদি পবিত্র দিন পরিবর্তন করে শুক্রবারকে আল্লাহ দিয়েই থাকেন তাহলে আরবিতে ইয়াওমাল সিত্তাহ বা শুক্রবার উল্লেখ থাকার কথা। কিন্তু ছিত্তাহ শব্দটা বা ইয়াওমাল ছিত্তাহ বাক্যটা কুরআনের কোথাও নাই। সপ্তাহের ষষ্ঠ দিনকে বা শুক্রবার দিনকে পবিত্র দিন হিসেবে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কুরআনের কোথাও ঘোষণা করেননি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আরবি ভাষাতে সপ্তাহের ৭ দিনের ছয়টা দিনই সংখ্যার ভিত্তিতে গণনা করা হয়ে থাকে। এমনকি এই শনিবার দিনকেও সাব্বাত হিসেবে আল্লাহ কুরআনে অজস্রবার ব্যবহার করেছেন তাহলে কেনো এই শুক্রবার দিনকে বা ফ্রাইডেকে ইয়াওমাল সিত্তাহ হিসেবে আল্লাহ ব্যবহার করেননি। তাহলে কি আমরা ধরে নেবো এই পবিত্র দিন আল্লাহর নির্দেশ ছাড়াই মানব রচিত হুজুর শরীফের মাধ্যমে পরিবর্তন হয়ে গেল? আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সুন্নত কি আল্লাহর নির্শে বা ওহি ছাড়া পরিবর্তন হয়? এ বিষয়গুলো আমাদের গভীরভাবে ভেবে দেখা দরকার। যদি আমরা সত্যিকার অর্থেই কুরআন থেকে নূর পেতে চাই, হেদাতের আলো পেতে চাই। কারণ সূরা মুহাম্মাদ এর ২৪ আয়াতে আল্লাহ বলেছেন- “তারা কি কুরআন নিয়ে গভীরভাবে চিন্তাভাবনা করে না? নাকি তাদের অন্তর তালাবদ্ধ?” যদি আমরা কুরআন নিয়ে চিন্তাভাবনা না করে পরোক্ষভাবে আল্লাহকে বুঝিয়ে দেই যে- হ্যাঁ আল্লাহ আমাদের অন্তর তালাবদ্ধ। আমরা ইবলিশের মত হয়ে গেছি। আমরা বিপথে চলে গেছি। আমরা কুরআন নিয়ে চিন্তাভাবনা করব না। তুমি যতই আমাদের উৎসাহিত করো কটাক্ষ করো কুরআন নিয়ে আমাদের চিন্তা ভাবনা করার সময় নাই। আমরা শুধু প্রতি হরফে ১০ নেকি করে পেলেই খুশি। হুজুর শরীফই আমাদের সত্যিকারের হেদায়েতের কিতাব। তাহলে আপনার জন্য দুঃসংবাদ। কারণ কুরআনে অজস্রবার আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে বলেছেন যদি আমরা বোঝার চেষ্টা না করি, চিন্তাভাবনা না করি আমরা পশু, আমরা জানোয়ার বরং তার চেয়েও অধম। সুরা জুমার ৫ আয়াতে আল্লাহ বলেন- “যাদের উপর তাওরাতের দায়িত্বভার দেয়া হয়েছিল, অতঃপর তা তারা বহন করেনি (অর্থাৎ তারা তাদের উপর ন্যস্ত দায়িত্ব পালন করেনি) তাদের দৃষ্টান্ত হল গাধার মত, যে বহু কিতাবের বোঝা বহন করে (কিন্তু তা বুঝে না)। যে সম্প্রদায় আল্লাহর আয়াতগুলোকে অস্বীকার করে, তাদের দৃষ্টান্ত কতইনা নিকৃষ্ট! যালিম সম্প্রদায়কে আল্লাহ সঠিক পথে পরিচালিত করেন না।” সুরা আম্বিয়া আয়াত ১০ “আমি তো তোমাদের কাছে একটি কিতাব (কুরআন) নাযিল করেছি, যাতে তোমাদের (জন্য) উপদেশ রয়েছে। তবুও কি তোমরা বুঝবে না?” সুরা আনফাল আয়াত ২২- “আল্লাহর কাছে নিকৃষ্টতম জীব হচ্ছে ঐ সব মূক ও বধির লোক, যারা কিছুই বুঝেনা (অর্থাৎ বিবেক বুদ্ধিকে কাজে লাগায়না)।” অনুবাদ মুজিবুর রহমান। সুরা আরাফ আয়াত ১৭৯- “আমি জাহান্নামের জন্য অনেক জ্বিন ও মানুষ সৃষ্টি করেছি। তাদের হৃদয় আছে যা দ্বারা তারা উপলব্ধি করে না; তাদের চোখ আছে যা দ্বারা তারা দেখে না এবং তাদের কান আছে যা দ্বারা তারা শোনে না। তারা চতুষ্পদ জন্তু জানোয়ার- পশুর মত, বরং তার চেয়েও অধিক পথভ্রষ্ট- বিভ্রান্ত; তারাই গাফেল।” সুরা ফুরকান আয়াত ৪৪- তুমি কি মনে কর, তাদের অধিকাংশ শোনে কিংবা বোঝে? তারা আসলে পশুদের মতই; বরং তারা আরো বেশি পথভ্রষ্ট ।“ আমরা জানি যে তাওরাত ফলক আকারে মুসা নবীকে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন দিয়েছিলেন কিন্তু কোরআন কিন্তু ফলক আকারে দেয়া হয়নি। সূরা বাকারার ৯৭ নাম্বার আয়াত এবং সূরা শুয়ারার ১৯৩ আয়াত পড়ে আমরা জানি যে জিব্রাইল আলাইহিস সালাম আল্লাহ রাসূলের অন্তরে এই কুরআন নিয়ে নাজিল হতেন। সুরা মায়েদার ৬৭ আয়াত অনুযায়ী ১টি আয়াতও আল্লাহর রাসুল গোপন করেন নি বা লুকান নি। সুরা আনআমের ১৯ আয়াত এ কি বলা হয়েছে? আমরা দেখি — বল, (কোনও বিষয়ে) সাক্ষ্য দানের জন্য সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ কে? বল, আল্লাহ! (এবং তিনিই) আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী। এ কুরআন আমার কাছে ওহী করে পাঠানো হয়েছে যাতে আমি তোমাদেরকে ও যাদের কাছে এ (কুরআন) পৌঁছাবে তাদেরকে এর মাধ্যমে সতর্ক করতে পারি। তোমরা কি এমন সাক্ষ্য দিতে পার যে,আল্লাহর সাথে (অংশীদার) অন্য কোন ইলাহ‑বিধাতা-বিধানদাতা-আইনদাতা- ও আছে?” বল, “আমি (অমন) সাক্ষ্য দেবো না।” বল, “তিনিই একমাত্র ইলাহ। আর তোমরা (আল্লাহর সাথে বিধান দেয়ার ক্ষেত্রে) যেসব (ওলি,আউলিয়া,গাউছ,কুতুব,পীর,দরবেশ,উলামা,মাশায়েখ,ঠাকুর,পাদ্রী,দেব,দেবী,নবী,রাসুল) শরীক করো নিশ্চয়ই তা থেকে আমি সম্পূর্ণ দায়মুক্ত’।” এই আয়াত থেকে পরিষ্কার যে আল্লাহর রাসুলের কাছে বুখারি, তিরমিজি, নাসাই, মিশকাত কিতাব নয় এই কুরআন মাজিদ ওহি করে পাঠানো হয়েছে। তাহলে পবিত্র দিন শনিবার পরিবর্তন করে শুক্রবার ঘোষনার আয়াত কেন আমরা কুরআনে খুঁজে পাইনা? অথবা সপ্তাহের ষষ্ঠ দিন বা ইয়াওমাল সিত্তা শব্দই কুরআনে আল্লাহ উল্লেখ করেন নি? এমনকি আরবের ২২টি দেশের কোথাও কোন আরবি ভাষি আরব লোক সপ্তাহের ষষ্ঠ দিনকে ইয়াওমাল সিত্তাহ বলে না? সবচেয়ে আশ্চযজনক ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো জুমআ শব্দটি কুরআনে- সমাবেশ,একত্রিত হওয়া, জড়ো করা, সবাই, একত্রে,জমা করা,সমবেত করা, একসাথে, সকলকে,সমস্ত,সকটুকু, অর্থে কুরআনে ১৭:৮৮; ২২:৭৩; ৩:৯; ৪:১৪০; ২৪:৬২; ৩:২৫; ৩:১৫৭.১৭৩; ৪:২৩,৮৭; ৬:১২,৩৫; ১৮:৯৯; ২০:৬০; ৩৪:২৬; ৪২:১৫; ৪৩:৩২; ৪৫:২৬; ৬৪:৯; ৭০:১৮; ৭৫:৯; ৭৭:৩৮; ১০৪:২ সহ সর্বমোট ১২৩ টি আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন উল্লেখ করেছেন। সুতরাং জুম্মাহর দিন ও জুম্মার নামাজ বিষয়টা আমাদের খুব ঠান্ডা মাথায় গভীরভেবে দেখতে হবে। শেষ করছি সুরা মুহাম্মদের ২৪ আয়াত দিয়ে- “তবে কি তারা কুরআন নিয়ে গভীর চিন্তা- ভাবনা করে না? নাকি তাদের অন্তরসমূহ তাদের অন্তর তালাবদ্ধ? Rizwan Mah­mud Khan; Direc­tor; Quran Research intel­li­gence Team

12 thoughts on “জুমআর নামাজ ও শুক্রবারের মর্মান্তিক ইতিহাস

  1. The arti­cle was notably easy to under­stand for the gen­er­al pub­lic, pre­sent­ing a com­plex sub­ject in a clear and acces­si­ble man­ner. The author broke down tech­ni­cal terms into every­day lan­guage and used relat­able exam­ples to explain key con­cepts. Each point was sup­port­ed with detailed expla­na­tions, ensur­ing that read­ers could fol­low the flow of infor­ma­tion with­out pri­or exper­tise in the top­ic. Addi­tion­al­ly, the arti­cle includ­ed Quran­ic ref­er­ences, which not only added cred­i­bil­i­ty but also offered read­ers oppor­tu­ni­ties to explore the sub­ject fur­ther. Over­all, it was both infor­ma­tive and read­er-friend­ly.

    1. সালাম। আর্টিকেল গুলো সত‍্য অনুসন্ধানীদের সত‍্য গ্রহন করতে বাধ‍্য করবে।

  2. সালামুন আলাইকুম।
    ৫ নং সূরার ৭২ নং আয়াতের শেষ অংশের দলিলে শিরক বিষয়টি অতি গুরুত্বপূর্ণ ভাবে নিয়ে আমাদের জীবন পরিচালনা করতে হবে।

  3. ভাই, আপনার লেখা গুলো যতোই পড়ছি! নিজের কাছে নিজের শূন্যতা ততোই বেশি উপলব্ধি করছি।

  4. সালামুন আলাইকুম, চমৎকার ভাবে বিষয়টি উপস্থাপন করার জন্য ধন্যবাদ। যা অন্তত আমার ক্ষেত্রে কোরআন বুঝতে ও সে অনুযায়ী আমল করতে সহায়ক হবে।

  5. “আপনার এই লেখাটা আমার জন্য খুবই সহায়ক ছিল। অনেক কৃতজ্ঞ।”
    “এই মূল্যবান তথ্যগুলো শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।”

  6. কুরআন নাজিলের আগে আরবে জুমাবারকে ‘আরুবাহ (العروبة)’ নামে ডাকা হতো।

  7. সালামুন আলাইকা,
    অনেক সুন্দর এবং স্পষ্টভাবে বর্নণা করেছেন।

  8. সালামুন আলাইকুম।
    বিষয়ের দিক থেকে গুরুত্ববাহী, পবিত্র কুরআনুল হাকিমের রেফারেন্সে সমৃদ্ধ, তাত্ত্বিক ও তাথ্যিক গবেষণা ও বিশ্লেষণের চমৎকার উপস্থাপনা।
    উত্তম প্রতিদান তো মহান রাব্বুল আলামিনের নিকটেই.…
    ধন্যবাদ।

  9. চমৎকার।আলোচনাটি ভালো লেগেছে। নতুন করে চিন্তা করতে পারছি। ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *