(70) মাদ্রাসার আরবি হুজুর vs রিজওয়ান (Only Quran) #৬৭৯ — YouTube
https://www.youtube.com/watch?v=onYLY3qtFlM
Transcript:
(00:00) আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় মুমিন ভাই ও বোনেরা। আজকে আমাদের সাথে আছেন মাসুম বিল্লাহ ভাই তিনি সুদূর পটুয়াখালী থেকে আমাদের সাথে সংযুক্ত আছেন। এবং তিনি একটা সুন্নি মাদ্রাসাতে কর্মরত আছেন। আমরা আশা করি যে আপনারা আমাদের ডিবেটটা খুব উপভোগ করবেন এবং এখান থেকে, আল্লাহর কালাম থেকে কিছু জ্ঞান অর্জিত হবে এবং আমার মধ্যেও কিছু ভুল ত্রুটি থাকলে সেগুলো সংশোধন হওয়ার একটা সুযোগ আল্লাহ হয়তো এর মাধ্যমে দিতেও পারেন। তো সবাই আমাদের আজকের ডিবেটটা উপভোগ করবেন সে আশাবাদ ব্যক্ত করছি। জি সজীব ভাই জি ধন্যবাদ। সালামুন আলাইকুম। ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি প্রথমে
আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি যে আজকে মাসুম মিল্লাহ ভাই এবং আমাদের প্রিয় রিজোয়ান মাহমুদ ভাই দুইজনের মাঝে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করার সুযোগ দান করেছেন আল্লাহ । আশা করছি আজকের আলোচনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, খুবই তথ্যবহুল এবং আন্তরিকতার সাথে হবে এবং যারা লাইভটি দেখবেন সবাইকে অনুরোধ করব সবাই শিষ্টাচার বজায় রাখবেন । আমি কথা না
বাড়িয়ে প্রথমেই মাসুম বিল্লাহ ভাই আপনাকে অনুরোধ করছি আপনি আপনার পরিচয় দিয়ে আপনার আলোচনাটি শুরু করুন।
হ্যাঁ আমার নাম মোহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ। আমার ঠিকানা হচ্ছে আমি পটুয়াখালীতে থাকি। তাছাড়া আমি কোরআন এবং হাদিস সহ ফিকাহকে বিশ্বাস করি এবং আমি আমার জীবন পরিচালনা করি এই অনুযায়ী। তো এ পর্যায়ে আমি আমার সংক্ষিপ্ত কিছু আলোচনা তুলে ধরবো যে হাদিস অবশ্যই আমাদের মানতে হবে তার কিছু সারসংক্ষেপ কথা। তো সর্বপ্রথম আমি বলতে চাই যে কোরআন নিজেই দাবি করে যে হাদিস আমাদের অবশ্যই মানতেই হবে। হাদিস ছাড়া কোরআনকে কখনো মানা যায় না। এ ব্যাপারে আমি কোরআন থেকে একটা দলিল পেশ করতে চাই। সেটা হচ্ছে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলছেন এই যে নবী প্রেরণ করেছি সে নবী তোমাদেরকে যা বলে আমি আমার মত করে আমি অর্থটা আপনাদেরকে সহজ বোঝানোর জন্য সহজলভ্য ভাষায় বলতেছি যে রসূল প্রেরণ করেছি “সেই রসূল তোমাদেরকে যা বলে তোমরা সেটা গ্রহন করো এবং যেটা থেকে নিষেধ করে সেটা থেকে তোমরা বিরত থাকো। এটা হচ্ছে আসল কথা।
মাসুম ভাই আমি একটু আপনার আমি মাফ চেয়ে নিচ্ছি, আপনার এই আয়াতটা আমি স্ক্রিনে আনতে পারছি তাহলে দর্শকদের বোঝাটাও একটু সুবিধা হবে সুপ্রিয় দর্শক আমি আয়াতটা স্ক্রিনে নিয়ে এসেছি সূরা হাশরের সাত নাম্বার আয়াত তাইতো মাসুম ভাই? জি প্লিজ কন্টিনিউ।
এখানে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তিনি তার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সাল্লামকে অনুসরণের একটা নির্দেশ আমাদেরকে দিয়েছেন সুরা আল ইমরানের ৩১ আয়াতে। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। রাসুলকে অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে যদি আল্লাহর ভালোবাসা আমরা পেতে চাই।
দ্বিতীয়ত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সাল্লামকে অবশ্যই আমাদের মানতে হবে। কেননা তাকে যদি আমরা না মানি কোরআনে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন একটা গাইডলাইন দিয়েছেন। সেই গাইডলাইনকে আমরা
(04:01) রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবন থেকে জীবন আদর্শ থেকে শিক্ষা করে আমাদের জীবন পরিচালনা করব । এটা হচ্ছে কোরআনের দাবি যে আমরা অবশ্যই মোহাম্মদ (স)কে মানবো। এরপরে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সূরা আল ইমরানে বলেছেন যেন রাসুলকে মানি। এছাড়া আরোও অনেকগুলো আয়াত রয়েছে যেমন সুরা নিসার ৫৯ আয়াত। “তোমরা আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসূলের অনুসরণ করো এবং তোমাদের মাঝে দায়িত্বশীল উলিলআমরদের।” তো সেক্ষেত্রে কোরআনের দাবি যে আমাদের অবশ্যই পবিত্র কোরআনকে আমাদের গাইডলাইন হিসেবে মানতে হবে এবং তার ব্যাখ্যা এবং তার বিস্তীর্ণ আলোচনা আমাদের বুঝতে হলে
আমাদের ধারণ করতে হলে অবশ্যই রাসূলুল্লাহ (সা) জীবনাদর্শের দিকে খেয়াল রেখে আমাদের চলতে হবে এবং তার যে মুখ মিশ্রিত বাণী।
হাদিস কোথা থেকে আসছে? হাদিস হচ্ছে যা রাসূল এর নিজের মুখ নিশ্রিত বাণী অথবা সাহাবায়ে কেরামের কোন কর্ম যেটা দেখেছেন যেটাকে আমরা মৌন সম্মতি বলে থাকি অথবা রসূল তিনি নিজে তার জীবনে করেছেন মুখে বলেছেন এ সকলকে আমরা হাদিস হিসেবে গ্রহন করি। এছাড়াও হাদিসের বিভিন্ন প্রকারভেদ আলেমগণ করে থাকেন । যাই হোক এখন কোরআন থেকে যে কথাটা আমার যে দাবি ছিল যে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যে বলেছেন যে তোমরা রসূল (সা) এর অনুসরণ করো। এক্ষেত্রে আমি মনে করি যে আমাদের রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে। তাকে অনুসরণ না করলে আমাদের পক্ষে কখনো কামিয়াব হওয়া সম্ভব হবে না। এটা আমি খুবই গুরুত্বর সহিত মনে করি। তো এটা হচ্ছে আমার সর্বপ্রথম সার কথা। এই ব্যাপারে যদি রেজোয়ান ভাই কিছু বলেন তাহলে বলেন ।
অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের প্রিয় মাসুম বিল্লাহ ভাইকে। তিনি তার চমৎকার বক্তব্য আপনাদের সামনে পেশ করেছেন যে কেন আমাদের হাদিস মানতেই হবে। তিনি কোরআন থেকে আমাদের তিনটা দলিল দিয়েছেন। প্রথমে তিনি দিয়েছেন সূরা হাশরের সাত নাম্বার আয়াত। সেখানে তিনি বলার চেষ্টা করেছেন যে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেছেন রাসূল যা দেয় তা গ্রহণ করো এবং যা থেকে বিরত থাকতে বলে সেটা থেকে বিরত থাকো। তাইতো মাসুম ভাই? জি । আচ্ছা।
এই আয়াতের মাধ্যমে তিনি আমাদের বুঝিয়েছেন যে আমাদের যে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের আদেশ- যে রাসূল যা কিছু দেয় সেগুলো আমাদের গ্রহণ করতে হবে এবং যা কিছু থেকে আমাদের বিরত থাকতে বলে সেখান থেকে আমাদের বিরত থাকতে হবে। এর পরবর্তীতে আমাদের প্রিয় মাসুম ভাই তিনি সূরা আল ইমরানের 31 নাম্বার আয়াতের উদাহরণ দিয়েছেন যে তোমরা যদি আল্লাহর
ভালোবাসা পেতে চাও তাহলে রাসূলের অনুসরণ করো। এরপরে তৃতীয় যে আয়াতটা তিনি দলিল হিসেবে পেশ করেছেন সেটা হচ্ছে সূরা আন নিসার 59 নাম্বার আয়াত। তাইতো মাসুম ভাই?
“তোমরা আল্লাহকে মানো রাসূলকে মান এবং উলিল আমরদের আনুগত্য করো।” তো আমি আমার যে সূচনা বক্তব্য সেখানে যুক্তি খন্ডনে যাওয়ার আগে কিছু বিষয় আলোচনা করতে চাই। সেটা হচ্ছে যে আমরা যদি সূরা আনআমটা পড়ি। সূরা আনাম না। আমরা প্রথমে সূরা ইউনুসে যাই। সূরা ইউনুসের 37 নাম্বার আয়াতে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেছেন “এ কোরআন তো এমন নয় যে আল্লাহ ছাড়া কেউ তা রচনা করতে পারবে। বরং এটি যা তার সামনে যা রয়েছে তার সত্যায়ন এবং কিতাবের বিস্তারিত ব্যাখ্যা।”
বিস্তারিত ব্যাখ্যা শব্দটা আমরা সবাই বুঝি। ডিটেইলস এক্সপ্লানেশন বলে ইংরেজিতে। বিস্তারিত ব্যাখ্যা যাতে কোন সন্দেহ নেই এবং সৃষ্টিকূলের রবের পক্ষ থেকে নাযিলকৃত। সুতরাং এই কোরআন নিয়ে- সে শিয়া হোক, সে সুন্নি হোক যেকোন মাযহাবের হোক না কেন এটা নিয়ে আমাদের আসলে কারোরই কোন সন্দেহের অবকাশ নেই। এর পরবর্তীতে একই সূরার 57 নাম্বার আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেছেন ‑হে মানুষ তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে এসেছে উপদেশ এবং অন্তর সমূহে যা থাকে তার শিফা বা চিকিৎসা আর মুমিনদের
জন্য হেদায়েত ও রহমত। আমরা যদি সূরা বাকারাটা পড়ি। সূরা বাকারায় সেই আদমের ঘটনা আল্লাহ রাব্বুল আলামীন খুব সংক্ষেপে বর্ণনা করেছেন। সেই আদমকে যখন জান্নাত থেকে বিতাড়িত করা হয় সেখানে 38 নাম্বার আয়াতে আমরা দেখতে পাই আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলছেন যে “আমি বললাম তোমরা সবাই এখান থেকে নেমে যাও। অতঃপর যখন আমার পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট কোন হেদায়েত আসবে তখন যারা আমার হেদায়েত অনুসরণ করবে তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না। এই আয়াতটা পড়ে আমরা বুঝতে পারি যে, যত মানুষ পৃথিবীতে আসবে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যুগে যুগে হেদায়েত পাঠাবেন এবং এই
হেদায়েতই মানুষকে অনুসরণ করতে হবে।” এই হেদায়েতটা কি কোন ব্যক্তি?
আমরা যদি একই সূরার 185 নাম্বার আয়াতে যাই এবং এই হেদায়েত যে আল্লাহ পাঠাবেন বলেছেন আমাদের জন্য কি পাঠিয়েছেন সেটা যদি আমরা একটু খোঁজার চেষ্টা করি আমরা দেখব যে আল্লাহ বলছেন “রমজান মাস, যাতে কুরআন নাযিল করা হয়েছে মানুষের জন্য হেদায়েত স্বরূপ এবং হেদায়েতের সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী এবং সত্য মিথ্যার পার্থক্যকারী বা ফুরকান।”
সুতরাং সূরা বাকারার 38 নাম্বার আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আদমকে যেই হেদায়েতের কথা বলেছেন যেই হেদায়েত যদি আমরা অনুসরণ করি পয়েন্ট টু বি নোটেড- অনুসরণের কথা আল্লাহ বলছেন সেই হেদায়েত যদি আমরা অনুসরণ করি আমাদের কোন ভয় নেই আমাদের কোন দুশ্চিন্তা নেই। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এর আগের হেদায়েত গুলো?
আমার মনে হয় যে আমরা সবাই জানি সূরা বাকারার প্রথম থেকে পড়লেই আমরা জানি যেই কোরআন পূর্ববর্তী যতগুলো হেদায়েতের কিতাব এসেছে তার সত্যায়ন করেছে। মানে সেগুলো সত্য। তার সার্টিফাই। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন নিজেই করে দিচ্ছেন। সুতরাং সেগুলো অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। প্রত্যেকটা মুসলিম সে শিয়া হোক সুন্নি হোক আহলে হাদিস হোক সে কিন্তু এটা বিশ্বাস করে যে তাওরাত ইঞ্জিল যা কিছু কিতাব আল্লাহ পাঠিয়েছেন সূরা আলায় আমরা যেমন পড়ি সুহুফি ইব্রাহিমা অমুসা।
মুসার কাছে যে সুহুফি বা যে কিতাব পাঠানো হয়েছিল ইব্রাহিম নবীর কাছে যে কিতাব পাঠানো হয়েছিল সকল কিতাবই আমরা মুসলিম হিসেবে বিশ্বাস করি। কিন্তু সর্বশেষ যেহেতু কুরআন- পরবর্তীতে আমাদেরকে আল্লাহ পাঠিয়েছেন সুতরাং কোরআনই আমাদের জন্য যথেষ্ট। সূরা আনকাবুতের 51 নাম্বার আয়াতে আল্লাহ এ কথাটাই বলেছেন যে কোরআন কি তাদের জন্য যথেষ্ট নয়? যদিও কথাটা সরাসরি আমাদের বলেননি তখনকার সময়ে যারা জীবিত ছিলেন তখনকার মুশরিক ইহুদি খ্রিস্টান। আপনি বলতে পারেন এভরিওয়ানকে ইন্ডিকেট করে বলা হয়েছে সুতরাং এভরিওয়ানের মধ্যে তো আমরাও পরি? কারণ সমগ্র মানব জাতির জন্যই কোরআন। কোরআন শুধু হিন্দু বৌদ্ধ মুসলিম শিয়া সুন্নির জন্য না পৃথিবীর সমগ্র মানুষের জন্য এই কোরআনটাকে নাযিল করা হয়েছে।
আমরা এই বাকারার এই আয়াতটাতেই যদি দেখি আমরা দেখব লিন নাস শব্দটা আছে মানে পুরো পৃথিবীর সকল মানুষের জন্য আল্লাহ এই কোরআনকে হেদায়েত হিসেবে নাযিল করেছেন। একই সাথে এটা হচ্ছে সত্য মিথ্যার পার্থক্যকারী। তাওরাতের মধ্যে, ইঞ্জিলের মধ্যে, জাবুরের মধ্যে, বেদের মধ্যে বা যারা যারা দাবি করে যে তাদের কিতাবগুলো হচ্ছে সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত। তার মধ্যে কি কি সত্য আর কি কি মিথ্যা তার যাচাই করার
কষ্টি পাথর বা ফুরকান হচ্ছে এই কুরআন। কেউ যদি বেদ এনে বলে এটা আল্লাহর বাণী বা সৃষ্টিকর্তার বাণী বা ব্রহ্মার বাণী। আমরা এই কুরআন থেকে যাচাই করে দেখবো যা কিছু তার সাথে মিলে যাবে আমরা বলব ঠিক আছে এতটুকু হতে পারে আর যা মিলবে না তা আমরা কখনোই তা একসেপ্ট করবো না ইভেন তাওরাত ইঞ্জিল সবকিছুর ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
তাহলে প্রশ্ন উঠছে এই কুরআনের যখন লিপিবদ্ধ হয় তার প্রায় 150/ 200 বছর পরে আমরা জানি যে বুখারী বা তিরমিজি বা অন্যান্য সকল কিতাবগুলো লিপিবদ্ধ হয়েছে। সেগুলো কি আল্লাহ সত্যায়ন করেছেন বা সেগুলো কি আল্লাহ হেদায়েত স্বরূপ দিয়েছেন? আর যদি সেগুলো না দিয়ে থাকেন এক কথা। আর যদি কেউ দাবি করে- না সেগুলো হেদায়েত তাহলেও সেগুলোর মধ্যে কি কি সত্য বা মিথ্যা আছে জাল বা জয়িফ আছে সেগুলো প্রমাণ করার কষ্টি পাথর অবশ্যই আমাদের কাছে এই ফুরকান- এই কুরআন- যা সত্য মিথ্যার পার্থক্যকারী। আমি আশা করি আমার এই কথাটার সাথে আমাদের মাসুম ভাই একমত হবেন। যে যেকোনো হাদিস বা যেকোনো ইজমা কিয়াস যে কোন কিছু সেটা সত্য না মিথ্যা? জাল না জয়ীফ? তা প্রমাণ করার সবচেয়ে কুরআন সম্মত উপায় হচ্ছে এই কুরআন দিয়ে যাচাই করা। কোরআনের সাথে যদি সেটা খাপ খায় এক্সেপ্ট করার যেতে পারে তবে যদি খাপ না খায় সেটা যত বেশি রাবি হোক- যতই বড় বড় আলেম‑ওলামারা দাবি
করুক না কেন এটা সহিহ বা সব পারফেক্ট চেইন থেকে এসেছে সেটা সত্য বলে ধরে নেওয়ার কোন সুযোগ আমাদের অন্তত নেই।
এখন হাদিস শব্দটা আমাদের খুব বহুল প্রচলিত একটা শব্দ। কুরআনের সাথে হাদিস আমরা মিলিয়ে ফেলেছি। এ কারণে হাদিস শব্দটা কুরআনে আছে কিনা সেটাও আমাদের একটু জানা দরকার। আমরা যদি 39 নাম্বার সূরা জুমার এর মধ্যে যাই সেখানে আমরা খুব আশ্চর্যজনকভাবে খেয়াল করব আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এই কোরআনটাকেই হাদিস বলে আখ্যায়িত করেছেন। খুবই ইন্টারেস্টিং একটা ব্যাপার। আমরা আয়াতটা একটু দেখি 23 নাম্বার আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলছেন “আল্লাহু নাজজালা আহসানাল হাদিসা।”– আল্লাহ নাযিল করেছেন আহসানাল হাদিস- মানে সবচেয়ে উত্তম হাদিস।
কিতাবান মুতাশাবিয়াহ। এই মুতাশাবিয়াহ শব্দটা আমরা সূরা আল ইমরানের ৭ আয়াতেও পাই ।সেখানে যদিও এই মুতাশাবিহার অর্থ অনুবাদকারীরা লিখেছেন রূপক আয়াত। কিন্তু আমরা এখানে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি যে মুতাশাবিহা অর্থ হচ্ছে সুসামঞ্জস্যপূর্ণ। আল্লাহ বলছেন যে আল্লাহ যে আহসানাল হাদিস নাযিল করেছেন এটা হচ্ছে সুসামঞ্জস্যপূর্ণ। তারপরে বলছেন মাসানি মানে পুনরাবৃত্ত হয়। বারবার এটা পড়া হয়। আমরা জানি যে পৃথিবীর একমাত্র কিতাব যেটা বারবার পড়া হয়। তারপর আল্লাহ বলছেন দেহ রোমাঞ্চিত হয়। মানুষ যদি এই কিতাব
পড়ে।
আমরা এটার সত্যতা চারিদিকে দেখতে পাই। এই পৃথিবীর বহু বিধর্মী বহু নাস্তিক বহু ইহুদি বহু খ্রিস্টান বহু বৌদ্ধ বহু হিন্দু এই কুরআন পড়ে ইসলামের পথে চলে এসেছে। অনেকে আছে যারা কোরআনের ভুল ধরতে গিয়েও ইসলামের পথে চলে আসে। তারপরও খুব অজ্ঞাত কারণে দুঃখজনকভাবে যখনই একটা মানুষ এই কুরআন পড়ে মুসলিম হয় ইসলামের পথে আসে তারপরর্ই আমরা তাকে বলি ‑না না-না- তুমি এই কুরআন পড়লে হবে না। এই কোরআন একা একা পড়লে তুমি পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে।
তুমি ইজমা কিয়াস রিজাল সিরাত তাফসির ছাড়া শুধু কুরআন পড়ছো? তাহলে তো আহলে কুরআন হয়ে গেছো?
অথচ ওই বেচারা এই কুরআনটা পড়েই কিন্তু হেদায়েতের আলোতে উদ্ভাসিত হয়েছিল। তারপর যখন সে মুসলিম হয় তার উপর আমরা 10 20 30 40 লক্ষ হাদিস চাপিয়ে দেই এবং বলি এই হাদিসগুলো যদি তুমি না মানো তুমি কুরআন বুঝতেই পারবে না।
অথচ সেই বেচারা কিন্তু কুরআনটা বুঝেই ইসলাম ধর্মটাকে গ্রহণ করেছিল। গ্রহণ করার পর সেই বেচারাকে আহলে কুরআন ট্যাগ দিয়ে ‑অনেক সময় কাফের মুরতাদ ট্যাগ দিয়ে হত্যা করার ফতোয়াও জারি করে হুজুররা। আমাদের দেশে আমরা সেগুলো প্রায়ই দেখতে পাই।
যাই হোক এই দুঃখের বা করুণ কাহিনীর দিকে আমরা না গিয়ে আমরা একটু সামনে আগাই। আল্লাহ বলছেন যে আল্লাহ নাযিল করেছেন এই আহসানাল হাদিস সাদৃশ্যপূর্ণ একটি কিতাব ব্রাকেটে অনুবাদকারীরাই লিখেছেন এটা হচ্ছে আল কুরআন। তার মানে আল কুরআনকেই আল্লাহ আহসানাল হাদিস বা উত্তম হাদিস বলে দাবি করেছেন। যা বারবার আবৃত্তি করা হয়। যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের গা এতে শিহরিত হয়। সুতরাং এই কোরআন পড়লে আপনার গা অবশ্যই শিহরিত হবে। আপনার শরীর শিহরিত হবে। অন্য কোন কিতাব পৃথিবীর বুকে আবিষ্কৃত হয়নি যা পড়লে আপনার শরীর শিহরিত হবে। তারপর তাদের দেহ ও মন আল্লাহর স্মরণে বিনম্র হয়ে যায় এটা আল্লাহর হেদায়েত তিনি যাকে চান তাকে এর দ্বারা হেদায়েত দান করেন এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই যে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বললেন আহসানাল হাদিস কুরআনকে । তাহলে অন্যান্য দাবিকৃত হাদিস আমরা কি করব?
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তার জবাব দিচ্ছেন সূরা জাসিয়ার ছয় নাম্বার আয়াতে। আল্লাহ বলছেন আয়াতুল্লাহি এগুলো হচ্ছে আল্লাহর আয়াত। নাতলুহা যেগুলো তেলাওয়াত করা হয় আবৃত্তি করা হয়। আলাইকা তোমার কাছে। বিলহাক্কি সঠিকভাবে যথাযথভাবে পারফেক্টলি।ফাবিয়াইয়্যি হাদিসি সুতরাং কোন হাদিস? বাআদল্লাহি এর পরে আল্লাহর পরে। আল্লাহর কিসের পরে? আল্লাহ পরেই বলছেন যে আয়াতিহি- আল্লাহর আয়াতের পরে। ইউকমিনুন তোমরা বিশ্বাস করবে? আল্লাহ চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন যে এগুলো হচ্ছে আল্লাহর আয়াত যথাযথভাবে তোমার কাছে আমি তেলাওয়াত করছি সুতরাং ( নবীকে আল্লাহ বলছেন যে তুমি বল) তারা আল্লাহর এই আয়াতের পরে আর কোন হাদিসে বিশ্বাস করবে? এত বড় একটা চ্যালেঞ্জ আমাদেরকে দেয়া হয়েছে। সুতরাং আল্লাহর এই কোরআনের পরে এই আয়াতের পরে আমরা কোন হাদিসে বিশ্বাস করব? হাদিস মানা তো অনেক দূরের কথা। আল্লাহ চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন যে কোন হাদিসে তোমরা বিশ্বাস করবে?
এখন অনেকে প্রশ্ন করবে তাহলে আমরা কোরআন কিভাবে বুঝব? আমরা একটু আগেই দেখেছি যে আল্লাহ সূরা ইউনুসের 37 নাম্বার আয়াতে বলেছেন যে এই কুরআন ব্যাখ্যা সহ নাযিল করেছেন তিনি। আমরা যদি সূরা নাহলে যাই সূরা নাহলের 89 নাম্বার আয়াতে সেখানে আমরা আরেকটা চমৎকার জিনিস দেখতে পাবো। সেখানে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কি বলছেন?
সেখানে বলছেন যে “আর স্মরণ করো। যেদিন আমি প্রত্যেক উম্মতের কাছে তাদের থেকেই তাদের বিরুদ্ধে একজন সাক্ষী উপস্থিত করবো এবং তোমাকে তাদের উপর সাক্ষী রূপে হাজির করব। আর আমি তোমার উপর কিতাব নাযিল করেছি প্রতিটি বিষয়ের স্পষ্ট ব্যাখ্যা স্বরূপ। (আল্লাহ বলছেন এই কিতাব নাযিল করেছেন এটা হচ্ছে প্রতিটি বিষয়ের স্পষ্ট ব্যাখ্যা তাইসিরুল কোরআন অনুবাদ করেছে প্রত্যেকটি বিষয়ের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা মুজিবুর রহমান অনুবাদ করেছেন প্রত্যেক বিষয়ের স্পষ্ট ব্যাখ্যা স্বরূপ ‑আর কি?) হেদায়েত! আর কি? দয়া রহমত। আর কি? সুসংবাদ । এই কুরআনে আপনি হেদায়েত পাবেন দয়া পাবেন রহমত পাবেন সুসংবাদ পাবেন।
আমরা সূরা ইউনুসের 57 আয়াত যদি দেখি। দেখতে পাবো আমাদের অন্তরের রোগের চিকিৎসা পর্যন্ত আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এই কোরআনের মধ্যেই দিয়ে দিয়েছেন।
আমরা যদি সূরা ফুরকান পড়ি- সূরা ফুরকানের 33 নাম্বার আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আরেকটা দাবি করছেন। আমরা মুসলিম হিসেবে অবশ্যই আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের এই দাবিটা মেনে নিতে বাধ্য। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এখানে বলছেন যে তারা তোমার কাছে যেকোন বিষয় নিয়ে আসুক না কেন আমি এর সঠিক সমাধান ও সুন্দর ব্যাখ্যা তোমার কাছে নিয়ে এসেছি। সুতরাং সবকিছুর সুন্দর ব্যাখ্যা ও সঠিক সমাধান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এই কোরআনের মাধ্যমে দিয়ে দিয়েছেন।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমাদের তাহলে যে বলা হয় আল্লাহর রাসূল যে বিভিন্ন সময় মাসলা-মাসায়েল বিচার ফায়সালা যা কিছু দিয়েছেন? তার কি হবে?
আল্লাহর রাসূল যার মাধ্যমে মাছলা মাছায়েল বিচার ফায়সালা দিয়েছেন সেগুলো তো হাদিস এভাবেও দাবি করা হয়ে থাকে?
কিন্তু আল্লাহর রাসূল কি আসলে মনগড়া কোন কিছুর মাধ্যমে কোন মাসলা-মাসায়েল বা কোন সালিশী বা কোন বিচার বা কোন ফায়সালা দিয়েছেন কিনা সেটা আমাদের একটু খুবভালো ভাবে কুরআন থেকেই দেখা দরকার।
আমরা যদি সূরা নিসা পড়ি। সূরা নিসার 105 নাম্বার আয়াতটা যদি আমরা পড়ি সেখানে আমরা দেখতে পাবো যে আল্লাহ আল্লাহর রাসূল আসলে
নিজের মনগড়া বা বুখারী তিরমিজি বা অন্য কোন কিছুর মাধ্যমে এই বিচার ফায়সালা বা মাসলা মাসায়েল দেন নি।
আল্লাহ বলছেন যে “নিশ্চয়ই আমি তোমার প্রতি যথাযথভাবে কিতাব নাযিল করেছি যাতে তুমি মানুষের মধ্যে ফায়সালা করো সে অনুযায়ী যা আল্লাহ তোমাকে দেখিয়েছেন আর তুমি খেয়ানতকারীদের পক্ষে বিতর্ককারি হয়ী না।”
সুতরাং এই আয়াতে পরিষ্কার যে আল্লাহ তার রাসূলকে বিচার ফায়সালা করতে নির্দেশ দিয়েছেন যথাযথভাবে যেই কিতাব নাযিল করেছেন সেই কিতাবের মাধ্যমে।
মুসা নবীর কাছে কিতাব নাযিল করেছিলেন তাওরাত। ঈসা নবীর কাছে আমরা জানি ইনজিল। কিন্তু মুসা নবীর মৃত্যুর পরেই তারা তালমুদ বানিয়েছে, তানাক বানিয়েছে, মিশনা বানিয়েছে, মিদ্রাস বানিয়েছে, নবীইম বানিয়েছে, কেতুবিইম বানিয়েছে।
খ্রিস্টানরাও একই কাজ করেছে। ডজনে ডজনে তারা এই ঈসা নবীর কথা, কাজ সম্মতি বা সাহাবীদের কথা, কাজ মনোনসম্মতির নাম দিয়ে হাদিসের বই বানিয়েছে। বানিয়ে তারা পথভ্রষ্ট হয়েছে। আল্লাহর এই কিতাব তারা ধরে রাখতে পারেনি।
সূরা মায়েদা যদি আমরা একটু পড়ার চেষ্টা করি তখন আমরা দেখব যে এই আল্লাহর কিতাব যারা মেনে না চলে তাদেরকে আল্লাহ কি কি বলে সম্বোধন করেছেন। আল্লাহ সূরা মায়েদার 44 নাম্বার আয়াতে বলছেন যারা আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার মাধ্যমে ফায়সালা করে না তারা কাফের। তো আল্লাহ কি নাযিল করেছেন? এই আয়াতটা খন্ডিত অংশ অনেক সময় আমাদের বলা হয়। তো যদি আমরা সেটাও ধরি তো কুরআন অনুযায়ী যদি আপনি ফয়সালা না করেন আপনি কাফের হয়ে যাবেন এবং আমরা সূরা নিসায় একটু আগে 105 নাম্বার আয়াত দেখলাম সেখানেও আমরা দেখতে পেলাম যে আল্লাহর রাসূল এই কিতাবের মাধ্যমেই সবকিছু করতেন কিন্তু এই আয়াতটা একটু গভীরভাবে যদি আপনি দেখেন আপনি দেখবেন যে প্রথমে বলা হয়েছে নিশ্চয়ই আমি তাওরাত নাযিল করেছি তার মানে এই তাওরাতের কথা বলা হচ্ছে তাতেই ছিল হিদায়েত ও আলো তাওরাতের মধ্যেও হিদায়েত ছিল নূর বা আলো ছিল। ইহুদিদের জন্য ফায়সালা প্রদান করতো নবীগণ রব্বানীগণ ধর্মবিদ্গণ। সবাই কিন্তু এই তাওরাতের আলোকে সবকিছু করতেন। তাওরাতের পরে তারা যে হাদিসের কিতাব তালমুদ তানাক মিশনা বানিয়েছে মিদ্রাস বানিয়েছে সেগুলোর তাহলে কি হবে? এই আয়াতের মাধ্যমে সেগুলো সবকিছু ব্যান্ড করে দিলেন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন।
এরপরে ৪৫ নাম্বার আয়াত যদি আমরা দেখি সরি 46 নাম্বার আয়াতটা যদি আমরা দেখি সেখানে আমরা দেখব ইঞ্জিলের কথা বলা হচ্ছে। আর আমি তাদের পেছনে মারিয়াম পুত্র ঈসাকে পাঠিয়েছিলাম তার সম্মুখে বিদ্যমান তাওরাতের সত্যায়নকারী রূপে এবং তাকে দিয়েছিলাম ইঞ্জিল। এতে রয়েছে হিদায়েত ও আলো।
একই জিনিস সেই হিদায়েত এবং নূর বা আলো ইঞ্জিলের মধ্যেও ছিল। তা ছিল তার সম্মুখে অবশিষ্ট তাওরাতের সত্যায়নকারী হিদায়েত ও মুত্তাকীদের পথনির্দেশ। 47 নাম্বার আয়াতে আল্লাহ বলছেন ইঞ্জিলের অনুসারীগণ তাতে আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার মাধ্যমে যেন ফায়সালা করে আর আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার মাধ্যমে যারা ফায়সালা করে না তারা ফাসেক। সুতরাং খ্রিস্টানদেরও বলা হচ্ছে ইঞ্জিলের বাইরে যদি তারা কোন মাসলা মাসায়েল ফায়সালা দেয় বিচার মীমাংসা দেয় কোন ফতোয়া দেয় তাহলে তারা ফাসিক হয়ে যাবে। একটু আগে আমরা দেখলাম কাফিরও হয়ে যাবে।
আরেকটা আয়াত আছে সেখানে জালিমের কথা বলা হচ্ছে সেই আয়াতটা আমি আপনাদের একটু দেখাই। এই যে 45 নাম্বার আয়াতে আল্লাহ বলছেন যে “আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার মাধ্যমে যারা ফায়সালা করবে না তারা জালিম। সুতরাং আপনি তাওরাতের অনুসারী হন, ইঞ্জিলের অনুসারী হন, কোরআনের অনুসারী হন, এটার মাধ্যমে যদি আপনি মাসলা, মাসায়েল, ফিকাহ, ফতোয়া কোন কিছু না দেন, যদি বাইরের কোন সোর্স থেকে দেন একাধারে আপনি কাফির হবেন, একাধারে ফাসিক হবেন, একাধারে জালিম হবেন।
এবার আমরা দেখি আল্লাহর রাসূল কি করতেন। তিনি কি এই বুখারী, তিরমিজি বা অন্যান্য হাদিসের মাধ্যমে মাসলা, মাসায়েল, ফিকাহ, ফতোয়া, ফায়সালা দিতেন? যেই কোরআনকে আল্লাহ বলছেন, আহসান আল হাদিস বা যেই কোরআনকে আল্লাহ বলছেন ব্যাখ্যাসহ নাযিলকৃত। সেই কুরআন তাহলে কি বিতর্কিত হয়ে যায়না?
48 নাম্বার আয়াতে আল্লাহ বলছেন আর আমি তোমার প্রতি কিতাব নাযিল করেছি যথাযথভাবে এর পূর্বের কিতাবের সত্যায়নকারী ও এর উপর তদারককারী রূপে সুতরাং আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তুমি তার মাধ্যমে ফায়সালা করো এবং তোমার নিকট যে সত্য এসেছে তা ত্যাগ করে তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না তোমাদের প্রত্যেকের জন্য আমি নির্ধারণ করেছি শরীয়াত তার মানে এতক্ষণ ধরে যে আমরা ইঞ্জিলের বিষয়গুলো দেখলাম তাওরাতের
বিষয়গুলো দেখলাম ইহুদিদের বিষয়গুলো দেখলাম খ্রিস্টানদের বিষয়গুলো দেখলাম আল্লাহ এখানে স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে প্রত্যেকের শরীয়ত আলাদা আলাদা। তাদের প্রশ্ন আপনাকে করা হবে না। খ্রিস্টানদের প্রশ্ন আপনাকে করা হবে না। ইহুদিদের প্রশ্ন আপনাকে করা হবে না। আপনার প্রশ্ন তাদের করা হবে না। সবার শরীয়ত এবং স্পষ্ট পন্থা আমরা যদি আরবিটা দেখি এখানে দেখব মানহাজ শব্দটা আছে। আমাদের হুজুররা প্রায় মানহাজ শব্দটা ব্যবহার করেন। মানহাজ মাযহাব এসব শব্দের সাথে আপনারা পরিচিত। তো আল্লাহ বলছেন যে প্রত্যেকের জন্য আল্লাহ নির্ধারণ করেছেন শরীয়ত আর মানহাজ। আল্লাহ যদি চাইতেন তবে তোমাদের সবাইকে এক উম্মত বানাতেন সবাই এক কুরআন বা সবাই এক তাওরাত বা সবাই এক ইঞ্জিলের অনুসারী হতো কিন্তু আল্লাহ চান না। তিনি বলছেন “ কিন্তু তিনি তোমাদেরকে যা দিয়েছেন তা দিয়ে তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে চান।” ইহুদীদের পরীক্ষা করতে চান তাওরাতের মাধ্যমে, খ্রিস্টানদের পরীক্ষা করতে চান ইঞ্জিলের মাধ্যমে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমরা কি ইহুদিদের মতো আল্লাহ প্রদত্ত আসমানি কিতাব তাওরাত বাদ দিয়ে মুসা নবীর নামে তার কথা, কাজ, মৌন সম্মতির নামে তালমুদ তানাক মিশনা মিদ্রাস বানাবো? বানিয়ে তাদের মতো পথভ্রষ্ট হব? নাকি আমরা শুধু আল্লাহ প্রদত্ত আসমানি কিতাব কোরআনটাকেই আঁকড়ে ধরবো? যদি আপনি ইহুদিদের মত করতে চান, করুন।
আপনি ইচ্ছা করলে আল্লাহ প্রদত্ত কিতাবটাকে বাদ
দিয়ে সেই ইহুদিদের মত তানাক তালমুদ মিশনা মিদ্রাজের মত- বুখারী তিরমিজি নাসাই মানতে পারেন। সুরা মায়েদার ৪৫,৪৬,৪৭,৪৮ আয়াত লংঘন করে জালিম কাফির ফাসিক হতে পারেন। ইটস টোটালি আপ টু ইউ।পুরোটাই আপনার হাতে। কিন্তু বৃহত পরিসরে সকল ধর্মালম্বীদের ক্ষেত্রে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন একটা কথাই বলেছেন। সেটা কি? তিনি তোমাদেরকে যা দিয়েছেন তা দিয়ে তোমাদের পরীক্ষা করতে চান। সুতরাং তোমরা ভালো কাজে প্রতিযোগিতা করো। আমাদের বলেছেন ইহুদিরা পথভ্রষ্ট খ্রিস্টানরা পথভ্রষ্ট, বৌদ্ধরা পথভ্রষ্ট এগুলো নিয়ে যেন আমরা মাথায় না ঘামাই। আমরা যেন ভালো কাজে প্রতিযোগিতা করি। ধরুন একজন ইহুদি কোটিপতি সে 50 লাখ টাকা দান করে দিয়েছে মানব সেবায়। আমি যেন 60 লাখ টাকা দান করি তার সাথে ভালো কাজে প্রতিযোগিতায় নামি। যদি আমিও সেরকম কোটিপতি হই, আল্লাহ আমাকেসম্পদশালী বানায়। আমরা শুধু ভালো কাজে প্রতিযোগিতা করব।
এভাবে যদি আমরা কোরআনের আলোয় আলোকিত হই, তাহলে পৃথিবীর সকল ধর্মের মানুষের প্রতি আমাদের একটা সম্প্রীতি আসবে, ভালোবাসা আসবে এবং সকল ধর্মের মানুষের মধ্যে একটা সম্প্রীতি এবং ভালোবাসা আসার পরেই এই পৃথিবীটাই আমাদের জন্য জান্নাতুল ফেরদৌস হিসেবে পরিগণিত হতে পারবে। আমি সবাইকে অনুরোধ করব কোরআনের যে আয়াতগুলো আমি দিয়েছি ভালো করে পড়বেন। পড়ে আল্লাহর এই কিতাবকে আঁকড়ে ধরবেন এ কিতাব বাদ দিয়ে আহসান আল হাদিস বাদ দিয়ে আপনারা কাফির কাফির ফাসিক জালিম হবেন না। তাহলে পরকালে খুব পস্তাতে হবে। ধন্যবাদ আমার কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শোনার জন্য।
জি ধন্যবাদ ভাইজান আপনাকে কিন্তু আমাদের অপর আলোচক জি শুনতে পাচ্ছেন রেজোয়ান ভাই? আমার কথা কি শোনা যায়নি এতক্ষণ? হ্যাঁ আপনার কথা তো স্পষ্ট শোনা গিয়েছে। আচ্ছা মাসুম বিল্লাহ ভাই ডিসকানেক্ট হয়ে গেছেন। হ্যাঁ উনি অনেক আগে থেকেই প্রায় শুরু থেকে আপনি কথা বলার প্রায় এক মিনিট পর থেকেই উনি ডিসকানেক্ট হয়ে গিয়েছেন। উনার কি নেট প্রবলেম নাকি স্বেচ্ছায় উনি প্রস্থান করলেন বুঝতে পারছি না। তবে আলহামদুলিল্লাহ আপনি খুব সুন্দর আলোচনা করেছেন। সূরা নাহলের 89 নাম্বার
আয়াত ফরকানের 33, সুরা নিসার 105, সুরা মায়েদার 44 45 48 থেকে আপনি যেভাবে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন এরপরে আমার মনে হয় না যে উনার প্রশ্নের আর কোন অবকাশ রয়েছে। যদিও উনি সূরা হাশরের সাত নাম্বার আয়াত দিয়েছেন তার বক্তব্যে,কিন্তু আপনি তা খন্ডন করেন নি।
না আমি সেগুলো যুক্তি খন্ডন পর্বের জন্য রেখে দিছি। আমি ইচ্ছা করেই ওদিকে টাচ করি নি। তাহলে যুক্তি খন্ডনে কি বলব? উনার তো থাকা দরকার ছিল? উনার হয়তো বিদ্যুতে কোন প্রবলেম হতে পারে? এরকমও হতে পারে তবে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আমি ব্যক্তিগতভাবে জানাচ্ছি!
সেটাই লিখছেন ভাই বিদ্যুৎ তো চলে গেছে।
পরিষ্কারভাবে খুব সুন্দর করে আপনি আয়াত টু আয়াত বুঝিয়ে দিয়েছেন বিশেষ করে সূরা মায়েদাতে আপনি যা বুঝিয়েছেন এরপরে আমার মনে হয় না যে আর কারো এটা নিয়ে বিভ্রান্তি থাকার কথা।
না ভাই অনেকে কমেন্ট করছেন উনি পালিয়েছেন। না উনার বিদ্যুতের প্রবলেম হয়েছে উনি জানিয়েছেন আমাদেরকে। আমরা না জেনে আগেই একটা কমেন্ট না করি এতে সেই ভাইজান আহত হবেন। উনি খুব ভালো মানুষ আমার সাথে কথা বলে আমার উনাকে যথেষ্ট ভদ্র মানুষ মনে হয়েছে। আমরা এ ধরনের কমেন্ট না করি। ভাই হুজুর পালায়নি উনি বিদ্যুতের সমস্যার কারণে ডিসকানেক্ট হয়ে গিয়েছেন। যদি সম্ভব হয় উনি আবার হয়তো যুক্ত হবেন আমাদের সঙ্গে।