(18) ইসলামে পুনর্জন্ম ( ৯৯% মুসলিম কেন জানেনা?)
রব্বি আউজুবিকা মিন হামাজাতিশশায়াতিন অআউজুবিকা রাব্দুবি আহ্ইয়াদুরুন। বর্তমান পৃথিবীর জনসংখ্যা প্রায় 800 কোটি তার মধ্যে সাড়ে চার থেকে 500 কোটি হচ্ছে মুসলিম এবং খ্রিস্টান যাদেরকে আমরা আব্রাহামিক ধর্মের অনুসারী বলতে পারি আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে যে এই 450 থেকে 500 কোটি মানুষ তারা পুনর্জন্মবাদে বিশ্বাস করে না বাকি হিন্দু বৌদ্ধ জৈন প্রায় সবাই এই পুনর্জন্মবাদে বিশ্বাস করে থাকে এই পুনর্জন্মবাদে মুসলিমরা এবং খ্রিস্টানরা যেহেতু বিশ্বাস করে না সেহেতু তারা অত্যন্ত আত্মতুষ্টিতে ভোগে এবং মনে করে যে জান্নাতে যাওয়া বেহেশতে যাওয়া তাদের জন্য খুবই সহজ এবং
(00:47) তাদের জন্মগত অধিকার যেহেতু তারা একবার মুখে কালেমা পড়েছে অথবা একবার স্বীকার করেছে বিশ্বাস করেছে যে তার পাপের জন্য যীশু খ্রিস্ট ক্রুশবৃদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন এই দুই ধর্মের মানুষদের এই পুনর্জন্মবাদে অবিশ্বাস করার কারণে তাদের মধ্যে একদিকে যেমন আত্মতুষ্টি বেশি দেখা যায় অন্যদিকে পাপের সাগরে হাবুডুবু খাওয়ার মাত্রাও তাদের বেশি অবশ্য খ্রিস্টানদের চেয়ে মুসলিমদের অধিক পরিমাণে বেশি কিন্তু কুরআন কি বলে সেই বিষয়টা আমরা দেখব এরপর আমরা দেখব যে হিন্দু ধর্ম জৈন ধর্ম বৌদ্ধ ধর্মে এই জন্মান্তরবাদ আর পুনর্জন্ম বিষয়টা কিভাবে
(01:30) এক্সপ্লেইন করা হয়েছে অবশ্যই আমাদের মনে রাখতে হবে যে পুনর্জন্ম আর জন্মান্তর বাদ এই বিষয়টা কিন্তু এক নয় জন্মান্তর বাদ হচ্ছে একটার পর একটা চলতেই থাকে সার্কেলের মত করে আর পুনর্জন্ম হচ্ছে যে একবার জন্ম নিলেন মৃত্যুবরণ করলেন আবার জন্ম নেবেন পবিত্র কুরআনের সূরা আরাফের 172 নাম্বার আয়াতে আল্লাহ বলছেন আর স্মরণ করো যখন তোমার রব বনি আদমের পৃষ্ঠদেশ হতে তাদের বংশধর কে বের করলেন এবং তাদেরকে তাদের নিজেদের ওপর সাক্ষী করলেন যে আলাস্তু রব্বিকুম আমি কি তোমাদের রব নই তারা বলল হ্যাঁ আমরা সাক্ষ্য দিলাম যাতে কিয়ামতের দিন তোমরা বলতে না পারো যে নিশ্চয়ই আমরা
(02:16) এ বিষয়ে গাফেল ছিলাম অনবহিত ছিলাম সূরা আরাফের 172 নাম্বার আয়াত আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে যে এই পৃথিবীতে জন্মের আগেও আমাদের একবার জন্ম হয়েছিল সেখানে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের প্রশ্ন করেছিলেন কি প্রশ্ন আলাস্তু রব্বিকুম আমি কি তোমাদের রব নই আমরা কি উত্তর দিয়েছিলাম কলু বালা নিশ্চয়ই আমরা সাক্ষ্য দিলাম আমরা আল্লাহর কাছে সাক্ষ্য দিয়ে এসেছি কেন সাক্ষ্য দিয়ে এসেছি তার উত্তর আল্লাহ দিয়েছেন যে যাতে করে কেয়ামতের দিন তোমরা বলতে না পারো যে নিশ্চয়ই আমরা এ বিষয়ে অনবহিত ছিলাম আমরা হাশরের মাঠে এটা বলতে পারবো না যে আমরা
(03:00) জানিনা প্রশ্ন উঠছে তাহলে আমাদের কেন মনে নেই আপনি যখন ছয় মাস বয়সী বা এক বছর বয়সী বা দেড় বছর বয়সী ছিলেন তখন আপনার জীবনে কি কি ঘটেছিল আপনার কি মনে আছে এই পৃথিবীতে বসেই আপনার ছোটবেলার স্মৃতি আপনার মনে নেই তাহলে আগের জনমের স্মৃতি আপনার কি করে মনে থাকবে যেহেতু আপনার মনে নেই এই কোরআনের মাধ্যমেই আল্লাহ আপনাকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন আপনার সৌভাগ্য যে কোরআনের এই বাণী এই সূরা আরাফের 172 নাম্বার আয়াত যেভাবে হোক না কেন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আপনার নফস পর্যন্ত আপনার কলব পর্যন্ত আপনার দৃষ্টি পর্যন্ত আপনার শ্রবণশক্তি পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছেন আল্লাহ
(03:40) রাব্বুল আলামীনের দায়িত্ব শেষ এরপর আপনার দায়িত্ব শুরু এরপর আমরা সূরা বাকারার দুই নাম্বার সূরার 28 নাম্বার আয়াত দেখি আল্লাহ বলছেন কিভাবে তোমরা আল্লাহকে অবিশ্বাস করছো অথচ তোমরা ছিলে প্রাণহীন মৃত অতঃপর তিনি তোমাদেরকে জীবিত করেছেন এরপর তিনি তোমাদেরকে মৃত্যু দেবেন অতঃপর জীবিত করবেন এরপর তারই নিকট তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে আয়াতটা একটু ভালো করে আমাদের খেয়াল করতে হবে এবং এর সাথে যদি আমরা সূরা আরাফের 172 নাম্বার আয়াত পাশাপাশি রাখি আমাদের খুব সহজ হবে এই পুনর্জন্ম বিষয়টা উপলব্ধি করার পুনর্জন্ম বিষয়টা যে কত গুরুত্বপূর্ণ আমাদের ঈমান ও
(04:23) আমলের ক্ষেত্রে আজকের খুতবা শেষ হলে আপনি মর্মে মর্মে উপলব্ধি করতে পারবেন আল্লাহ বলছেন কি ভাবে তোমরা আল্লাহকে অবিশ্বাস করছো অথচ তোমরা ছিলে প্রাণহীন মৃত তার মানে আমরা মৃত ছিলাম অতঃপর তিনিই তোমাদের জীবিত করেছেন এই পৃথিবীতে আমাদের তিনি আবার জীবিত করেছেন এরপর তিনিই তোমাদের মৃত্যু দেবেন যেদিন আমাদের হায়াত শেষ হয়ে যাবে সেদিন আল্লাহ আমাদের মৃত্যু দেবেন তারপর হাশরের মাঠে আবার আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের জীবিত করে উঠাবেন নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে এই দুইবার জন্ম আর দুইবার মৃত্যুর বিষয়টা আল্লাহ পরিষ্কার করে দিচ্ছেন সূরা বাকারার 28
(05:04) নাম্বার আয়াতে 40 নাম্বার সূরা গাফিরের 11 নাম্বার আয়াতে আমরা কি বলবো হাশরের মাঠে তাও আল্লাহ বলে দিচ্ছেন ইন অ্যাডভান্স তারা বলবে হে আমাদের রব আপনি আমাদেরকে দুইবার মৃত্যু দিয়েছেন এবং দুইবার জীবন দিয়েছেন অতঃপর আমরা আমাদের অপরাধ স্বীকার করছি অতএব এখন জাহান্নাম থেকে বের হবার কোন পথ আছে কি পরিষ্কার আমরা দেখতে পাচ্ছি যে এখানে বলা হচ্ছে দুইবার জীবন দিয়েছেন দুইবার মৃত্যু দিয়েছেন আমরা অনেকেই কবর আজাবে বিশ্বাস করি কিন্তু পবিত্র কোরআনে কবর আজাব বিষয়টা উল্লেখ নেই যেটা উল্লেখ আছে সেটা হচ্ছে আমরা ঘুমিয়ে থাকবো ঘুমন্ত অবস্থায়
(05:49) থাকবো যখন সিঙ্গায় ফুঁ দেয়া হবে সূরা তাকবীরের সাত নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলছেন দেহে আমাদের এই নফস এই আত্মা পুনরায় মিলিয়ে দেয়া হবে পুনরায় সংযোজন করা হবে হবে অবশ্যই একদিক দিয়ে দেখলে এই পৃথিবীতে আমরা প্রতিদিনই বাঁচি প্রতিদিনই মরি সূরা জুমারের 42 নাম্বার আয়াতে আল্লাহ বলছেন আল্লাহ এই জীবসমূহের প্রাণ হরণ করেন তাদের মৃত্যুর সময় এবং যারা মরেনি তাদের নিদ্রার সময় ঘুমের সময় তারপর যার জন্য তিনি মৃত্যুর ফায়সালা করেন তার প্রাণ তিনি রেখে দেন এবং অন্যগুলো ফিরিয়ে দেন একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত নিশ্চয়ই এতে চিন্তাশীল কওমের জন্য অনেক নিদর্শন রয়েছে
(06:36) নিদ্রার সময় আমাদের প্রাণ হরণ করা হয় যার জন্য মৃত্যুর ফায়সালা হয়ে থাকে তার প্রাণ তিনি রেখে দেন এবং অন্যগুলো আবার ফিরিয়ে দেন তার মানে প্রতিদিন যে আমরা ঘুমাই আমাদের প্রাণ চলে যায় তারপর আবার সেগুলো আমাদের ফিরিয়ে দেয়া হয় মানে আবার আমাদের একটা সেকেন্ড চান্স দেয়া হয় কিন্তু আমরা বুঝি না প্রতিদিন নিয়ে আমাদের নতুন নতুন জীবন হচ্ছে যদিও এটা রূপক বা উপমা কিন্তু আল্লাহ এই আয়াতের শেষেই বলছেন যে এর মধ্যে চিন্তাশীল কওমের জন্য অনেক নিদর্শন রয়েছে মানে যদি আমরা একটু চিন্তা ভাবনা করি সূরা মোহাম্মদের 24 নাম্বার আয়াতে আল্লাহ যেমনটা বলছেন যে
(07:16) তারা কি কোরআন নিয়ে চিন্তা ভাবনা করে না নাকি তাদের অন্তর তালাবদ্ধ কোরআন নিয়ে চিন্তা ভাবনা করাটাও একটা বড় সওয়াবের কাজ যদি না করি আমাদের অন্তর কিন্তু তালাবদ্ধ হয়ে যাবে তো এই যে নিদর্শনটা যে মৃত্যুর সময় আল্লাহ আমাদের নফসগুলো আর ফেরত দেবেন না কিন্তু আমরা যখন ঘুমিয়ে থাকি আমাদের এই প্রাণ আত্মা নিয়ে যাওয়া হয় এরপর আমাদেরকে আবার পুনরায় জীবন দেয়া হয় কিন্তু এই জীবনগুলোকে প্রতিদিন যে ঘুমের মধ্যে যে বারবার নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ফেরত দেয়া হচ্ছে এগুলোকে আল্লাহ পুনর্জন্ম হিসেবে আখ্যায়িত করছেন না আল্লাহ যেটা আখ্যায়িত করেছেন সেটা আমরা
(07:49) একটু আগেই দেখলাম সূরা বাকারার 28 নাম্বার আয়াতে এবং 40 নাম্বার সূরা গাফিরের 11 নাম্বার আয়াতে সূরা ওয়াকিয়ার 62 নাম্বার আয়াতে আল্লাহ বলছেন তোমরা তো অবগত হয়েছো প্রথম সৃষ্টি সম্বন্ধে তাহলে তোমরা কেন উপদেশ গ্রহণ করছো না এই যে সূরা আরাফের 172 নাম্বার আয়াতে আল্লাহ আমাদের অবগত করেছেন যে আমরা আল্লাহর কাছে ছিলাম আদমের পৃষ্ঠদেশ থেকে আমাদেরকে বের করা হয়েছিল এবং আমাদের জিজ্ঞেস করা হয়েছিল আলাস্তু রব্বিকুম আমরা উত্তর দিয়েছিলাম কলু বালা আমরা আল্লাহকে রব বলে স্বীকার করেছিলাম এখন তো পৃথিবীতে এসে আমরা ভুলে গিয়েছি কোরআনের মাধ্যমে আমাদের জ্ঞানটা
(08:27) আবার দিয়ে দেয়া হয়েছে তারপরও এই জ্ঞান এই নূর ভুলে গিয়ে আমরা অর্থবিত্ত ক্ষমতা প্রভাব প্রতিপত্তি টাকা-পয়সা ঘরবাড়ি চাকরি ব্যবসা-বাণিজ্য কত কিছুকেই আমরা রব বানিয়ে নিয়েছি যে ভাবি চাকরি আমাদের খাওয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্য খাওয়ায় অর্থবিত্ত সম্পত্তি আমাদের বাঁচিয়ে রাখে আমাদের এমন ভাবে এগুলো কবজা করে ফেলেছে যে আমরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে এদেরকেই রব বানিয়ে নিয়েছি আখিরাতকে ভুলে গিয়েছি তো আল্লাহ সে কথাটাই বলছেন যে তোমরা তো অবগত হয়েছো তোমাদের প্রথম সৃষ্টি সম্বন্ধে তাহলে তোমরা কেন অনুধাবন করো না প্রশ্ন হচ্ছে আমাদের এই পূর্বজন্ম সম্বন্ধে
(09:08) কোরআনে কেন বিস্তারিতভাবে তেমন কিছু বলা হয়নি এর অনেকগুলো কারণ আছে সবচেয়ে বড় কারণ তো আল্লাহ নিজেই জানেন তিনি সবচেয়ে বড় হিকমত ওয়ালা হয়তো এগুলো বেশি জানলে আমাদের ক্ষতি হবে আমাদের হেদায়েতের জন্য যতটুকু দরকার ততটুকুই আল্লাহ রাব্বুল আলামীন দিয়েছেন এবং এ কথাটা আল্লাহ বলেছেন যখন অমুসলিমরা আল্লাহর রাসূলকে প্রশ্ন করেছিলেন যে রুহু কি জিনিস রুহু সম্পর্কে আলাদা একটা ভিডিও করা আছে রুহু জিব্রাইল নফস এ সম্পর্কে যাই হোক তখন কিন্তু আল্লাহ এই রুহুর উত্তর দেয়ার সাথে সাথে এই বিষয়টাও অবতারণা করেছেন আল্লাহ সূরা বানিসালের 85 নাম্বার আয়াতে বলেই
(09:44) দিয়েছেন যে তোমাদের অতি সামান্য জ্ঞানই দেয়া হয়েছে আমাদের অতি সামান্য জ্ঞান দেয়া হয়েছে তা নিয়ে আমরা কত বাহাদুরি করি তো এই সামান্য জ্ঞান দেয়ার সাথে সাথে আমাদের কিছু হিন্টস দেয়া হয়েছে যদি আমরা কোরআনের আয়াতগুলো নিয়ে চিন্তা ভাবনা করি সূরা নিসার 82 এবং সূরা মোহাম্মদের 24 নাম্বার আয়াত অনুসারে তাহলে আমরা অনেক কিছু পাবো বা গায়েবী ভাবে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের অনেক নূর দান করবেন হিন্টস গুলো কি 38 নাম্বার সূরা সাদের 65 আয়াতে আল্লাহ বলছেন বলো আমি তো একজন সতর্ককারী মাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কোন সত্য ইলাহ নেই
(10:21) যিনি এক প্রবল প্রতাপশালী আসমানসমূহ ও জমিন এবং এগুলির মধ্যস্থিত সবকিছুর রব তিনি তিনি মহাপরাক্রমশালী মহা ক্ষমাশীল বলো এটা এক মহাসংবাদ তোমরা তা থেকে বিমুখ হয়ে আছো 69 নাম্বার আয়াতে আল্লাহ বলছেন ঊর্ধ্ব লোক সম্পর্কে আমার কোন জ্ঞানই ছিল না যখন তারা বাদ অনুবাদ করেছিল যখন তারা বিতর্ক করছিল ঊর্ধ্বলোকে সেই সম্পর্কে আমার কোন জ্ঞানই ছিল না একথা আল্লাহর রাসূল বলছেন তো এই ঊর্ধ্বলোকে কি বাদানুবাদ চলছিল কি তর্ক‑বিতর্ক চলছিল নিশ্চয়ই এমন কোন ঘটনা ঘটেছিল আল্লাহ ফেরেশতা তার অন্যান্য মাখলুকাতের মধ্যে এমন কোন ঘটনা ঘটেছিল যার কারণেই আমাদের এই
(11:12) পৃথিবীতে আসতে হয়েছিল কি সেই ঘটনা কি হতে পারে 33 নাম্বার সূরা আহযাবের 72 নাম্বার আয়াতে আল্লাহ বলছেন নিশ্চয়ই আমি আসমানসমূহ জমিন ও পর্বতমালার প্রতি এ আমানত অর্পণ করেছিলাম পেশ করেছিলাম কিন্তু কিন্তু তারা এটা বহন করতে অস্বীকার করল এবং তাতে সংকিত হলো ভীত হলো আর মানুষ তা বহন করল নিশ্চয়ই সে ছিল অতিশয় জালিম খুবই অজ্ঞ কি সেই আমানত নিশ্চয়ই এই ঘটনা এই জনমের নয় সেই পূর্ব জনমের যেই জনমে আল্লাহ আদমের পিঠ থেকে আমাদের বের করেছিলেন আমাদের প্রশ্ন করেছিলেন আলাস্তু রব্বিকুম এবং আমরা সবাই একসাথে বলেছি ইয়েস ইউ আর আওয়ার রব সেইখানেই এই ঘটনা
(12:05) ঘটেছিল আল্লাহ তার এই আমানত আসমানসমূহ জমিন পর্বতমালা সবাইকেই পেশ করেছিলেন কিন্তু আল্লাহর সেই আমানত সবাই বহন করতে অস্বীকার করেছে একমাত্র মানুষ সেই আমানত গ্রহণ করেছে এরপরে আল্লাহ এই আয়াতে বলছেন যে মানুষ হচ্ছে অতিশয় জালিম এবং খুবই অজ্ঞ আমাদের নিজেদের নিয়ে আমরা অনেক অহংকার করি আমরা সৃষ্টির সেরা হ্যাং ত্যাং অনেক কিছু কিন্তু আল্লাহ পরিষ্কার করে বলে দিচ্ছেন যে আমরা হচ্ছি অতিশয় জালিম অতিশয় অজ্ঞ তাহলে আমরা সেই ঊর্ধ্বলোকে কি তর্ক‑বিতর্ক হয়েছিল তার আরো একটা হিন্টস পেলাম যেখানে আমরা অত্যন্ত অজ্ঞ হিসেবে আল্লাহর কাছে পরিগণিত
(12:53) হয়েছি এবং জালিম হিসেবে পরিগণিত হয়েছি এবং পৃথিবীর বুকেও দুচোখ মেলে তাকালে আমরা দেখতে পাই যে পৃথিবীতে যত সৃষ্টিকুল আছে যত জীবজ-জন্তু জানোয়ার হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ আছে তার মধ্যে সবচেয়ে জালিম সবচেয়ে অত্যাচারী সবচেয়ে নির্যাতনকারী হচ্ছি আমরা মানুষেরা আমরা নিজেরাই মানুষ হয়ে মানুষকে কষ্ট দেই দুঃখ দেই মারি পিটাই চুরি করি ছিন্তাই করি ডাকাতি করি অত্যাচার করি শুধু মানুষের উপরই করি না পশুপাখি জীবজন্তু যত কিছু আছে সবকিছুর উপরই আমরা জুলুম করি সবকিছুর উপরই আমরা অত্যাচার করি আর সৃষ্টির সেরা অল টাইম নয় আমরা শুধু আকার আকৃতি সুন্দর
(13:34) সূরা তিনে আল্লাহ বলেছেন আমাদের সুন্দর গঠনে সৃষ্টি করা হয়েছে এর ঠিক পরের আয়াতে আল্লাহ বলছেন তারপর আমি তাকে করেছি একেবারে সবচেয়ে নিকৃষ্ট সবচেয়ে হীনগ্রস্তদের মধ্যে হীনতাম হিসেবে তাকে ফিরিয়ে দিয়েছি ব্যতিক্রম কারা ইন্নাল্লাজিনা মামনুন যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে তাদের জন্য রয়েছেন এর বিচ্ছিন্ন পুরস্কার সুতরাং ঈমান যারা আনবে আর যারা নেক কাজ করবে ভালো কাজ করবে সৎ কাজ করবে আল্লাহ কোরআনে যত আদেশ দিয়েছেন আর নিষেধ করেছেন সেগুলো মেনে চলবে তাদের জন্য পুরস্কার রয়েছে আর যারা ঈমান আনবে কিন্তু সৎ কাজ করবে না শুধু মনে করবে লা ইলাহা
(14:22) ইল্লাল্লাহ বলেছি আমার জান্নাত কনফার্ম সে ওই নিকৃষ্টই থেকে যাবে ঈমানও আনতে হবে সৎ কাজ নেক আমলগুলো করতে হবে কোরআনে যে সমস্ত সৎ কাজের কথা আল্লাহ বলে দিয়েছেন তাহলে আমরাই সেই জালিম সেই অজ্ঞ সূরা আহযাবের 72 নম্বর আয়াত অনুযায়ী যারা আল্লাহর এই আমানত নিয়েছিলাম কিন্তু সেই আমানতের খেয়ানত করে চলেছি যত পাপ যত জুলুম সব আমরা করে চলেছি নিজের নফসের সাথে এবং অন্যান্য নফসদের সাথে আমরা যে নফস সূরা নিসার এক নাম্বার আয়াতে আল্লাহ বলে দিয়েছেন সেই নফস থেকে এক নফস থেকে আমাদের সবার জন্ম এবং এই নফসে মুতমাইন্না যখন আমরা হব তখনই আমরা জান্নাতে যাওয়ার
(15:05) অধিকার অর্জন করব এজন্য আল্লাহ সূরা ফজরে বলেছেন জান্নাতি এই নফসকে যদি আমরা পরিশুদ্ধ করতে না পারি আমাদের কপালে শুধু দুর্ভোগি রয়েছে নফসের পরিশুদ্ধি যাকাত সেই ভিডিওতে এগুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে সূরা জারিয়াতের 56 নাম্বার আল্লাহ বলেছেন আমি মানুষ ও জ্বীনকে সৃষ্টি করেছি আমার ইবাদত করার জন্য একই সাথে 36 নাম্বার সূরা ইয়াসিনের 60 নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলছেন অবশ্য হাশরের মাঠের ঘটনা এটা তো আল্লাহ কি বলছেন হে বনি আদম আমি কি তোমাদেরকে নির্দেশ দেইনি যে তোমরা শয়তানের ইবাদত করো না নিঃসন্দেহে সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু আল্লাহ একদিকে
(15:58) বলছেন মানুষ আর জিনকে সৃষ্টি করেছে আল্লাহর ইবাদতের জন্য কিন্তু হাশরের মাঠে আল্লাহ যারা জাহান্নামে সাব্যস্ত হবে তাদেরকে প্রশ্ন করবেন যে আমি কি তোমাদের নির্দেশ দেইনি তোমরা শয়তানের ইবাদত করো না তাহলে আমরা পৃথিবীতে দেখতে পাই যে খুব কম মানুষই 800 কোটি মানুষের মধ্যে খুব কম মানুষই শয়তানের ইবাদত করে অথচ আমরা জানি যে অধিকাংশ মানুষই হচ্ছে কাফির আর যারা ঈমান আনে তাদের মধ্যেও অধিকাংশই হচ্ছে ঈমান আনার সাথে সাথে শিরক করে সূরা ইউসুফের 103 আয়াতে আল্লাহ বলছেন তুমি যতই চাও না কেন বেশিরভাগ লোকই ঈমান আনবে না সূরা ইউসুফের 106 আয়াতে আল্লাহ বলছেন
(16:40) তাদের অধিকাংশই আল্লাহকে বিশ্বাস করে কিন্তু তার সাথে শিরক করে আমরা এও জানি যে আল্লাহ সব গুনাহ ক্ষমা করবেন কিন্তু শিরকের গুনাহ ক্ষমা করবে না তাহলে আমরা বুঝলাম যে বেশিরভাগ মানুষই শয়তানের ইবাদত করবে কিন্তু আমরা দুচোখ মেলে যখন তাকাই চারদিকে শয়তানের ইবাদত করতে কাউকে দেখি দেখি না বাংলাদেশের দিকেই তাকাই না কেন 90% আমরা বলি মুসলিম তারা হয়তো নামাজ পড়ে না রোজা রাখে না বা যেগুলোকে ইসলামের খুঁটি বলা হয় সেগুলো করে না কিন্তু শয়তানের এবাদত তো কেউ করছে না তাহলে এ কথা আল্লাহ কেন বলছেন শয়তানের এবাদত করা বলতে আল্লাহ বোঝাচ্ছেন যারা আল্লাহর আদেশ
(17:20) নিষেধ মেনে চলে তারা আল্লাহর এবাদত করে আর যারা শয়তানের আদেশ নিষেধ মেনে চলে তারা শয়তানের এবাদত করে আল্লাহর আদেশ নিষেধ কি সৎ পথে চলে সৎ জীবিকা অর্জন করো সম্পদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত অংশ দান করো গরীব দুঃখী অসহায় অভাবী আত্মীয়-স্বজন প্রতিবেশীকে সত্য কথা বলো মিথ্যা বলবে না গীবত করবে না পরনিন্দা করবে না চুরি ডাকাতি ছিন্তাই রাহাজানি অন্যের সম্পদ আত্মসাৎ যত খারাপ কাজ আছে এগুলো থেকে আল্লাহ বিরত থাকতে বলেছেন এগুলো যদি আমরা না করি আল্লাহর আদেশ ও নিষেধে মেনে চলি আমরা আল্লাহর ইবাদত করছি আর যদি এর বিপরীতটা করি আমরা শয়তানের
(18:00) এবাদত করছি কারণ এই পৃথিবীটা হচ্ছে আমাদের পরীক্ষার মঞ্চ পরীক্ষার সাবজেক্ট আপনার 10 টা থাকতে পারে কিন্তু আপনি যদি সেই 10:00 টার মধ্য থেকে তিনটাকে বেছে নেন যে এই তিনটায় পাশ করলেই পাশ আপনি বোকার স্বর্গে পাশ করছেন আপনি যদি বলেন যে ইংরেজি আর অংক আর বিজ্ঞান এই তিনটা সাবজেক্টে এ প্লাস পেলেই হবে আপনি কখনোই পাশ করতে পারবেন না কারণ আপনাকে 10 সাবজেক্টে এটলিস্ট পাঁচ মার্ক আনতে হবে অবশ্য আল্লাহর পরীক্ষায় পাঁচ মার্ক 51 সূরা আরাফের সাত আট আয়াত অনুযায়ী আমরা জানি যে নেকের পাল্লা ভারী হলে সে জান্নাতে যাবে তাহলে পাপের চেয়ে
(18:34) নেকের পাল্লা যদি আপনার ভারী হয় এটলিস্ট আপনাকে 100 তে 51 পেতে হবে প্রত্যেক সাবজেক্টে কিন্তু আপনি যদি সাবজেক্ট বানিয়ে ফেলেন শুধু নামাজ রোজা হজ তিন‑চারটা এগুলোর হিসাব হাশরের মাঠে আগে হবে এগুলোতে পাশ করলেই সব বিষয় পাশ হয়ে যাবে এ ধরনের কোরআন বিরোধী ফিলোসফিতে আপনি যদি বিশ্বাস করেন আর সেই অনুযায়ী কাজ করতে থাকেন আপনি হাশরের মাঠে ধরা পড়ে যাবেন কারণ আল্লাহর সকল সাবজেক্ট সকল বিষয়ের উপরেই মার্কিং করা হবে সেই মার্কিং এ যদি আমরা পাশ করতে পারি সকল সাবজেক্টের উপরে তাহলেই আমি সাকসেসফুল হব আমি কিভাবে সাকসেসফুল হতে পারি কারণ এই
(19:14) পৃথিবীতে চলতে গেলে তো আমার টাকা-পয়সা দরকার বিপদ আপদে ধৈর্য ধারণ করা দরকার আল্লাহর কাছে অনেক কিছু চাওয়ার দরকার অনেক সময় শয়তানের ধোঁকায় বা বিভিন্নভাবে আমি পাপ করে ফেলি সেগুলো থেকে আমার গুনাহ মাফ করা দরকার এই সমস্ত কিছু আমি কোথা থেকে পাবো কোন ভাবে এগুলো চাইলে বা এগুলো করলে আমি সেফ থাকতে পারবো সেগুলো আল্লাহ শিখিয়েছেন সূরা বাকারার 37 নাম্বার আয়াতে যে বিষয়টা নিয়ে আজকে শুরু করেছিলাম যে এই পুনর্জন্মবাদ যদি আমি বিশ্বাস না করি তাহলে ইসলাম মেনে চলা ইসলামের মূল বিষয়টা ফোকাস করা আমার জন্য কঠিন হবে আর পুনর্জন্মটা যদি আমি
(19:52) এক্সাক্টলি ধরতে পারি আমার জন্য খুব সহজ হয়ে যাবে দুই নাম্বার সূরা বাকারার 37 নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলছেন অথবা পর আদম তার রবের পক্ষ থেকে কিছু বাণী কিছু কালিমা শিক্ষা পেল ফলে আল্লাহ তার তওবা কবুল করলেন নিশ্চয়ই তিনি তওবা কবুলকারী অতি দয়ালু আদম যখন ভুল করে ফেলল তখন সে নিজে নিজে কিছু বলে আল্লাহর কাছ থেকে মাফ পেল না আল্লাহ তাকে কিছু বাণী শিক্ষা দিল কিছু কালেমা শিক্ষা দিল সেগুলো অবলম্বনেই সে আল্লাহর কাছে তওবা করল এবং আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিলেন এই পৃথিবীতে আমরা যখন অনেক পাপ করে ফেলবো অন্যায় করে ফেলবো সূরা আল ইমরানের 135 আয়াতে আল্লাহ যেমনটা
(20:37) বলেছেন যে অন্যায় করার পরে পাপ করার পরে সাথে সাথে তারা সেই পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে এটা হচ্ছে মুত্তাকীদের কোয়ালিটি এবং আমরা জানি যে এই পৃথিবীতে সবচেয়ে সম্মানিত সবচেয়ে মর্যাদাবান মানুষ হচ্ছে যারা মুত্তাকী তারা তো আদম কিভাবে তওবা করালেন আল্লাহর কাছ থেকে কিছু বাণী শিক্ষা পেলেন আমরা যারা মুসলিম আছি আমরা অনেকেই আছি আল্লাহর কাছে কোন কিছু চাই কোন দোয়া কবুল করাতে চাই বা পাপ করলে ক্ষমা প্রার্থনা করাতে চাই কিন্তু আমরা আল্লাহর কিতাব থেকে সেই দোয়াগুলো শিখতে চাই না আল্লাহর শেখানো আল্লাহ যেমনটা আদমকে বাণী শিখিয়েছেন কালিমা শিখিয়েছেন
(21:12) সূরা বাকারার 37 আয়াতে আমরা দেখতে পাই সেভাবে আমরা অনুসরণ করতে চাই না আমরা হুজুর শরীফ থেকে দোয়া দরুদ পড়তে চাই আমরা পীর অলি আউলিয়া গাউস কুতুব তাদের বানানো দোয়া শিখতে চাই সে অনুযায়ী আমরা আমল করতে চাই তাদের অজিফা পড়ে সেগুলো আমল করতে চাই আর ভাবি এই এই দোয়া পড়ে তো আমার এত বছরের গুনাহ মাফ হয়ে যাবে আমার মনের অমুক অমুক আশা পূরণ হয়ে যাবে সবটাই ঘুরে বালি যদি আমরা সত্যিকার অর্থেই শক্তিশালী দোয়া তন্ত্র‑মন্ত্র শিখতে চাই আমাদের এই কোরআন থেকেই শিখতে হবে কারণ আল্লাহ যেমনটা আদমকে শিখিয়েছেন এই কোরআনের মাধ্যমে বা আসমানি কিতাবের
(21:51) মাধ্যমে আমাদের সবাইকেই শিখিয়েছেন কিন্তু আমরা আল্লাহর এই কালামের উপর ভরসা রাখতে চাই না আমরা পীর অলি আউলিয়া গাউস কুতুব বা হুজুর শরীফের উপরেই ভরসা করতে চাই এটা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক তাহলে পুনর্জন্ম বিশ্বাস আমাদের কিভাবে শক্তিশালী করে পুনর্জন্ম বিশ্বাসের প্রথম কথাই হচ্ছে যে আলাস্তু রব্বিকুম আমরা আল্লাহকে সবসময় রব মানবো দ্বিতীয় কথা হচ্ছে সূরা বাকারার 32 আয়াতে আল্লাহ যেমনটা আদমকে বলেছিলেন তার সঙ্গীকে বলেছিলেন যে আমি তোমাদের কাছে হেদায়েত পাঠাবো যে এই হেদায়েত অনুসরণ করবে তার চিন্তা নেই ভয় নেই তাহলে আল্লাহ
(22:29) যে আসমানে কিতাব পাঠাচ্ছেন এটাকেই আমাদের অনুসরণ করতে হবে তিন সূরা বাকারার 37 আয়াত আল্লাহ আদমকে কিছু কালাম শিখিয়েছিলেন বাণী শিখিয়েছেন সেই আল্লাহর শেখানো জিনিস দিয়েই সে লাভবান হয়েছিল উপকৃত হয়েছিল আমাদেরকেও সেই আল্লাহর শেখানো বাণীর মাধ্যমেই লাভবান হতে হবে অন্য কোন হুজুর শরীফের দিকে নজর দেয়া যাবে না চার আল্লাহর এই আমানত আল্লাহ আসমান জমিন পাহাড়-পর্বত অনেক কিছুর উপরে পেশ করে কিন্তু আমরা জালিম হিসেবে অজ্ঞ হিসেবে সেই আমানতটা গ্রহণ করেছি অন্য কেউ কিন্তু গ্রহণ করেনি এত ভারী জিনিস এত ভারী বোঝা আমরা কাঁধে নিয়েছি এবার আমরা চলে যাই সেই
(23:13) তর্ক‑বিতর্ক ঊর্ধা লোকে যে তর্ক‑বিতর্ক হয়েছিল সেখানে 18 নাম্বার সূরা কাহাফের 50 নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলছেন আর স্মরণ করো আমি যখন ফেরেশতাদেরকে বলেছিলাম তোমরা আদমের প্রতি নত হও তখন সবাই নত হলো ইবলিশ ছাড়া সে জিনদের অন্তর্ভুক্ত হলো সে তার রবের আদেশ অমান্য করল তাহলে কি তোমরা আমার পরিবর্তে তাকে ও তার বংশধরকে আউলিয়া রূপে অভিভাবক রূপে গ্রহণ করেছো তারা তো তোমাদের শত্রু সীমালঙ্ঘনকারীদের জন্য রয়েছে কত নিকৃষ্ট বদলা এই আয়াতে আমরা দেখতে পাই যে আল্লাহ ফেরেশতাদেরকে বলেছিলেন আদমকে সেজদা করার কথা আবার হুজুররা বলে থাকে যে ইবলিশ
(23:57) হচ্ছে জিন তাহলে আল্লাহ তো জিন ফেরেশতা উভয়কে বলেননি আদমকে সিজদা করতে আল্লাহ শুধু ফেরেশতাদের বলেছেন তাহলে যদি ইবলিশ জিনি হয়ে থাকে সে কেন সিজদা করবে প্রশ্ন থেকে যায় তাহলে কি কোরআনে অসঙ্গতি রয়েছে বৈপরিত্য রয়েছে যেমনটা সূরা নিসার 82 আয়াতে আল্লাহ বলেছেন যদি আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেউ এটা রচনা করতো তাহলে এর মধ্যে তোমরা অনেক অসঙ্গতি অনেক বৈপরিত্য খুঁজে পেতে তাহলে সূরা কাহাফের 50 নাম্বার আয়াতটা কি কোরআনের অসঙ্গতি কারণ আল্লাহ তো ফেরেশতাদেরকে বলেছেন আদমকে সেজদা করতে জিনদের তো বলেনি অথবা জিন ফেরেশতা উভয়দেরকে বলেননি তাহলে ইবলিশ কেন
(24:34) কনভিক্টেড হবে এর উত্তর হচ্ছে এই আয়াতে কানা মিনাল জিন্নি এর অনুবাদের উপরে এইখানে অনুবাদকারীরা অনুবাদ করেছেন কানা মিনাল জিন্নি অর্থ হচ্ছে সে ছিল জিনদের একজন সে কি আসলে জিনদের একজন ছিল অথবা ইবলিশ যে দাবি করে সূরা আরাফে তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছো আগুন থেকে থেকে এটা তো ইবলিশের দাবি করা আল্লাহ কি বলেছেন যে আমি তোমাকে আগুন দিয়ে সৃষ্টি করেছি এটা আল্লাহ বলেনি ইবলিশ দাবি করেছে ইবলিশ তাহলে কি ছিল এর উত্তর আমরা পাবো সূরা আরাফের 175 নাম্বার আয়াতে এই আয়াতেও আমরা শেষ অংশে দেখব যে কানা মিনাল শব্দটা আছে আল্লাহ বলছেন তুমি এদেরকে সেই
(25:22) ব্যক্তির বৃত্তান্ত শুনিয়ে দাও যাকে আমি নিদর্শন দান করেছিলাম কিন্তু সে উহা বর্জন করেছিল ফলে শয়তান তার পিছনে লেগে যায় আর সে পথভ্রষ্টদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায় বিপদগামীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায় তাহলে এখানে আমরা দেখলাম যে কানা মিনাল অর্থ হচ্ছে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাওয়া শামিল হয়ে যাওয়া কিন্তু সূরা কাহাফের 50 নাম্বার আয়াতে অন্তর্ভুক্ত বা শামিল শব্দ না বলে অনুবাদকারীরা বলেছেন সে ছিল জিনদের একজন ছিল বা ওয়াজ অনুবাদ করা হয়েছে কতটা বিকৃত অনুবাদ প্রকৃতপক্ষে সে জিনদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গিয়েছিল তাহলে যে আল্লাহর কথা অস্বীকার করবে কুফরি করবে
(26:04) ঢেকে ফেলবে নির্দেশ ভায়োলেট করবে তাকেই আল্লাহ বলছেন সে জিনদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায় তাহলে কি ইবলিশ ফেরেশতা ছিল আমাদের বলা হয় যে ফেরেশতারা নূরের তৈরি কিন্তু কোরআনে একটি আয়াত কি আপনি খুঁজে পেয়েছেন যেখানে আল্লাহ বলেছেন যে ফেরেশতারা নূরের তৈরি বরং আল্লাহ বলেছেন যে আল্লাহ নিজেই হচ্ছেন নূর নুরুল আলা নূর আল্লাহ নিজেই হচ্ছেন নূর তাহলে এই মালাইকারাও কি নূর মানে আল্লাহ যা দিয়ে সৃষ্ট বা আল্লাহ যা দিয়ে তৈরি অথবা আল্লাহ নিজে যা একই জিনিস ফেরেশতারা তাহলে আল্লাহ যে বললেন সূরা ইখলাসে ওয়ালাম ইয়াকুল্লাহু কুফুয়ান আহাদ তার সমতুল্য কিছুই নেই বিষয়টা কি
(26:48) সাংঘর্ষিক হয়ে যায় না আল্লাহও নূর ফেরেশতারাও নূর অবশ্যই সাংঘর্ষিক হয়ে যায় তাছাড়া এই জিনদের পাওয়ার প্রতিপত্তি ক্ষমতা দেখলেও আমরা বুঝতে পারি তারা আসমান জমিন সবকিছু চষে বেড়াতে পারে এই যে আজকের আলোচনায় আমরা শুরু করেছিলাম ঊর্ধ্ব লোকে যে তর্ক‑বিতর্ক হয়েছিল বাদ অনুবাদ হয়েছিল সেই তর্ক‑বিতর্কের একটা পর্যায়ে যারা যারা বিদ্রোহ করেছিল সেই বিদ্রোহী গ্রুপই অভিশপ্ত ফেরেশতা ছিল অভিশপ্ত হয়ে তারা জিন হিসেবে পরিগণিত হয়েছিল সবাইকে আল্লাহ এই দ্বিতীয় সুযোগ দিয়েছেন সেকেন্ড চান্স দিয়েছেন মানুষকে যেমন আল্লাহ বলেছেন সে
(27:31) অতিশয় জালিম অজ্ঞ সেই আমানত গ্রহণ করেছে ঠিক তেমনি এই জিনদেরকেও আল্লাহ সেকেন্ড চান্স দিয়েছেন সূরা জিনের এক থেকে আট নাম্বার আয়াত পড়লে আমরা বিষয়টা আরেকটু ভালো করে বুঝতে পারি বলো আমার প্রতি ওহী করা হয়েছে নিশ্চয়ই জিনদের একটা দল মনোযোগ সহকারে শুনেছে অতঃপর বলেছে আমরা তো এক বিস্ময়কর কোরআন শুনেছি যা সত্যের দিকে হেদায়েত করে অতঃপর আমরা তাতে ঈমান এনেছি আর আমরা কখনো আমাদের রবের সাথে কাউকে শরিক করবো না আর নিশ্চয়ই আমাদের রবের মর্যাদা সমুচ তিনি কোন সঙ্গিনী গ্রহণ করেননি এবং না কোন সন্তান আর আমাদের মধ্যেকার নির্বোধেরা আল্লাহর ব্যাপারে অবাস্তব
(28:14) কথাবার্তা বলতো অথচ আমরা তো ধারণা করতাম যে মানুষ ও জ্বীন কখনো আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা আরোপ করবে না আর নিশ্চয়ই কতিপয় মানুষ কতিপয় জ্বীনের আশ্রয় নিত ফলে তাদের অহংকার বেড়ে গিয়েছিল আর আর নিশ্চয়ই তারা ধারণা করেছিল যেমন তোমরা ধারণা করেছো যে আল্লাহ কাউকে কখনো পুনরুত্থিত করবেন না আর নিশ্চয়ই আমরা চেয়েছিলাম আকাশের তথ্য সংগ্রহ করতে কিন্তু আমরা দেখতে পেলাম কঠোর প্রহরী ও উল্কাপিণ্ড দ্বারা আকাশ পরিপূর্ণ আর আমরা তো সংবাদ শোনার জন্য আকাশের বিভিন্ন ঘাটিতে বসতাম কিন্তু এখন যে শুনতে চাইবে সে তার জন্য প্রস্তুত জ্বলন্ত উল্কাপিণ্ড পাবে আর নিশ্চয়ই আমরা
(29:02) জানিনা জমিনে যারা রয়েছে তাদের জন্য অকল্যাণ চাওয়া রয়েছে নাকি তাদের রব তাদের ব্যাপারে মঙ্গল চেয়েছেন আর নিশ্চয়ই আমাদের কতিপয় সৎকর্মশীল এবং কতিপয় এর ব্যতিক্রম আমরা ছিলাম বিভিন্ন মত ও পথে বিভক্ত আর আমরা তো বুঝতে পেরেছি যে আমরা কিছুতেই জমিনের মধ্যে আল্লাহকে অপারক করতে পারবো না এবং পালিয়ে কখনো তাকে ব্যর্থ করতে পারবো না আর নিশ্চয়ই আমরা যখন হেদায়েতের বাণী শুনলাম তখন তার প্রতি ঈমান আনলাম আর যে তার রবের প্রতি ঈমান আনে সে না কোন ক্ষতির আশঙ্কা করবে এবং না কোন অন্যায়ের আর নিশ্চয়ই আমাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক আছে মুসলিম এবং আমাদের
(29:45) মধ্যে কিছু সংখ্যক সীমালঙ্ঘনকারী কাজেই যারা মুসলিম হয়েছে আত্মসমর্পণ করেছে তারাই সঠিক পথ বেছে নিয়েছে আর যারা সীমালঙ্ঘনকারী তারা তো জাহান্নামের ইন্ধন আর যদি তারা সঠিক পথে অবিচল থাকতো প্রতিষ্ঠিত থাকতো তাহলে আমি অবশ্যই তাদের প্রচুর পরিমাণে বাড়ি বর্ষণের মাধ্যমে সমৃদ্ধ করতাম যাতে আমি তা দিয়ে তাদেরকে পরীক্ষা করতে পারি আর যে তার রবের স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তাকে তিনি কঠিন আজাবে প্রবেশ করাবেন উর্ধলোকের সেই বাদানুবাদ ফেরেশতা জিন আল্লাহর সেই তর্ক‑বিতর্কের ডিটেইলস আলোচনা করতে গেলে এখন ভিডিও অনেক লম্বা হয়ে যাবে শুধু বোঝার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে
(30:34) বিদ্রোহ ঊর্ধ্বলোকে হয়েছিল সেই বিদ্রোহে যারা আল্লাহর পক্ষে ছিল আলাস্তু রব্বিকুম এর পক্ষে যারা ছিল তারা এখনো তার পক্ষে তারা কখনো আল্লাহর আদেশ ভায়োলেট করে না এখনো তারা মালাইকা হিসেবে পরিগণিত এবং মালাইকাদের প্রচন্ড ক্ষমতা তারা আসমান জমিন সবখানে দৌড়াতে পারে চলতে পারে সেই পাওয়ারফুল তারা এদের সরদার ছিল ইবলিশ কিন্তু এই অভিশপ্ত জিনদেরকে এবং মানুষদেরকে এই অজ্ঞ জালিম যেটা আল্লাহ বলেছেন মানুষদের সম্পর্কে এই আমানত যারা গ্রহণ করেছে তাদেরকে এই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন কিন্তু জিনদের তো এক্সট্রা অর্ডিনারি পাওয়ার ছিল তারা ঊর্ধ্বলোক ভেদ
(31:18) করে খবর সংবাদ তথ্য সবকিছু আনতে পারতো নিতে পারতো ফেরেশতাদের মতোই পাওয়ার কিন্তু আল্লাহ সেটা বন্ধ করে দিয়েছেন তারা আর বাইরে যেতে পারে না এর মধ্যে যারা এই কোরআন বা আল্লাহর এই আসমানে কিতাব মেনে চলে তারা মুসলিম হয়ে যায় আর যারা মেনে চলে না মানুষদের মতই রয়েছে দু গ্রুপ মানুষও যেমন তারাও তাই যারা আল্লাহর আসমানে কিতাব মেনে চলবে তারা জান্নাতের অধিবাসী হবে যারা মেনে চলবে না যারা ইবলিশের ইবাদত করবে মানুষদের মতো তারা জাহান্নামের অধিবাসী হবে তো এই অভিশপ্ত ফেরেশতাদের এই পাওয়ার সম্পর্কে 27 নম্বর আয়াতে সূরা আরাফের আল্লাহ একটু ইঙ্গিত
(31:55) দিয়েছেন তিনি বলেছেন হে বনি আদম শয়তান যেন তোমাদেরকে বিভ্রান্ত না করে যেভাবে সে তোমাদের পিতা-মাতাকে জান্নাত থেকে বের করেছিল সে তাদের পোশাক টেনে নিচ্ছিল যাতে সে তাদেরকে তাদের লজ্জাস্থান দেখাতে পারে নিশ্চয়ই সে ও তার দলবল তোমাদেরকে দেখে যেখানে তোমরা তাদেরকে দেখো না নিশ্চয়ই আমি শয়তানদেরকে তাদের জন্য অভিভাবক বানিয়েছি আউলিয়া বানিয়েছি যারা ঈমান গ্রহণ করে না তাহলে এই অভিশপ্ত ফেরেশতাদের মধ্যে যে পাওয়ার দেয়া হয়েছে সেটা হচ্ছে যে তার তার দলবল আমাদেরকে দেখতে পায় কিন্তু আমরা দেখতে পাই না তাদের যদি কোন পীর অলি আউলিয়া গাউস কুতুব
(32:36) আপনাকে বলে যে সে জিন সাধনা করে জিন আনতে পারে জিন দেখতে পারে জিনের হাত এরকম পা এরকম সিং এরকম সে পুরোপুরি ধোঁকাবাজ কারণ এই আয়াতে আল্লাহ পরিষ্কার বলেছেন যে সেও তার দলবল তোমাদেরকে দেখে কিন্তু তোমরা তাদের দেখো না আমাদের তাদের দেখার পাওয়ারই আল্লাহ রাব্বুল আলামীন দেননি এবং তাদের আউলিয়া অভিভাবক হচ্ছে এই ইবলিশ শয়তান তো এই পৃথিবীতে আমরা এসেছি আল্লাহ আমাদের পাঠিয়েছেন সেকেন্ড চান্স হিসেবে আমরা আলাস্তুবির অব্যকুম করি কিনা যদি করতে পারি আমরা আবারো জান্নাতে ফেরত যেতে পারব আর যদি আমরা আলাস্তুর অব্যকুম আল্লাহকে রব না মেনে আল্লাহর আদেশ নিষেধ
(33:19) না মেনে ইবলিশের আদেশ নিষেধই মেনে চলি ইবলিশেরই ইবাদত করি জাহান্নামে হবে আমাদের শেষ ঠিকানা যেমনটা হবে ইবলিশ এবং তার দলবলের শেষ ঠিকানা সূরা বনী ইসরাইলের 44 নাম্বার আয়াতে আল্লাহ বলছেন সাত আসমান ও জমিন এবং এগুলোর মধ্যে যা কিছু আছে সবকিছু তার তাসবিহ পাঠ করে এবং এমন কিছু নেই যা তারা প্রশংসায় তাসবিহ পাঠ করে না কিন্তু তাদের তাসবিহ তোমরা বোঝো না নিশ্চয়ই তিনি সহনশীল ক্ষমাপরায়ণ আসমান জমিনে যা কিছু আছে সবাই আল্লাহর তাসবি পাঠ করে এবং আমরা সালাত শরীর যে আলোচনা করেছি সবাই যার যার সালাতও জানে সবাই রুকু সিজদাও করে সিজদার
(34:01) ভিডিওতে আমরা আলোচনা করেছি শুধুমাত্র মানুষ আর এই অভিশপ্ত ফেরেশতা বা জিন এরাই হচ্ছে এই পরীক্ষার সম্মুখীন এই পরীক্ষায় যেটা সূরা মুলকে আল্লাহ বলেছেন এই জন্ম মৃত্যু সৃষ্টি করেছেন যাতে করে তিনি পরীক্ষা করতে পারেন আমলের দিক থেকে আমরা কারা শ্রেষ্ঠ আমাদের আমল যদি শ্রেষ্ঠ হয় এই জিন এবং মানুষদের মধ্যে সেকেন্ড চান্সে আমরা জান্নাতে যেতে পারবো আর যদি আমল খারাপ হয় আমরা যদি ইবলিশের ইবাদত করতে থাকি আমরা ইবলিশের সাথে সাথে জাহান্নামের অধিবাসী হব অনন্তকালের জন্য তাহলে আমাদের পুনর্জন্ম হয়েছে পৃথিবীতে সেকেন্ড চান্স হিসেবে এবং এই সেকেন্ড
(34:48) চান্সে আমাদের হেদায়েতের জন্য আল্লাহ এই আসমানি কিতাব পাঠিয়েছেন এটাকে যদি আমরা অনুসরণ করি আমাদের কোন ভয় নেই আমাদের কোন দুশ্চিন্তা নেই আর যদি আমরা ইবলিশের অনুসরণ করি তার ইবাদত করি আমাদের মত কপাল পোড়া আর কেউ নেই আর এই পুনর্জন্মের যে সেকেন্ড চান্স আমরা পেয়েছি সেটা আমরা হেলায় হারাবো হিন্দু ধর্ম বৌদ্ধ ধর্ম জৈন ধর্ম শিখ ধর্ম এসব ধর্মের প্রায় সবাই এই পুনর্জন্মে বিশ্বাস করে পুনর্জন্ম বা দেহান্তর প্রাপ্তি বিশ্বাস গ্রিক ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব যেমন পিথাগোরাস সক্রেটিস প্লেটো এরা প্রায় সবাই বিশ্বাস করতো তারা বিশ্বাস করে এই পুনর্জন্ম চক্রাকার আমরা
(35:31) অনেকে গান শুনি সাত জনম জনম জনম এগুলো এই পুনর্জন্মবাদের মৌলিক দার্শনিক ভিত্তির উপরেই তৈরি করা হয়েছে অবশ্য অনেকে বলে থাকেন ব্রাহ্মণরা যেন নিচু জাতের দলিত নমশূদ্র যাদব সম্প্রদায়কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে তাদের দাস হিসেবে রাখতে পারে সেইজন্য এই তত্ত্ব তারা আবিষ্কার করেছে যে এর আগের জনমে আমি ভালো কাজ করেছিলাম এইজন্য ব্রাহ্মণ হিসেবে এই জনমে আমি জন্ম লাভ করেছি আর তুমি আগের জনমে পাপ করেছিলে অন্যায় করেছিলে তার শাস্তি হিসেবে তুমি এই নিচু জাতে জন্ম নিয়েছো তারা বিশ্বাস করে অনেকটা এরকম এই জনমে আপনি চুরি করবেন বেশি বেশি পরজনমে কুকুর হয়ে জন্ম নিয়ে
(36:21) আপনি মানুষের বাড়ি পাহারা দিবেন এইভাবে আপনি চুরির যে পাপ সেই পাপের প্রায়শ্চিত্ব করবেন তারা কোন জন্মের যে চক্র এই চক্র থেকে মুক্তিকে চূড়ান্ত আধ্যাত্মিক লক্ষ্য হিসেবে বিবেচনা করে এবং মোক্ষ নির্বাণ মুক্তি এবং কৈবল্যের মত পথ দ্বারা মুক্তিকে বলে থাকে হিন্দু বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মের প্রাথমিক গ্রন্থে পুনর্জন্ম সম্পর্কিত ধারণা পরিভাষা সবই রয়েছে তারা মুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় অনুরূপ ধার্মিক অনুশীলন ও কর্মের উপর জোর দেয় এবং যা ভবিষ্যতের পুনর্জন কে প্রভাবিত করে যেমন তিনটা বিভিন্ন গুণ নিয়ে তারা আলোচনা করে কখনো কখনো জম ও নিয়ম হিসেবে অহিংসা সত্য
(37:10) অচর্য অপরিগ্রহ সকল জীবের জন্য সমবেদনা দান এবং এইসব কিছুই অবশ্য এই হিন্দু জৈন বৌদ্ধ ধর্মের মধ্যে হিন্দু ধর্মের সবচেয়ে শক্তিশালী বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এই পুনর্জন্মে বিশ্বাস পুনর্জন্মের অর্থ হলো জীবের মৃত্যুর পর আত্মা নতুন দেহ ধারণ করে এবং বারবার পৃথিবীতে আগমন করে গীতায় বলা আছে মানুষ যেমন জীর্ণ বস্ত্র বা ছেড়া কাপড় পরিত্যাগ করে নতুন কাপড় পরিধান করে গ্রহণ করে আত্মাও তেমনি জীর্ণ দেহ ত্যাগ করে অন্য নতুন দেহ গ্রহণ করবে কিন্তু হিন্দু ধর্মের বিশ্বাস হলো পুনর্জন্মবাদ যা অদ্বৈতবাদের সাথে গভীরভাবে সম্পর্কিত প্রাচীন বৈদিক যুগে এর অস্তিত্ব ছিল না
(38:03) তখন পর্যন্ত হিন্দুদের ভেতর এই জড় পার্থিব্য জীবন সম্পর্কে আশাবাদী দৃষ্টিকোণ ছিল তারা বিশ্বাস করতো যে মৃত্যুর পর তারা চিরকাল চালু থাকবে তাদের ধারণা ছিল এমন যে মৃত্যুর পর তারা পূর্ণ কাজের জন্য স্বর্গে প্রবেশ করবে আর মৃত্যুর পর তারা নরকে প্রবেশ করবে যদি তারা ভালো কাজ সম্পন্ন না করে তাহলে কিন্তু কিছুদিন পরেই তারা তাদের এই ধ্যান ধারণাকে বিসর্জন দিয়ে পুনর্জন্মবাদে বিশ্বাসী হয়ে ওঠে এই পুনর্জন্মে তাকে কৃতকর্মের ফল ভোগ করতে হয় আর এই ধারা অনন্তকাল পর্যন্ত বিরাজমান থাকবে এই ধ্যান ধারণা হিন্দুদের হীনবল ও নিম্নমুখে করে
(38:46) তোলে তার উপর এক হতাশা ব্যঞ্জক উদাসীন মনোভাবের সৃষ্টি হয়েছে আর এই বিশ্বাস থেকেই অদৃষ্টবাদ বা কপালের সৃষ্টি হয়েছে কারণ মানুষের ভাগ্য তার পুনর্জন্মবাদের দ্বারা নির্ধারিত হয়ে থাকে শত চেষ্টা করলেও তা পরিবর্তন করতে পারবে না মানুষ তার কৃতকর্মের দরুণ নিম্ন জীব জানোয়ারের রূপে জন্মগ্রহণ করতে পারে হিন্দু ধর্মে আরাধ্যের আধিক্য তার অদ্বৈতবাদের সাথে গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত অদ্বৈতবাদ হলো সকল দেব দেবী ও সকল প্রাকৃতিক শক্তি যেমন বায়ু পানি নদী ভূমিকম্প মহামারী ইত্যাদি একক প্রাণশক্তির ভিন্ন রূপ রয়েছে হিন্দু ধর্ম বিশ্বাস করে জীবের মৃত্যুর পর আত্মা
(39:35) পুনরায় জীব দেহ নিয়ে জন্মগ্রহণ করে হিন্দু ধর্মে মৃত্যু পরবর্তী জীবনে সবাই বিশ্বাসী জন্মান্তর হলো জীবাত্মা এক দেহ পরিত্যাগ করলে কর্মফল ভোগ করার জন্য অন্য দেহ ধারণ করে এ জগতেই পুনরায় জন্মগ্রহণ করে গ্রিক ভাষায় এর অর্থ হলো আত্মার পরিবর্তন এক দেহ থেকে অন্য দেহে আত্মার অনুপাত প্রবেশ হিন্দু পন্ডিতগণ জন্মান্তরবাদের ধারণায় মনে করে পরকাল বলতে কিচ্ছু নেই বরং মানুষ তার কৃতকর্মের ফল ভোগ করার জন্য বারবার এই দুনিয়াতে বিভিন্ন রূপে বিভিন্ন বেশে আবির্ভূত হয়ে থাকে কোন মানুষ যদি অতিশয় ঘৃণিত কুকর্ম করে মারা যায় তাহলে তার আত্মাটা কুকুর
(40:19) বিড়ালের দেহ ধারণ করে পরজন্মে জন্মগ্রহণ করে অতিশয় ঘৃণিত জীবনযাপন করে মানুষের তিরস্কার ভোগ করবে আবার এমনও পাপ কাজ আছে যার কর্ম ফল ভোগ করার জন্য বৃক্ষললতা হিসেবে পুনর্জন্ম গ্রহণ করে কুঠারের আঘাতে অথবা জ্বালানি রূপে ব্যবহৃত হয়ে দগ্ধভূত হয়ে পূর্ব কর্মফলের প্রায়শ্চিত্ব ভোগ করবে আর এ শাস্তি ভোগ করাই হলো নরক অন্যদিকে কোন ব্যক্তি যদি ভালো বা পূর্ণ কাজ করে তাহলে মৃত্যুর পর তার আত্মাটা আরো ধনী সুখী কিংবা রাজা বাদশা হয়ে জন্ম লাভ করবে এ সুফল ভোগ করাটা হিন্দুদের দৃষ্টিতে স্বর্গ এ সম্পর্কে উপনিষদে আছে পুণ্যে বই পুণ্যন কর্ম না ভবতি পাপ পাপেন অর্থাৎ
(41:08) পুণ্যের দ্বারা পুণ্যলোক মানে স্বর্গাদি লাভ হয় পাপের দ্বারা পাপলোক মানে নরকাদি প্রাপ্তি হয় হিন্দু সমাজে এক শ্রেণীর জন্মান্তরবাদী আছে যারা প্রচলিত কুসংস্কার ত্যাগ করতে না পেরে মানবত্তা যে মৃত্যুর পর সূক্ষ দেহ ধারণ করে তা স্বীকার করে বটে তবে সাথে সাথে তারা আবার একথাও বলে যে আত্মা একটা দেহ ত্যাগ করে বিচরণ করে তখন তার অবস্থান কোথায় কিরূপ থাকে তা শ্রীমদ ভগবত গীতায় বর্ণিত আছে যে আকাশস্থ নিরাম্ব বায়ুতুত নিরাশ্রয় অর্থাৎ আত্মা প্রেতপরিতে অবলম্বনহীন নিরাশ্রয় রূপে শূন্যে ভেসে বেড়ায় তারপর তা শিশিরের রূপ নিয়ে ঘাস লতাপাতা ধান জব গম পানীয় মানুষ
(41:54) কীটপতঙ্গ খেয়ে থাকে এসব খাদ্যের সারভাগ থেকেই শরীরে বীর্যের সৃষ্টি হয় এবং এ থেকেই কর্মানুসারে আত্মা মানুষ কীটপতঙ্গ রূপে পুনর্জন্ম লাভ করে এবং তার কৃতকর্মের ফল ভোগ করে অন্য এক শ্রেণীর জন্মান্তরবাদী আছে যাদের ধারণা হলো মানুষ বহু জন্ম ও জন্মান্তরে নির্বাণ সাধনায় উন্নীত হয়ে আত্মাকে ঈশ্বরের সাথে মিলিত করে অনন্ত সুখ লাভে সক্ষম হয় তাদের কামনা বাসনার ঋপুগুলো ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে যায় না বরং সেগুলো আত্মার এক কোণে সুপ্ত হয়ে অলক্ষে বিরাজ করে ঈশ্বরের সান্নিধ্যে গিয়ে কিছুকাল অনন্ত ও অনাবিল সুখ‑শান্তি ভোগ করার পর সে সুপ্ত ঋপুগুলো আবার জাগ্রত হতে
(42:40) থাকে কিছুকাল পর আত্মা ব্রহ্মুত্রের নিচু স্তরে নেমে আসে এবং অধঃপতিত হয়ে আবার জন্মগ্রহণ করে কর্মফল অনুযায়ী পুনর্জন্ম হিন্দু ধর্মে কর্মবাদের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে জন্মান্তরবাদের যেকোনো কর্মের মূল্যায়ন হয় তার ভবিষ্যৎ ফলের প্রেক্ষিতে আর এ ফল ভোগ হয় প্রধানত পরকালে তথা পুনর্জন্মে কর্মবাদ অনুযায়ী মানুষকে তার কৃতকর্মের ফল অবশ্যই ভোগ করবে কর্মবাদ অনুযায়ী মানুষকে তার কৃতকর্মের ফল অবশ্যই ভোগ করতে হবে এ কর্মবাদের উপর পুনর্জন্ম প্রতিষ্ঠিত কর্মের ফল ভোগ করার জন্যই দেহ ধারণ করে ইহলৌকিক ও পুনর্জন্ম গ্রহণ করে এবং কৃতকর্মের ফল ভোগ করে
(43:27) জীবাত্মার বিনাশ নেই হিন্দু ধর্মে জন্মান্তরবাদের বিশ্বাস হলো জীবাত্মার কোন বিনাশ নেই মৃত্যুর পর জীবাত্মা এক দেহ হতে অন্য দেহে স্থানান্তরিত হয় গীতায় বলা হয়েছে যে মরেছে তাকে পুনরায় জন্মাতে হবে মানুষের জীবন ক্ষণস্থায়ী জন্মান্তরের এটি একটি অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য যে জন্ম যার হয়েছে মৃত্যু তার একদিন হবেই আর মৃত্যু যার হবে তারও একদিন জন্ম হবে তাই মানুষের জন্ম ও মৃত্যু কোন কিছুই ক্ষণস্থায়ী নয় যে জন্মগ্রহণ করবে তাকে মৃত্যুর জন্য আর যে মৃত্যুবরণ করবে তাকে পুনর্জন্মের জন্য অপেক্ষা করতে হবে হিন্দু ধর্মমতে মানুষের
(44:13) কর্মফল বিধাতার নিকট লিপিবদ্ধ আছে যে পর্যন্ত তার পাওনা শোধ না হয় সে পর্যন্ত মানুষের জন্মান্তর হতে থাকে এ বিশ্বাসের কারণে সৎকর্ম করতে উদ্বুদ্ধ হয় মানুষ কারণ ভালো কর্মের জন্য ভালো ফল হয় হিন্দু ধর্মে বলা হয় আত্মা আর পরমাত্মা এক ও অভিন্ন কিন্তু আত্মা যখন দেহের ভিতর প্রবেশ করে তখন তা লোভ‑লালসা ও ভোগ‑বিলাসে নিমিত্ত হয়ে পড়ে মত্ত হয়ে পড়ে তাই সে আত্মা আর কোনভাবেই মুক্তি অর্জন করতে পারে না তাই ভোগের আকাঙ্ক্ষা থেকে সংযত রাখা জন্মান্তরবাদের একটা কাজ অপর একটি দল আছে যাদের এ সম্পর্কীয় মতবাদ আরো উদ্ভট তাদের মতে একটি দুই সংখ্যা লিখে তারপরে 100 দশটি
(45:03) শূন্য যোগ করলে যত বছর হয় তা হলো এক কল্প এমনি 80 লক্ষ কল্প ইতর যুগেতে জন্ম নিয়ে জন্মান্তরে সৎকাজ করলে তবেই আত্মা দ্বিজত্ব প্রাপ্ত হয়ে নির্মাণ লাভ করে তারপর মানুষ রূপে পুনর্জন্ম লাভ করতে পারে কেউ কেউ গত জন্মের কথা স্মরণ করতে পারেন বিশেষ করে যারা মোক্ষ লাভ করেন তারা পরিপূর্ণভাবে স্মরণ করতে পারেন বেদের মধ্যে কোন কোন অবতারের একাধিকবার জন্ম লাভের বিষয়ে স্মরণে থাকার কথাও উল্লেখ আছে আর বেদে আত্মার একাধিক মৃত্যুর কথা হয়েছে অতএব পুনর্জন্ম স্বীকার না করলে একাধিকবার মৃত্যুর অর্থ হয় না উপনিষদে যে মোক্ষ বা ব্রহ্মত্র লাভের উল্লেখ আছে তা
(45:52) হলো এ জন্ম মৃত্যুর চক্র থেকে চিরমুক্তি জন্মান্তরবাদের দূরবিচ্ছিন্ন চক্র থেকে মুক্তি লাভের উপায় হলো জন্মান্তের নিরন্তন সাধনায় জীবাত্মাকে পরমাত্মায় সংস্থাপনের উপযোগী করে তোলা এই আত্মাকে উপযোগী না করা পর্যন্ত এ ধারা চলতেই থাকবে পরিশেষে বলা যায় যে পুনর্জন্মবাদ হিন্দু ধর্মে একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিবেচিত হয় বর্তমানে অনেক আধুনিক হিন্দুগণ অনেক ধ্যান ধারণা থেকে দূরে সরে আসলেও পুনর্জন্মবাদের ধারণাকে এখনো তারা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে থাকে তারা শুধুমাত্র এই কারণে সৎকর্ম সাধন করে থাকে যদি পুনর্জন্ম হয় তাহলে কেন ভগবান স্বর্গ নরক
(46:41) তৈরি করেছেন স্বর্গ ঠিক আছে যেহেতু মানুষের বারবার জন্মের মাধ্যমে স্বর্গ লাভ করে তাহলে কেন ভগবান নরক তৈরি করেছে আর পুনর্জন্ম যদি হয় তাহলে তো মানুষ ভালো হওয়ার কথা কিন্তু না দিন দিন পাপের কাজ বাড়ছে তাহলে কি পুনর্জন্মের আরো মানুষ বেখবর আর পুনর্জন্ম যদি হয় তাহলে তো একদিন সবাই ভালো হওয়ার কথা কিন্তু তা তো হচ্ছে না। রিজওয়ান মাহমুদ- অনলি কুরআন রিসার্চ